সাবধান, বাংলার মুসলমানদের সামনে ঘোর দূর্দিন !

লিখেছেন লিখেছেন হককথা ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০১:৩০:২৬ রাত



কিছুদিন আগে মওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকি নির্মমভাবে খুন হওয়ায় একটি হত্যা মামলা রজু করা হয়েছে।

লক্ষণীয় যে, হত্যার পর থেকে ফারুকির সবচেয়ে কাছের লোক, তার পরিবারের পক্ষ হতে এটাকে ডাকাতির ঘটনা বলা হলেও কিংবা কোনো বিশেষ ব্যক্তির প্রতি দোষারোপ করা না হলেও এখন সেই হত্যাকান্ডকেই ইসলাম বিস্তার রোধে, আলেম ওলামাদের যে অংশটি ইসলামি জ্ঞান ইসলামি সংস্কৃতির প্রচার প্রসারে মাঠে নিয়োজিত, তাদের দমনে কাজে লাগানো হচ্ছে।

এটা একটা সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনারই অংশ, তা ক্রমেই সুষ্পষ্ট হয়ে উঠছে। কী ভাবে? সেটা বুঝতে কোন বিশেষজ্ঞ হবার প্রয়োজন নেই। আজকের বিভিন্ন নিউজ পোর্টালে একটা খবর বেরিয়েছে।

খবরটি হলো; ' রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজারে নিজ বাসায় আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত নেতা ও টেলিভিশন উপস্থাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম ফারুকী হত্যার ঘটনায় চারটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের ছয়জন উপস্থাপককে আসামি করে পিটিশন মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের পক্ষে ঢাকার সিএমএম আদালতে এ সংক্রান্ত একটি পিটিশন মামলা দায়ের করেন।

এই মামলার আসামিরা হলেন; এটিএন বাংলা ও এনটিভির ইসলামী আনুষ্ঠানের উপস্থাপক তারেক মনোয়ার, কামাল উদ্দিন জাফরী, দিগন্ত ও পিস টিভির উপস্থাপক কাজী ইব্রাহিম, এটিএন বাংলার উপস্থাপক আরকানুল্লাহ হারুনী, আরটিভি ও রেডিও টুডের ইসলামী আনুষ্ঠানের উপস্থাপক খালেদ সাইফুলল্লাহ, বাংলা ভিশনের উপস্থাপক মুখতার আহমদ।

এই ছয়জনকে ফারুকী হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে তুষারের আর্জিতে। ‘

এর আগে সেই ২০০৭ সালে ত্বত্তাবধায়ক সরকার এসেই চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক তাফসির মাহফিল বন্ধ করে দিয়েছেন আজও তা চালু হয় নি। ঐ মাহফিলের আলোচক সাঈদী সাহেব এখন কারাবন্দী। তাঁর মনোমুগ্ধকর ইসলামি আলোচনা বন্ধ।

টিভি তে ইসলামি আলোচনা ও প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশের আনাচে কানাচে পরিচিতি পাওয়া অত্যন্ত জনপ্রিয় আলোচক মাওলানা আবুল কালাম আজাদও আজ নিরুদ্দেশ। তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধি অপরাধের মামলা দায়েরের পর থেকে তিনি নিরুদ্দেশ। তিনি নিজেই আত্বগোপন করেছেন, না তাকে গুম করে ফেলা হয়েছে, তা নিশ্চিত করে কেউ জানে না।

সাতক্ষিরা, চট্টগ্রাম সিলেটসহ দেশের অনেক জেলাতে অনেক জাঁদরেল বিদগ্ধ ইসলামি জ্ঞানের আলেম ওলামা যারা নিজ নিজ উদ্যোগে মুসলমানদের মধ্যে ইসলামি জ্ঞান ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন, তাদের প্রায় অধিকাংশকেই রাজনৈতিক দমন পীড়নের বাতাবরণে নানান মামলায় জেলে ভরে রাখা হয়েছে। অনেকে আবার মামলা/হুলিয়া মাথায় নিয়ে নিজের জান বাঁচাতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

অনেক মাদ্রাসাও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্ঠতার অভিযোগে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কোন কোন মাদ্রাসায় নাকি গোয়েন্দা নজরদারী করা হচ্ছে মর্মে খবর ছড়িয়ে দিয়ে সেই সব মাদ্রাসার আলেম ওলামাদের উপরে এক ধরনের মনস্তাত্বিক চাপ সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে।

ফলে সে সব আলেমদের দ্বারাও আর আগের মত ইসলামি আলোচনার অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় না।

বিগত প্রায় ছয়-সাত বসর ধরে দেশে অনেক জায়গায় আয়োজিত ইসলামি আলোচনার মাহফিল হয় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, অথবা অনুমতি দেয়া হয় নি। এভাবে গত কয়েক বসরে ইসলামি আলোচনার মাহফিল প্রায় শুন্যের কোটায় নামিয়ে আনা হয়েছে।

এই শুন্যতা অনেকটাই পুষিয়ে দিচ্ছিলেন বেশ কিছু আলেম ওলামারা টিভির পর্দায় তাদের প্রাণবন্ত ও জ্ঞানগর্ভ আলোচনা উপস্থাপন করার মাধ্যমে। পুরো দেশে তথ্য প্রযুক্তি, স্যাটেলাইট চ্যানেল ছড়িয়ে পড়ার কারণে আনাচে-কানাচে, গ্রামে-গঞ্জে বসে মানুষ ইসলামি আলোচনা যেমন শুনতে পারতেন তেমনই ভাবে নানান প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে ইসলামি জ্ঞান লাভ করতে পারছিলেন। নুরুল ইসলাম ফারুকী হত্যাকান্ডের সুত্র ধরে আজ সে কার্যক্রমকে গুটিয়ে আনা হচ্ছে।

তার মানে কী দাঁড়ালো? এক ফারুকী তো গেছেই। এখন ঐ ফারুকীর হত্যাকান্ডকে পুঁজি করে দেশের পুরো টিভি মিডিয়ার মাধ্যমে যে সব আলেম ওলামা ইসলাম প্রসারে প্রাচারে কাজ করে যাচ্ছিলেন, তাদের সবাইকেই মামলার নামে আদালতে তোলা হবে, হয়তো জেলখানাতেও ভরা হবে। ব্যাস, ইসলামি আলোচনা বন্ধ!

এই একটি ঘটনাই প্রমাণ করে যে, মাওলানা ফারুকীকে ইসলাম বিরোধি গোষ্ঠী একটি বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে হত্যা করেছে। তার হত্যাকান্ডে ইসলামি শিক্ষা ও সংস্কৃতি প্রচারে নিবেদিত কোনো আলেম ওলামা বা কোনো সংগঠন জড়িত নয়।

এই সহজ সত্যটা জাতিকে বুঝতে হবে। আর এটা বুঝতে ব্যর্থ হলে বাংলার মুসলমানদের সামনে ঘোর দূর্দিন অপেক্ষা করছে, সে কথা জোর দিয়েই বলা যায়।

বিষয়: বিবিধ

২১৪৬ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

261863
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০১:৪৬
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০১:৪৯
205834
হককথা লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনাকেও।
261887
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০২:৫৭
সাদাচোখে লিখেছেন : চমৎকার বিচার বিশ্লেষন। আর যে কনক্লুশানে পৌছালেন - তা ভাববার মত।

কিন্তু শয়তান, বান্দর আর পাগলা কুকুরের সাথে মানুষ কিভাবে কথা, লিখা ও পড়া ইত্যাদি দিয়ে জুজবে?

যারা নেতৃস্থানীয়, যারা আলেম ওলামা - ওনারা যদি শয়তানের বিরুদ্ধে করনীয় সম্পর্কে যথোপোযুক্ত কর্মনির্দেশিকা না দেয় - তবে তো মানুষ বাধ্য হয়েই অমন আত্মহত্যার কবলে পড়বে কিংবা দুর্দিনে জীবন নষ্ট করবে।
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৩:০৫
205857
হককথা লিখেছেন : আপনার সুচিন্তিত মন্তব্য ভাববার মত। আহা, হুজুর রা যদি সেটা বুঝতেন আর সে মত পদক্ষেপ নিতেন, কতই না ভালো হতো!
261891
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৩:১১
ভিশু লিখেছেন : এই হাজারো বাধা-বিপত্তির কঠিন মুহূর্তেও যারা ইসলামের কিছু কথা মিডিয়াতে আলোচনা করতেন - সেটিও বন্ধের পায়তারা চলছে! তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতার নামে সত্যিকারের খাঁটি ধর্মহীনতার পথে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ!
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৩:২২
205861
হককথা লিখেছেন : এই বাস্তবতা সকলকে বুঝতে হবে। বাংলাদেশে সকল মুসলিমের, অথবা নিদেনপক্ষে অধিকাংশ মুসলমান যদি ঐক্যবদ্ধভাবে এ ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে, তা হলে তা রোখা কোন ব্যাপারই না।
261893
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৩:১৬
সন্ধাতারা লিখেছেন : It is really terrible to think in which way al is playing open secret game for destroying Islamamic activities. You thought and analysis is valuable. I hope Muslim leaders will be able to realise and will take right initiatives to save the country where everybody can perform their religious activities without facing any danger. Jajakallahu khair.
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৩:২৪
205862
হককথা লিখেছেন : Thank you very much for your time to read and makin the comment here. However I am not very optimistic at this time because I cannot see a pragmatic islamic leader coming forward to lead the nation, lets hope and pray to Allah for such a leader.
261906
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৪:৫২
কাহাফ লিখেছেন : এমন পরোস্হিতির শংকা অনেক আগ থেকেই করে আসছিলেন বিদগ্ধজনেরা,এখনো ইসলামী জনতার হুশ না হলে কপালে খারাবী আছে বহুত। আল্লাহ হেফাযত করুন.......
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ১১:২৭
205933
হককথা লিখেছেন : কেউ তো কথা কানে নেয় নি। এখন সেটাই বাস্তবে ফলতে শুরু করেছে।
261968
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:৩০
ইমরান ভাই লিখেছেন : আল্লাহ কোরআন ও সুন্নার আলেমদেরকে টিকিয়ে রাখবেন ইনশাআল্লাহ।
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ১১:২৮
205934
হককথা লিখেছেন : আল্লাহ তাদেরকেই িটিকিয়ে রাখবেন, যারা কুরআন সুন্নাহর আলোকে টিকে থাকার চেষ্টা করে যাবে।
261989
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ১১:৪১
মাহফুজ আহমেদ লিখেছেন : ভালো লাগলো।ধন্যবাদ।
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ১১:৪৬
205936
হককথা লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনাকেও।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File