যাদের মাথা এতটা অন্তস্বারশুন্য, তাদের মাথা উঁচু থাকার কথা নয় ।
লিখেছেন লিখেছেন হককথা ২৫ জানুয়ারি, ২০১৬, ০৫:৫৭:৫০ বিকাল
বিগত শতব্দীর শেষের দিকে ; ১৯৯৫ সালে বসনিয়ায় যখন জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে পুরো খৃষ্টবিশ্ব, বিশেষ করে, পুরো ইউরোপীয় সমাজ মুসলমানদের কচু কাটা করছে এক নারকীয় নৃশংসতায়, তখন মক্কায় ও আই সি (OIC) এর আওতায় তার অংগ সংগঠন, ফতোয়া বোর্ডের এক বৈঠক বসে। উক্ত বৈঠকে বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের মুফতিরা এক বিশাল ও জটিল বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন বেশ কয়েকদিন। সে সব আলোচ্য সূচী তথা এজেন্ডাগুলি কী ছিল জানেন কী? যদি না জানেন, তবে একবার দয়া করে চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন।
এক- মহিষ জবাই করা হালাল কি না?
দুই- কাকের মাংশ হালাল না হারাম?
তিন- মুসলমান পুরুষের দাঁড়ি কতটুকু লম্বা হওয়া উচিৎ? এর কোন বৈশ্বিক মান নির্ধারণ করা যায় কি না!
চার- মেয়েদের নেকাবের মধ্যে এক চোখ বা দুই চোখ খোলা রাখা যায় কী না?
পাঁচ- কারবালা অভিমূখে যাত্রার প্রাক্কালে ইমাম হোসেন ইসতিখারা করলেন না কেন?
ছয়- হজ্জের সময় মিনায় শয়তানের উদ্দেশ্যে পাথর ছোঁড়ার ক্ষেত্রে এক বা একাধিক পাথর লক্ষ্যচ্যুত হলে তার কোন কাফফারা দিতে হবে কী না!
সাত- আধুনিক যুগে ফরজ নামাজ কসর করার বিধান কী হতে পারে?
বলা বাহুল্য, এই একই সময়ে বসনিয়ার প্রেসিডেন্ট আলিজা ইসাকোভিচ ও আই সি, জাতিসংঘসহ বিশ্বের সকল প্রতিষ্ঠানের কাছে বসনিয়ার মুসলমানদের বাঁচানোর আকুতি জানিয়ে ফিরছিলেন!
না, বিশ্ব তাঁর সেই আকুতি শোনেনি। কানই দেয়নি তাঁর সে মর্মস্পর্শী আহ্বানে! বিশ্ব না হয় শোনেনি, কিন্তু বিশ্বের দেড়শত কোটি মুসলমান কেন সেদিন সেই আহ্বানে সাড়া দেয় নি?
দেয়নি তার কারণ হলো, রাজনীতি করা হারাম! ও আই সি'র ফতোয়া বোর্ড সে দিন বিশ্ব রাজনীতি হতে দুরে সরে থেকেছে! বসনিয়ায় যা হচিছল, তা ছিল রাজনৈতিক বিষয়! রাজনীতি নিয়ে আমাদের মুফতিদের কোন মাথা ব্যাথা ছিল না বলে তারা সেদিন মরহুম আলিজা ইসকোভিচের ডাকে সাড়া দেয় নি!
রাজনীতি ছাড়া ইসলাম 'ইসলাম'ই নয়। যে ইসলামে রাজনীতি নেই, সে ইসলাম মানবতার কোন উপকারই করতে পারে না, দাসত্ব, পরাধীনতা থেকে মুক্তি দেয়া তো দুরের কথা। এ বাস্তবতা তারা উপলব্ধীতে ব্যর্থ হন।
যাদের মাথা এতটা অন্তস্বারশুন্য, তাদের মাথা উঁচু থাকার কথা নয় । আর তাই বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের মাথা আজ এতটা হেট হয়ে আছে!
বিষয়: বিবিধ
১৪৬৭ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন