প্রেম যেন এমনই হয়-১৬
লিখেছেন লিখেছেন প্রগতিশীল ১১ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১১:২৪:০৩ রাত
চিঠিটা পড়ে হাসতে হাসতে রিদিতা ছুটে গেল খাবার টেবিলের দিকে। সে সোজা তার মাকে গিয়ে বলল, ‘মা বউমা! একেবারে পেয়ে গেলে না দিয়ে দিলে তোমার ছেলেকে বিয়ে। দেখেছ তোমার বউমাকে ? এক বারও বাবাকে আমাকে কাউকে বললে না। তুমি আমাদের সাথে এতটুকুও শেয়ার করলে না।’ সানজিদা ওর দিকে তাকিয়ে রইল।
লিটন সাহেব রিদিতার দিকে রাগের ভঙ্গিমায় তাকালো। এরপর বলল ‘তুই হঠাৎ কোথা থেকে এত তথ্য নিয়ে এলি ? আজ প্রথম এবং শেষবার তোদের সবাইকে বলে দেই। কোনদিন তোর মায়ের সাথে উচু গলায় কথা বলবি না।’ রিদিতা বাবাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলল, ‘বাবা রাগ করেছ আর এরকম করব না। তবে এই নাও তোমার বউমার চিঠি।’
লিটন সাহেব পুরো চিঠিটা পড়ে নিল। এরপর সানজিদাকে বলল, ‘তুমি এটা একটা কাজ করেছ। মামণিটাকে তুমি বউ করে নিয়ে এলে না কেন। আমি কি তোমাকে কিছু বলতাম ?’ রতন রিদিতা দুজনেই বোকা হয়ে গেল। রিদিতা একেবারে ছয় মারতে গিয়ে আউট। আর রতনতো লজ্জায় লাল। আজ তার ভালবাসার ঝুলি বাবার সামনে খুলে গেছে!
সানজিদা বলল, ‘ওদের মেলামেশার ধরণটা আমার পছন্দ হয়নি। আর বয়সকালে এরকম সবাই করে। কিন্তু ভুল পথে হেটেও ওরা যে খারাপ না হয়ে ভালর দিকে আসবে ভালটা বেছে নেব এটা ভাবিনি। যা হোক তোমার ছেলের বউ সিদ্ধান্তটা ভালই নিয়েছে। ওরা ওদের ভাল ভাল করেই বুঝেছে। আর তোমার এই ছেলে তো!
লিটন সাহেব বললেন ‘হ্যা আমার ছেলেইতো নাহলে নিজের ভুল নিজে বুঝতে পারে। দেখো তুমি ওদের আমি বিয়ে দেব অনেক ধুমধাম করে।’ ‘তোমার লিটু মামার মত ?’ বললেন সানজিদা। কাশতে লাগলেন লিটন সাহেব রিদিতা তাড়াতাড়ি পানি খেতে দিলেন।
খেয়ে উঠে চলে গেলেন লিটন সাহেব। রিদিতা দেখল মা মিটমিটিয়ে হাসছে। সে রতনকে বলল , ‘এই যে বর আপনি উঠে যান।’ রতন উঠে সোজা ঘরে চলে গেল। চলে গেল রিদিতাও থাকল শুধু রুনু আর সানজিদা।
একটা গরম পরিবেশ নরম হয়ে গেল। ঠান্ডা হয়ে গেল সব উত্তাপ। যে পরিবারের শান্তি একটু আগেই শেষ হয়ে যাচ্ছিল বলে মনে হয়েছিল। তা এখন সুখের স্বর্গে পরিণত হয়ে গেল। এসব ভাবছিলেন আর সুখের কান্না কাঁদছিলেন সানজিদা। লিটন সাহেব শাসন করলে তার মন পরিতৃপ্ত হয়ে যায়। স্নেহের শাসন আসলেই মধুর।
রুনু সানজিদাকে কানতে দেখে বলল, ‘আম্মা আপনি কাঁদছেন ?’ সানজিদা বলল ‘ সুখের কান্না আর দুখের কান্না এক নারে মা। এ আমার সুখের অশ্রু। এই জীবন সূর্য যখন অস্তমিত হয়ে আসছে। তখনও তোর আব্বার ভালবাসা আমার প্রতি এতটুকুও কমেনি। সূর্যাস্তের এ ভালবাসাই আমার চোখ দিয়ে আনন্দের অশ্রু বের করছে।
চলবে........
বিষয়: সাহিত্য
১০০৩ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন