প্রেম যেন এমনই হয়-৫
লিখেছেন লিখেছেন প্রগতিশীল ২৪ নভেম্বর, ২০১৩, ০৩:০৬:৩৪ রাত
সন্তানেরা যখন বড় হয়। তখন বাবা-মায়েরা তাদের কাজ দেখে মাঝে মাঝে অবাক হয়ে যায়। যে সন্তানদের হাত ধরে হাটতে শিখিয়েছেন তারা। তাদের মধ্যে যখন বুদ্ধিমত্তার লক্ষণ সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে তখন আসলেই বাবা-মার খুশির অন্ত থাকে না। এ খুশিতে তাদের চোখ বেয়ে যে অশ্রু বের হয়ে আসে তাই তো খুশির অশ্রু আনন্দ অশ্রু।
কিন্তু আজ সেই অশ্রুপাত করতে পারলেন না লিটন সাহেব। রিদিতার বুদ্ধিমত্তা তাকে বিমুগ্ধ করেছে। নিজের প্রত্যাশার চাইতেও অনেক অনেক বেশি পেয়েছেন তিনি। সানজিদার ঝলমলে খুশি খুশি চেহারা আজ তাকে অসীম আনন্দ দিয়েছে।
তিনি কেবল মেয়েকে আদর করে বললেন, ‘আমার মামাণি আমাকে আজ অনেক সুন্দর একটা উপহার দিয়েছে। এ মেয়েটা আমার তার মায়ের মতই লক্ষী হয়েছে। যে ঘরেই যাবে মেয়েটা তার চারপাশ পর্যন্ত আলোকিত করবে।’ রিদিতা কেবল বাবাকে একটা চিমটি কেটে দিল। বাবা আর মেয়ের এ দৃশ্য চোখে পড়ল না মায়ের।
সানজিদা বললেন, ‘নাহ্ বুড়ো তুমি ঠিকই হয়েছ। না হলে কেবল একটা পাঞ্জাবী পেয়ে মানুষ এত খুশি হয়।’ লিটন সাহবে বললেন , ‘হ্যা হিংসে তো তোমারই হবে তুমি তো আর কিছু পাওনি। ঠিক আছে কাল আমিই তোমাকে কিছু কিনে দেব।’ কথাটির জবাব শোনার আগেই রিদিতা বলল, ‘আমি যাই আমার কাজ আছে।’ বলেই সে বের হয়ে গেল ঘর থেকে।
মেয়ের চলে যাওয়া পথের দিকে চেয়ে থাকলেন সানজিদা। সে চলে গেলে দরজা লাগিয়ে দিয়ে এলেন স্বামীর কাছে। তিনি বললেন, ‘আমি হিংসে করি তাই না ? আজ তোমাকে রিমান্ডে নেব। এবার গুণতে থাক এক থেকে একশ।’.................
রিদিতা বের হয়ে সোজা গেল রতনের রুমে। রতনকে গিয়ে জিজ্ঞেস করল সে কি কিনেছে। রতন বলল, ‘আপু ওই ওখানে দেখ্।’ রিদিতা একটি লম্বাকৃতির বাক্স দেখল এবং বের করল। সে যা দেখল তাতে তার মেজাজ গরম হয়ে গেল। রতনকে জিজ্ঞেস করল ‘বুদ্ধিটা কি নিজের না কোথাও থেকে আমদানি হয়েছে ?’
রতন জবাব দিল, ‘এ আমার নিজের বুদ্ধি। চমৎকার তাই না ? ’ রিদিতা বলল, ‘আসলেই তোর এ বুদ্ধি দেখে বাবার চমক লেগে যেত।’ একথা বলেই সে জিনিসটা চালিয়ে দিল রতনের গায়ে। রতন হালকা ককিয়ে উঠে বলল, ‘করছ কি এটা বয়স্কদের লাঠি বেশ শক্ত। আর তাই তো মায়ের জন্য কিনেছি। মার একদিন এটা অনেক কাজে লাগবে।’
রিদিতা বলল, ‘ওই সময়টা কি কেউ প্রত্যাশা করতে পারে ? তুই কি এতটুকু বুঝলি না বাবা-মা দুজনেই এটা দেখলে দুঃখ পাবে।’ রতন এবার আসল ব্যপারটা বুঝতে পারল। বলল, ‘তাইতো এভাবে তো ভাবিনি। কেন যে সঞ্চিতার বুদ্ধি ধরলাম! আমারটাই ভাল ছিল মায়ের জন্য একটা সুন্দর বই কিনে আনতাম। তাহলে টাকাও বাঁচত মাও খুশি হত বই পেয়ে।’
‘আসলে তাই ভাল হত। তা এটা আবার কোন সঞ্চিতা ? রবীন্দ্রনাথের সঞ্চয়িতা না নজরুলের সঞ্চিতা। ওহ সেই জিন্স আর গেঞ্জি পরা মেয়েটি ?’ রিদিতা বলল। রতন হ্যা সূচক জবাব দিল। রিদিতা বলল, ‘এসব মেয়ের সাথে কেন চলিস বল তো ? এদের ন্যূনতম শালীনতা বোধ নেই। আর তুইও কম কিসে তুইও তো এরকম আজ একজন তো কাল একজন। শুধু একজনকে নিয়ে ভাবতে পারিস না ?’
রতন তার বোনের সাথে বন্ধুর মত মেশে। সে শুধু বলল, ‘সেই একজন বোধহয় আর এ যুগে পাওয়া যাবে না। যাহোক তুই টাকা দে তো কাল মায়ের জন্য বই কিনব। আর তুই কি দিলি ? রিদিতা বলল, ‘বাবাকে পাঞ্জাবী দিয়েছি তাতেই দুজনেই খুশি হয়েছে।’ ‘আসলেই তোর আইডিয়া চমৎকার’ এই বলে রতন বাইরে গেল।
আশা করছি চালিয়ে যাবো...............
বিষয়: সাহিত্য
১৯৭০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন