প্রেম যেন এমনই হয়-৮
লিখেছেন লিখেছেন প্রগতিশীল ২৮ নভেম্বর, ২০১৩, ১১:৫০:৪৭ সকাল
দিন চলে যায় রাতের আগমন ঘটে। হঠাৎ আলোর ঝলকানিতে পালিয়ে যায় রাতের কালো। অনাবিল ভালবাসার ঐশ্বর্যে গড়ে ওঠা লিটন সাহেব ও সানজিদার পরিবার। দিনাতিপাত করে দুই সুখের পায়রা যারা আজীবন গেয়েছেন ভালবাসার গান। প্রাধান্য দিয়েছেন সব সময় অপরের প্রয়োজনের। স্বামী স্ত্রীর আর স্ত্রী স্বামীর। এরই নাম ভালবাসা এরই নাম প্রেম।
আজ অনেকদিন পর সানজিদা ডাক্টারের কাছে গেলেন। তেমন তীব্র সমস্যা না কিন্তু যেহেতু মহিলাদের সমস্যা তাই লিটন সাহেবের কড়া আদেশ। সানজিদা গেলেন ধানমন্ডির একটি প্রসিদ্ধ হাসপাতালে। সিরিয়াল ফোনেই দিয়েছিলেন। বসে বসে অপেক্ষা করছেন। এসময় পরিচিত একটা কণ্ঠস্বর শুনতে পেলেন। ‘তুমি এরকম একটা বোকামি করবে আমি ভাবতেও পারিনি।’ গলাটি আর কারও নয় রতনের। সাথে একটি মেয়ে দুজনেই গাইনীর চেম্বার থেকে বের হচ্ছে। সানজিদা তার ছেলেকে এই সময়ে এইখানে এভাবে দেখে কিছুটা বিচলিত হলেন। কিন্তু পাল্টে গেছে সময় বদলে গেছে মানুষ এটা তিনি ভালভাবেই বোঝেন।
ছোটরা যখন বড় হয়ে যায় বড় বড় কিছু করে। তা ঘটনাই হোক আর দূর্ঘটনাই হোক বড়দের কিছুই করার থাকে না। সানজিদা সবই বুঝলেন। তিনি রতনকে ডাক দিলেন। রতন চমকে উঠল মাকে এখানে দেখে তাও আবার এ অবস্থায়। রতন কাছে গেল সঞ্চিতাকে নিয়ে। চটপট সঞ্চিতা ঝটপট জিজ্ঞেস করল, ‘কে ইনি ?’ রতন কিছু বলার আগেই তার মা বলল, ‘ আমি সানজিদা রতনের আন্টি আর তুমি ?’ সঞ্চিতা রতনের মায়ের নাম শোনেনি। শুধু মা কথাটিই শুনেছে। সে জানে রতনের কোন খালা বা ফুফু নেই। তাই এ আন্টি যে, তার নিকট আত্মীয় কেউ না সে নিশ্চিত।
তাই কোন সংকোচ ছাড়াই সে বলল, ‘আমি সঞ্চিতা রতনের গার্লফ্রেন্ড।’ রতন মায়ের কাছে ধরা খেয়েছে ঠিকই কিন্তু মায়ের নিজেকে আড়াল করার কারণ তার কাছে অস্পষ্ট। ‘তোরা একটু দাঁড়া আমি আসছি।’ এই বলে সানজিদা ডাক্টারের চেম্বারে ঢুকল এবং বের হল একটু পরে।
রতন এসময়ের মধ্যে কিছুই বলল না সঞ্চিতাকে। শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে রইল। সানজিদা দুজনকে নিয়ে একটা ফাস্টফুডের দোকানে গেলেন। কাউকে কিছু জিজ্ঞেস না করেই অর্ডার দিলেন। সঞ্চিতা একটু অবাক হল কারণ যে জিনিসটির অর্ডার হল তা হল বিফ বার্গার রতনের সবচেয়ে প্রিয়। সানজিদা বলল, ‘ সঞ্চিতা বলত তোমার কি হয়েছে ?’ খোলামেলা সঞ্চিতা বলল, ‘ কি আর বলব আন্টি ভুলের মাঝে আরেক ভুল সব মিলে মহাভুল করেছি।’ রতন মাথা নিচু করে থাকল। সঞ্চিতা তাকে বলল, ‘আন্টির সামনে এরকম ভয় পাওয়ার কি আছে। মনে হয় মায়ের সামনে বসে আছ।’
সানজিদা হাসল। হেসে বলল, ‘একটু বিস্তারিত বলবে।’ সঞ্চিতা বলল ‘আন্টি আমি একটু বেশিই বোধহয় নির্লজ্জ। তাই কিছু মনে করবেন না প্লিজ।’ সানজিদা বলল, ‘ বোকা মেয়ে আমাকে বন্ধুর মত বলতে পার সব। আর আমার সাথে শেয়ার করলে তোমাদের লাভই হবে।’ সঞ্চিতা বলল, ‘আন্টি আমার পেটে বাচ্চা।’
সানজিদা রতনের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘তোমরা এযুগের ছেলে-মেয়ে এরকম বোকামি কিভাবে করলে? কোন পদ্ধতি অবলম্বন করলে না কেন ?’ সঞ্চিতা বলল, ‘আন্টি বিশ্বাস করেন আমরা সকল খারাপ কাজ ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু খারাপ হওয়া যত সহজ ভাল হওয়া তার চেয়েও বেশি কঠিন।’
চলবে........
বিষয়: সাহিত্য
১৩৪৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন