কোটা সিস্টেমের যাঁতাকলে!!!!!!!

লিখেছেন লিখেছেন দুদিনের নীড় ১১ জুলাই, ২০১৩, ০৪:০৯:২৭ বিকাল

এইবার লাইগা গ্যাছে!!! শেখ হায়েনা(হাসিনা) কি করিয়া সামাল দিবা? শুনেছি(বাস্তবেও দেখেছি) লেবু যত কচলানো হয় ততই নাকি তিতা হয়!!! আসলে মুক্তি যুদ্ধ নিয়ে এতো বাগাড়ম্বর আর বাড়াবাড়ি হাসিনা এবং তার সারথিরা করেছে আর প্রতিনিয়ত করছে এতে করে মানুষের অন্তরে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে যে শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা ছিল আস্তে আস্তে কেন যেন উঠে যাচ্ছে!! বার বার এই স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে টানাটানি করতে করতে এটাকে এমন ভাবে বিতর্কিত করেছে যে এটা এখন ফানি সংলাপ এবং কথার প্রধান বাহন হতে চলেছে!! একদিকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা না খেয়ে বিনা চিকিৎসায় ধুকে ধুকে মৃত্যুর কলে ঢলে পড়ছে অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে অন্য দিকে সেই জাতির বীর সন্তানদের নিয়ে চলছে একের পর এক বাণিজ্য!! কিছু সুবিধাবাদী এবং সুযোগসন্ধানী স্বার্থপর ব্যক্তি সেই সুযোগটা লুফে নিচ্ছে বার বার। আর এই মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে রমরমা বাণিজ্য আগাগোড়া করে আসছে আওয়ামীলীগ! মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের নাম করে এই বাণিজ্য হচ্ছে অতি সহজে। আমার জানা মতে কোন মুক্তিযোদ্ধা মাসে ২০০০+ টাকা, চাল, ডাল এবং সন্তানদের করুনার পাত্র(কোটা সিস্টেম) করার জন্য এই জন্য তারা মুক্তিযুদ্ধে যায় নাই। আওয়ামীলীগ কথায় কথায় বলে তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী দল! তারা মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দেয় ইত্যাদি ইত্যাদি!! কিন্তু আমরা কি একবারেও খোঁজ নিয়ে দেখেছি একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কেন সেই সময় জিবনবাজী রেখে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল? দেশটা কি তারা বিশেষ কোন দলের বা পরিবারের কাছে লীজ দেওয়ার জন্য মুক্তি যুদ্ধ করেছিল? অবশ্যই নায় কারন তারা দেশটাকে অত্যাচার এবং শোষণ মুক্ত করতে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল। সেখানে ছিল না কোন ব্যক্তিগত চাওয়া পাওয়া, তাই যদি হত তাহলে দেশ আর স্বাধীন হওয়া লাগত না। একটা বিশেষ দল কথায় কথায় মুক্তি যুদ্ধের চেতনা বলে বলে চিৎকার করে গলা ফাটাবে অন্যদিকে দেশটাকে জিম্মি করবে নিজেদের পৈতৃক সম্পত্তি মনে করে যা ইচ্ছা করবে। এটা কি আসলেই কোন মুক্তিযোদ্ধার স্বপ্ন ছিল? এখন এই বিষয়টা গভীরভাবে ভাবার এবং চিন্তা করার সময় এসেছে। সীমাহীন দুর্নীতি, টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজী, খুন ধর্ষণের সেঞ্চুরি উদযাপন করে কিভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন হয় এটা আমার বোধগাম্য নয়। যেভাবেই হোক আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে এর মধ্যে অনেকেরই বিতর্কিত ভুমিকা ছিল এতে কোন সন্দেহ নেই। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ঐ বিতর্কিতদের পরাজয় তো হয়েই গেছে। কিন্তু আজ স্বাধীনতার ৪২ বছর পরেও কেন দেশ বিভক্ত থাকবে? কাদের স্বার্থ আছে এই বিভক্তিতে আজ আমাদের গভীরভাবে ভাবার সময় এসেছে। কিভাবে মিলে মিশে এই দেশটা সামনের দিকে এগিয়ে যাবে সেই চিন্তা আমাদের কারো মাথায় নেই!! আমরা আছি শুধু বিভক্তি নিয়ে কে স্বাধীনতা বিরোধী কে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি! এই বিতর্ক করে আমরা একে অন্যের চুল ছেঁড়াছিঁড়ি করছি! একটা স্বাধীন দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ কই আমার বুঝতে শেখার পরে তো কোনদিন কোন পক্ষের মুখে শুনলাম না যে দেশকে আরও ভাগ করতে হবে। আমরা দেখেছি স্বাধীনতার পরে যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে আমাদের দেশতো তারাই পরিচালিত করেছে এবং জনগণ তাদের ভোটের মাধ্যমেই ক্ষমতায় বসিয়েছে। তাহলে এই বিতর্কের ভিত্তিটা কি? আমাদের উপলব্ধি করার সময় এখন এসেছে। হ্যাঁ আমার মূল লেখা হচ্ছে এই কোটার নাম করে বৈষম্য আর নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে। এমন অনেক মুক্তিযোদ্ধা আছে যাদের শুধুমাত্র মুক্তিযোদ্ধা সনদটা হারিয়ে গেছে বলেই তারা এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত! আবার এমন অনেক মুক্তিযোদ্ধা(যদিও তারা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা) নামধারী শুধুমাত্র সুবিধা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন স্থানে তদবির করে সনদ হাতিয়ে নিয়েছে তাদের জন্যই আজ আমাদের মেধাবী ভাইদের এই করুন দশা। একটা দেশে সরকারী চাকুরীতে যদি ৫৬% কোটা থাকে তাহলে সেই দেশ কিভাবে মেধাসম্পদে স্বয়ংসম্পুর্ন হবে সেটা আমার এই ছোট মাথায় ধরে না। মুক্তিযোদ্ধারা অবশ্যই জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান এবং তারা অবশ্যই আমাদের সকলের সম্মান পাওয়ার যোগ্য কিন্তু যারা এই কোটার নাম করে বিভিন্ন সুবিধা নিচ্ছেন তারা কি একবারও ভেবে দেখেছেন যে তারা তাদের নিজেদের অবদানকে কত ছোট করছেন? এবং সরকারও কি একবার ভেবে দেখেছে যে তাদের(মুক্তিযোদ্ধাদের) কত ছোট করছে জাতির সামনে নতুন প্রজন্মের কাছে? আমরা নতুন প্রজন্ম কি ভাববো? মুক্তিযোদ্ধারা স্বার্থপর? তারা নিজেদের স্বার্থের জন্যই দেশ স্বাধীন করেছিল? না অবশ্যই নয়। মুক্তিযোদ্ধা কোটা থাকতেই পারে তাই বলে ৩০% হতে হবে কেন? যেহেতু আমাদের দেশটা গরীব এখানে অনেকেই আছে নানাভাবে সুবিধাবঞ্চিত হয়ে বড় হয় অনেকে লেখাপড়া করে শুধুমাত্র তাদের কথা চিন্তা করেই কোটা পদ্ধতি থাকতে পারে কিন্তু তার একটা সীমাপরিসীমা থাকার দরকার আছে নয় কি? আমরা প্রায়ই নারীর সমধিকারের কথা বলে গলা ফাটাই। আমাদের বোনেরা তো এখন লেখাপড়া করছে অনেক ভালো রেজাল্ট করছে তাদের মেধার জোরেই কই সেখানে তো কোন কোটা পদ্ধতি নেই! তাহলে মেয়েদের জন্য আলাদা কোটা পদ্ধতি থাকার যুক্তি কি? এই কোটা করে তাদের অর্জনটাকে কি ছোট করা হচ্ছে না? হ্যাঁ যখন এই সিস্টেমটা চালু করা হয়েছিল তখন হয়তো মেয়েদের লেখাপড়ার পরিবেশ এবং সমাজ বেশ প্রতিকূল ছিল। তখন মেয়েদের পড়ালেখায় উৎসাহিত করার জন্য কোটা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল মানা যায় কিন্তু এখনতো সবাই সচেতন। প্রত্যেক গার্জিয়ান তার ছেলের পাশাপাশি মেয়েটিকেও সমান গুরুত্ব দিচ্ছে। আমার মতে এখনকার পরিস্থিতিতে মেয়েদের জন্য আলাদা কোটা রাখার কোন মানেই হয়না। আবার আছে জেলাভিত্তিক কোটা!!! কেন এইটা করতে হবে? আমাদের এই বাংলাদেশের প্রত্যেকটা জেলা কি আমাদের দেশের অংশ নয়? নাকি সেগুলো আলাদা রাজ্যে আছে যে তাদের বিশেষ কোটা না দিলে তারা আমাদের দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে? এইটাও সম্পূর্ণ অবৈধ পদ্ধতি। এইবার আসি উপজাতি কোটায়, উপজাতিরা একসময় আমাদের দেশে থেকেও তারা আমাদের দেশের শাসন মানতে চাইতো না। তারা ছিল অনেকটা মানুষের ধারণার বাইরে সমাজের বিচ্ছিন্ন অংশ হিসেবে। তারা উন্নয়ন বঞ্চিত ছিল এবং মূলধারার বাইরে। তো এখন তারা লেখাপড়া করছে যদিও তুলনামূলক কম। হ্যাঁ তাদের জন্য বরাদ্ধ ৫% কোটা মেনে নেওয়া যায়। তাদের বরাদ্ধকৃত কোটা সুবিধা পেয়ে তারা আরও অনুপ্রাণিত হয়ে লেখাপড়া করে আমাদের সমাজের মূলধারায় ফিরে আসুক সেটা আমি চাই। সর্বশেষ আসি প্রতিবন্ধী কোটা দেখেন সরকারের কত বড় প্রতারণা যেখানে কোটা বেশি প্রয়োজন সেখানে সবচেয়ে নগণ্য মাত্র ১%! যদিও প্রতিবন্ধীরা আমাদের সমাজের অংশ কিন্তু তাদের অনেক প্রতিকূলতা পেরিয়ে অনেক সংগ্রাম করে একটা লক্ষ্যে পৌঁছতে হয়। তাই আমি মনে করি তাদের জন্য কোটা ১% নয় ৫% হওয়া উচিৎ। যাতে করে তারা কারো করুণার পাত্র না হয়ে সংগ্রাম করতে অনুপ্রাণিত হয়। সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়।

অতএব আমি আমার মেধাবী এবং সংগ্রামী ভাইদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বলছি আর এই ৫৬% কোটার যাঁতাকলে মেধাবীদের পিষ্ট করা চলবে না। এখনই সময় এসেছে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার। কোটা থাকবে তবে ৫৬% নয় শুধুমাত্র ২০%। এই ২০% এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ১০% উপজাতি কোটা ৫% এবং প্রতিবন্ধী কোটা ৫% ব্যাস এর থেকে কি আর বেশি এবং সুষ্ঠু আর প্রয়োজন আছে কি?

অনেক কষ্ট করে রোজা রেখে চিন্তা ভাবনা করে আপনাদের উদ্দেশ্যে লেখাগুলো লিখেছি কিন্তু আমার বন্ধুরা এত অলস যে সামান্য লাইক তাই দিতে তারা কৃপণতা করে!!! মানুষের বন্ধু কেন দরকার হয় একে অন্যের মনের কথা শেয়ার করে সুখ দুঃখ ভাগাভাগি করার জন্য। একে অন্যের মাঝে আলাপ আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের জন্য। তাই নয় কি? আমি আমার ফেসবুকের যত বন্ধু আছে সবাইকে সমান গুরুত্ব দেই। যাদের পোস্ট আমার ওয়ালে দেখা যায় আমি প্রত্যেকের পোস্ট পড়ার চেষ্টা করি পারলে কমেন্ট করি শেয়ার করি আর কিছু না পারলে অন্তত লাইক দিয়ে তাদের অনুপ্রাণিত করি। এইলেখাটা ভাই আপনারা যে দেখবেন দয়া করে শেয়ার করবেন দরকার হলে কপি পেস্ট করেন কোন সমস্যা নেই কারন আমি চাচ্ছি বিষয়টা সকলের নজরে আসুক। আমি আশা করি এতে আমাদের উপকার ছাড়া কোন ক্ষতি হবে না। সবশেষে সবাইকে পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আবারো সেই সংগ্রামী ভাইদের জন্য সমর্থন এবং অনুপ্রেরণা জ্ঞাপন করছি যারা সত্যের জন্য সংগ্রাম করছে। ভালো কিছু দাবী করার জন্য লড়াই করছে প্রতিনিয়ত। আর যারা সত্য এবং সুন্দরের জন্য সংগ্রাম করছে তারাই তো প্রকৃত “সত্যের সংগ্রামী”!!!

বিষয়: বিবিধ

১৬২৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File