তোমার মন্দীর ভেঙ্গেছি? Know Thyself ! নিজেকে জানো আগে-
লিখেছেন লিখেছেন হককথা ৩০ এপ্রিল, ২০১৪, ০২:৫৬:৩৫ দুপুর
যাচ্ছিলাম নিউক্যাসল থেকে ম্যানচেষ্টার-এ। আমার দক্ষিণ ভারতীয় বন্ধু এবং সহকর্মী শেমিল যোসেফ তার নিজের গাড়ী চালাচ্ছেন, আমি তাঁর পাশে বসে বসে আজকের গার্ডিয়ান পত্রিকায় চোখ বুলাচ্ছিলাম। সারাদিন মোটামুটি ব্যস্ততার মধ্যে সময় কাটায় পত্রিকাটি পড়ার সময় পাইনি, তাই ভাবলাম নিউক্যাসল থেকে ম্যনচেষ্টার পর্যন্ত তিনঘন্টার এই রোড জার্নিতে পত্রিকায় চোখ বুলিয়ে নেব।
শেমিল জোসেফ দক্ষিণ ভারতের কেরালা রাজ্যের অধিবাসী, আমার সাথে তার পরিচয় আজ বৎসর ছয় সাতেক হবে বোধ হয়। তাকে স্বপরিবারে চিনি কুয়েতে থাকাবস্থায়। মাঝে মাঝে কুয়েতের আব্বাসিয়াস্থ তার বাসায় দাওয়াতও খেয়েছি। তার স্ত্রী খুব ভালো রান্না করলেও তাদের অধিকাংশ খাবারে নারকেলের গুঁড়ো ব্যবহার করেন বলে আমার খেতে অসুবিধা হতো। তবে সেটা জানার পরে তিনি আমার জন্য স্বাভাবিক ইন্ডিয়ান খাবারই রান্না করতেন।
সে যাই হোক, আসল কথা হলো শেমিলের সাথে আমার একটা মোটামুটি আন্তরিক সম্পর্ক আছে দীর্ঘদিন ধরেই। সেই তিনি ধরলেন আমাকে তার সাথে যেতে হবে, এক বিশেষ কাজে তিনি তার বোনের বাসায় যাবেন ম্যনচেষ্টারে। যাবেন আবার সেদিনই চলে আসবেন।
নিউক্যাসল থেকে ম্যনচেষ্টার, নিজের গাড়ী ড্রাইভ করে গেলে তিনঘন্টা সময় লেগে যায়। তিনি এই তিনঘন্টা পথ একা যাবেন না, আমাকেও ধরলেন;‘ চল যাই আমার সাথে, বেড়িয়ে আসি’। আমি তাকে কাটানোর চেষ্টা করেছিলাম সময় নেই বলে, কিন্তু তিনি নাছোড় বান্দাহ, বারংবার পীড়াপীড়ি করতে লাগলেন বলে শেষ পর্যন্ত রাজি হলাম।
শেমিল গাড়ী চালাচ্ছিলেন আর আমি বসে বসে সেদিনকার গার্ডিয়ানের প্রথম পাতায় চোখ বুলাচ্ছিলাম, ওদিকে তার গাড়ীর ক্যসেট প্লেয়ারে মালায়ালাম ভাষায় গান বেজে চলেছে।
মালায়ালাম ভাষা হলো পৃথিবীর অন্যতম কঠিন ভাষাগুলোর একটি। কঠিন এই অর্থে যে, এই ভাষার বিশেষ উচ্চারণ ভঙ্গী এতটাই দুরুহ ও জটিল যে, ফরাসি ভাষার মতই কঠিন, অন্তত বিদেশীদের জন্য। আমি আগ্রহ বশত কয়েকবার যে শেখার চেষ্টা করিনি তা নয়, কিন্তু দুদিন না যেতেই বুঝেছি ও আমার কম্ম নয়!
আমাদের বাংলাভাষীদের জন্য একটা সুবিধা হলো এই যে, আমাদের নিজেদের ভাষায় ব্যবহৃত অনেক শব্দ আছে যা মালায়ালম ভাষায় ব্যবহার হচ্ছে। তবে, তার উচ্চারণ ভঙ্গিটা ওদের বিশেষ ভঙ্গিমার হবার কারণে আমরা সহজে সেটা বুঝে উঠতে পারি না।
আবার দক্ষিণ ভারতে তামীল বা মালয়ভাষী অনেক মুসলমান থাকার কারণে এবং প্রাচীন যুগ থেকেই কোচিন বন্দরের মাধ্যমে আরব ব্যবসায়ীদের সাথে দক্ষিণ ভারতীয়দের তেজারতী সম্পর্ক থাকার কারণে অনেক ইসলামি শব্দ মিশে গেছে মালয়ালাম ভাষায়।
একটা উদাহারণ দেই। আমাদের ভাষায় আমরা ‘মুখ’ কে মুখ বলি, আর ওরা এই ‘মুখ’ শব্দ দিয়ে ‘নাক’ কে বোঝায়! আর ওদের ভাষায় ‘নাক’কে বলে ‘মুখ’। ওরা দিনকে বলে ‘দিবসম্’। রাত কে বলে ‘রাত্রী’, সকালকে বলে ‘প্রভাতম’। শেমিলের সাথে এ নিয়ে আমার অনেক সময়ই ঠাট্টা মশকরা হতো।
আজ এই যাত্রা পথে ক্যাসেট প্লেয়ারে যে গানটি বাজছিল তিনি তার দিকে আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বললে;, এই গানটি আমাদের এলাকার মুসলিম সমাজের গান। মুসলমানদের বিয়েতে কনে সাজাবার সময় মেয়েরা এই গান গায়।
আমি কান পাতলাম , কিছু বুঝতে পারি কি না তা বোঝার জন্য, কিন্তু না, তেমন কিছুই আমার বোধগম্য হলো না।
আমার আর পত্রিকা পড়া হলো না। ঐ গানের সুত্র ধরেই এক এক করে কথা তুললাম। জানতে চাইলাম, শেমিলের এলাকায় মুসলমানদের অবস্থা কেমন? তাদের জীবনযাত্রা কেমন, তার নিজের কোন মুসলমান বন্ধু বান্ধব আছে কি না ইত্যাদি ইত্যাদি।
তিনি তার জানা মতে কিছু কিছু তথ্য আমাকে দিলেন। মুসলমানরা হতদরিদ্র, দিনমজুর টাইপের মানুষ তাদের মধ্যে শিক্ষার হার খুবই কম, সরকারি চাকুরিতে তারা এগুতে পারছেন না এই শিক্ষার ক্ষেত্রে অনগ্রসরতার কারণেই।
ব্যবসাও খুব একটা জমাতে পারেন না, পারেন না উগ্রবাদী হিন্দুদের কারণে। অনেকটা নিজেদের কমিউনিটির মধ্যেই ব্যবসা চালাতে হয়। তবে যারা একটু আধটু শিক্ষিত তারা মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে চাকুরী করে নিজেদের আর্থিক অবস্থা পাল্টেছেন, ব্যবসাও প্রসারিত করেছেন।
এসব অনেক তথ্যই দিলেন। এক পর্যায়ে হাসতে হাসতে বললেন;
‘কথায় কথায় বৌ তালাক দেয়, আবার বিয়েও করে। বলে খুব হাসলেন। তার এই হাসিটা কেন যেন আমার কাছে আদৌ ভালো ঠেকলো না। কিন্তু চুপ থাকলাম, কারণ আমাদের পাকভারতীয় উপমহাদেশের মুসলিম সমাজে যে কারণে অকারণে তালাক দেবার প্রবণতা আছে তাতো আর আমাদের কারো অজানা নয়! অতএব তর্ক বাড়িয়ে লাভ নেই।
একসময় আমরা ম্যাঞ্চেষ্টারে এসেও গেলাম। তার বোনের বাড়ির সামনে আসতেই বোনের ছোট ছেলে কোলে বোনের স্বামীটি বেরিয়ে এলেন। শেমিল আমার সাথে তার পরিচয় করিয়ে দিলেন আর আমরা সকলেই ঘরের ভেতরে গিয়ে বসলাম।
শেমিলের বোনের এক মেয়ে প্রায় ছয় সাত বৎসরের হবে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমার সাথে তার জমে উঠল। শেমিল এসেছেনই মাত্র কিছুক্ষণের জন্য বোনের বাড়িতে। আজই তিনি আবার ফিরবেন, তাই তিনি তার বোন ভগ্নীপতির সাথে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন।
আমি ব্যস্ত হয়ে রইলাম শেমিলের ভাগিনী ‘সিন্ধু’ নামের মেয়েটির সাথে। দু‘জনে খুব মজা করে সুন্দর সুন্দর ফল আর ফুলের ছবি আঁকলাম, গল্প বলাবলি করলাম, গল্প শুনলাম, আর এরই মাঝে মাঝে চা বিস্কুট চানাচুর এসবও চলল।
এভাবেই ক’টি ঘন্টা কোনদিক দিয়ে চলে গেল তা টেরই পেলাম না। সন্ধার আগেই এক ভদ্রলোক এলেন এঁদের বাসায়, শেমিলের ভগ্নীপতি রাজেন্দ্রন তার সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিলেন, বললেন; ‘এ আমার বন্ধু’।
আমরা বসে বসে কথা বলতে লাগলাম। আমি বাংলাদেশি, তা জানতেই সেই ভদ্রলোক শুরু করলেন বাংলাদেশ এ হিন্দুদের মন্দীর আমরা কেন ভাঙ্গি, কেন হিন্দুদের ধরে ধরে মুসলমান বানাই, ইত্যাদি খুবই বিব্রতকর কিন্তু ডাঁহা মিথ্যা এসব অপপ্রচারগুলো।
কেমন যেন একটা বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে গেলাম। যতই তাকে বলি যে এসব মিথ্যা কথা, এসব অপপ্রচার, তিনি তা মানতে নারাজ। কারন তিনি তা পত্রিকায় দেখেছেন এবং মিডিয়া মারফত জানতে পেরেছেন, তার ভাষায় এইসব এতটাই সত্য এবং অকাট্য যে, তার আর গোপন করে রাখা যাবে না!
ভেতরে ভেতরে একরকম ফুঁসছি, কিন্তু ভদ্রতার খাতিরে কিছুই বলতেও পারছি না! কারণ, যতই বলি, তিনি শুনতে বা মানতে নারাজ! একসময় আমাদের সামনে রাতের খাবার দেয়া হলো এবং আমরা খেতে বসলাম একত্রে।
খেতে খেতে তিনি আবারও সেই একই কথা তুললেন, এবারে বললেন; ‘বাংলাদেশে বিশ্বের সবচেয়ে বেশী এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে এবং বৎসরে প্রায় তিনশত মেয়েকে এসিড মেরে তাদের মুখ মন্ডল ঝলসে দেয়া হয়ে থাকে। ’
শেমিলের ভগ্নীপতি মি: রাজেন্দ্রন এবারে আমার দিকে চেয়ে জানতে চাইলেন ব্যাপারটি সত্য কি না।
আমি ভেতরে ভেতরে অনেকক্ষণ ধরেই একরকম চাপা ক্ষোভে তড়পাচ্ছিলাম কিন্তু কোন প্রতিবাদ করার রাস্তা পাচ্ছিলাম না, কারণ কথাটাতো মিথ্যা নয়। এবারে ভিন্ন এক কৌশল নিলাম,
বললাম; ‘ আগের সেই মন্দীর ভাঙ্গা’র কথাটা মিথ্যা হলেও হ্যাঁ ব্যাপারটা সত্য, একেবারে একশতভাগ সত্য। এটা ঠিক তেমনি এক সত্য, যেমন সত্য তোমাদের ভারতে প্রতি বৎসর প্রায় ছয় লক্ষ অপ্রাপ্ত বয়স্কা নারীকে তাদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে পতিতালয়সমুহে বিক্রি করে দেয়া হয়, এটা তেমনি সত্য।
এটা তেমনি সত্য, যেমনি সত্য তোমাদের ভারতের বোম্বাইয়েই বিশ্বের সবচেয়ে বড় পতিতালয় রয়েছে যেখানে লাখো নারীর জীবন বরবাদ করে দেয়া হচ্ছে প্রতিবৎসর! তোমাদের বিহারে তো গর্ভস্থ শতকরা ৫৮টি নারী শিশুকে এ্যবরশনের মাধ্যমে হত্যা করা হচ্ছে প্রতি বৎসর। আর যেখানে আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে আগে ভাগেই গর্ভস্থ শিশু' ছেলে না মেয়ে জানার সুযোগ নেই, সেখানে গর্ভের সাথে সাথে আঁতুড় ঘরেই নারী শিশুকে তার জন্মদাত্রী মা’র এক গোছা চুল কেটে সেই চুলকেই শিশুটির গলায় ফাঁস হিসেবে লাগিয়ে হত্যা করা হচ্ছে, তোমাদের ভারতেরই নারীবাদী আন্দোলনের এক হিসেব মতে এই সংখ্যা একমাত্র বিহার রাজ্যেই বৎসরে প্রায় পাঁচ হাজার! ’
আমার কথা বলার ধরন দেখে শেমিল সহ প্রায় সকলেই বুঝে উঠেছেন যে আমি রেগে গেছি। আমাদের মেজবান মি: রাজেন্দ্রন কথার মাঝখানে বলে উঠলেন; ‘সরি জিয়া, এসব আলাপ থাকুক, তুমি বরং খেয়ে নাও’
কিন্তু আমি তখন থামতে প্রস্তুত নই, বললাম; ‘না রাজেন্দ্রন, সেই বিকাল থেকে তোমার বন্ধু এই সব নিয়ে এক এক করে আমাকে বলেই চলেছেন এবং এখন এই খাবার আসরেই আবার যখন কথাটা উঠলই তখন বরং আস আমরা আলোচনাটাই আগে শেষ করি এবং একই সাথে খাবারটাও চলুক’।
তাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই তার সেই বন্ধুর দিকে তাকিয়ে আবার বলা শুরু করলাম; ‘ তোমার কথায় আমি কষ্ট পেয়েছি এটা মনে করো না, বরং আমাদের দেশে যে এই তিনশত নারী পুরুষকে প্রতিবৎসর কিছু কুলাঙ্গার এসিড মেরে তাদের মুখমন্ডল ঝলসে দেয় সে বিষয়ে আসলেই আমি এবং আমরা লজ্জিত। এই লজ্জার কারণেই তোমাদের দেশে বা অন্য কোন দেশে নারী বা শিশু নির্যাতন নিয়ে কথা বলতে পারি না। পারি না এই ভেবে যে, আমাদের দেশেই তো বৎসরে আমরা তিনশত জনকে এসিড মেরে নির্যাতন করছি! সেই আমিই আবার আর একজনের কথা, আর এক সমাজের কথা কিভাবে বলব? না হলে তোমাকে বলতাম একটা হিসেব মেলাতে।
হিসেবটা হলো, বাংলাদেশে প্রতি পাঁচলক্ষ মানুষের মধ্যে একজন এসিড নির্যাতনের শিকার হয়, কিন্তু তোমাদের ভারতে প্রতি বৎসর লক্ষ লক্ষ নারীকে ধরে ধরে তাদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে পতিতা বানানো হচ্ছে!
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে তোমাদের বোম্বে শহরে প্রতি আট জন গৃহবধুর মধ্যেই একজন এইড্স ভাইরাসে আক্রান্ত! বলো একজন নারীর জন্য এটা কি এসিড নিক্ষেপের চাইতেও সাংঘাতিক ভয়ানক নির্যাতন নয়?
জানো তো, আমেরিকায় প্রতি দশজন নারীর মধ্যেই একজন ডিপ্রেশনে আক্রান্ত এবং তারা এর চিকিৎসাও নিচ্ছেন! কুড়ি লক্ষ শিশু পরিত্যক্ত হয়ে রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছে, তাদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই নারী শিশু অর্থাৎ দশলক্ষ নারী শিশু পরিত্যক্তা!
জানো নিশ্চয়ই যে, আমেরিকায় শতকরা তেত্রিশ জন অর্থাৎ প্রতি তিনজন মেয়ের মধ্যে একজন কুমারী মাতা, যাদের গর্ভস্থ শিশুর কোন দায় দায়িত্ব নেয়নি! সেই সব শিশুদের বাবারা! এই সব শিশুকে মানুষ করতে যেয়ে ঐসব কুমারী মাতার যে কি অবর্ণনীয় দূর্ভোগ তা কী তোমরা দেখতে পাও? সেটা কী নারী নির্যাতন নয়?। নারী স্বাধীনতার নামে, প্রগতীর নামে এমনই এক জীবানাচার তাদের দেয়া হয়েছে যে, পুরো পশ্চিমা বিশ্ব জুড়ে প্রতি দশজন নারীর মধ্যে একজনই ব্রেষ্ট ক্যানাসারে আক্রান্ত!
আমাদের দেশে তো নারী রয়েছে মোট জনসংখ্যার অর্ধেক, কই সেখানে তো এই হার এত বেশী নয়, যদি খুব গভীরভাবে ভেবে দেখ, দেখবে সেটাও এক ধরনের নারী নির্যাতনের ফল।
জানো কী জার্মানিসহ ইউরোপের আনাচে কানাচে রুমানিয়া বূলগেরিয়াসহ পূর্ব ইউরোপিয়ান দেশ সমুহের কিশোরি তরুণীদের ‘সেক্স স্লেভ’ বা যৌনদাসী হিসেবে পাচার করা হচ্ছে ! ১১/১২ বৎসরের লক্ষ লক্ষ তরুণীদের ধরে ধরে সেক্স ক্লাবে জড়িয়ে দেয়া হয়েছে? তুমি কী জানো এই ব্রিটেনের জেলখানা গুলোতে নারী কয়েদিদের আধিক্য বিচার মন্ত্রাণালয়সহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিরাট সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে?
এই তো মাত্র কিছুদিন আগেই ব্রিটেনের এক পুলিশ রিপোর্টে প্রকাশ করা হলো যে, একধরনের চ্যারিটি সংস্থা রুমানিয়া, বুলগেরিয়া এবং আলবেনিয়ায় এতিমখানা স্থাপন করছে, সেখানে পরিত্যক্ত শিশুদের লালন পালনের সুযোগে ঐ সব এতিমখানা থেকে শিশুদের পশ্চিমা ধনী দেশসমুহে পাচার করে দিচ্ছে, এবং সেইসব এতিমখানাগুলোতে নারী শিশুদের যৌন নির্যাতন একধরনের রুটিনে পরিণত হয়েছে!
এখন বল, কোন নির্যাতনটা বেশি ভয়ানক, প্রতি পাঁচলক্ষ নারীর মধ্যে একজন এসিড নিক্ষেপের শিকার সেটি? না প্রতি দশজনে বা প্রতি তিনজনে একজন নারী বিভিন্ন পন্থায় নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, সেটি?
আরও একটা কথা তোমাকে বলে রাখি, আমাদের সরকার বেশ ক’বৎসর আগে এসিড নিক্ষেপের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ড দেওয়া শুরু করায় এই জঘণ্য অপরাধের মাত্র কমে আসছে। তোমাদের দেশে সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে ঐসব নারী নির্যাতন রোধে তা অবশ্য আমার জানা নেই। ’
আমার এই সব কথা তার এবং তাদের ভালো লাগার কথা নয়। বেড়াতে এসে মেজবানকে অপ্রস্তুত করাটা শোভন নয়, অতএব আমি চুপ করলাম।
তাদের মুখে খুব একটা কথা নেই এ ব্যাপারে! তারা, বিশেষ করে সেই বন্ধুটি ভিন্ন বিষয়ে আলাপ আরম্ভ করলেন। কথার ফাঁকে ফাঁকে আমরা এতক্ষণ খাবার শেষ করেছি।
ঐ রাতে আমি ও শেমিল যখন নিউক্যাসেলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করি, আমাদের বিদেয় জানালেন শেমিলের বোন, ভগ্নীপতি আর সাথে ছিলেন সেই ভদ্রলোক। বিদায়ের আগে সবার সাথেই হাত মেলালাম।
সেই ভদ্রলোকের দিকে হাত বাড়িয়ে দিলে তিনিও তার হাতটি বাড়িয়ে দিলেন বটে, তবে তার হাতের ক’টা আঙ্গুল দিয়েই কেবল হ্যন্ডশেক সারতে হলো, পুরো হাতটি আমার হাতের মধ্যে পেলাম না! ‘বডি ল্যাংগুয়েজ’ পড়া থাকার সুবাদে আমার বুঝতে কোন অসুবিধা হয়নি, কেন তিনি তার পুরো হাতটি বাড়াতে পারলেন না হ্যান্ডশেকের জন্য! তবে তিনি বলে উঠলেন; ‘তোমার কাছে অনেক কিছুই জানা হলো, আমি আর একটু খোঁজ খবর নেব আমার নিজের দেশ সন্মন্ধ্যে’।
বললাম; ‘সেটাই ভালো, নিজেকে জানাটাই সবচেয়ে ভালো কাজ, নো দাইসেলফ্!’
তিনি আমার দিকে চেয়ে রইলেন, আর আমি গিয়ে গাড়িতে উঠলাম।
বিষয়: বিবিধ
১৯৪৫ বার পঠিত, ২০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অন্যসব ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে ভদ্রলোক থাকলেও থাকতে পারে কিন্তু ইহুদী আর হিন্দুরা জন্মগতভাবেই অসভ্য।
আপনার আতে ঘা লাগল কেন ??????????
আর আপনি ইহুদী আর হিন্দুদের অসভ্য বলাতে "'আউযুবিল্লাহি মিনাশশ্বয়তানির রাজিম" পড়ছেন।
নাম চেন্জ করে জামা'তে হিকমতি রাখেন
শুধু ওদের দোষ দিয়ে কি হবে ভাই? আমরা যদি নিজেদের দোষত্রুটি নিজেরাই ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে প্রচার করি, ওরা তো এর সুযোগ নেবেই।
এখানে দু'টিইতো একই কথা।
‘মুখ’ শব্দ দিয়ে ‘নাক’ বোঝায়!
"নাক" কে ওরা "মুখ" বলে।
অনর্থক এত্ত জঠিল করলেন কেনু? মনে কর্ছিলাম >> "নাক" কে ওরা "মুখ" বলে। "মুখ" কে ওরা "নাক" বলে
যাক......
পড়িতেছি পরের অংশ.....
মন্তব্য করতে লগইন করুন