প্রেম যেন এমনই হয়-৩২
লিখেছেন লিখেছেন প্রগতিশীল ১০ জানুয়ারি, ২০১৫, ১০:০৬:৪৯ রাত
রতন এমন অসহায়ত্ব কখনো বোধ করেনি। কি করবে ভেবে পাচ্ছিলনা, শেষে খেয়াল হল ‘কাজের কাজী’র কথা। কিছু দূরেই ছিলেন তিনি; লিটু নানু। রতন ইশারায় কাছে ডাকতেই তিনি কাছে আসলেন।
এসেই হেসে বললেন; কিরে তোর বুঝি সইছে না? রতন বললো এই নাও ফেসবুকিং কর।
লিটু নানু হাসতে হাসতে বললো; বিয়েটাই ভাঙতে পারলাম না। এখন আবার কি বলিস?
একথা বলেই রতনের মোবাইলটা হাতে নিলেন; দেখলেন আর হাসলেন, লিখে দিলেন; ‘বিবিজান দাঁড়ান আমি দেখছি।’
ওপাশ থেকে জবাব এল; নানু তাড়াতাড়ি কর...
লিটু সাহেব জবাব দিলেন, এপাশে আমি আছি কেমন করে বুঝলে প্রিয়তম।
সঞ্চিতা লিখলো; তোমার নাতি আমাকে বিবিজান বলবে এমন সেকেলে সে নয়।
লিটু নানু লিখলেন; হুম, দ্বারা দেখি তোদের জন্য কি করা যায়। পরিস্থিতিতো নিয়ন্ত্রণের বাইরে। সব বুড়োরা মোহরানা শোধ করছে।
এরপর রতনের হাতে মোবাইল দিয়ে তিনি চলে গেলেন আসরে। যেখানে মোহরানা উৎসব চলছে।
তাকে দেখে সঞ্চিতার বাবা বলেন উঠলেন; কি মামা আপনারটা শোধ হয়েছে না এখন শোধের ঘোষণা দেবেন?
লিটু মামার মুখে মলিনতা ফুটে উঠলো। তারপরও বললেন আমারওতো হাজার বিশেক টাকা বাকি ছিল। কিভাবে শোধ করা যায়। তার চোখ টলমল করছে।
লিটু মামার এরূপ পরিবর্তন সবাই খেয়াল করলো।
লিটন সাহেব বললেন; মামা তুমি মন খারাপ করছো কেন মামী নেইতো কি হয়েছে তার নামে দান করে দিও।
আসরেই সবাই নিস্তব্ধ হয়ে গেল।
জাফর সাহেব কথা বললেন; ওহ মামা আমার জানা ছিলনা দুঃখিত আমি।
তার বেয়ান সানজিদা ভারী কণ্ঠে বললেন; মামী বোধহয় অনেক সুন্দরী ছিল।
বউয়ের কথায় কিছুটা খোঁচা আঁচ করে লিটন সাহেব বিব্রত হলেন।
লিটু মামা জবাব দিলেন; বউমা বিষয়টা কৈশোর আর যৌবনের হলে সৌন্দর্য্য আর রূপের বিষয়টা প্রাধান্য পেত। এখন শূন্যতাই মুখ্য। সে আমাকে সর্বসুখে সুখী করেছিল। আরো সুখ দিতে চেয়েছিল সন্তান দিয়ে। আমি তা চাইনি বিশ্বাস কর। তার চলে যাওয়ায় অপরাধ আমার কম কিসে।
বিয়ে বাড়িতে এমন ভারী পরিবেশ কাম্য নয়। তাই এবার কথা বললেন সাদিয়া; কনের মা। বললেন; রাত একটা বাজছে এটা বিয়ের অনুষ্ঠান না কি তাইতো বুঝছিনা। বর-কনের মূল্য নেই বুড়োদের আসর জমজমাট।
এবার লিটু মামা হেসে উঠে বললেন; আসল কথাইতো বলা হলনা। কনে বরকে বলেছে; ‘ক্ষুধা লেগেছে’।
আসরের সবাই একযোগে উচ্চস্বরে হেসে উঠলো।
জাফর সাহেব আর সাদিয়া ছুটলেন ব্যবস্থা করতে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই সব ঠিক ঠাক খাওয়ার পর্ব শুরু হল।
এর মাধ্যমেই শেষ হল বিয়ের সকল আনুষ্ঠানিকতা।
কনের বিদায়ের সময় স্বভাবতই যে কাঁদো কাঁদো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় সেখানেই হাসি ছোটালেন লিটু নানু দ্য গ্রেট।
রতনের কানে ধরে বললেন; তোর শ্বশুড়-শাশুড়িকে বলনা, আপনাদের মেয়েকে নিজের মেয়ের মতই দেখবো।
বিদায় বেলা হাসির রোল উঠলো। শেষ হল কনের বিদায়।
চলবে...
বিষয়: সাহিত্য
১১৯৯ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভালো লেগেছে পড়ে! শুকরিয়া!
মন্তব্য করতে লগইন করুন