প্রেম যেন এমনই হয়-১০

লিখেছেন লিখেছেন প্রগতিশীল ০২ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১০:৫৮:০২ রাত



বিরহের জন্য যতটানা ব্যথিত তার চেয়েও বেশি বিপাকে লিটন সাহেব। কথা এবং যুক্তিতে পরাজিত হয়ে গোপন কথা ফাঁস করে দিয়েই পরেছেন ঝামেলায়। স্ত্রীর কাছে কোন কিছুই গোপন করতে পারেন না তিনি। কিন্তু কিছু জিনিস সারা জীবন অপ্রকাশিত থাকাই ভাল। তবে লিটন সাহেবের ভালবাসার গল্পকে ঠিক ভালবাসা নয় ভালবাসার প্রথম অনুভূতির গল্প বললে ভুল হবে না।

লিটন সাহেবের স্মৃতিতে যা আছে তার সবটাই তিনি বলে দিয়েছেন সানজিদাকে। যখন সবেমাত্র তিনি নাইনে উঠেছেন তখনকার কাহিনী সেটা। ক্লাস সেভেনের এক মেয়েকে দেখে ভাল লেগেছিল তার। অসাধারণ সুন্দর ছিল মেয়েটি। আনত নয়না, অসাধারণ ভ্রƒ যুগলের অধিকারীনি, সুদীর্ঘ চুল, লম্বা ও সুস্বাস্থ্যের অধিকারীনি ছিল মেয়েটি। কাঁচা সোনা গায়ের রং। মেয়েটিকে একনজর দেখলেই মন পরিতৃপ্ত হয়ে যেত লিটন সাহেবের।

লুকিয়ে লুকিয়ে অনেক দূর থেকে তিনি বাল্যপ্রিয়াকে দেখতেন। একদিন সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে মনের আবেগে একটা চিঠি লিখলেন প্রেমিক লিটন। কিন্তু পৃথিবীতে কে কখন জটিলতা ছাড়া ভালবাসতে পেরেছে। চিঠিটি যেদিন তিনি ছুড়লেন তার নাম না জানা প্রিয়াকে উদ্দেশ্য করে সেই বেঈমান চিঠি গিয়ে পরেছিল স্কুলের বাংলা স্যারের হাতে।

যার জন্য লেখা হয়েছিল চিঠিটা সে কোনদিন দেখলনা। জানলনা সে, কে তার ছবি হৃদয়ের ক্যানভাসে এঁকেছে অতি সযতনে। শুনলনা সে লিটন নামের ছেলেটির ভালবাসার একটি কথাও।

জীবনে শনি হয়ে এলেন বাংলা স্যার। পুরো চিঠিটা তিনি পড়েছিলেন এবং খুব ভালভাবেই বুঝেছিলেন চিঠিটি তার কোন গুণধর ছাত্র লিখেছে।

পরের দিন ক্লাসে ক্লাস টেস্টের খাতা দিচ্ছিলেন স্যার। সবাই একটি খাতা পেলেও লিটন সাহেব পেয়েছিলেন দুটি। লিটন সাহেবের নিজের ভাষ্য মতে, স্যার বললেন ‘ওহ লিটন তোর তো দুটি খাতা। ক্লাসের সবাই একযোগে বলে উঠল দুটি খাতা ! স্যার কষিয়ে একটা বেত্রাঘাত করে বললেন, বদমায়েশ প্রেমে পড়েছে। প্রেম পত্র লেখে তাও আবার ভুলে ভরা। এই যে তোকে মারলাম তা ওই পত্রের জন্য নয় ভুলের জন্য। ছাগল কোথাকার ভালবাসা বানান কেউ ভালবাশা লিখে। আর মেয়েটির চোখ ঠিক তোদের বাড়ির ছোট্ট বাছুরটার মত। এটা একটা উপমা হল।’ ক্লাসের সবাই হা হা হা করে হেসেছিল সেদিন।

সব শুনে সানজিদাও কম হাসেনি। আর বাল্যকালের সেই ভুল অনেক বড় ছিল। তার সেই শিক্ষক এসব ঘটনা বলে দেয় তার বাবাকে। এও বলে দেয় যে লিটনের সম্ভাবনার আকাশে কালো মেঘ দেখা দিয়েছে।

বাবা কিছুই না বলে লিটন সাহেবকে নিয়ে আসেন তার কর্মস্থল ঢাকায়। নাইনে রেজিষ্ট্রেশন ঢাকাতেই হয় এবং এস এস সি পরীক্ষাও তিনি ঢাকা থেকেই দেন। কিছুদিন পরে তার মাও চলে আসেন এবং তারা সপরিবারে বসবাস শুরু করেন ঢাকায়। কিন্তু বিরহের কাহিনী এখানেই শেষ না। লিটন সাহেবের কাটা ঘায়ে অল্প নয় পরে অনেক বেশি লবণ। একেবারেই আয়োডিনমুক্ত।

সামনে আরো মজার কিছু......

বিষয়: সাহিত্য

১৭০৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File