ইসলামী ছাত্র শিবিরের মৌলভীবাজার জেলার সাবেক সভাপতি ।কবির ভাই :- কে জানত যিনি এতিমের ব্যাপারে এত আন্তরিক সামান্য সময়ের ব্যবধানে তার সন্তান টা-ই এতিম হয়ে যাবে ?

লিখেছেন লিখেছেন মুসাফির ২৬ আগস্ট, ২০১৩, ০৪:১০:৫০ রাত

কানাডার টরন্টোতে রাত ১০ টা (বাংলাদেশে রবিবার সকাল ৮ টা )।রিং টোন অফ অবস্থায় হঠাত ফোন বেজে উঠলো , নামাজে থাকায় রিছিব করতে পারিনি ।দেখলাম ফোন করেছেন হবিগন্জের চুনারুঘাটের হাফিজ শামছুল ইসলাম । ফোন ব্যাক করলাম ,ওপার থেকে কন্ঠ ভেসে ওঠলো "কবির ভাই সড়ক দুর্ঘটনায় ইন্তেকাল করছেন "(ইন্নালিল্লাহি ....)। লাশ এখন মৌলভীবাজার হসপিটালে পোষ্টমোর্টেমের জন্য রাখা হয়েছে । কথা গুলো বিশ্বাস করতে পারছিলাম না ,এ কি করে হয় একজন সদা হাস্য উজ্জল চেহারার উদিয়মান এক ইসলামী আন্দোলনের নেতা তিনি এভাবে চলেগেলন ?

বিস্তারিত জানতে শাহ আলাউদ্দিন ভাইকে ফোন করলাম , বললেন আপনি ঠিকই শুনেছেন "তিনি আমাদেরকে ছেড়ে চলে গেছেন " লাইন কেটে গেল ,বুঝতে পারলাম সবাই লাশ নিয়ে ব্যস্ত । দুই/একজন দ্বীনি ভাইকে খবরটা জানালাম কেউ-ই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না ।কবির ভাইকে আমি খুব কাছে থেকে দেখতে পেয়েছিলাম ,তিনি ছিলেন ইসলামী ছাত্র শিবিরের মৌলভীবাজার জেলার সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে জামায়াতের মৌলভিবাজার শহর শাখার সেক্রেটারী । যিনি একাধারে কয়েক বছর আমার সাথে ফজর নামাযের মুসল্লি ছিলেন ।ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের দুই দুই বার জেলা দায়িত্বশীল ছিলেন ,জীবনের ঝুকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন ,কত বিপদ মছিবত তার উপর দিয়ে গেছে কিন্তু কোন দিন তার মুখে বিরক্তির চিহ্ন দেখি নি ।রাত তখন ১ টা ৩০ মিনিট , সর্বশেষ খবর জানতে ফোন করলাম ষ্টার ইলেকট্রিকের মালিক ফয়সল ভাইকে ।তিনি কবির ভাই সম্পর্কে যা বললেন তা ব্যক্ত করার মত ভাষা আমার নাই ।তিনি বললেন কবির ভাই যে এত অল্প বয়সে এত জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছিলেন তা আমাদের জানা ছিলনা আজ হসপিটালে তাকে দেখতে আসা আগনিত মানুষের ভিড় দেখে তা অনুভব করলাম ।মাত্র বছর ২/১ হল বিয়ে করেছেন, বিয়ের সাফারী পরা ছবি এখনও ফেইসবুকের অনেক বন্ধুদের কাছে সংরক্ষিত আছে ,শুনেছি ৫/৬ মাস বয়সের একটি সন্তান রয়েছে তার । কবির ভাই ছিলেন খুবই দরদি ,বিশেষ করে এতিমদের ব্যাপারে তার দরদের কোনসীমা ছিলনা ।আমি রশিদিয়া এতিম খানার দায়িত্বে থাকা কালে তার সাথে দেখা হলে এতিমদের খোজ খবর নিতেন ,মাঝে মাঝে এতিমদের সাথে বসে সময় কাটাতেন ,তাদের মনের কথা শুনতেন ,এতিমদের উন্নয়নে আর কি কি করা যায় পরামর্শ দিতেন কিন্ত কে জানত যিনি এতিমের ব্যাপারে এত আন্তরিক সামান্য সময়ের ব্যবধানে তার সন্তান টা-ই এতিম হয়ে যাবে ? কবির ভাই মরে গিয়ে আমাদেরকে আবার জানিয়ে দিয়ে গেলেন আমরা মৃর্তুর কত নিকটে অবস্থান করছি । আজ হোক কাল হোক আমাদেরকে যে কোন সময় মহান মাবুদের নিকট হাজির হয়ে যেতে হবে এজন্য সময় থাকতে আমাদেরকে আখেরাতের পাথেয় সংগ্রহ করতে হবে ।

দোয়া করি মহান আল্লাহ যেন কবির ভাইকে ক্ষমা করেন তাকে জান্নাত দান করেন ,পরিবার পরিজন দ্বীনি ভাই বোন সহ সবাইকে ছবর করার তাওফিক দান করেন (আমীন)

বিষয়: বিবিধ

২১০৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File