তসলিমা নাসরিন: যৌবনের উন্মাদনা কমলে সবাই দরবেশ সাজে; ভুলে যায় যে, যৌবনই উত্তম সময় আল্লাহর আনুগত্যের।

লিখেছেন লিখেছেন হককথা ২২ মে, ২০১৩, ১২:৪৯:০৯ দুপুর



সেকালের তছলিমা

পত্রিকান্তরে তছলিমা নাসরিনের একটা স্বাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়েছে দেখলাম। উক্ত স্বাক্ষাৎকারে তসলিমা নাসরিন অনেক কথাই বলেছেন। তার বিবাহ থেকে শুরু করে প্রথম স্বামীর সাথে অন্তরঙ্গ মহুর্তের বিবরণও দিয়েছেন এবং তার স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে তিনি যে অনেক বন্ধুবান্ধবদের হাতেই ইচ্ছা-অনিচ্ছাতে ব্যবহৃত হয়েছেন, সে কথা, বহুগামীতার কথা, বঞ্চণা, ক্ষোভ আর হতাশার কথা বলেছেন। বলেছেন এখন নাকি তার গভীর রাতে ঘুম ভেংগে যায়, বুকের ভেতরটা হাহাকার করে উঠে। স্বামী-সংসারের জন্য, একটা সন্তানের জন্য মনটা খাঁ খাঁ করে উঠে।

তসলিমা নাসরিন, প্রচলিত সমাজে নারীর প্রতি বিদ্যমাণ অবিচারের কথা বলতে গিয়ে খোদ আল্লাহর বিরুদ্ধেই বলেছেন, আমার প্রাণপ্রিয় নবী সা: ও তাঁর স্ত্রীগণকে কটাক্ষ করেছেন কদর্যভাবে। অকপটে লিখেছেন, কলমের নির্মম খোঁচায় ক্ষত বিক্ষত করেছেন কোটি কোটি মুসলমানের অন্তর একজন মুসলমান বাবা মা'র সন্তান হয়েও।

দাদারা-দিদিরা, আংকেল আর আন্টি, রাম বাবা, কাম বাবা'রা লুফে নিয়েছে তাকে। বাহবা দিয়েছেন। শ্বেতপ্রাসাদ থেকে খোদ আংকেলও হুংকার ছেড়েছেন। বাড়ীর পাশ থেকে কাকাবাবু জানালা দিয়ে গলা বাড়িয়ে তসলিমাকে হাত ইশারায় ডেকেছেন। স্তাবকের কোন অভাব হয়নি। নাচানাচি খুব হয়েছে।

আরও অনেক কিছুই হয়েছে, হয়েছে যে, সেটাও আলোচ্য স্বাক্ষাৎকারটিতে তসলিমা নিজেই ফাঁস করেছেন। তার বাবা-কাকার বয়সি বুড়োরা, দরদী সাজা বন্ধুরা যে তাকে ভোগ করেছে, তা নিজেই বলেছেন। এখন আর তারা কেউ কাছ ঘেঁষে না। তারা কাছ ঘেঁষবে কেন? এখন আর তসলিমার চামড়ার ভাঁজে ভাঁজে সে জৌলুস কমণীয়তা নেই যে! সে কথাটা তিনি নিজেই স্বাক্ষাৎকারে বলেছেন।



একালের তসলিমা

এখন নাকি তার সব ছেড়ে ছুড়ে তওবা করতে, ঈবাদাত বন্দেগী করতে মন চায়।

তার কি মন চায়, সেটাতে আমার কোন আগ্রহ নেই। যার জন্য তওবা, যার কাছে তওবা, সেই আল্লাহ যদি সত্যিই সত্যিই তাকে তওবার সুযোগ দেন, তো সেটা আল্লাহর ব্যাপার। তাই বিষয়টাকে আল্লাহ আর তসলিমা, দুজনের মধ্যে ছেড়ে দিলাম।

আমার কথা অন্যখানে। একটুখানি খ্যাতি, নাম যশ আর কয়েকটা চেনা অচেনা পুরস্কার রুপী খুদ কুঁড়ো পেতে তসলিমা কেবল নিজের জীবনকেই 'তছনছ' করেন নি। তছনছ করেছেন বাংলাদেশী মুসলিম সমাজে হাজারো তসলিমার চিন্তা আর বিশ্বাসের জগৎ। বিনিময়ে তিনি আজ রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলা কলার খোসাটি মাত্র!

তসলিমা বাংলাদেশের মুসলিম সমাজ, এ সমাজের পুরুষদের, তার চেয়েও বড় কথা, আল্লাহর রাসুল সা:, তার প্রিয়সহধর্মীনিদের অপমাণ করতে চেয়েছেন। কিন্তু আসলে তিনি অপমান করেছেন নিজেকেই। সারা বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমানরা তো তাকে ঘৃণা করেন'ই, এমনকি যে স্তাবকরা একদিন তসলিমাকে নিয়ে নাচানাচি করেছে, সেই তারাও তাকে ছুঁড়ে ফেলেছে উদ্দেশ্য হাসিলে পরে, ভোগের পরে। এই বঞ্ছনা থেকেই আজ তসলিমার হতাশা। আর তাই ফুটে উঠেছে তার স্বাক্ষাৎকারটিতে।

এমনটাই হবে, আমরা আগেই তা বলেছিলাম, তখন তিনি কানে তোলেন নি কথাগুলো। আমাদের বলা কথাগুলো নাকি 'মৌলবাদীদের আস্ফালন ছিল'।

পরিশেষে একটা কথা মনে করিয়ে দিতে চাই, তসলিমা আর তার জানা অজানা অনুসারীদের, আল্লাহ যদি কাউকে অপমাণ, অসম্মান করতে চান, তবে তিনি তাকে তার নিজে ঘরেই অপদস্থ করতে পারেন।

ঐ যে তিনি বলেছেন, 'তুয়িজ্জু মান ত্বা শা, ওয়া তুজিল্লু মান ত্বা শা,ওয়া বি আদিক্বাল খাইর' সেটাই চিরন্তন সত্য। কেননা আমার মহান প্রভূ কখনও মিথ্যা বলেন না।

বিষয়: বিবিধ

৩৬৪৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File