প্রেম যেন এমনই হয়-৪
লিখেছেন লিখেছেন প্রগতিশীল ২২ নভেম্বর, ২০১৩, ১১:৫২:২৯ রাত
যত দেরি সকাল শুরু হয় দিনটাও সেদিন যেন ছোট থাকে। লিটন সাহেবেরও তাই মনে হল। আজ সকালটা ছেলে-মেয়েদের কাছে পাওয়ার জন্য দেরি করেই শুরু করেছেন তিনি। কিন্তু তার পরও যদি সন্তানদের হৃদয়ের মণিকোঠায় তাদের মায়ের জন্য ভালবাসা প্রগাঢ় হয় তবেই তার সার্থকতা।
গোধূলির সময় যখন রক্তাক্ত লাল সূর্যটা ডুবে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন ব্যলকনিতে বসে বসে ভাবছেন লিটন সাহেব। পিছন থেকে একজন কেউ তাকে জড়িয়ে ধরল। বুঝতে বাকি রইল না তার সেই ভালবাসার আলিঙ্গন তার জীবন সঙ্গীনি সানজিদার। লিটন সাহেব কিছুই বললেন না শুধু অনুভব করলেন কপোলে একজোড়া অধরের স্পর্শ।
মসজিদের মিনার হতে আজানের সুর ভেসে আসছিল। লিটন সাহেব তার স্ত্রীর হাত দুটো ধরে বললেন, ‘নামাজে যাই আজ একটা বিশেষ দোয়া করতে হবে।’ সানজিদা বললেন, আবার বিয়ে করার জন্য বুঝি! লিটন সাহেব বলল, ‘ সেটা তো অনেক আগে করা উচিত ছিল। কিন্তু কি আর করব একটা বৃত্ত থেকে তো আর বের হতে পারলাম না। তাই কি আর করার বল। আল্লাহর কাছে দোয়া করব আজ কেবল সারাজীবন নয় মরণের পরে যদি কপালে বেহেশত থাকে তবে যেন আমার বেলীকে আমার সাথে রাখে। আর দোজখ হলে যেন আমাকে একা রাখে।
সানজিদা বলল, ‘বুড়ো বয়সে ভালবাসা উথলে উঠছে তাই না ? যাও নামাজে যাও।’ লিটন সাহেব আদরের প্রতিদানে আদর দিয়ে, অযু করে মসজিদে গেলেন। হৃদয়ের এই বন্ধনটুকুই বুঝি বিশ্ব¯্রষ্টা অনেক ভালবাসেন।
সন্ধার পরে আজ দুই ছেলে-মেয়ে খুব তাড়াতাড়িই ফিরল। রিদিতা মাকে গোপনে ডেকে নিল। মাকে বলল, ‘মা আজ বাবার জন্য সুন্দর একটা পাঞ্জাবী কিনেছি দেখত কেমন হল।’ মেয়ে মানুষ আসলেই রহস্যময়ী। সে জানে মাকে কিছু দিলে মার অনুভূতি যা হবে তার থেকে অনেক বেশি হবে বাবাকে দিলে। তার মা বলল, ‘হঠাৎ ?’ রিদিতা জবাব দিল ‘মনটা চাইল তাই। আর মা কাল তুমি কষ্ট পেয়েছ, তাই না ? আমায় ক্ষমা করো মা আমি আর এরকম করব না।’
সানজিদা বললেন, ‘নাহ আসলে তোরা বড় হয়েছিস তো। তাই তো তোদের দেরি হতেই পারে। আমিই এত বেশি প্রশ্ন করা ঠিক করিনি। চল্ তোর বাবাকে পাঞ্জাবীটা দিবি চল।’ রিদিতা মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে বলল, ‘চল’।
চলবে......
বিষয়: সাহিত্য
১২৫৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন