প্রেম যেন এমনই হয়-৯
লিখেছেন লিখেছেন প্রগতিশীল ৩০ নভেম্বর, ২০১৩, ০৫:০১:২৬ বিকাল
রাতের গভীরতা সানজিদাকে আরও বেশি বিষন্ন করে তোলে। ছেলে মেয়েদের কথা ভাবেন। ভাবনা তাকে আরও ব্যথিত করে তোলে। লিটন সাহেব ঘরে আসলেন, ইজি চেয়ারে বসলেন কিন্তু তাতে কোন ভ্রূক্ষেপ নেই সানজিদার। লিটন সাহেব উঠে যান বিছানায় বসে থাকা সানজিদার দিকে।
পাশে বসে জিজ্ঞেস করেন ‘ তুমি কি কোন দুশ্চিন্তায় আছ ? ডাক্টার কি কিছু বলেছে ?’ সানজিদা বলেন, ‘ওহ তুমি কখন এলে ?’ লিটন সাহেব রসিকতা করে বললেন, ‘ যখন তুমি আনমনা হয়ে কপোলে হাত দিয়ে ষোড়শীর মত ভাবছিলে নতুন কাউকে। ঠিক তখনই তোমার ভাবনায় ছেদ ঘটাতে হাজির হয়েছে লিটন নামের এই বুড়োটি। সত্যি বলতে কি আজই প্রথম আমার মনে হয়েছে বয়সটা আমার যথেষ্ঠ হয়েছে একেবারে বুড়ো বলে ডাকার মত।’
সানজিদা কিছুটা উৎফুল্ল হল স্বামীর রসিকতায়। বলল, ‘আসলে কি আর বলব ভালবাসতে মন লাগে আর বয়স সে তো কোন পার্থক্য করেই ঠেকাতে পারে না ভালবাসা। আচ্ছা সত্যি করে বলত বিয়ের আগে ক’টা প্রেম করেছিলে তুমি ?’ লিটন সাহেব অতি উৎসাহী ছাত্রের মত শিক্ষকের সামনে পান্ডিত্য প্রদর্শন করতে গিয়ে ধরা খেয়ে গেলেন। বেত্রাঘাত খেয়ে আমতা আমতা করে যেমন ছাত্র কথা বলে তেমনি বললেন, ‘ এই শেষ বয়সে আর দাম্পত্য কলহ বাড়িয়ে কি লাভ বল থাকনা এসব কথা। সেই সুন্দর সুশ্রী মুখখানি নাইবা খেয়াল করিয়ে দিলে। মনে বড় কষ্ট লাগে গো বড় কষ্ট!
‘ জীবনে যখন ভালবাসা আসে তখনকার অনুভূতি আর ভালবাসা যখন চলে যায় তখনকার স্মৃতি সত্যিই বিষন্ন করে তোলে। দুঃখ পাই আমি এখনও সে ভালবাসার কথা স্মরণ করে।’ বললেন লিটন সাহেব। সানজিদা একটু উদাস হল আগের দুশ্চিন্তা থেকে সরে এলেন তিনি। এবার মনে বাসা বাঁধল নতুন চিন্তা। নিজের জায়গায় অন্য কাউকে সহ্য করা কোন নারীর পক্ষেই সম্ভব না। তার পরেও কৃত্রিম একটা হাসি দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, কে সেই নারী ? যার জন্য লেখক সাহেব এখনও কবিতা লিখতে, ঊপন্যাস রচনা করতে চান।
লিটন সাহেব হাসলেন। বললেন, নামটা তার আমারও অজানা। সানজিদা এবার কোন রকম কৃত্রিমতা ছাড়াই উচ্চস্বরে হেসে বললেন, ‘মানে কী ? নাম জাননা এ কেমন কথা। ভীষণ খুশি হলেন সানজিদা একটু আগে ছেলেকে নিয়ে যে দুশ্চিন্তা করছিলেন স্বামীর কথাবার্তা তাকে সাময়িকভাবে হলেও চিন্তামুক্ত করল। তার বিষন্ন চেহারায় ফুটে উঠল খুশির দিপ্তীময় আভা।
চলবে.......
বিষয়: সাহিত্য
১২৩৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন