আপনারা শুনছেন -শাহবাগের ইমরান নাকি রাজাকারের নাতি ! মুক্তিযোদ্ধারা ইমরানের নানা কে হাটু পানিতে নামিয়ে গুলি করে হত্যা করে !
লিখেছেন লিখেছেন মুসাফির ০৪ মার্চ, ২০১৩, ০১:২১:৪৫ রাত
দৈনিক আমারদেশ পত্রিকা -শাহবাগ আন্দোলনের নেতা ডাঃ ইমরানের পোষ্টমর্টেম প্রকাশ করেছে ! খবরটা এতই হট কেক হয়েছে যে পাঠক তো কপি করে বিলি করছেন এমনকি "দৈনিক আমাদের সময় " পত্রিকা ও আমারদেশ থেকে হাওলাত করে তা প্রকাশ করেছে । আসুন একবার দেখি কে এই ইমরান এবং মন চাইলে একটা মন্তব্যও করতে পারেনা ।
শাহবাগিদের নেতা ব্লগার ইমরান এইচ সরকার রাজাকারের নাতি ছিলেন। তার দাদা খয়ের উদ্দিন কুড়িগ্রাম জেলার রাজীবপুর উপজেলার বালিয়ামারী বাজারপাড়া গ্রামের একজন চিহ্নিত রাজাকার। মুক্তিযোদ্ধারা একাত্তর সালেই রাজাকার খয়ের উদ্দিনকে হত্যা করে বিএসএফের সহযোগিতায়। স্বাধীনতা-পূর্ব সময়ে খয়ের উদ্দিন পাকিস্তান মুসলিম লীগের সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি পাক হানাদার বাহিনীর পক্ষে অবস্থান নেন এবং তাদের সহযোগিতা করেন।
ডা. ইমরান সম্পর্কে তার গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামের রাজীবপুর এলাকায় অনুসন্ধান চালিয়ে পাওয়া গেছে আরও অনেক চমকপ্রদ তথ্য। এলাকাবাসী জানান, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মাঝামাঝি সময়ে একদিন এলাকার জিঞ্জিয়া নদী দিয়ে নৌকায় করে মুক্তিযোদ্ধারা যাচ্ছিলেন। আরেকটি নৌকায় করে নিকটবর্তী ভারতের কালাইয়ের চরের বাজারে যাচ্ছিলেন রাজাকার খয়ের উদ্দিন। তার নৌকায় আরও অনেক যাত্রী ছিল। পাশের নৌকায় যে মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন, তিনি জানতেন না। রাজাকার খয়ের উদ্দিন শেখ মুজিবকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে নানা কথা বলেছিলেন। একই সঙ্গে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কেও বিরূপ মন্তব্য করছিলেন। মুক্তিযোদ্ধারা তার সম্পর্কে খবর নিয়ে বিএসএফের সহযোগিতায় তাকে পাকড়াও করে। একদিন তাকে কৌশলে মাখনের চর ও বল্লমগিড়ি বিল এলাকায় নিয়ে যায় এবং হাঁটুপানিতে নামিয়ে গুলি করে হত্যা করে। স্বাধীনতার পর তার ঢাকায় থাকা আত্মীয়স্বজন ডা. ইমরানের পরিবারকে শহীদ পরিবার হিসেবে বানিয়ে একটি বাড়ি সরকার থেকে বরাদ্দ নেয়। পরে জানাজানি হয়ে গেলে বাড়ির বরাদ্দ বাতিল হয় বলে জানা যায়।
খয়ের উদ্দিন সম্পর্কে রাজীবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আবদুল হাই সরকার বলেন, ইমরানের দাদা খয়ের উদ্দিন কোনোদিনই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। তিনি মুক্তিযুদ্ধকালে মুসলিম লীগ করতেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাকে বিএসএফের সহযোগিতায় মুক্তিযোদ্ধারা হত্যা করে। ইমরানের বাবা মতিন সরকার সম্পর্কে তিনি বলেন, মতিন সরকার স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে সিপিবি করতেন। এখন আওয়ামী লীগ করেন। বর্তমানে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগ সদস্য।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সূত্র জানায়, ইমরানের দাদার সুযোগ্য পুত্র বা ইমরানের বাবাও ছিলেন তার বাবার অনুসারী। বাবার নাম আবদুল মতিন সরকার। দেশ শত্রুমুক্ত হওয়ার পর জীবন বাঁচাতে ওই বাবা প্রথমে সিপিবি এবং পরে সুযোগমত ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগে আশ্রয় নেন। এরপর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।
খয়ের উদ্দিন সম্পর্কে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সঙ্গে যুক্ত এক মুক্তিযোদ্ধা জানান, বিএসএফের সহযোগিতায় তত্কালীন স্থানীয় চেয়ারম্যান সালিউদ্দিনসহ মুক্তি বাহিনীর নির্দেশে ১৯৭১ সালের ১৪ জুন শান্তি কমিটির নেতা খয়ের উদ্দিনকে হত্যা করা হয়। স্থানীয় স্বাধীনতার পর ১৯৭২-৭৪ সালে খয়ের উদ্দিনের স্ত্রী তার চাচা তদানীন্তন গাইবান্ধা পুলিশের দারোগাকে দিয়ে ঢাকায় যোগাযোগ করে ভাতিজি জামাইকে মুক্তি বার্তা সাপ্তাহিক পত্রিকায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় তার নাম তোলেন। শহীদ পরিবার হিসেবে খয়ের উদ্দিনের মেয়ে ডাক্তার মাধবীর নামে সরকারি বাসা বরাদ্দ নেয়া হয়। তবে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরোধিতার মুখে পরে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের যে তালিকা প্রণয়ন করা হয়, তাতে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ তার নাম রাখেনি। ওই সময় সংসদে এ নিয়ে যে মিটিং করা হয়েছে, সে রেজ্যুলেশনেও ওই বিষয়টির উল্লেখ আছে। এলাকাবাসী জানান, খয়ের উদ্দিনের আরেক ভাই আহমদ হাজীও রাজাকার ছিলেন। তিনিও মুসলিম লীগ করতেন।
সত্যিই সেলুকাস যে, ওই রাজাকার দাদা আর বাবার সন্তান হলেন তথাকথিত দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার এ ব্লগার ইমরান। ১৯৮৩ সালে তিনি নিজ গ্রামেই জন্মগ্রহণ করেন। ৪ ভাইবোনের মধ্যে ইমরান সবার ছোট। ১৯৯৯ সালে এসএসসি ও ২০০১ সালে এইচএসসি পাস করেন। স্থানীয় পর্যায়ে লেখাপড়া শেষে ২০০২ সালে রংপুর মেডিকেলে ৩১তম ব্যাচে ভর্তি হন তিনি। সেখানে তিনি প্রথমে ছাত্রলীগের কলেজ শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক, আহ্বায়ক ও ইন্টার্ন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তার সময় একাধিক সহপাঠী নামপ্রকাশ না করে জানান, কলেজে তিনি ইভটিজার, বেয়াড়া, বেয়াদব ও নেশাখোর হিসেবে পরিচিত ছিলেন। পাস করার পর ২০০৯ সালে চলে আসেন ঢাকায়। আওয়ামীপন্থী পেশাজীবী সংগঠন ‘স্বাধীনতা চিকিত্সক পরিষদ’-এর (স্বাচিপ) জোরে বিশেষ বিবেচনায় অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগ পান কুড়িগ্রামের উলিপুরে। তবে সেখানে সে কোনোদিন দায়িত্ব পালন করেননি। এরপর ঢাকা মেডিকেলে ইমরান অ্যানসথেশিয়া বিভাগে যোগ দেন। কিন্তু সেখান কাজ ছাড়াই বেতন তুলে নিতেন। শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (এমএমইউ) ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তি হলেও তা শেষ করতে পারেননি তিনি। অভিযোগ রয়েছে, স্বাচিপ নেতা ইকবাল আর্সালানের লোক পরিচয় দিয়ে ইমরান বিপুল পরিমাণ টাকা ঘুষ ও চাঁদাবাজি করে দুইটি মাইক্রোবাসের মালিক হন। সাবেক ছাত্রনেতা শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি এমপি যেদিন পিজির ভেতরে আক্রান্ত হন, সেদিন অগ্রভাগে ছিলেন এই ইমরান।
সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার নির্দেশনা কে কে দিতে পারবেন, কে ‘প্রিয় দেশবাসী’ সম্বোধন করতে পারবেন, তা বলা থাকলেও এখন ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান পরিচয় দেয়া শাহবাগি নেতা ইমরান বিকল্প সরকারই দিয়ে যাচ্ছেন অহরহ নানা নির্দেশনা; যা অনিচ্ছা সত্ত্বেও ডরে-ভয়ে পালন করেন অনেকে। অনেক স্কুল না চাইলেও ওই শাহবাগি নেতার নির্দেশনা মেনে যাচ্ছেন। গোয়েন্দা, ব্লগার সূত্র জানায়, আন্দোলন শুরুর পর জামায়াতি প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্ত করার নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে চাঁদাবাজি, চাঁদার টাকায় ধানমন্ডি এলাকায় ফ্ল্যাট কেনা, রাতে সহযোদ্ধাসহ উত্সুক সাধারণ মানুষ শাহবাগে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করলেও ইমরানের রাজধানীর পার্শ্ববর্তী একটি পাঁচ তারকা হোটেলে রাত যাপন, ডিস্কোতে নাচানাচি, এয়ারপোর্ট এলাকার আরেকটি বিলাসবহুল হোটেলে ছাত্রলীগেরই আরেক প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে ফুর্তি করা, তথাকথিত ‘অগ্নিকন্যা’ লাকির আন্দোলনবিমুখ হওয়া, শত শত ছাত্রী ও নারীর রাতে শাহবাগে অবস্থান থেকে বিমুখ হওয়াসহ নানা তথ্য জানা যায়। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান দাবি, তার রাজাকার দাদা ও শাহাবাগে তার নির্দেশনাসহ নানা অভিযোগের বিষয়ে ইমরানের বক্তব্য জানতে আমার দেশ একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে। তবে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বিষয়: বিবিধ
২১৪৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন