প্রেম যেন এমনই হয়-৩৩
লিখেছেন লিখেছেন প্রগতিশীল ১২ জানুয়ারি, ২০১৫, ১০:৩৭:২১ রাত
বর-কনে নিয়ে ফিরতে ফিরতে ভোর হয়ে এল। সবাই ঘুমে টলটল। একটু পরেই ফজরের আযান দিল। লিটন সাহেব লিটু মামাকে সঙ্গে নিয়ে মসজিদে গেলেন।
সবার ঘুমের প্রস্তুতি চলছে। বর-কনেকে বাসর ঘরে দিয়ে রতনের ভাবী তামান্না ও রিদিতাও হাই তুলতে তুলতে বের হচ্ছিল। পিছিয়ে পড়লেন তামান্না; মুখে দুষ্টু হাসি। রতন সঞ্চিতাকে বললেন, এখন যা খুশি কর। দুপুরের আগে আর কেউ বিরক্ত করবে না।
বর-কনে হাই মিশ্রিত হাসি হাসলো।
ভাবী বেরিয়ে গেলে রতন; দরজা বন্ধ করে দিল।
শত লাজুকতা সঞ্চিতাকে ঘিরে ধরেছে। রতন বিছানায় বসে সঞ্চিতার চিবুক স্পর্শ করলো। সঞ্চিতার চোখ লজ্জায় তখনো নীচের দিকে।
রতন তাকে বললো; অবশেষে তোমাকে পেলাম।
চোখ নিচু করেই সঞ্চিতা বললো; চল নামাজ পড়ি।
রতন বললো; এখন কিসের নামাজ?
বাসরের আগে নামাজ পড়ে নিতে বলেছেন রেনু আপু। এতে নাকি সম্পর্কের বন্ধন শক্ত হয়। চল ফজরের নামাজ পড়ে দুরাকাত নফল নামাজ পড়ে নেই। জবাব দিল সঞ্চিতা।
রতন হেসে বললো; মাও আমাকে এমন পরামর্শ দিয়েছিল। অথচ বাসরের চিন্তা ওসব ভুলিয়ে দিয়েছে।
সঞ্চিতা রতনকে নিজে থেকেই জড়িয়ে ধরলো। বললো; উতলা হওয়ার কিছু নেই, আমিতো চিরদিনের জন্য তোমার।
রতন আসলেই উতলা ছিল। তাকে থামিয়ে সঞ্চিতা বিছানা থেকে উঠে ওয়াশ রুমে গেল। কিছুক্ষণ পর ভেজা সিক্ত অবস্থায় ফিরে এসে অবাক হল। দেখলো রতন মেঝেতে দুটো জায়নামাজ বিছিয়ে দিয়েছে।
সে আসতেই রতন ওয়াশরুমে ঢুকলো।
কিছুক্ষণের মধ্যে দুজনেরই নামাজ শেষ করলো। সঞ্চিতা উঠে গিয়ে বিছানায় বসলো। রতন উঠতে যাবে এসময় দরজায় টোকা পড়লো। ‘লাইট অফ লাইট অফ।’ বাহির থেকে লিটু নানুর গলা শোনা গেল।
রতন উঠে গিয়ে লাইট অফ করলো। বিছানার পাশের বাতিটাও নিভিয়ে দিল। এরপর গেল বিছানায়।
ফজরের নামাজ পড়ে লিটু মামাকে সাথে নিয়ে মসজিদ থেকে ফিরছিলেন লিটন সাহেব। লিটু মামা মৃদু হেসে জিজ্ঞেস করলেন বাসর ঘরটা কোন দিকে।
মুখে হাসি নিয়েই লিটন সাহেব দেখিয়ে দিলেন; এই দিকে, ওইযে ওইটা।
এরপরই সেই দরজার সামনে লাইট অফ, লাইট অফ আওয়াজ হয়।
লিটু মামা ফিরে এলে লিটন সাহেব তাকে তার শোবার রুম দেখিয়ে দিয়ে বললেন; মামা ছয়টা বেজে যাচ্ছে ১০ টার বেশি ঘুমিও না। বউভাতের অনুষ্ঠানে অনেক কাজ আছে। তোমাকে সাথে নিয়েই সব কাজ করবো।
লিটু নানু শুতে গেলেন।
এরপর লিটন সাহেব গেলেন রিদিতার রুমের দিকে দরজা খোলাই ছিল।
পুরো বাড়ি মেহমানে ঠাসা থাকার কথা থাকলেও গ্রামের আত্মীয়রা ছাড়া সবাই যার যার বাসায় চলে গেছে। আর তার লিটু মামাসহ যে কয়েকজন আছেন তাদের জন্য তিনটা গেস্ট রুমই যথেষ্ট।
লিটন সাহেব রিদিতার দরজায় টোকা দিলেন একটু পরেই ভেতর থেকে আওয়াজ এল; চলে এস বাবা।
ভেতরে গেলেন তিনি। রিদিতা হাতের কিছু কাজ শেষ করে নিল। এরপর বাবাকে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়েই হাত ধরে তার মা-বাবার বেডরুমের দিকে হাঁটা দিল। রুমে নিয়ে এসে বললো, চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়।
সানজিদা আগেই শুয়ে পড়েছিলেন।
রিদিতা বাবাকে শুইয়ে দিয়ে লাইট অফ করে দরজা লক করে বের হয়ে গেল।
অন্ধকারে সানজিদা বললেন; মেয়েকে নিয়ে ভাবার দরকার নেই একটা ব্যবস্থা হবে। সেকেলে বাবার মত ভেবনা। ঘুমিয়ে পড়।
কোন কথা না বলে ঘুমিয়ে পড়লেন লিটন সাহেব।
চলবে...
বিষয়: সাহিত্য
১০৪৮ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন