কুরআন মুখস্ত করার চেয়ে বোঝার ক্ষেত্রে আমরা এক কোটি গুণ পিছিয়ে: দেখুনতো অংকটা ঠিক হলো কি না
লিখেছেন লিখেছেন হককথা ৩০ এপ্রিল, ২০১৩, ০৪:১০:৫৪ বিকাল
‘জানেন এই দুনিয়ায় মোট প্রায় ২ কোটি হাফেজ আছেন। প্রতি ৭৫ জন মুসলমানের মধ্যে একজন হাফেজ আছেন। সেই সৌভাগ্যবান হাফেজ যাঁর বুকের মধ্যে সমস্ত আল কুরআনই সংরক্ষিত হয়ে আছে! এই সব সৌভাগ্যবান হাফেজদেরকে অনেকটা তাচ্ছিল্যের মধ্যে দিয়েই এ পথে ঠেলে দেয়া হয়। অজপাড়া গাঁয়ের সেই সব ছেলেকেই সাধারণত মাদ্রাসায় দেয়া হয় অথবা এমনটা ধারনা করে নেয়া হয় যে, এইসব ছেলেদের স্কুল কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয়ে দিলে তারা পেরে উঠবে না! অতএব তাদের শেষ গতি হিসেবে দেয়া হয় মাদ্রাসায়, বিনা বেতনে বা নাম মাত্র বেতনে পড়, মোল্ল¬া মৌলভী হও, মিলাদ পড়ানোর সময় কিংবা বাবা মা'র জানাজা কিংবা রমজানে ত্বারাবির নামাজের জন্যওতো সমাজে মোল্ল¬া মৌলভী লাগে, হাফেজ লাগে! এমন একটা তাচ্ছিল্য তাচ্ছিল্য ভাব প্রচ্ছন্ন ভাবে লুকিয়ে থাকে এই সব সৌভাগ্যবান এবং মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদের ব্যাপারে।
হ্যাঁ, গড়ে এই বিশ্বে প্রতি ৭৫ জন মুসলমানের মধ্যে একজন হাফেজ রয়েছেন আল কুরআনের। জানেন তো এইসব হাফেজদের মুখে আল কুরআনের সেই সব আয়াতও মুখস্থ যেখানে বিগ ব্যাং এর থিওরি আছে কিন্তু হায়, এই হাফেজ সাহেবরা বিগ ব্যাং কি তা জানেন না। এ ব্যাপারে তাঁদের বিন্দু মাত্র কোন ধারনাও নেই।
আমাদেরকে এই বিগ ব্যাং শিখতে হয় যাদেরকে আপনি গালি দিলেন সেই ইহুদিদের কাছ থেকে! কারন তাদের মধ্যেই রয়েছে এই বিগ ব্যাং এর গবেষক। আমাদের কাছে এর কোন গবেষক নেই, যদিও মৌলিক সুত্র ও জ্ঞান অনেক আগে থেকেই ছিল। আমরা এ নিয়ে মাথা ঘামাইনি অর্থাৎ গবেষণা করিনি। সোজা কথায় আমাদের মাঝে এর কোন বিজ্ঞানী নেই। পুরো দেড়শত কোটি মুসলমানের মধ্যে মাত্র দুইজন বিজ্ঞানী বিজ্ঞান গবেষণায় নোবেল পেয়েছেন। তার মানে দাঁড়ালো ৭৫ কোটি মুসলমানের মধ্যে গড়ে একজন নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী! কেমন একটা কাকতালীয় ব্যাপার তাই না? ৭৫ জন মুসলমানের মধ্যে একজন হাফেজ আর ৭৫ কোটি মুসলমানের মধ্যে একজন বিজ্ঞানী! হিঁসেবটা মনে রাখবেন দয়া করে, কারণ একটু পরেই তা কাজে লাগবে।
বিজ্ঞানের গবেষণায় ওরা আমাদের থেকে অনেক অনেক এগিয়ে। কতটা এগিয়ে সে হিসাব না হয় পরে করা যাবে, এখন কেবল এতটুকু শুনে রাখুন যে, ওদের অর্থাৎ ইহুদিদের মোট জনসংখ্যা হলো এই বিশ্বে মাত্র দেড়কোটি বা তার সামান্য কিছু বেশী। এই দেড়কোটি ইহুদির মধ্যে নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী রয়েছেন ১৪৭ জন (সাহিত্য ও শান্তিতে যে সব ইহুদি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন এমন ২৩ জনকে এই সংখ্যার মধ্যে ধরা হয়নি)। তার মানে সহজ হিঁসাব হলো এই যে, প্রতি এক লক্ষ ইহুদির মধ্যে একজন নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী।
অংক শাস্ত্রে আমি বরাবরই কাঁচা, ভীষণ কাঁচা। এই কারণেই স্কুলে অংকের টিচার আফতাব স্যার আমাকে ভীষণ ভৎর্সনাও করতেন। তিনি একথা খুব ভালো করেই বুঝেছিলেন যে, তাঁর এই অঘা মার্কা ছাত্রটিকে দিয়ে আর যাই হোক না কেন, অন্তত অংকের হিঁসাব মেলানো যাবে না! আসলেই যায়নি। অংকের হিঁসাব জানি না বল্ েজীবনে অনেকের হাতে ভীষণ ঠকেছি। তাই একটা অংকের উত্তর মেলানোর ভার আপনাদের উপরেই দিলাম। দেখুন তো, ইহুদীরা বিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ের ক্ষেত্রে মুসলমানদের চেয়ে ৭৫০ গুণ এগিয়ে কি না? আর বলুন তো ৭৫ জন মুসলমানের মধ্যে একজন হাফেজ আর ৭৫ কোটি মুসলমানের মধ্যে একজন মাত্র নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী। তাহলে কুরআন মুখস্থ করার চেয়ে কুরআন বোঝার ক্ষেত্রে আমরা ঠিক এক কোটি গুণ পিছিয়ে কি না? আগেই বলেছি আমি অংকে দুর্বল। অনেক কষ্টে এই অংকটা করলাম। ভালো করে মিলিয়ে দেখুন তো ঠিক করে হিঁসাবটা মেলাতে পারলাম কি না?
(আমার লেখা 'অন্তর মম বিকশিত করো' বই এর ৫২-৫৩ পৃষ্ঠা থেকে)
বিষয়: বিবিধ
১৫৯৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন