প্রেম যেন এমনই হয়-২০
লিখেছেন লিখেছেন প্রগতিশীল ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১১:০২:২৫ রাত
সকাল থেকেই ব্যস্ত রতন। রিদিতার কাছ থেকে টাকা নিয়েই সে তার প্রয়োজনীয় কাজ গুলো সেরে নিয়েছে। এখন ভয়ে তার বুক কাঁপছে কিভাবে সে সঞ্চিতাদের বাসায় যাবে ? কী কথা বলবে তাদের সাথে ? ইন্টারভিউ দিতে যাওয়া কোন চাকরী প্রত্যাশী যুবকও বোধহয় এত দুশ্চিন্তা গ্রস্থ হয় না। তারপরও যাওয়ার জন্য মনে মনে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করল।
কতদিন সে সঞ্চিতাকে দেখে না। সেই প্রেয়সীর প্রিয় মুখটা আজ তার বার বার মনে পরছে। ভালবাসার বন্ধন সে তো এত শিথিল নয়, যা ক্ষণিকের বাতাসে ভেঙ্গে যাবে। চুড়মার হয়ে যাওয়া কাঁচের টুকরা নয় তার ভালবাসা। চঞ্চল সঞ্চিতা কতদিন তার সাথে কথা বলে না। যে কথাগুলো সে বলত হৃদয় দিয়ে তা অনুভব করতো রতন। আজ তাকে একটু দেখতে তার সাথে একটুখানি কথা বলতে বড় ইচ্ছে করছে তার।
তাই আর কোন কিছু না ভেবে চলে গেল রতন সঞ্চিতাদের বাসায়। বাসায় ঢোকার সমস্ত প্রক্রিয়া জলদি শেষ করে সে গিয়েই কলিং বেল চাপল দরজার। একটু দেরিতেই দরজা খুলল। একজন বৃদ্ধা দরজা খুলেই রতনকে দেখে হাসল। রতন সালাম দিয়েই বলল আমি সঞ্চিতার বন্ধু। আর কথা শেষ করতে পারল না সে। বৃদ্ধা হেসে হেসেই বলল, ‘আর আমি ওর বান্ধবী। তুমি ওর সাথে দেখা করবে ?’
রতন প্রায় পাগলের মত হয়ে গেল সঞ্চিতার সাথে দেখা করার জন্য। কিন্তু সে নিজেকে হালকা করে নিয়ে বলল, ‘ও কি বাসায় আছে দাদী ?’ সঞ্চিতার দাদী আবারও মিষ্টি একটা হাসি দিল। আসলে প্রবীণদের হাসি যে কতটা সুন্দর তা ব্যাখ্যা করা যাবে না। তবে প্রবীণদের হাসি মনকে প্রফুল্ল করে একথা একশ ভাগ সত্য। দাদী বলল, ‘এস ভাই আমার সাথে এস।’ রতন পাগলের মত দাদীর পিছনে হাটতে আরম্ভ করল।
রতন আগেও এসেছিল তাই তার বুঝতে অসুবিধা হল না তারা যেদিকে যাচ্ছে সেটা সঞ্চিতারই রুম। যাহোক সে যখন এসেছিল তখন বাসায় কেউ ছিল না। আর এসব না ভেবে সে আনন্দে বাকবাকুম করতে লাগল মনে মনে। আজ সঞ্চিতার সাথে দেখা হবে।
দরজার কাছে আসতেই দাদী বলল, ‘যাও ভিতরে যাও। আমি একটু পরেই আসছি। ’ রতন উদ্বিগ্নতা নিয়েই ঢুকল সঞ্চিতার রুমে। ঢুকেই দেখল একেবারে অন্ধকার রুম। সে সঞ্চিতাকে নাম ধরে ডাকল কয়েকবার কিন্তু কোন জবাবই পেল না। এরপর সে হতাশ হয়ে ভাবতে লাগল আসলে দাদী বোধহয় মজা করেছে তার সাথে। কিন্তু একটু পরেই অন্ধকারেই সে শুনতে পেল ‘কেমন আছ তুমি ?’ বলেই কানতে শুরু করল সঞ্চিতা। রতনও কাঁদ কাঁদ গলায় বলল, ‘ তোমাকে ছাড়া ভাল থাকি কি করে বলত ? কতদিন তোমাকে দেখিনা তোমার সাথে কথা বলিনা। তোমাকে ছাড়া আজ আমি বড় অসহায় হয়ে গেছি। আজ আর কিছুই বলব না একটু সামনে এসে কথা বল।’
সঞ্চিতা বলল, ‘ বোকামি না করে রুমের লাইটটা জ্বালিয়ে দাও।’ রতন তাড়াতাড়ি করে লাইটটা জ্বালিয়ে দিয়ে দেখল রুমে কেউ নেই।’ সে কিছু বোঝার আগেই আবারও সঞ্চিতার গলা শুনতে পেল। এবার সে দেখল আসল ঘটনা। বিছানায় থাকা ল্যাপটপ থেকেই ভেসে আসছিল সঞ্চিতার আওয়াজ। আর সত্যিই সে কথা বলছে সেই কানাডা থেকে স্কাইপিতে।
চলবে কি ?..............
বিষয়: সাহিত্য
১১৩৪ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন