প্রেম যেন এমনই হয়-২৩
লিখেছেন লিখেছেন প্রগতিশীল ২২ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১২:৩৪:২৯ রাত
সন্ধায় সানজিদা এল রতনের রুমে। রতন মাকে কাছে পেয়ে জড়িয়ে ধরে কাদল অনেকক্ষণ। সানজিদা হাসতে হাসতে বললেন, ‘কিরে শ্বশুড় বাড়িতে খেয়ে এসে কেউ কাঁদে ? আর বউমাকে তো আমরা আমাদের এখানে নিয়ে আসব তুইতো আর ওখানে যাবি না।’ রতন হাসি কান্না মিশ্রিত অবস্থায় বলল, ‘সমস্যা তো ওখানেই ওর বাবার কথা হল বাবা তোমাকে যতটা ভালবাসে সেভাবে ঊনার মেয়েকে ভালবাসতে হবে। বলত মা এও কি সম্ভব ?’ সানজিদা হাসতে বলল, ‘ তোর বাবার থেকেওতো তুই আমার বউমাকে বেশি ভালবাসিস। তোর বাবাতো আর আমার জন্য কোনদিন জোরে জোরে কাঁদেনিরে।’ বলেই তিনি চলে গেলেন।
রতন লজ্জায় আর কথা বলতে পারল না। কান্না বোধহয় জলীয় বাষ্পের মাধ্যমে হাওয়ায় মিলিয়ে গেল। সন্ধার একটু পরেই রতন বাইরে গিয়ে একটা নতুন মোডেম নিয়ে এল হাই স্পিডের। আগেরটার কোন তোয়ক্কাই করল না। কারণ রাতে কথা বলতে হবে সঞ্চিতার সাথে।
আজও সন্ধা শেষে রাত হল কিন্তু সেটা অনেক দেরিতে। রতন ভাবল প্রতিদিন ছয়টার পরে ধীরে ধীরে নয়টা বেজে যায়। কিন্তু আজ! নয়টা বাজার দিকে প্রায় আঠার বার নজর দিল সে। কিন্তু সময় না ঘড়ি কে যে আজ তার সাথে রসিকতা করছে তা সে একটুও বুঝতে পারে না। প্রতীক্ষার প্রহর কাটে না তা সে জানতই। কিন্তু আজতো এমন কিছু না! মনে মনে ভাবে আর হাসে। সঞ্চিতার সাথে স্কাইপিতে কথা বলার জন্যইতো সে অপেক্ষা করছে। তাই বুঝি আজ দ্রুত চলে যাওয়া সময় গুলো দীর্ঘ সময় নিয়েও যেতে চাইছে না।
নয়টা শেষে দশটা বাঁজল। পরিবারের সবাইকে নিয়ে রাতের খাবার খেয়ে দ্রুত সে রুমে চলে এল। খাবার টেবিলে সে খেয়ালই করেনি। বাবা-মা থেকে শুরু করে রিদিতা রুনু সবাই ওর দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হেসেছিল। কিন্তু সেদিকে তাকাবার কি তার সময় আছে। রুমে এসেই ল্যাপটপটা অন করে বসে গেল। রসিক সময় এখনও থেমে গেছে। সঞ্চিতাও লাইনে আসে না সময়ও যায় না। ঘামছে রতন। রুমে হঠাৎ রিদিতা এল। সেতো দেখেই অবাক ফুল স্পিডে ফ্যান চলছে। তারপরও রতন দরদর করে ঘামছে। সে রতনকে বলল, ‘কিরে কি হয়েছে তোর ? ঘামছিস কেন শরীর খারাপ ?’
রতন বলল, ‘নারে আপু সঞ্চিতার সাথে স্কাইপিতে আজ কথা বলব। কিন্তু সে কখন থেকে বসে আছি ও আসেই না লাইনে।’ হাসল রিদিতা। বলল, ‘আহারে বেচারা! সময় কাটছে না। বউয়ের সাথে কথা বলবি। তোরতো বিয়ে।’ রতন লাজুক ভঙ্গিতে বললো যাতো।’ সঞ্চিতা যেতে যেতে বলল, ‘রুনুকে দিয়ে চা পাঠিয়ে দিচ্ছি খেয়ে একটু জিরিয়ে নিস। আহ ! মনে হয় নতুন প্রেম করছিস। টেনশন করে আবার অসুস্থ হয়ে পরিস না।’
রতন মনে মনে বলল। হরেক রকম ভালবাসা। সঞ্চিতারটাকে সে কোন না কোন পাল্লায় হয়তবা পরিমাপ করতে পারবে। কিন্তু এ বোনটির ভালবাসা। এতো অফুরন্ত এক উৎস থেকে উৎসারিত ভালবাসা। নিখাদ একেবারে সোনার চেয়েও খাঁটি।
চলবে......
বিষয়: সাহিত্য
১১৯১ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন