বিএনপির আত্বঘাতী-নতজানু নীতি ও শেষ পর্যন্ত আওয়ামিলীগকে খুশী করতে পারল না !
লিখেছেন লিখেছেন মুসাফির ১৭ মে, ২০১৩, ০৪:২৬:২৮ রাত
হেফাজাতে ইসলামের ৬ এপ্রিলের ঢাকা মহসমাবেশের পর আলীগ কিছুটা হলেও চিন্তিত হয়ে পড়ে । বিশেষ করে তাদের একমাসের আল্টিমেটামকে সামনে রেখে সারা দেশে যে সমাবেশ গুলো হচ্ছিল এবং জনতার শতস্ফুর্ত উপস্থিতি তা আলীগকে রাজনৈতিক চালের ব্যাপারে নতুন করে হিসাব নিকাশ করতে বাধ্য করছিল । তারা দেখতে পাচ্ছিল যে ১৮ দলের নিয়ামক শক্তি জামাত শিবিরকে কাবু করার পর বিএনপির অবস্থা এমন পর্যায় দাড়িয়েছে যে প্রেসক্লাবের ভিতর আর ফুটপাত তাদের আন্দোলনের এক মাত্র মাঠ ।কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী থেকে শুরু করে দলের শত শত নেতা কর্মিকে গ্রেপ্তার করে ডান্ডা বেড়ি পরালেও ফুটপাত থেকে রাস্থায় নেমে তারা সরকারকে আর বিরক্ত করতে চান না । কিন্তু মাঝ পথে ঝামেলায় ফেলে দিল হেফাজাত ! সরকার বুঝতে পেরেছিল ৫ মে কি হতে যাচ্ছে । খালেদা জিয়া যদি বুদ্ধিমত্তার সাথে এ শক্তিকে কাজে লাগায় তাহলে অনাকাংখিত কিছু একটা ঘটে যেতে পারে ! তাই তড়িগড়ি করে সংলাফ নামক দাবার গুটি চালানো হল , বলা হল খালেদা জিয়া যেখানে তিনি বসতে রাজি হবেন সেখানেই বসতে রাজি ,এমনকি প্রধানমন্ত্রী যুগল ছবিতে পোজ দিতে ও দাওয়াত দিতে বাদ রাখলেন না । এ প্রস্তাব এজন্য দেওয়া হল যাতে ৪ মে মহাসমাবেশ থেকে লাগাতার অবস্থানের কর্মসুচী যেন না আসে । ১৮দলের শরীকরা জানতেন যে বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী লাগাতার অবস্থান কর্মসূচীর মত জোরালো কর্মসুচী ঘোষনা করা হবে । এব্যাপারে নেতা কর্মিদের প্রস্তুতি ও ছিল । আমরা মিডিয়ার সুবাদে জানতে পারলাম যে বিএনপির এক সিনিয়র বাম ঘরনার নেতার পরামর্শে নেত্রী ঘোষনা দিলেন ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম । জোটের শরীকরা হতবাক এমনকি বিএনপির সিনিয়র অনেক নেতরা স্টেজে তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন ।এমনকি নেত্রীর সোয়া ঘন্টার বক্তব্যে নিজ দলের নেতা কর্মিদের উপর জুলুম নির্যাতনের ব্যাপারে অনেক কিছুই বললেন কিন্ত শরিকদের ব্যাপারে কিছু বললেন না । যে ছাত্র শিবির প্রোগ্রাম বাস্তবায়নে জীবন বাজী রেখে কাজ করছে তার কেন্দ্রীয় সভাপতি তখন ৩৬ দিনের রিমান্ডে ছিলেন তার মুক্তির দাবী জানালেন না ,নেত্রী আলোচনার প্রস্তাব পেয়ে এমনই আ্ত্বহারা হলেন মনে হল আগামিতে আর আন্দোলনের প্রয়োজন হবেনা বৈঠকে বসলেই শেখ হাসিনা কেয়ার টেকার সরকার মেনে নিবে আর বিএনপি সোজা ক্ষমতায় ! বিদেশি এক মুরব্বি তার সাথে দেখা করে শর্তহীন ভাবে আলোচনায় বসার কথা বললে সরকারের পক্ষথেকে চিঠি পেলেই বসবেন বলে পত্রিকায় দেখলাম । অমনি চারিদিকে সাজ সাজ রব পড়ে গেল রাজনীতির বরফ গলতে শুরু করেছে ,বাংলার আকাশ থেকে কালো মেঘ সরে যাচ্ছে ! দুই দুইবার সমাবেশ ডাকলেন সরকার অনুমতি দিলনা , নেত্রীকে বুঝানো হল সরকারের উপর নারাজ হয়ে গরম কোন কর্মসূচী দবেন না তাহলে প্রধানমন্ত্রী চটে গেলে আর সংলাপ হবেনা । কোন রকম খুড়া অজুহাত দেখিয় পিচিয়ে দেন । নেত্রী সংলাপের ভবিষ্যত চিন্তা করে কর্মসূচী পিছালেও সরকার বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার বন্ধ করেনি । খারাপ আবহাওয়ার কথা বিবেচনায় রেখে হরতাল প্রত্যাহার করলেও সরকার দুলুকে এবং জেল গেইট থেকে পুনরায় সালাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করতে পিছপা হয়নি ।সর্ব শেষ গতকাল প্রধানমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বিএনপির সাথে কোন সংলাপ নয় ,কোন চিঠিও দেওয়া হবেনা , যদি কোন কিছু বলতে চান তাহলে তাকে সংসদে এসে বলতে হবে ! ! কারন সরকারের মাথার উপর আর এখন কালো মেঘ নাই , যদি আবার বিপদ আসে তখন হয়ত আবার অফার আসতে পারে ! -অতীতের মান্নান জলিল সংলাপ নামক নাটক দেখে দেশের আপামর জনতার উপলব্ধি হয়েছে যে এ দিয়ে কোন সমাধান আসবেনা ,যখনই রাজনৈতিক কোন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে তখনই আন্দোলন সঠিক সমাধান নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে ।আমাদের দুর্ভাগ্য যে এ সহজ কথাটা সারাধারণ জনতা বুঝলেও আমাদের নেতা নেত্রীরা বুঝেন না । দেশের আমজনতা মনে করে বিএনপির সামনে এখন দুটি পথ খোলা আছে হয় তারা আন্দোলন থেকে সরে গিয়ে নতজানু হয়ে শেখ হাসিনাকে খুশি করে সংলাপে বসার ব্যবস্থা করবে আর নাহয় জনতার প্রাণের দাবী আন্দোলনের মাধ্যমে আদায় করে নেবে ।
বিষয়: রাজনীতি
১৪৬১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন