প্রেম যেন এমনই হয়-১৫
লিখেছেন লিখেছেন প্রগতিশীল ০৯ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১১:৩০:২০ রাত
মা আর ছেলেকে খাবার টেবিলে আসতে দেখে সবাই অবাক। লিটন সাহেব একবার ওদিকে দেখে মাথা নীচু করে খেতে লাগলেন। রিদিতা ও রুনু মুখ হা করে দেখতে লাগল। সানজিদা এসে এমনভাব করল যে কিছুই হয়নি। তিনি বললেন ‘এই রিদিতা রুনু কি হল তোদের তাড়াতাড়ি খা।’ মা ও ছেলে কোন যুক্তিতে বা কোন চুক্তিতে ঐক্যমতে এসেছে তা কেউ বুঝল না।
রিদিতা একটি মাছের মাথা মায়ের দিকে এগিয়ে দিল। বলল, ‘মা নাও তোমার ছেলেকে রুই মাছের মাথা খাওয়াও। মাথার অসুক কিনা!’ সানজিদা বলল, ‘খাওয়ার সময় কানের কাছে প্যান প্যান করিস না। নিজে কোনদিন তো ইচ্ছে করে ভাইটিকে বড় কোন মাছের মাথা খেতে দিস নি। আজ আবার তোর কি হল!’ রিদিতা চুপচাপ খেয়ে উঠে গেল। অনেকটা তাড়াতাড়িই শেষ করল সে। কাউকে বুঝতে না দিয়ে সোজা চলে গেল রতনের রুমে।
অনেক খুঁজে পেল চিঠিটা। এ রহস্যের গন্ধই তাকে ঠিকভাবে রাতের খাবারটা খেতে দিল না। চিঠিটা পেয়েই মুচকি একটা হাসি দিয়ে পড়তে শুরু করল।
প্রিয়তম,
শুভেচ্ছা নিও। সাথে ভালবাসা তো রইল। আজ তোমাকে একটা কথা মুখ ফুটে বলতে পারছি না। তাই চিঠি লিখলাম। আমার স্বল্প দিনের জীবনে বুঝ হওয়ার পর অনেকের সাথেই মিশেছি। কিন্তু তোমার কাছে এসেই যেন আমি বাঁধা পড়ে গেলাম। এক অদৃশ্য ভালবাসার বন্ধনে বেঁধে রেখেছ তুমি আমায়। সত্যি বলতে কি দুজন দুজনকে নিয়ে কেবল সময় কাটাতে চেয়েছি আমরা। কিন্তু সে ছলনার অভিনয় কখন যে আমাদের মধ্যে একটা সত্যিকারের হৃদয়ের বন্ধন গড়ে দিয়েছে। তা আমরা দুজনেই বুঝলাম একটা বড় দূর্ঘটনার পর। ঝড়ে গেল একটি জীবন খুলে গেল আমদের নয়ন। অনাকাঙ্খিত এ দূর্ঘটনা বদলে দিল আমাদের। সত্যি বলছি আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি। সত্যি করেই বলছি আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালবাসি।
বেশ কিছুদিন তুমি উদাস হয়ে ছিলে। তখন আমার খুব কষ্ট লেগেছিল জান। নিজেকে বড় অপরাধী মনে হয়েছে তখন। মনে হয়েছে তোমাকে বেশি কাছে এনে আমিই তোমাকে আরও বেশি দূরে ঠেলে দিয়েছি। যা হোক তোমার মায়ের মত মা হয় না। সেদিন যদি জানতাম ঊনি তোমার মা তবে আমার অনেক ভাল লাগত। ওই মুখ খেকে বউমা কথাটা শুনতে ভীষণ ইচ্ছে হচ্ছে জান।
তোমার আর আমার সম্পর্ক এখন এমন জায়গায় চলে এসেছে যে, আমার মনে হয় তুমি আর আমি আরও যত কাছাকাছি থাকব ততই দূর্ঘটনার সম্ভবনা আরও বেশি। আর এখন যদি আমরা বিয়ে করি তাহলে হয়তবা সব এলোমেলো হয়ে যাবে। তাই আমাদের দুজনেরই একটু সময়ের প্রয়োজন। তাই আমিই যেহেতু তোমাকে কাছে এনে ভুল করেছি তাই তোমার থেকে দূরে গিয়ে সে ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করব।
আজ রাত দশটায় আমি কানাডা যাচ্ছি। আমার এক বড়বোন থাকে ওখানে উনি অনেক ভাল। আগে ওনার ওখানে যাব তারপর উনি যেভাবে চলতে বলবেন সেভাবে চলব। ঊনি আমার সব কথা জনেন।
আশাকরি এ বিচ্ছেদের পর আবার মিলিত হব আমরা দুজন। তখন হয়তবা একসাথে কাটবে আমাদের জীবন। ততদিন পর্যন্ত ভাল থেকো।
তোমার
সঞ্চিতা
চলছে......প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও
বিষয়: সাহিত্য
১৩৩১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন