শেষের শুরু

লিখেছেন লিখেছেন কাশ ০৭ এপ্রিল, ২০১৩, ০৮:০১:৫৫ সকাল

''বল, সত্য এসে গেছে মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে, মিথ্যাতো বিলুপ্ত হওয়ারই।''

(বনী ইসরাঈল, ৮১)

মতিঝিল শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের জনসভা যখন চলছিল, অবাক বিস্ময়ে তখন পুরো বিশ্ব ভাবছিল, মরক্কো থেকে মিন্দানাও পর্যন্ত আর কোন দেশের মুসলিম জনতার পক্ষে কি এত সুশৃঙ্খলভাবে জেগে ওঠা সম্ভব? ইদানীংকালের বিশ্বের সব জগরণকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিল বাংলার মুসলিম জনতা।

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাধার পাহাড় ডিঙ্গিয়ে সংখ্যায়, শক্তিতে, শৃঙ্খলায়, দায়িত্বশীলতায় এ জগরণ বিশ্ববিবেকের জন্য এক অতুলনীয় নিদর্শন। এ হলো শতাব্দীর চাবুকের আঘাতে জর্জরিত মুসলিম বাংলার জেগে ওঠা। এটা হুজুগে বাঙ্গালীর হুল্লুড়ে জাগরণ নয়। এর অনুরণন আগামী শতাব্দী পর্যন্ত অনুভূত হবে ইনশাআল্লাহ।

নিকট অতীতে ইরানের ইসলামী বিপ্লবের সথেই এর কিছুটা তুলনা চলে। রেজা শাহ পাহলভীর মাধ্যমে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সি আই এ তেহরানে ঘাঁটি গেড়ে একটি মুসলিম দেশকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে, মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদ, সার্বভৌমত্ত্বই শুধু নয় বরং ঈমান-সম্মানও ছিনিয়ে নিয়েছিল। ইরানকে পরিণত করেছিল নাস্তিক্যের নাট্যশালায়। মদ্যপান ও বেশ্যাবাজীর জন্য কুখ্যাত হয়ে উঠেছিল ইরান।

এক বৃদ্ধ ব্যাঘ্রে খোমেনীর হুঙ্কারে ছিড়ে গিয়েছিল সেই লৌহ শিকল। ইরান আজ সগর্বে সসম্মানে দাঁড়িয়ে আছে মাথা উঁচু করে।

ঠিক একইভাবে বাংলাদেশের উর্বর পলিমাটিতে পরিকল্পিতভাবে যখন বিজাতীয় সংস্কৃতি চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে বছরের পর বছর। দেশের বিবেক বুদ্ধিজীবীরা পরিনত হয়েছে ভাড়াটিয়া বিবৃতিবাজে, আর সুশীল সমাজ পরভোজী সুবিধাবাদী সমাজে।

প্রচারজগত যখন কোন রাখঢাক না রেখেই সাম্রাজ্যবাদীদের পক্ষে রাতকে দিন আর দিনকে রাতে পরিনত করছে।

শিক্ষানীতি হয়েছে নির্লজ্জতার খেলাঘর। উচ্চশিক্ষার কেন্দ্রগুলো হয়েছে দানবের অভয়ারণ্য, নিয়ম-নীতি বিবর্জিত মেধাচুর্ণের কারখানা। সৃষ্টিশীলতা বাদ দিয়ে নাট্যকার, চিত্রকর, আবৃত্তিবাজ আর সঞ্চালকরা রক্ত পিপাসায় কাতর। সব্যসাচী কবি সাহিত্যিকরা মিথ্যার রঙিন চাদরে ঢেকে রেখেছে হাজার বছরের সত্য ইতিহাস।নাস্তিক্যবাদী বাম গোষ্ঠিগুলো নিকৃষ্টতম নোংরামী দিয়ে পূর্ণ করেছে তাদের ব্লগ গুলো।

সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরীদের দরবারী ছলনায় নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে।রয়েল বেঙ্গল টাইগার রয়েছে র এর খাঁচায় বন্দি। প্রশিক্ষিত মাফিয়ার মাধ্যমে অদৃশ্য করা হচ্ছে সম্ভাবনাময় নেতৃত্বকে।

সত্য বলার মত সাহসী মানুষ বাংলার মাটি থেকে বিলুপ্ত। তিরিশ লক্ষ শহীদ আর দুই লক্ষ নারীর সম্ভ্রমহরণের মত মিথ্যা না বলে এদেশে কেউ কথা আরম্ভ করতে পারে না। এমনকি পরিসংখ্যানবিদদের দিয়ে সংখ্যাটি যাচাই করার কথা বলার মতো সাহসও কারো নেই।

এটা মিথ্যার একদিক, অন্যদিক হলো- পশ্চাদপদ পূর্ববাংলার ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ হয়েছিল কিন্তু কোলকাতার বাবু বুদ্ধিজীবিরা তা রদ করতে বাধ্য করে। সেই বুদ্ধিজীবিদের নেতা রবীন্দ্রনাথ আমাদের পূজনীয়, আর এ জনপদের ভাগ্যবিপর্যয়ের গান হল আমাদের জাতীয় সংগীত। সেলুকাস...

অর্থনীতি নিয়ে ক্ষমতাশীনরা প্রকাশ্য লুটপাটের খেলায় মত্ত।মধ্যবিত্ত সমাজ ধ্বংস্বের দ্বারপ্রান্তে। আমাদের অর্ধশিক্ষিত যুবসমাজ বিদেশের মাটিতে দাসত্ব করে আর পরিশ্রমী নারীরা প্রায় বিনামূল্যে পোশাক শিল্পে শ্রম দিয়ে এদেশের অর্থনীতিকে যখন একটি ঈর্ষণীয় অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছিল, তখন বাংলার ইতিহাসের দ্বিতীয় মির জাফর মঈন ইউ এর সহায়তায় তা শুধু স্তব্ধ করেই দেয়া হলো না বরং উল্টো দিকে ঘুরিয়ে দেয়া হলো। ৯০% মুসলিমের দেশে আজ লাঞ্ছিত, নিগৃহীত, নিহত হচ্ছে মুসলমান। মানবাধিকার এখানে দানবের কৌতুক। প্রশাসন ও পুলিশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে সংখ্যালঘু ও নাস্তিক বাম গোষ্ঠিকে। রক্তের হোলি খেলার অনুমোদন পেয়েছে তারা জীবন্ত মমি মখার কাছে। সংখ্যাগুরু পরিণত হয়েছে এদেশে নির্যাতিত সংখ্যালঘুতে। সেলুকাস...

জাতি ও মানচিত্র ছিন্নভিন্ন করে হায়েনার ভোজের প্রস্তুতি শেষ। হতাশার সর্বব্যাপি অন্ধকারে আচ্ছন্ন পুরো জাতি। আত্মবিশ্বাস আর মনোবল শূণ্যের কোঠায়। পরাধীনতার শৃঙ্খল পরার জন্য হাত বাড়িয়ে দেয়া ছাড়া জাতির সম্মুখে আর কোন পথ খোলা নেই।

ঠিক সেই চরম লাঞ্ছনার মূহুর্তে গর্জে উঠলো বৃদ্ধ সিংহ। যার হুঙ্কার দিল্লীর মসনদ কাঁপিয়ে ওয়াশিংটনে আছড়ে পড়েছে।

তারপরও যদি জালিমর হুশ না হয়, না হওয়াটাই স্বাভাবিক, কারন এমনিতেই রং হেডেড, তার উপর চেপেছে সিন্ধাবাদের বাম ভূত। শুধু এটুকুই বলা চলে, এটা হচ্ছে ''শেষের শুরু''।

বিষয়: বিবিধ

১২৫৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File