মিডিয়া মোগলরা টিকে থাকুক অনাদিকাল, আর হাইকোর্ট দেখে চলুক ষোলকোটি বাঙ্গাল!

লিখেছেন লিখেছেন হককথা ১৪ জুলাই, ২০১৩, ০৩:২৫:২০ দুপুর



আল্লামা শফীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার আর আগামি কাল অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মামলার রায়, দুটোই অত্যন্ত সময়োপোযোগী পদক্ষেপ আওয়ামি লীগের জন্য। প্রধানমন্ত্রীর আকাশসম ব্যার্থতা থেকে দল ও জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে নেবার মোক্ষম অস্ত্র!!

রাজনীতির কুটির প্রচারণায় সবসময়ই আওয়ামি লীগ পারঙ্গম। জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে ঘুরিয়ে সময়ক্ষেপণ করতে এদলটির জুড়ি নেই। এদের কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়, স্বগোত্রীয়দের হাতে থাকা অসংখ মিডিয়ার কারসাজিতে। ম্যাস মিডিয়ার সহযোগিতা ও সমর্থন এরা সব সময় পায়।

৫ ই মে’র নারকীয় গণহত্যার পরে হতভম্ব ও বিপর্যস্থ হেফাজত যেন দেশবাসীকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে ও সংঘটিত হতে না পারে, সে কারণেই হঠাৎ করে রেশমা নাটকের মাধ্যমে সারা দেশবাসীর দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে নেয়া হয়েছিল খুব চৌকষভাবে। ইতোপূর্বে হলমার্ক ও ব্যংকের টাকা লুট কেলেংকারী থেকে জগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে ঘোরাতে তথাকথিত গণজাগরণ মঞ্চের আয়োজন করা হয়েছিল, যা এখনও মাঝে মধ্যে নিজেদের উপস্থিতি জানান দেয়।

আজ আবার একই কৌশল! চার চারটি সিটি নির্বাচনে পরাজিত হবার পরে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নিজে সংশ্লিষ্ঠ হয়েছিলেন। নিজেই বিদ্রোহী প্রার্থী জাহাঙ্গিরকে ডেকে তার সাথে বৈঠক ও তার মায়ের সাথে আধাঘন্টা টেলিফোনে কথা বলে তাকে বসিয়ে দিয়েছেন। পুরো প্রশাসনকে তো গাজীপুর নির্বাচনের জন্য লাগিয়েছিলেনই, এমনকি ৫৭ জন দলীয় এমপিসহ দলের বাঘা বাঘা নেতাদেরও মাঠে নামিয়েছিলেন। ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংএর সকল আয়োজন সম্পন্ন করেও সেখানে দলীয় প্রার্থীকে জেতাতে পারেননি। ক্ষমতায় থেকেও আওয়ামি লীগ তার জীবনে এত বড় ধাক্কা আর কখনই খায়নি।

সারা দেশে দল ও প্রশাসনের মধ্যে যখন পুঞ্জিভূত ক্ষোভ ধূমায়িত হচ্ছে, যে কোন সময় সুবিধাবঞ্চিত ও ক্ষুব্ধ দলীয় কিছু নেতা স্বয়ং দলনেত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বকেই চ্যালেঞ্জ করে বসতে পারে, এ ভয়ে তিনি বেলারুশ সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরলেন।

তিনিও দেশে আসলেন, আর ওমনি শুরু হলো হেফাজতের আমীর আল্লামা শফীর বিরুদ্ধে তথাকথিত তেঁতুল নাটক। সাথে সাথে সারা দেশের মিডিয়াও লেগে পড়ল। আজ সারা দেশের আনাচে কানাচে ছেলে বুড়ো সবার মুখে আল্লামা শফীর সমালোচনা। জনগণ, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া, পত্র-পত্রিকা আর সংসদ, কেউই আর দল ও দেশ পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রীর শোচনীয় ব্যার্থতার কথা বলছে না! বরং সবার মুখেই আল্লামা শফীর জিকির!!

এরই মাঝে আবার আগামিকাল অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে চলমান মামলার রায় দেবে ট্রাইবুনাল। সে মামলার রায় কি হবে, সেটা বুঝতে খুব একটা বেগ পেতে হয় না। গণজাগরণ মঞ্চও আবার বসবে, দখল হবে শাহবাগ আবারও, তবে তা গণজাগরণীদের কাছে, কোটাবিরোধি ছাত্রদের কাছে নয়!

আর রায় পরবর্তি সময়কালে জনগণ, মিডিয়া, টক শো’গুলো, মন্ত্রী মিনিষ্টার এবং সংসদ ও সাংসদরা কোন বিষয়ে কথা বলবেন, সেটাও জানা সবার।

তবে যে বিষয়ে কেউ কোন কথা বলার অবকাশ পাবেন না বা বলবেন না, সেটা হলো, দেশ ও দল পরিচালনায় মাননীয়া প্রধানমন্ত্রীর আকাশচুম্বী ব্যর্থতা। তিনি অখন্ড সময় পাচ্ছেন দল ও তার নেতৃত্বকে গুছিয়ে নেবার!!

প্রধানমন্ত্রীর ফুরফুরে মেজাজ ও মুখের হাসিটা দেশবাসী আবারও দেখতে পাবে অচিরেই। মিডিয়া মোগলরা টিকে থাকুক অনাদিকাল, আর হাইকোর্ট দেখে চলুক ষোলকোটি বাঙ্গাল!

বিষয়: বিবিধ

১৫৮৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File