আন্দাজে বায়ানে গালিব

লিখেছেন লিখেছেন কাশ ০৩ জুন, ২০১৩, ০৮:৩২:৫২ সকাল

উর্দু কবি গালিবের পুরোনাম ছিল আসাদুল্লাহ খান গালিব। সম্রাট শাহ-আলমের রাজত্বকালে, ১৭৯৪ খ্রিস্টাব্দের ২৪ ডিসেম্বর তিনি আগ্রায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে শাহ-আলমের মৃত্যুর পর মহম্মদ দ্বিতীয় আকবর তার স্থলাভিষিক্ত হন। ৩১ ব‍ছর পর, গালিবের বয়স যখন ৪৩, মহম্মদ আকবর মারা যান, এবং শেষ সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর দিল্লীর সিংহাসনে আরোহন করেন। যদিও গালিব অল্প বয়সেই দিল্লীতে আসেন তবুও তিনি আগের দু'জন সম্রাটের সান্নিধ্যে এসেছিলেন বলে মনে হয় না। অবশ্য বাহাদুর শাহ জাফরের রাজসভায় তিনি সভাকবি রূপে বৃত হন।

ভারতীয় উপমহাদেশের পাঠক সম্প্রদায়ের কাছে গালিবের পরিচয় দেয়া নিষ্প্রয়োজন। এটুকু বললেই যথেষ্ট হবে যে, গালিবের 'দেওয়ান' (কাব্যমালা) একটি সর্বজনবিদিত কাব্যগ্রন্থ এবং উর্দু সাহিত্যের অমূল্য সম্পদরূপে সমাদৃত।

গালিব, তাঁর নিজস্ব বর্ণনানুসারে তিনজন কবির দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। এঁরা হলেন,-বেদিল, উরফী এবং জহুরী।

গালিবের বাচনভঙ্গী যাদুময়ভাবে সুক্ষ্ম এবং তার অনুরণন বহুক্ষন ধরে হৃদয়ের তন্ত্রীতে তন্ত্রীতে বেজে চলে; আর তাই, তাঁর কবিতাগুলির গূঢ় মর্মার্থ উদ্ধারের এক বিচিত্র নেশা পাঠককে পেয়ে বসে।

১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দের ১৫ ফেব্রুয়ারি গালিব দিল্লীতে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর কবর দিল্লীতে নিজাম উদ্দিন আউলিয়ার মাজারে পথের পাশেই অবস্থিত।

স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল একটি উদাহরণ-

ইশরাতে কাতরাহ হ্যায় দারিয়া মে ফানা হো জানা

দর্দ কা হাদ সে গুজারনা হ্যায় দাওয়া হো জানা।

ইশরাত=আনন্দ, কাতরাহ=জলবিন্দু, ফানা=বিলুপ্ত, দর্দ=ব্যথা, হাদ=সীমা, দাওয়া=ওষুধ।

শিশিরকণা সে হারালে নিজেরে অগাধ সাগর সলিলে

লভে আপনার প্রেম পরিণতি, অনন্তে যায় মিলে !

ব্যথাও তেমনি লঙ্ঘিলে পরে সহ্যের শেষ সীমা

ওষুধ হয়ে সে হানে আপনারে, ব্যথাতুরে দানে বীমা !

The yearning of a drop of water is

To get self lost into the sea;

So pain, as it crosses all bounds,

Turns into a remedy!

বিষয়: বিবিধ

১৭৪২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File