প্রেম যেন এমনই হয়-৭
লিখেছেন লিখেছেন প্রগতিশীল ২৬ নভেম্বর, ২০১৩, ১১:১২:৪৯ রাত
রাত নয়টা আজ একটু অন্ধকার। গতকাল যদিও এত অন্ধকার ছিল না। আজ বিদ্যুৎ না থাকার কারণেই বুঝি এরকম লাগছে। নিজের মোটর সাইকেলটা গ্যারেজে রেখে বাসায় ঢুকল রতন সাথে সঞ্চিতা। নিজের ঘরে গিয়ে ঝটপট বের হল। রিদিতার ঘরের দিকেই যাচ্ছিল সে।
হঠাৎ সামনে রিদিতা। সে কিছু বলার আগেই রিদিতা বলল, ‘আজ কি কিছু এনেছিস মায়ের জন্য।’ রতন বলল, ‘আমার বিছানায় সঞ্চিতা.......।’ রিদিতা তাকে কষিয়ে একটা চড় লাগিয়ে দিয়ে বলল, ‘বাসায় আবার বিছানায় মেয়ে নিয়ে এসেছিস! তোর এত অধঃপতন। রতন পুরোটাই অবাক হল। আর একটা গালে পরার আগেই সে বলল, ‘তুই ভুল বুঝেছিস আমি মায়ের জন্য নজরুলের সঞ্চিতা কিনে এনেছি। আর সেটা বিছানায় ফেলে তোর কাছে এলাম যে, র্যাপিং তো করাই আছে তুই শুধু সুন্দর করে একটু লিখে দিবি। কিন্তু তুই!’
রিদিতা বলল, ‘হায় হায়! ভাই আমার রাগ করিস না। আমি বুঝতে পারিনি।’ রতন বলল, ‘থাক ভুল আমারই আজকের দিনটাই সঞ্চিতা দিবস। তুই আমার কাজটা করে দে। আমি একটু ফ্রেস হয়ে নেই।’ রিদিতা রতনের মাথায় হাত বুলিয়ে দ্রুত ওর রুমে গেল।
রাত তখনও খুব একটা হয় নি। এই ১১ টা হবে। বাবা তার রিডিং রুমে বসে কি যেন করছে। রতন দরজায় টোকা দিয়ে মায়ের কাছে গেল। আসলেই সে অনেকটা ভদ্র হয়ে গেছে। মাকে গিয়ে বলল, ‘মা বাবাতো রিডিং রুমে বসে বসে পড়ছে। তুমি তো আগে অনেক পড়তে। এখন পড় না কেন, কেনই বা বলনা কবিতা ?’ সানজিদা বলল, ‘বস আগে শোন আমার এখন আর পড়া হয় না রে! আর নতুন বই ছাড়া আমার ভাল লাগে না। তোর বাবা বসে বসে লিখছেন। ওহ! তা না ঊনি তো লিখতে শিখছেন। এক লাইনে দশটা বানান ভুল।’ বলে তিনি হাসতে লাগলেন।
রতন বলল, ‘মা তুমি কি আমার উপর সেদিনের জন্য মন খারাপ করেছ ? অনেক কষ্ট পেয়েছ তাই না ?’ সানজিদা বলল, ‘ বোকা এত যদি কষ্ট পাই জীবন চলবে কি করে! আমি মোটেই কষ্ট পাই নি রে। আর রাতের বেলা আমারও ওভাবে বলা ঠিক হয়নি।’ রতন প্যাকেটটা হাতে ধরিয়ে দিল। সানজিদা বলল, ‘কি এটা।’ রতনের জবাব ‘তোমার বাবার জিনিস। আমি গেলাম তুমি দেখ।’ চলে গেল সে।
সানজিদা খুলে দেখল এবং হাসল। এরপর গেল রিডিং রুমে। লেখক সাহেব মনে হয় বানানের বিভ্রাট কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছেন। সানজিদা রিডিং রুমের দরজা লাগিয়ে দিলেন। বিজ্ঞ লেখক টের পেলেন না কিছুই। সানজিদা কেড়ে নিলেন লেখকের কলম। লিটন সাহেব অপরাধীর মত ফিসফিসিয়ে বললেন, ‘আজ কটা ভুল দেখলে বেলী ?’
সানজিদা বললেন, ‘আমার ঘরে রাজনীতি ঢোকালে কেন ? ভাবছ আমি কিছুই বুঝি না।’ লিটন সাহেবকে জড়িয়ে ধরে কানতে লাগলেন তিনি। বললেন, ‘এত বেশি ভালবাস কেন আমাকে ? আর দশটা মেয়ের মতই তো মেয়ে মানুষ আমি। কি বা দিলাম তোমাকে সারাজীবন যে, এত ভালবাস আমাকে। যত দিন যায় কমে না বরং বারে।’
কি বলবেন লিটন সাহেব। শুধু স্ত্রীর চুল ঠিক করে দিচ্ছেন। আবারও সানজিদা বললেন, ‘ তোমাকে আজ শাস্তি পেতেই হবে।’ লিটন সাহেব বললেন, ‘ঠিক আছে গুনছি একশ।’ সানজিদা বললেন, ‘তুমি না আজ আমি।’............
ভালবাসার অভাব নেই যে সংসারে সেটাই সানজিদার সংসার। এ যেন আগের যুগের কোন কল্পকাহিনীর মত কল্পিত এক পরিবার।
চলবে.....
বিষয়: সাহিত্য
১১৬৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন