প্রেম যেন এমনই হয়-১
লিখেছেন লিখেছেন প্রগতিশীল ১৭ নভেম্বর, ২০১৩, ০৩:৩৬:২৫ রাত
জীবনের শুরু হয়েছিল যেদিন থেকে সেদিন থেকেই বুঝি সমস্যা নামক একটি গোলাকার বলয় দ্বারা তা আবৃত আছে। ঠিক যেন জীবন বিন্দু তার চারিদিকে সমস্যা নামক একটি বৃত্ত দিয়ে ঘেরা। রোদ, বৃষ্টি ,ঝড়, তুফান সেতো অতি সামান্য। যেন এক দমকা হাওয়া আচমকা একটা আলোড়ন সৃষ্টি করে হঠাৎ চলে যায়।
বিশ্বস্রষ্টা সৃষ্টি করেই মানুষের মধ্যে যে বুদ্ধি ঢুকিয়ে দিয়েছেন (ইন্সটল করে দিয়েছেন) তা দিয়ে সমস্ত সৃষ্টি জগতের মাঝে শ্রেষ্ট হওয়া যায় ঠিকই। কিন্তু প্রসঙ্গটা যখন আসে মানুষে মানুষে। মানুষের মাঝে শ্রেষ্ঠ মানুষ হওয়া কম কথা নয়। এ যে শ্রেষ্ঠ শ্রেষ্ঠ মিলে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই। এ লড়াইয়ে যারা জিতে যায় তারা সফল হয়ে যায়। আবার সফলতার সেই ফসল ঘরে তোলার আগেই হঠাৎ তার পারি জমে পরপারে।
উত্তরাধিকারী-গুণগ্রাহী, শুভাকাঙ্খী-শুভানুধ্যায়ীরা কাঁদে। কেঁদে কেঁদে একসময় ভূলে যায় সবাই। উত্তরবংশ আর স্মরণ রাখতে পারে না পূর্ববংশকে। জীবনের ব্যস্ততাই সবাইকে ভুলিয়ে দেয়। এভাবেই একসময় তাদেরও বংশধর উত্তরবংশ হয়। পৃথিবীটা বোধকরি যারা বেঁচে থাকে তাদের।
জীবন ভেলায় ভাসতে ভাসতেই জীবনাবসান ঘটে মানুষের। আসলে পৃথিবী এক আজব রসিকতা করে সবার সাথেই। সে কারও নয় না যে বেঁচে আছে তার না তার পূর্ববর্তী বা পরবর্তী প্রজন্মের। এই একটা জিনিস বোধকরি ভুল করে সবাই ভুলে যায়। ভুলেই ভেবে বসে অনন্ত জীবনের অধিকারী সে।
কিন্তু শৈশব, কৈশোর, যৌবন পেড়িয়ে যখন বার্ধক্যে আসে তখনই চেতনা ফিরে তার। জীবনের রঙ্গিন স্বপ্নগুলো ফিকে হয়ে আসে। যৌবনে মনের মানুষের প্রত্যাশায় সময় যেমন কাটতেই চায় না। বার্ধক্যে মৃত্যুর প্রত্যাশায় বসে বসে সময় পাড় কত যে কষ্টের তা বলে ব্যাখ্যা করা যায় না।...........................
একথাগুলেই লুকিয়ে লুকিয়ে লিখছিলেন অবসর প্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা সেলিম হোসেন লিটন। সবাই ঊনাকে লিটন সাহেব বলেই জানেন। বার্ধক্যে সময় যখন আর কাটে না তখন আর কি করার বসে বসে লিখছেন। কেবল নামাজ, কুরআন আর তসবি পড়ে তার মনে হয় কবরের পাশেই বসে আছেন তিনি। মৃত্যু আসলেই বুঝি টপ করে ঢুকে পড়বেন কবরে। আর সাহিত্য পড়তেও তার ভাল লাগে না। ভাবছেন জীবনে যা দেখেছি তাই নিয়ে সাহিত্য রচনা করে ফেলি।
কিন্তু ইবাদতে বেশ মনোযোগী হয়েছেন তিনি। প্রতি ওয়াক্ত নামাজে মসজিদে যান। আসলে শেষ বয়সেই স্রষ্টাকে যেন সবচেয়ে আপন করে পাওয়ার চেষ্টা সবাই করে।
এসব চিন্তা করছিলেন আর লিখছিলেন বেশ মনোযোগ দিয়েই। একটা হাতের স্পর্শ অনুভব করলেন। চিরচেনা চির আপন হাতটি। তিনি বললেন, ‘কে সানজিদা ? কখন এলে ?’ ‘ওই যে দ্বিতীয় লাইনে যখন একাধারে তিনটি বানান ভুল করলে তখনিতো এসেছি।’ বললেন সানজিদা আক্তার বেলী। লিটন সাহেবের জীবন সঙ্গীনি।
এই ভয়েই তিনি লুকিয়ে লুকিয়ে লিখছিলেন। যেন তার ভুল ধরার সেই মানুষটি ভুল করেও ভুল ধরতে না পারে। পারলেন না। যেখানেই বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধা হয়। আর তাই হল একেবারে তিন তিনটে বানান ভুল ধরে ফেললেন তার স্ত্রী সানজিদা।
চলবে..................
বিষয়: সাহিত্য
১২৭৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন