প্রেম যেন এমনই হয় ৪৩
লিখেছেন লিখেছেন প্রগতিশীল ২১ মার্চ, ২০১৫, ০৪:২৯:০৭ বিকাল
খাবার টেবিলে আজ পরিস্থিতি রিদিতার পক্ষে। সে কেবল মিটমিটিয়ে হাসছিল। রতন আর সঞ্চিতা লাজুক ভঙ্গিতে খাচ্ছিল। কারো কোন কথা নেই।
সানজিদা বললেন, আজ তোদের কোন কথা নেই কেন। একেবারে নিশ্চুপ, কেবল খাচ্ছিস। কি হল বউমা তোমাদের কিছু হয়েছে। আমার ওই গর্দভ রতন কিছু বলেছে।
জবাব রিদিতাই দিল; মা তোমার ওই সুযোগ্য ছেলে তাকে আঘাত করেছে।
এবার লিটন সাহেব বলে উঠলেন, কি বলিস?
রিদিতা বললো; বাবা তুমি ভুল বঝছো, এটা দাম্পত্য কলহ নয়।
সানজিদা বিরক্ত হয়ে বললেন; খাবার টেবিলে ন্যাকামি না করে কি হয়েছে সেটাতো বলবি।
রতন-সঞ্চিতা মাথা নিচু করে খাওয়া অব্যাহত রাখলো।
রিদিতা বললো; তোমার ছেলে তোমার বউমাকে আছাড় মেরেছে। মানে উপর থেকে ফেলে দিয়েছে।
লিটন সাহেব বললেন; দুষ্টুমি করতে গিয়ে ফেলে দিয়েছে?
রিদিতা বললো; খেতে আসতে দেরি করছে দেখে ওদের ডাকতে গিয়ে দেখি রতন সঞ্চিতাকে নিয়ে বাংলা সিনেমার শ্যুটিং করছে। মানে সঞ্চিতাকে কোলে নিয়ে...আর আমি রুমে ঢুকতেই সে সঞ্চিতাকে বিছানার উপর ফেলে দিয়েছে। আর তাতেই ব্যথা পেল বেচারি সঞ্চিতা। পরে আমি মুভ লাগিয়ে ওকে খেতে নিয়ে এলাম।
সানজিদা রেগে গেল; এই কথা এখানে বলতে হবে। আর সব দোষতো তোর। ওদের রুমে ঢুকবি তাও আবার নক না করে। ওদের বিয়েইতো দিলাম ওই কারণে যে ওরা যেন চুটিয়ে প্রেম করতে পারে। আসলে তোর কমনসেন্স নেই। একটানে কথাগুলো বলছিলেন তিনি। রিদিতা পড়ল মহাবিপাকে।
মাঝখানে লিটন সাহেব সানজিদাকে থামিয়ে বললেন; বাদ দাওতো তোমরা এসব কথা। তাড়াতাড়ি খাও।
এইসময় রতনের ফোন নিয়ে ছুটে এল রুনু।
রতন ফোন রিসিভ করে কথা বলতে আরম্ভ করলো। ওপাশে ছিলেন রেণু আপু।
রতনের কথার সারমর্ম এই; আগামী মাসের তৃতীয় সপ্তাহেই তাদের ফ্লাইট।
পুরো খাবার টেবিলে নিস্তব্ধতা নেমে এল, এ মাসের শেষ সপ্তাহের আজ বৃহস্পতিবার। মানে রতন-সঞ্চিতার কানাডা যাওয়ার সময় চলে এসেছে।
বউ-ছেলেকে বিদায় করা লিটন-সানজিদা দু’জনের জন্যই কষ্টের। তবে তাদের সুন্দর ভবিষ্যতকেই এই মুহূর্তে প্রাধান্য দিচ্ছে তাদের এই অভিভাবকরা।
খাবার টেবিলেই রিদিতার চোখ ছলছল করছিল। রতন-সঞ্চিতার সাথে একটু আগে খেলা ইঁদুর বেড়াল খেলা সে ভুলে গেছে।
রতন-সঞ্চিতা দুজনই খাওয়া শেষ করে উঠে গেল।
রিদিতাও তারপর উঠে গেল। টেবিলে থাকলেন লিটন সাহেব আর সানজিদা। তাদেরও খাওয়া শেষ দিকে।
রুনু একটু আড়ালে গেলেই লিটন সাহেব; গম্ভীর ভঙ্গিতে সানজিদাকে বললেন, রিদিতাকেও বিয়ে দিলে সে চলে যাবে।
সানজিদা দীর্ঘঃশ্বাস ফেলে বললেন, রুনুকেওতো বিয়ে দিতে হবে।
লিটন সাহেব তাকে কানের কাছে ডেকে বললেন, আজ রাতেই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন শুরু করতে হবে।
সানজিদা ভ্রু কুঁচকে বললেন, কি আবার পরিকল্পনা?
লিটন সাহেব গম্ভীরভাবে বললেন, আমদের আরো বাচ্চা নিতে হবে।
সানজিদা রীতিমত লজ্জা পেয়ে বললেন, মানে কি?
লিটন সাহেব বললেন, রাতে বুঝিয়ে দেব। এখন রিডিংরুমে যাই ওখানে একটু রেস্ট নিয়ে কাজ করবো।
সানজিদাও দুষ্টুমি করে বললেন; পরিকল্পনা যখন করেইছো তখন যা কাল করবে তা আজই করো আর যা আজ করবে তা এখন। চল...
লিটন সাহেব হাসতে হাসতে রিডিং রুমের দিকে চলে গেলেন।
চলবে...
বিষয়: সাহিত্য
১৪১৯ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমার কাছে এমনি মনে হয়েছে, আপনার ভিন্নমত হতেই পারে।
আমি জানি না আমি যা মিন করেছি আপনাকে তা বুঝাতে পারলাম কিনা ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন