প্রেম যেন এমনই হয়-১৮
লিখেছেন লিখেছেন প্রগতিশীল ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৩:৪৫:১৩ রাত
সুন্দর দিনগুলি আনন্দেই কেটে যায়। রতনেরও দিনরাত চলছে সুন্দর সুশৃঙ্খল ভাবে। এজন্য রিদিতা তাকে কম কথা শোনায় না। মাঝে মাঝে দাঁত হালকা একটু চেপেই নজরুলের অনুকরণ করে বলে ‘পৃথিবীতে যাহা কিছু চির মহান ও কল্যাণকর অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর।’ তবে রতনও কোন তোয়াক্কা না করে বেসুরো গলায় মাঝে মাঝে বলে ‘ সে যে কেন আসে না কিছু ভাল লাগে না এবার আসুক তারে নিয়ে শত্রু তাড়াব।’
রিদিতা ভেংচি কেটে চলে যায় সেখান থেকে। তবে এভাবে ঝগড়া করতে গিয়ে দুজনেই পড়েছে বিপদে। আসলে সাহিত্যের উত্তম জবাব সাহিত্যে, গান আর কবিতার জবাবতো গান বা কবিতা দিয়েই দিতে হয়। তাই দুজনকেই সচেতন থাকতে হয় পড়তে হয় জানতে হয়।
এমনিভাবে একটি বছর কেটে যায় দেখতে দেখতেই। রতন সঞ্চিতার জন্য প্রায়ই উদাস হয়ে যায়। একটি বছর চলে গেল তারপরও যোগাযোগ করছে না সঞ্চিতা। অস্থিরতা বেড়ে যায় তার অনেক বেশি। রিদিতা আজ একটা মজার খাবার রান্না করে নিয়ে আসে। রতনের সবচেয়ে প্রিয় খাবার রিদিতার হাতের চিকেন স্যুপ। সত্যিই রিদিতার স্যুপটা অসাধারণ হয়। আর সন্ধে বেলা তা পেলে তো মজাই আলাদা।
তবে আজ রিদিতা লক্ষ্য করল রতন একটু আনমনা। সে তাই তেমন কিছু না বলে চলে গেল। রতন স্যুপ শেষ করার অনেকক্ষণ পরে সে চা নিয়ে এল। রতনকে এককাপ দিয়ে নিজে এককাপ নিল। এরপর বলল, ‘কিরে তোর কি হয়েছে ?’ রতন সরাসরিই বলল, ‘ দেখতো আপু সঞ্চিতা সেই গেল আর এখন পর্যন্ত তার কোন খবর নেই।’ রিদিতা উঠে একটু আস্তেই একটা চড় লাগিয়ে দিল রতনকে। রতন গালে হাত দিতে দিতে বলল, ‘কিরে আমার আবেগঘন তথা ইমোশনাল সিনারির মধ্যে তুই আবার ভিলেন হচ্ছিস কেন ?’
রিদিতা বলল, ‘বীরপুরুষ বসে বসে আঙ্গুল চুষছে আর দুশ্চিন্তা করছে। আরে গাঁধা এখানে বসে বসে হার্ট এ্যাটাক না করে ওদের বাসা গেলেও তো পারিস।’ রতন আরেকটা গাল এগিয়ে দিয়ে বলল, ‘আরেকটা লাগিয়ে দেত। আহা! একথা আগে ভাবলাম না কেন তাহলে তো আর একটি বছর এত কষ্ট করতে হত না।’
পরক্ষণেই আবার বলল, ‘কাল সকালে তুই আমাকে কিছু টাকা দিস আর আমি চলে যাব।’ রিদিতা বলল, ‘একটা ভাল পরামর্শ দিয়ে বিপদেই না পড়লাম। আর টাকা দিয়ে কি করবি যখন তোর শ্বশুর বাড়ি হবে তখন না হয় খালি হাতে যাবি না। এখন এমনিতেই চলে যাস।’
রতন বলল, ‘ কিছুই নিয়ে যাব না তবে পকেটে টাকা নেই, হোন্ডায় তেল নেই আর দেখতেই তো পাচ্ছিস মুখে খোচা খোচা দাড়ির অভাব নেই।’ রিদিতা বলল, ‘ঠিক আছে ঠিক আছে কাল সকালে নিস।’ রতন বলল, ‘আচ্ছা আপু বলতো মানুষ এত ভাল হয় কেন ? রিদিতা না বুঝেই বলল, ‘ ভাল মানুষ আবার কোথায় পেলি ?’ রতন বলল, ‘ওই দেখ বলে সে আয়নার দিকে তাকাতে বলল।’
রিদিতা আয়নার দিকে তাকিয়ে নিজেকে দেখতে পেল। ভাইয়ের চালাকি বুঝতে পারল। এরপর বলল, ‘যতই পাম দে কোন লাভ নেই।’ বলে সে ট্রেতে সবকিছু নিয়ে চলে গেল।
চলবে............
বিষয়: সাহিত্য
১২৪১ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন