রাসুল সা: এর হাদিসই যখন মুসলিম নীধনের কুশলী হাতিয়ার!
লিখেছেন লিখেছেন হককথা ১২ অক্টোবর, ২০১৪, ০৩:৪০:৪৭ রাত
মুহাম্মদ ইবনে হানিফ্যিয়া (র মদীনায় ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর রা: এর শাসনামলে ৭০০ খৃষ্টাব্দে/৮১ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন ( এই মণীষী ছিলেন হযরত আলী রা: এর তৃতীয় সন্তান, হাসান ও হোসেন রা: এর বৈমাত্রেয় ভাই। শিয়া মতাবলম্বীরা বিশ্বাস পোষণ করে যে, মুহাম্মদ ইবনে হানিফিয়্যা মারা যান নি, বরং তিনি আত্বগোপন করেছেন। কেয়ামতের আগে আল্লাহর ইচ্ছায় তিনিই আবার ইমাম মাহদী হিসেবে আত্বপ্রকাশ করবেন!)।
তাঁর মৃত্যুর পর তারই সন্তান আবু হাশিম খেলাফতের দাবী করেন বলে প্রচার করতে থাকে শিয়া গোষ্ঠীর লোক জন। ৭১৬ খৃষ্টাব্দে/৯৫ হিজরীতে আবু হাশিমও ইন্তেকাল করেন। তার অনুসারীরাই শিয়াদের মধ্যে ‘হাশিমীয়া’ গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত।
আলী রা: ইন্তেকালের পর থেকে, হযরত আলী রা:, ফাতেমা রা:, তাঁদের সন্তান হাসান রা: ও হোসেন রা:, এঁদের অনুসারী হবার দাবীদার নামের কিছু মুসলমান ওসমান রা: এর খেলাফতকে অবৈধ বিবেচনা করতে থাকে। এরাই দামেষ্ক-এ হযরত মুয়াবিয়া রা: এর খেলাফতকেও মেনে নেয় নি, ঐ একই কারণে। তাদের দাবী একটাই; খেলাফতের হক্বদার হলো, প্রিয় রাসুলুল্লাহ সা: এর বংশধরগণ।
আবু হাশেম-এর ইন্তেকালের পর তাঁর কিছু অনুসারী, যারা ঐ শিয়া মতবাদে বিশ্বাস করতো না, দাবী করে বসলো যে, মৃত্যুর আগে আবু হাশেম তাঁর দূর সম্পর্কের চাচাতো ভাই মুহাম্মদ ইবনে আলি ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব ইবনে হাশিমকে খেলাফতের উত্তরাধিকারী হিসেবে মনোনীত করে গেছেন।
ইসলামের ইতহাসে এই সময়কালটা ছিলো অত্যন্ত দূর্যোগপূর্ণ ও নাজুক। প্রায় ৩৫ লক্ষ বর্গমাইলেরও বেশী আয়তন বিশিষ্ঠ বিশাল এ সা¤্রাজ্যের প্রাণকেন্দ্র মক্কা এবং মদীনাসহ সিরিয়া, ফিলিস্তিন, ইরাক, মিশর, ইয়েমেন এই সাতটি প্রদেশের সবক‘টিতেই চরম রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছিলো। পরাািজত ইহুদি, খৃষ্টান গোষ্ঠীর সাথে যোগ দেয় অগ্নীপুজারী ইরানি গোষ্ঠীর কিছু লোক। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি এতটাই জটিল আকার ধারণ করে যে, হযরত আলী রা: মদীনা থেকে রাজধানী সরিয়ে কুফায় সরিয়ে এনেও এ ষড়যন্ত্রকে রুখতে পারেন নি। তারই ফলশ্রুতিতে কারবালার বিয়োগান্ত ঘটনা।
এ সব দেখে হযরত হাসোন রা: এর পুত্র হযরত জয়নাল আবেদিন, ত্বদীয় পুত্র ইমাম বাকের র: এবং তাঁর পুত্র ইমাম জাফর সাদিক রহ: এরা হযরত হযরত ফাতেমা রা: এর মাধ্যমে প্রিয় রাসুলুল্লাহ সা: এর বংশধর হলেও কেউই এগিয়ে আসেননি রাজনীতিতে। একজন সত্যিকার আল্লাহভীরু মুসলমান এরকম নৈরাজ্যকর, ভয়ানক ফেত্বনার মধ্যে যে প্রাজ্ঞ ও বিজ্ঞ পথ অনুসরণ করতে পারেন, তাঁরা ঠিক সেটাই করেছিলেন; মুসলমানদের আন্তকোন্দল থেকে সযত্নে দূরে থেকেছেন।
কিন্তু ক্ষমতালীপ্সু গোষ্ঠী তা করে নি। তারা সাধারণ মুসলমানদের আবেগকে অত্যন্ত সুকৌশলে ব্যবহার করেছে নিজেদের ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্বার্থোদ্ধােরে। এরাই প্রিয় রাসুলুল্লাহ সা: এর বংশধরদের খেলাফত আদায় করে দিতে অতিমাত্রায় উদগ্রীব হয়ে মাঠে নেমে পড়ে।
তারই ধারাবাহিকতায়, শিয়া মতাবলম্বী ও তাদের বিরোধিদের পারষ্পরিক বিরোধের সুত্র ধরে এক পর্যায়ে শিয়াদের হাতে যেন ক্ষমতা চলে না যায়, আবার দামেস্ক ভিত্তিক উমাইয়াদের হাতেও যেন ক্ষমতা না থাকে, সে ব্যবস্থা করতেই ইন্তেকালের পূর্বে আবু হাশেম কর্তৃক অসিয়ত করার দাবী উত্থাপন।
তাদের এই দাবীর পক্ষে সাধারণ মুসলমানদের সমর্থন আদায় করা ও তা ধরে রাখার জন্য এরা এক কৌশল অবলম্বন করলো। কৌশলের অংশ হিসেবেই আবু হাশেমের অনুসারীরা সিরিয়ার একবারে দক্ষিণ সীমান্তে বসবাস করলেও তারা একটা সৈন্যবাহিনী গঠন করলো ইসলামি সাম্রাজ্যের পূর্বসীমান্ত; খোরাসান-এ। আর সে সেনাবহিনীর নেতৃত্বেও থাকলো একজন ইরানি মুসলমান; আবু মুসলিম। এ বাহিনীর পতাকা ছিলো কালো কাপড় দিয়ে তৈরী, কলেমা খচিত। সাধারণ মুসলমানদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া হলো হাদিসের নামে সেই বহুল প্রচারিত কিছু বাণী;
‘এরপর খোরাসান থেকে কালো পতাকা বের হেয় আসবে এবং এমনভাবে তোমাদের হত্যা করবে যে কখনও এভাবে হত্যা করা হয়নি .... সুতারাং যখন তোমরা তাঁকে (ইমাম মাহদি) দেখবে, তখন তার কাছে যাবে এবং তাঁকে বাইয়াত (আনুগত্যের শপথ) দিবে, এমনকি যদি এটা করার জন্য তোমাদের বরফের উপর হামাগুঁড়ি দিয়ে যেতেও হয়। নিশ্চয়ই মাহদী হলো আল্লাহর খলিফাহ’ (ইবনে মাজাহ)
‘আহমেদ বর্ণনা করেছেন যে, আবু হুরায়রা রা: বলেছেন, “রাসুলুল্লাহ (সা বলেছেন: খোরাসান হতে কালো পতাকাধারী লোক বের হবে যাদেরকে কেউ পরাজিত করতে পারবে না যতক্ষণ না তারা আলিয়ায় বিজয় পতাকা ওড়াবে’
প্রিয় রাসুল সা: এর কথিত হাদিসের সাথে আবু মুসলিম বাহিনীর বাহ্যিক সাদৃশ্য থাকায় দামেষ্ক থেকে বহুদুরে পারস্য ও আশ পাশ এলাকার মুসলমানরা এ বাহিনীকে সমর্থন দিতে থাকে। আর তারই ফলশ্রুতিতে এরা ঝড়ের গতিতে এগুতে থাকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সমর্থন ও দামেস্কের উমাইয়া খেলাফতের বিরুদ্ধে অসন্তোষ, এ উভয়কে পুঁজি করে ৭৪৯-৭৫০ খৃষ্টাব্দে তারা খুব সহজেই উমাইয়া বাহিনীকে পরাজিত করে। উমাইয়া খলিফা দ্বিতীয় মারওয়ানকে ধাওয়া করে হত্যা করে।
ততদিনে আবু হাশেম-এর কথিত ওসিয়তকৃত ওয়ারিশ, তাঁরই দুর সম্পর্কের চাচাতো ভাই মুহাম্মদ ( মুহাম্মদ ইবনে আলি ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব ইবনে হাশিম) ইন্তেকাল করেছেন। ফলে শিয়াবিরোধি মুসলমানদের একটা অংশ তারই পুত্র কুফায় বসবাসরত আবুল আব্বাস আব্দুল্লাহকে খলীফা ঘোষণা করে। কুফা দখলের পরে সেখানে সমবেত হওয়া মুসলমানদের উদ্দেশ্যে আবুল আব্বাসের ছোট ভাই দাউদ বড় কৌশলে কাজটি করেন। সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে তিনি একটা ছোট খাটো ভাষণও দেন এভাবে;
‘আলহামদুলিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, সুম্মা আলহািমদুলিল্লাহ। সকল প্রশংসা বাস্তবিকই সেই মহান আল্লাহর, যিনি আমাদেরকে মহানবী মুহাম্মদ সা: এর খেলাফতের উত্তরাধিকার করেছেন। হে লোক সকল, অন্ধকার দূরিভূত হয়েছে, আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে ধরণী! যারা তাদের ধনুক থেকে তীর ছুঁড়েছিলো, সে তীর তাদের নিজেদের দিকেই ফিরে গেছে। তোমাদের নবী মুহাম্মদ সা: এর উত্তরাধিকারে যাদের হক্ব, তা সেই মহান ব্যক্তিদের কাছেই ফিরে এসেছে। তোমরা যা দেখার অপেক্ষায় ছিলে, আল্লাহপাক তোমাদের সে আকাংক্ষা পূরণ করেছেন। তিনি তোমাদের মুখ উজ্জল করেছেন তোমাদের মধ্যে বনু হাশিমের বংশ হতে একজন খলিফা মনোনীত করার মাধ্যমে।’১
এতটুকু বলে দাউদ দরজার দিকে ইশারা করলে দরজার ওপাশ থেকে বেরিয়ে এলেন আবুল আব্বাস, এসেই তিনি মিম্বরে বসে পড়লেন। তার অুনসারীরা ত্বাকবীর ধ্বনি দিয়ে উঠলো। আবুল আব্বাসও ছোটো খাটো একটা ভাষণ দিলেন। তবে তার আগেই তার অনুসারীরা এক এক করে আবুল আব্বাসের হাতে বাইয়াত করলেন।
এভাবেই সূচিত হলো ইতিহাসের কীংবদন্তি; আব্বাসীয় খেলাফত। ১৫০১ খৃষ্টাব্দে উজবেকিস্থান হতে উঠে আসা শিয়া নেতা শাহ ইসমাইল সাফাউঈ কর্তৃক দীর্ঘ দশ বসর যুদ্ধ করে পুরো পারস্য দখল সম্পন্ন শেষে ১৫১০ খৃষ্টাব্দে শিয়া মতবাদকে ইরানের সরকারী ধর্ম হিসেবে ঘোষণা২ না করা পর্যন্ত ইরান ছিলো সুন্নী মতাবলম্বী এক মহান দেশ।
যা হোক, আজ আবার এই ফরাসী-ইঙ্গ-আমেরিকা-ইসরাইল অক্ষশক্তির প্রস্তুতকৃত আল বাগদাদীর নেতৃত্বে উঠে আসা নতুন খেলাফত; ‘‘ISIS (The Islamic State of Syria and Iraq) ’ অথবা isil(islamic state of iraq and sham/Levant) নামেও চেনেন অনেকে। তারা দখল করে চলেছে একের পর এক জনপদ!
এরা এতটাই শক্তিশালী যে, এদের কেউই রুখতে পারছে না! এমনকি আমিরাত-সউদি আরব-ইরাক-তুর্কি-ইংল্যন্ড-ফ্রান্স-আমেরিকা সবাই মিলেও না! অন্তত এদের লোক দেখানো বিমান হামলা দেখে বিশ্ব মুসলমানদের মনে এমন ধারনাই প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে যে, এদেরকে কেউই রুখতে পারবে না। এরা পরাজিত হবে না যতদিন পর্যন্ত তারা বায়তুল মুকাদ্দাসে ইসলামি পতাকা না ওড়াবে!
তা হলে তো এর্ইা সেই দল, যাদের ব্যাপারে প্রিয় রাসুলুল্লাহ সা: বলে গেছেন! আর ওদের পতাকাও তো কালো রং এর! ফিলিস্তিনের পূর্ব দিক থেকেই তারা আসছে! (যদিও খোরাসান থেকে নয়, মক্কা বা মদীনার পূর্ব দিক থেকেও নয়)।
পুরো বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশের তরুণ-যুবক-যুবতীদের কেউ কেউ এদের সাথে খেলাফত প্রতিষ্ঠায় যোগ দিতে উদগ্রীব হয়ে আছে বলে পত্র-পত্রিকায় দেখছি। অনেক মুসলমান আবার বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ায় এদের তারিফ করে, ওদের সফলতা আর বীরত্বের খবর প্রচার করে বেড়াচ্ছে!
এভাবেই প্রিয় রাসুল সা: এর হাদিসের অপব্যবহার করে, প্রিয় রাসুল সা: এর হাদিস দিয়েই মুসলমানদের নিয়ে খেলে চলেছে ইসলামবিদ্বেষী মহল। নীধন করে চলেছে কোটি কোটি মুসলমান নারী পুরুষ! আর মুসলমানরা? তারা আছে কুরআন আঁকড়ে ধরে তার অর্থ বুঝে নিজেদের গড়ার পরিবর্তে কোন হরফে কয় আলিফ টান হবে, সে গবেষণায়(!) লিপ্ত! হায়রে পোড়া কপাল!!
(সংক্ষেপিত)
নিবন্ধটি লিখতে বিভিন্ন পত্র পত্রিকা সহ নিম্নোক্ত গ্রন্থগুলোর সহায়তা নেয়া হয়েছে।
১. A History of the Arab peoples. E Hourani
২. The clash between Islam and Modernity in the middle East; What went wrong? Bernard Lewis
বিষয়: বিবিধ
২২০২ বার পঠিত, ২৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কিছু অজানা বিষয় সম্পর্কে ধারণা হলেও বর্তমান আইএস কার্যকলাপের স্পষ্ট বক্তব্য পেলাম না, বিষয় টা ক্লিয়ার করবেন..........!
ধন্যবাদ আবারো, আইএস নিয়ে ধোয়াশা দূর করায়। তবে 'তালেবান'দের কে খারাপ বলার কারণ আবার অস্পষ্টতা সৃষ্টি করেছে আমার মধ্যে.........!
এতকিচু স্বচক্ষে দেখেও কী মুসলমানদের বোধাদয় হবে না?
আমেরিকা বরাবর ই স্বীয় স্বার্থে মুসলিমদের থেকেই শক্তি যোগান নিয়েছে,এটা সত্যি।
তাই বলে 'তালেবান'দের কর্মকান্ড কে বর্তমান অবস্হার জন্য দায়ী করা যায় না। কাউ কে না কাউ কে তো এগিয়ে আসতে হবে!
সত্যিই মুসলমানরা বুঝতে অক্ষম। এই কারনেই তো মাশুল দিচ্ছে।
আমার প্রশ্ন: হাদিসটি কোট করেছেন ইবনে মাজাহ থেকে!! তাহলে আবার কেন সন্দেহ পোষন করছেন যে, সেটি ভুল। আপনি বুঝাতে চাচ্ছেন যে, ইবনে মাজার উদৃতি দেওয়া এই হাদিসটি আসলেই ভুল।
আশা করি একটু পরিষ্কার করবেন।
‘আহমেদ বর্ণনা করেছেন যে, আবু হুরায়রা রা: বলেছেন, “রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন: খোরাসান হতে কালো পতাকাধারী লোক বের হবে যাদেরকে কেউ পরাজিত করতে পারবে না যতক্ষণ না তারা আলিয়ায় বিজয় পতাকা ওড়াবে’
এই হাদিসে বুঝা যাচ্ছেনা যে, যারা খোরাশান থেকে আসবে তারা সত্য পন্থী না মিথ্যা পন্থি। কথা অনুসারে মিথ্যা পন্থিরাও এই হাদিসের সুযোগ নিতে পারে।
যাক, আনেক তথ্য জানলাম উপকৃত হলাম। তবে সামান্য ঘাপলা রয়ে গেল, যেটা উল্লেখ করেছি। আশা করি পরিষ্কার ধারনা পাব। অনেক ধন্যবাদ
আপনার এমন মন্তব্যে আমি একটু বিষ্মিতই হলাম। বিনয়ের সাথে আপনাকে বলে রাখি যদি অনুমতি দেন, দয়া করে আল কুরআন ছাড়া আর কোনো গ্রন্থকেই অকাট্য বলে বিশ্বাস করবেন না, এটা ইসলামি শিক্ষা বিরোধি। যে কোনো হাদিসের গ্রন্থই হোক না কেন, তার প্রতিটি হাদিস আল কোরআনের মৌলিক শিক্ষার সাথে মিলিয়ে দেখবেন, যদি তা কোরআনের শিক্ষার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয়, তবেই তা সঠিক, নইলে জাল। বুখারি হোক বা মুসলিম, বা অন্য কোনো হাদিস গ্রন্থ।
উক্ত হাদিসখানা আসলেই সত্য না মিথ্যা, সে বিষয়ে আমি সুনিশ্চিত করে কিছু বলতে পারবো না। তবে ঐ একই হাদিস নিয়ে এর আগে যে একবার মুসলমানদের প্রতারিত করা হয়েছিলো, সে ইতিহাসটা তো আমি তুলে ধরেছি। আজ আবার সেই একই হাদিস দিয়ে মুসলমানদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে, সেটা তো দেখতেই পাচ্ছেন।
আপনার এমন মন্তব্যে আমি একটু বিষ্মিতই হলাম। বিনয়ের সাথে আপনাকে বলে রাখি যদি অনুমতি দেন, দয়া করে আল কুরআন ছাড়া আর কোনো গ্রন্থকেই অকাট্য বলে বিশ্বাস করবেন না, এটা ইসলামি শিক্ষা বিরোধি। যে কোনো হাদিসের গ্রন্থই হোক না কেন, তার প্রতিটি হাদিস আল কোরআনের মৌলিক শিক্ষার সাথে মিলিয়ে দেখবেন, যদি তা কোরআনের শিক্ষার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয়, তবেই তা সঠিক, নইলে জাল। বুখারি হোক বা মুসলিম, বা অন্য কোনো হাদিস গ্রন্থ। উক্ত হাদিসখানা আসলেই সত্য না মিথ্যা, সে বিষয়ে আমি সুনিশ্চিত করে কিছু বলতে পারবো না।......
আপনি আমার প্রশ্নে বিস্মিত হলেন! অথছ আপনি নিজেও নিশ্চত নন যে, হাদিস টি সত্য কিনা মিথ্যা! সেটাতে বিস্মিত হলেন না! এই হাদিসের সাথে কোরআনের কোন শিক্ষার সাথে সাংঘার্ষিক হয় তাও জানালেন না।
তালেবান দের কে এই হাদিসের সাথে মিলানো হয়েছিল আপনার ঘটনাটা সঠিক, সেটা ইনকিলাব পত্রিকায় বড় আকারে লিড নি্উজ করেছিল। বর্তমানে আই এস আই একই ঘটনা ঘটাচ্ছে। প্রশ্ন হল, কেউ সুবিধা নিতে চাচ্ছে বলেই কি হাদিসটির পটভুমি দুর্বল! নাকি ধারনা করছেন যে, হাদিসটি কেউ জাল করে ইবনে মাজার নামে চালিয়ে দিয়েছে।
পরবর্তী রাস্তা বাকি থাকে যদি হাদিসের সাথে কোরআনের সাথে সাংঘার্ষিক হয়, তাহলে সেই সংঘর্ষটা কোথায়? সেটা পরিষ্কার করে দিলে তো আর কোন সমস্যা থাকেনা। আমি আপনাকে সেই প্রশ্নই করেছি? অথচ আপনি আমার পরিষ্কার প্রশ্নে কেন বিস্মিত হলেন বুঝতে পারলাম না!!!
আমি মুসলমান। আলহামদুলিল্লাহ। আমি শিয়া বা সুন্নী কোনো পরিচয়েই পরিচিত হতে চাই না। আল্লাহ বলেছেন মুসলমান না হয়ে মরো না। আমি সেই মুসলমান। ধন্যবাদ।
লিংকটিতে যাবার অনুরোধ রইল
মন্তব্য করতে লগইন করুন