হে ঈমানদারগণ

লিখেছেন লিখেছেন শামীম আহমেদ ০১ মার্চ, ২০১৩, ০৬:১৮:১০ সন্ধ্যা

﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ ۚ إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ﴾১৫৩) হে ঈমানদারগণ !১৫৩ সবর ও নামাযের দ্বারা সাহায্য গ্রহণ করো , আল্লাহ সবরকারীদের সাথে আছেন ৷১৫৪

১৫৩ . নেতৃত্ব পদে আসীন করার পর এবার এই উম্মাতকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ ও বিধান দেয়া হচ্ছে ৷ কিন্তু সবার আগে যে কথাটির প্রতি এখানে দৃষ্টি আর্কষণ করা হচ্ছে সেটা হচ্ছে এই যে, তোমাদের জন্য যে বিছানা পেতে দেয়া হয়েছে সেটা কোন ফুলের বিছানা নয় ৷ একটি বিরাট , মহান ও বিপদ সংকুল কাজের বোঝা তোমাদের মাথায় চাপিয়ে দেয়া হয়েছে ৷ এই বোঝা মাথায় ওঠাবার সাথে সাথেই তোমাদের ওপর চতুর্দিক থেকে বিপদ-আপদ ঝাঁপিয়ে পড়তে থাকবে ৷ কঠিন পরীক্ষার মধ্যে তোমাদের ঠেলে দেয়া হবে৷ অগণিত ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে৷ সবর,দৃঢ়তা, অবিচলতাও দ্বিধাহীন সংকল্পের মাধ্যমে সমস্ত বিপদ-আপদের মোকাবিলা করে যখন তোমরা আল্লাহর পথে এগিয় যেতে থাকবে তখনই তোমাদের ওপর বর্ষিত হবে তাঁর অনুগ্রহরাশি৷

১৫৪ . অর্থাৎ এই কঠিন দায়িত্বরে বোঝা বহন করার জন্য তোমাদের দু'টো আভ্যন্তরীন শক্তির প্রয়োজন ৷ একটি হচ্ছে, নিজের মধ্যে সবর, ধৈর্য্য ও সহিষ্ণুতার শক্তির লালন করতে হবে৷ আর দ্বিতীয়ত নামায পড়ার মাধ্যমে নিজেকে শক্তিশালী করতে হবে৷ পরবর্তী পর্যায়ে আরো বিভিন্ন আলোচনায় সবরের ব্যাখ্যা পাওয়া যাবে ৷ সেখানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নৈতিক গুণাবলীর সামগ্রিক রূপ হিসেবে সবরকে চিহ্নিত করা হয়েছে৷ আর আসলে এটিই হচ্ছে সমস্ত সাফল্যের চাবিকাঠি ৷ এর সহায়তা ছাড়া মানুষের পক্ষে কোন লক্ষ অর্জনে সফলতা লাভ সম্ভব নয় ৷ এভাবে সামনে দিকে নামায সম্পর্কেও বিস্তারিত আলোচনা এসেছে ৷ সেখানে দেখানো হয়েছে নামায কিভাবে মু'মিন ব্যক্তি ও সমাজকে এই মহান কাজের যোগ্যতা সম্পন্ন করে গড়ে তোলে ৷

﴿وَلَا تَقُولُوا لِمَن يُقْتَلُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتٌ ۚ بَلْ أَحْيَاءٌ وَلَٰكِن لَّا تَشْعُرُونَ﴾১৫৪) আর যারা আল্লাহর পথে নিহত হয় তাদেরকে মৃত বলো না ৷ এই ধরনের লোকেরা আসলে জীবিত ৷ কিন্তু তাদের জীবন সম্পর্কে তোমাদের কোন চেতনা থাকে না ৷১৫৫

১৫৫ . মৃত্যু শব্দটি এবং এর ধারণা মানুষের মনে ভীতির সঞ্চার করে ৷ মৃত্যুর কথা শুনে সে সাহস ও শক্তি হারিয়ে ফেলে ৷ তাই আল্লাহর পথে শহীদদেরকে মৃত বলতে নিষেধ করা হয়েছে ৷ কারণ তাদেরকে মৃত বললে ইসলামী দলের লোকদের জিহাদ, সংঘর্ষ ও প্রাণ উৎসর্গ করার প্রেরণা স্তব্ধ হয়ে যাবার সম্ভাবনা দেখা দেবে ৷ এর পরিবর্তে ঈমানদারদের মনে এই চিন্তা বদ্ধমূল করতে বলা হয়েছে যে, আল্লাহর পথে যে ব্যক্তি প্রাণ দেয় সে আসলে চিরন্তন জীবন লাভ করে ৷ এই চিন্তাটি প্রকৃত ব্যাপারের সাথে পূর্ণ সামঞ্জস্যশীলও ৷ এ চিন্তা পোষণের ফলে সাহস ও হিম্মত তরতাজা থাকে এবং উত্তরোত্তর বেড়ে যেতেও থাকে৷

﴿وَلَنَبْلُوَنَّكُم بِشَيْءٍ مِّنَ الْخَوْفِ وَالْجُوعِ وَنَقْصٍ مِّنَ الْأَمْوَالِ وَالْأَنفُسِ وَالثَّمَرَاتِ ۗ وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ﴾১৫৫) আর নিশ্চয়ই আমরা ভীতি, অনাহার, প্রাণ ও সম্পদের ক্ষতির মাধ্যমে এবং উপার্জন ও আমদানী হ্রাস করে তোমাদের পরীক্ষা করবো ৷ এ অবস্থায় যারা সবর করে

﴿الَّذِينَ إِذَا أَصَابَتْهُم مُّصِيبَةٌ قَالُوا إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ﴾১৫৬) এবং যখনই কোন বিপদ আসে বলেঃ “আমরা আল্লাহর জন্য এবং আল্লাহর দিকে আমাদের ফিরে যেতে হবে,১৫৬

১৫৬ . বলার অর্থ কেবল মুখে বলা নয় বরং মনে মনে একথা স্বীকার করে নেয়া যে, "আমরা আল্লাহর কর্তৃত্বধীন ৷ " তাইআল্লাহর পথে আমাদের যে কোন জিনিস কুরবানী করা হয়, তা ঠিক তার সঠিক ক্ষেত্রেই ব্যয়িত হয় ৷ যার জিনিস ছিল তার কাজেই ব্যয়িত হয়েছে ৷ আর "আল্লাহরই দিকে আমাদের ফিরে যেতে হবে " --- এর অর্থ হচ্ছে, চিরকাল আমাদের এ দুনিয়ায় থাকতে হবে না ৷ অবশেষে একদিন আল্লাহরই কাছে যেতে হবে ৷ কাজেই তাঁর পথে লড়াই করে প্রাণ দান করে তাঁর কাছে চলে যাওয়াটাই তো ভালো ৷ এভাবে মৃত্যুবরণ করে তাঁর কাছে চলে যাওয়াটা আমাদের স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করে কোন দুর্ঘটনার শিকার হয়ে বা রোগে ভুগে মৃত্যুবরণ করে তাঁর কাছে চলে যাওয়ার চাইতে লাখো গুণে শ্রেয় ৷

বিষয়: বিবিধ

১১৮০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File