মনে রেখো হে মুসলমান! এ ঋণ শুধতেই হবে। আজ নয় তো কাল!!
লিখেছেন লিখেছেন হককথা ০৩ আগস্ট, ২০১৪, ০৫:৫৯:২১ বিকাল
একদিন দু‘দিন নয়, এক বসর দু‘বসরও নয়। কিংবা নয় একটি বা দু‘টি যুগ। বরং বলা চলে, যুগের পর যুগ ধরে, প্রায় একটি শতাব্দী ধরে ফিলিস্তিনী নারী পুরুষ শিশুরা বুকের রক্ত দিয়ে, নিজেদের জান মাল দিয়ে, জীবনের সমস্ত কিছু দিয়ে বিশ্বের দেড়শত কোটি মুসলমানের বুকের ধন বায়তুল মুকাদ্দাস আমানত হিসেবে রক্ষা করে চলেছে।
মনে আছে কী সেই হতভাগা অন্ধ বৃদ্ধের কথা যার চার চারটি সন্তান দখলদার ইসরাইলের জেলে আবদ্ধ ছিলো! অন্ধ, অক্ষম ও বয়সের ভারে পঙ্গু বৃদ্ধের জীবন জীবিকার সকল পথ নি:শেষ হয়ে গেছে। শ্রম বেচে খাবে, সে সামর্থটুকুও নেই তার। বৃদ্ধের শেষ সম্বল ভিটে মাটিটুকুই তার মাথা গোঁজার একমাত্র আশ্রয়। অথচ দখলদার ইসরাইলী সেনাবাহিনী ও উগ্রপন্থী ইহুদি এক রৌদ্রোজ্জল সকালে বাড়ীর দরজায় এসে হাজির। বৃদ্ধকে উগ্রপন্থী ইহুদি বসতী স্থাপনকারীদের একজন বলে উঠে; ‘বুড়ো, তোমার বাড়ীর জমিটা আমাদের কাছে বেচতে হবে। বেচে দাও।’
বুড়ো সব হারিয়ে নি:স্ব। কোন মতেই সে তার পৈত্রিক ভিটে মাটিটুকু বিক্রি করতে রাজী নয়। বাড়ীটা বিক্রি না করলে তার চার চারটি ছেলেও কেউই আর জেল থেকে ছাড়া পাবে না, সে কথাটাও হুমকির সুরে বুড়োকে জানিয়ে দিতে ভুলে না ছোকরা ইহুদিরা। কিন্তু বুড়োর তাতেও কোনে ভ্রুক্ষেপ নেই। সে কোনো মতেই ভিটেটুকু বিক্রি করবে না।
ক্রমাগতভাবে অস্বীকার করার কারণে উগ্র ইহুদি সন্ত্রাসীরা ধৈর্যহারা হয়ে উঠতে থাকে। তারা এবারে বুড়োর সামনে একটা চেক বই মেলে ধরে। বুড়ো তো চোখেই দেখতে পায় না, তাই ঐ ইহুদিদের একজনই তাকে ব্যখ্যা করে বুড়োর হাতটি টেনে ঐ চেক বই‘র উপরে এনে তা দেখিয়ে বলে উঠে;
‘এই যে চেক বই রাখলাম। কত টাকা দাম চাও, বলো, যতো ইচ্ছা লিখে নাও, বা কাউকে দিয়ে লিখিয়ে নাও। কিন্তু জমিটুকু আমাদের চাই‘ই।’
বুড়ো মাথা নেড়ে এবারেও অস্বীকার করে বসে। না, যত দামই দেয়া হোক না কেন, সে বাড়ী বিক্রি করবে না। এক ছোকরা ইহুদি সন্ত্রাসী এগিয়ে এসে বৃদ্ধের বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে বলে উঠে;
‘এই ব্যাটা, আমরা কী ঠকিয়ে তোর বাড়ী নিচ্ছি? তোর ইচ্ছা মত তুই দাম নে, তবুও সই কর!’
বলেই বৃদ্ধের হাতটি টেনে তাতে একটা কলম ধরিয়ে দিতে চাইলে বৃদ্ধ সজোরে তার হাতটি টেনে সরিয়ে নেয় আর বলে উঠে;
‘এই জমিতে বাড়ী করে আছি বটে, তবে এর প্রতিটি ইঞ্চি জমির মালিক বিশ্বের সোয়া শত কোটি মুসলমান। আগে তাদের সই ঐ চেক-এর উপরে নিয়ে আসো, তার পরেই আমি সই করবো। তার আগে নয়।’
কট্ট্র উগ্র ইহুদিদের কী আর সে কথা সহ্য হয়? তাদের দরকার ছিলো জমিটুকু মাত্র। এত যুক্তি আর আবেগের ধার ধারে না তারা। কোনো চোর ডাকাতই কোনদিন এসব আবেগের ধার ধারে না। ইহুদিরা বুড়োর জমিটুকু ঐ দিনই নিয়েছে।
না, এর জন্য তাদের কোনো অর্থই খরচ করতে হয় নি একটা মাত্র বুলেট ছাড়া! ঐ একটামাত্রও বুলেট মাথায় ধারণ করে বৃদ্ধ তার দূর্বল শরীরের সমস্ত রক্তটুকু ফিলিস্তিনের মাটিতে ঢেলে দিয়ে বিদেয় নিয়েছেন। বিদেয় নিয়েছেন, তারপরেও তিনি আমানতের খেয়ানত করেন নি। নিজ হাতে ইহুদিদের কাছে পবিত্রভূমি বায়তুল মুকাদ্দাসের এক চিলতে জমি বিক্রি করেন নি। রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন বিশ্ব মুসলমানদের আমানতটুকু জীবনের বিনিময়ে হলেও!
আমরা বিশ্ব মুসলমানরা এর বিপরিতে কী করছি? ফিলিস্তিনী ভাই বোনদের কাছে বিশ্বের দেড়শত কোটি মুসলমানের এই যে সীমাহীন ঋণ, তা কিন্তু আমাদের শুধতেই হবে!
আজ হোক বা কাল, ঋণ অবশ্যই আমাদের শুধতে হবে, এ থেকে কোন মুসলমান নিস্তার পাবে না।
বিষয়: বিবিধ
২০০৫ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সত্যলিখন আপার ওখানে পড়তে গিয়ে জানলাম লেখাটা আপনার,
তাই আপনাকে আগে ধন্যবাদ!
যাহোক, আপনাকে ও আপাকে, উভয়কেই ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন