ধীরে বন্ধু ধীরে, জীবন মৃত্যুর ফয়সালা জমিনে নয়, হয় ঐ আসমানের উপরে।

লিখেছেন লিখেছেন হককথা ৩০ মে, ২০১৩, ০১:০৯:৩৭ রাত



আজ বাংলাদেশে প্রায় সবগুলো জাতিয় দৈনিকই হেড লাইন হিসেবে দিয়েছে, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর একটা বক্তব্য। তার উক্ত বক্তব্যে দেখা যায়, চলতি বৎসরের জুলাই আগষ্ট মাসের মধ্যেই যুদ্ধাপরাধীদের রায় কার্যকর হয়ে যাবে, এমনটাই তিনি বলেছেন গতকাল বঙ্গবন্ধু এভিনিউ'এ জাসদের এক সভায়।

একই দিন, অর্থাৎ ৩০মে (আজ) বৃহস্পতিবারে প্রকাশিত ‌'দৈনিক আমাদের সময়'এ 'কাদের মোল্লার পর সাইদীর আপিলেরও ৬০ দিন পার' শিরোণামে প্রকাশিত আরও একটা খবরে বলা হচ্ছে;

'৬০ দিন পার করল আরেকটি মামলা। সময়সীমা ৬০দিন শেষ হলেও মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে ট্রাইব্যুনালের রায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিলের শুনানি এখনো শুরুই হয়নি। যদিও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের (সংশোধন) ২১(৪) ধারা অনুসারে আপিল দায়েরের ৬০ দিনের মধ্যেই তা নিষ্পত্তির কথা বলা রয়েছে। এ বিধান অনুসারে সাঈদীর আপিল নিষ্পত্তির সময়মীমা পেরিয়ে গেছে গত সোমবার।

এদিকে অপর জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে করা আপিল নিষ্পত্তির নির্ধারিত সময়সীমা (৬০ দিন) পেরিয়ে গেছে গত ৫ মে। তবে আপিল বিভাগে রাষ্ট্রের করা আপিলের বিরুদ্ধে শুনানি অব্যাহত রেখেছে আসামিপক্ষ। ৬০ দিনের মধ্যে শেষ করা প্রসঙ্গে তখন অ্যাটর্নি জেনারেল গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘আইনের এ বিধান বাধ্যতামূলক নয়। এটি নির্দেশনামূলক।’

এখন প্রশ্ন হলো, যে মামলার শুনানী এখনও শুরুই হয় নি, শেষ কবে হবে তাও জানে না কেউ। আবার ওদিকে বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের কাছে আন্তর্জাতিক বলয় থেকে সাঈদী সাহেবের স্বাক্ষী সুখরঞ্জন বালীর হদিস এসেছে। তিনি ঢাকায় অপহৃত হলেও তাকে পাওয়া গেছে কোলাকাতার জেলখানায়। নিজেই বলেছেন, তাকে বাংলাদেশের পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী মিলে অপহরণ করে ক'দিন আটকে রেখে এর পরে সড়কপথে ভারতীয় সীমান্তরক্ষীবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সারা বিশ্ব এখন বিষয়টা জেনে গেছে।

বালীর ভাইকে হত্যা করার কথিত অপরাধে সাইদীর মৃত্যুদন্ড হয়েছে, সাইদী সাহেব নিজে যেমন এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, তেমনি নিহতের ভাই, সুখরঞ্জন বালীও বলছেন, তার ভাই হত্যায় সাঈদী জড়িত ছিলেন না।

এখন সরকার কি করবে? পারবে কি সন্ধানপ্রাপ্ত সুখরঞ্জনবালীর স্বাক্ষ্য না নিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করতে? সেটা কি দেশবাসী, এবং বিশ্বের মানবতাবাদী সংগঠনগুলো মেনে নেবে? বিষয়টা কি এতই সহজ? হাব ভাব দেখে মনে হচ্ছে, আমাদের ইনু গংদের কাছে এসব কোন বিষয়ই নয়!

অপ্রত্যাশীতভাবে এতসব জটিলতা সামনে চলে এসেছে, তার উপরে আপিলের শুনানীই শুরু হয়নি, এর পরে রয়েছে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করার সময়সীমা (অবশ্য, যদি আপিলেও বর্তমান রায় বহাল থাকে এবং দন্ডিতরা নিজেদের প্রাণভিক্ষা চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করতে চান)।

কিন্তু পা চাটা বামদের মনে হয় সে তর সইছে না। যেন তেন ভাবে তারা চাইছে ঝুলিয়ে দিতে। ইনু সাহেবের বক্তব্য শুনে মনে হয়, শুনানী শুরু না হওয়া আপিলের রায়ও লেখা হয়ে গেছে, এবং তিনি তা জেনেও গেছেন।

শেঁকড়হীন পরগাছা এইসব বাম'রাই আজ আওয়ামি লীগকে এমন অবস্থানে এনে নামিয়েছে। তাদের উদ্দেশ্যে বলি, ধীরে বন্ধু ধীরে, জীবন মৃত্যুর ফয়সালা জমিনে নয়, ঐ আসমানে হয়। বিষয়টা মনে রাখলে সবার জন্যই মঙ্গল।

বিষয়: বিবিধ

২৭০৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File