প্রেম যেন এমনই হয়-২৮

লিখেছেন লিখেছেন প্রগতিশীল ০৬ জানুয়ারি, ২০১৪, ১০:০১:৪৯ রাত



বিয়েতে বিষন্ন বর পক্ষ। তবে কনে পক্ষও আনন্দিত নয়। তৃতীয় পক্ষ হিসেবে মনে হয় বিয়েটা না দিলেই কি নয়। যাহোক অনেক ধুমধাম করে আয়োজন করা হচ্ছিল। বিয়ের বিষন্নতার মাঝেই লিটন সাহেবের পরিবারে যোগ হল মহাআনন্দ। তার দুজন বড় ছেলে-মেয়ে তারেক আর রাইসা চলে এসেছে সপরিবারে। লিটন দম্পতির কলিজার চারটে টুকরা আজ বিয়ে উৎসবে এক হয়েছে।

এতেই খুশির অন্ত নেই সানজিদা আর লিটন সাহেবের। বিয়ে উৎসবের বোনাস হয়ে এসেছে দুই দুই চার নাতি-নাতনি। তারেকের দুই ছেলে আর রাইসার দুই মেয়ে। এজন্য খুবই উৎফুল্ল সানজিদা আর লিটন সাহেব। বাড়িতে এমন জাকজমক আর জনাকীর্ণ অবস্থায় তারা যে কতটা আনন্দিত তা আর বলে বোঝানো যাবেনা। কৃষক তার কষ্টার্জিত ফসলের মাঠে প্রাচুর্য দেখে যেমন আনন্দে উদ্বেলিত হয়, মালি যেমন বাগানের ফুল দেখে পরিতৃপ্ত হয় তার চেয়ে কোন অংশে কম আনন্দিত হয়না সেই বাবা-মায়েরা যারা তাদের দাম্পত্যের ফসল এভাবে চোখের সামনে দেখে।

রাতে খাওয়ার পর আজ সবাই একসাথে ড্রয়িং রুমে বসে কালকের বিয়ের পরিকল্পনা করছে। গ্রাম থেকেও সকল আত্মীয় সকালেই চলে আসবে। সানজিদা লিটন সাহেবকে খোঁচানোর জন্য বললেন, ‘লিটু মামারা আসছেনতো তারেকের আব্বু।’ এরকম একটা মুহূর্তে এরকম একটা বিব্রতকর প্রশ্ন এমন আপন জনের কাছ থেকে আসবে তা তিনি ভাবতেও পারেননি।

সবার অলক্ষে লিটন সাহেবের এ পরিবর্তন ধরে ফেলল তার বড় বউ তামান্না আফরোজ। শ্বাশুড়ি তার শ্বশুরকে কেন খোটা দিল তা রোঝার জন্য সে বলল, মা আপনি কি বাবাকে কোন বিষয়ের খোটা দিলেন। পয়েন্ট অব অর্ডারে ধরে ফেলল রিদিতা। ‘গুড পয়েন্ট ভাবী এ বিষয়টা আগে একদিন খেয়াল করেছি। মা তুমি লিটু নানুর প্রসঙ্গ তুলে মাঝে মাঝেই বাবাকে বিব্রত কর কারণটা কি বলত আজ।’ সাথেই বলল রিদিতা। রাইসাও সায় দিল। তারেক আর রতন একটু ইতস্তত।

তামান্নাই বলল, ‘আজ বাবাকে তারেকের মতই বিব্রত মনে হল। তারেককে চাঁদের ইংরেজি জিজ্ঞেস করলে যেমন বিব্রত হয় বাবাও আজ সেরকমই।’ রাইসা বলল, ‘কি বল ভাবী তুমি এখনও সেই মুন মেয়েটার কথা মনে রেখেছ। আহা ভাইয়া কত চেষ্টা করেছিল কিন্তু কাজ হয়নি। শেষে বাবা-মা তোমাকে পছন্দ করলেন। যদিও তোমার কাছে মুন চাঁদের কলঙ্কই। কিন্তু!’

মহাবিব্রত তারেক। হালকা খুশি লিটন সাহেব যা প্রকাশ করছেন না। কারণ আপনি বাঁচলে বাপের নাম। নির্লিপ্ত রতন ভাবছে বিয়েটা আগে হয়ে গেলে আজ এখানে সঞ্চিতাও থাকত। হঠাৎ বোমা ফাটালেন সানজিদা বললেন, ‘বাপ ছেলের কাহিনী কি ব্যতিক্রম মনে করেছ। যেমন বাপ তেমনি তার বড় ছেলে।’

আবহাওয়া প্রতিকুল দেখে লিটন সাহেব হাক ছেড়ে বললেন, ‘এই রুনু সকালে দেখলাম আমার রিডিংরুমটা পরিস্কার করিসনি। সারাদিন করিসটা কি বলতে বলতে উঠে গেলেন রিডিং রুমের দিকে।’ বেঁচে গেল তারেক। এবার বিজ্ঞের মত প্রশ্ন করল রতন, ‘মা বলত ঘটনাটা কি ?’

সানজিদা বললেন, ‘মামী আর তোর বাবা একই স্কুলে পড়তেন। রসায়নটা ওখানেই। তার কারণেই তোর বাবার পরিবার গ্রাম ছেড়ে ঢাকায় চলে এসেছে। বিস্তারিত বলে সানজিদা বললেন,তবে মামী এখনও এর কিছুই জানেননা।’ সবাই উচ্চস্বরে হাসতে আরম্ভ করল। লিটন সাহেব কান পেতে সে হাসির শব্দ শুনলেন তার রিডিং রুম থেকেই।

চলবে.........

বিষয়: সাহিত্য

১১৪৬ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

159746
০৬ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১০:১৫
সুশীল লিখেছেন : ভালো লাগলো পিলাচ
159756
০৬ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১০:২৩
আলোর আভা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ ।
167826
২৬ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ১২:০২
মিশেল ওবামা বলছি লিখেছেন : ভালো লাগলো... বাকী পর্বগুলো কবে আসছে?
221588
১৪ মে ২০১৪ রাত ১০:০৪
সূর্যের পাশে হারিকেন লিখেছেন : ওররেররররর...... এতো দেখি বিরাট প্রেমসিরিজ। এত্তদিন দেখিনাই কেনু? ......... পড়া শুরু করবো ভাবতিছি.... Give Up কিন্তু ভয়ও লাগে... প্রেম বিষয়কতো Day Dreaming যদি আমাকে পেয়ে বসে Yahoo! Fighter Love Struck
১৫ মে ২০১৪ সকাল ১১:০৬
169179
প্রগতিশীল লিখেছেন : আপনি পড়লে এটা আরো লিখব...
১৫ মে ২০১৪ দুপুর ০১:১৫
169209
সূর্যের পাশে হারিকেন লিখেছেন : সত্যিই? আপনি আমার কথা ভেবেছেন দেখে খুশী হলুমHappy লিখতে থাকুন, ইনশাআল্লাহ্ সময় করে পড়বো যদি আমার রুচিমতো হয়।Good Luck @প্রগতি
299870
০৯ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ০১:২৩
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : ভালো লাগলো
১০ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ১০:১৬
242869
প্রগতিশীল লিখেছেন : আপু এমন পাঠক পেয়ে আমিতো অবাক...

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File