প্রেম যেন এমনই হয়-২৬
লিখেছেন লিখেছেন প্রগতিশীল ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১১:৫২:১৬ রাত
জীবনের বড় বড় দুঃখগুলো সুখের আলতো ছোঁয়ায় দূর হয়ে যায়। বেদনার অসীম মলিনতা সুখের সুক্ষ অনুভূতিতেই সহজেই সরে যায়। এইতো শাশ্বত জীবন বয়ে চলে প্রবাহিনী নদীর মতন শুধু তার পথ পরিবর্তন হয় মাত্র। তবে পথ পরিবর্তন বললে অনেকটা ভুলই হবে জীবন তার চলার পথ নিজেই তৈরী করে নেয়।
রিদিতাকে রুমে ডেকে পাঠালেন রতন সাহেব। রিদিতা খুশি মনে বাবার কাছে গেল। ভাবল ভাইয়ের বিয়ে বাবা নিশ্চয়ই তাকে কোন বাড়তি কাজ দেবেন। রুমে গিয়ে বাবা মা দুজনকেই মনমরা অবস্থায় বসে থাকতে দেখল সে। প্রশ্ন করল বিয়ের সময়তো শতশত সমস্যা বাঁধে। এরকম কোন সমস্যা হল কি না ! লিটন সাহেব বললেন, ‘আমার পাশে এসে বসতো মামণি।’
রিদিতা হালকা উদ্বিগ্নতা নিয়ে বাবার পাশে গিয়ে বসল। লিটন সাহেব মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এসময় সানজিদাই প্রশ্ন করলেন, মা তোকে আমরা বঞ্চিত করছি না তো ? রিদিতা বলল, কি সব কথা বলছ কিসের আবার বঞ্চনা ! লিটন সাহেব বলল, ঘরে বউ আনার আগে তোকে একটা বরের হাতে তুলে দেয়া কি আমাদের উচিত ছিল না !
হাসল রিদিতা হেসেই বলল, ‘বিশ্ব যখন এগিয়ে চলেছে তোমরা তখন পিছে বিবি তালাকের ফতোয়া খুঁজছ কোরআন হাদীস চষে।’ তোমাদেরও একই অবস্থা। এখন কি কেউ এসব দেখে। আর আমিতো চিন্তাই করিনি। বয়স তোমাদের যথেষ্ট হল বুঝলাম। সানজিদা বিছানা থেকে উঠতে উঠতে বলছিলেন, আমিও এরকমই চিন্তা করেছিলাম কিন্তু তোর বাবা ! এই বলে তিনি বের হয়ে গেলেন ঘর থেকে।
সানজিদা চলে যেতেই লিটন সাহেব রিদিতাকে বললেন, আচ্ছা ওই ছেলেটার কি অবস্থা ? হাসল রিদিতা। তার এ ব্যপারটা বাবা ছাড়া আর কেউ জানে না। রতনের ঘটনা যেমন কেবল তার মা জানত তেমনি রিদিতার ঘটনাও কেবলই তার বাবাই জানে। নিজের কাছে নিজের এ অতি আপন পরিবারকে অদ্ভুদ মনে হল।
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে সে বলল, সে আমাকে মোটেই ভালবাসেনি বাবা। আজ সে ঘর বেঁধেছে আমারই আপন বান্ধবীর সাথে। যাকে কিনা সে বোন বলে ডাকত ! আসলে বাবা সম্পর্ক একটা গড়া অনেক সহজ কিন্তু রক্ষা করাটা অনেক কঠিন। সে আমাকে শেষে এসে বলেছিল সে নাকি আমাকে ভালবেসেছিল কিন্তু বুঝতে পারেনি। তাই সম্পর্কটা নাকি তার জন্য নিয়মিত করা একটা কঠিন ব্যপার। কিন্তু পরে বুঝলাম আমার অতি আপন বান্ধবীকে সে বেশ বুঝেছে আর এখন দুজনে ভালই আছে।
লিটন সাহেব বললেন, দুঃখ পাসনা মা। যে সব ঠিক হয়ে যাবে তুই দেখে নিস। আর হয়তবা আপাত দৃষ্টিতে যা ভাল মনে হয় তার চেয়ে আরও বড় ভাল হল যে ভালটা দৃষ্টির অগোচরে থাকে যাকে ধরা যায়না ছোঁয়া যায়না। কিন্তু সে মহাসুখ জীবনের জন্যই বরাদ্দ থাকে।
রিদিতা আনত ভঙ্গিতে বাবার কথাগুলোকে আশীর্বাদ হিসেবে নিল। লিটন সাহেব বলল, যা তোর মা সহ অনেক কিছু তোকে করতে হবে। অনেক কাজ অনেক কেনাকাটা ! যা লিস্ট কর। রিদিতা হাসিমুখে বের হয়ে গেল।
চলবে...
বিষয়: সাহিত্য
১২৯০ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন