হাফিজ তুমি চলে গিয়ে পুলিশের খাতায় এক আসামির সংকট ??
লিখেছেন লিখেছেন দিগন্তে হাওয়া ১৯ মে, ২০১৬, ০৬:৪৬:২৯ সন্ধ্যা
হাফিজুর রহমান হাফিজ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসনের দ্বিতীয় বর্ষের মেধাবী ছাত্র। নম্র, ভদ্র এক ছেলে। কেউ কখনো বলতে পারবেনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বা নিজ এলাকা ছোটবনগ্রাম পশ্চিম পাড়ায় কারো সাথে কখনো খারাপ ব্যবহার করেছে।
ছেলেটি আজ ভোর সাড়ে চারটায় আমাদের ছেড়ে চলে গেছে।
কি করেছিল ছেলেটি? কেন তাকে চলে যেতে হলো এভাবে?
ঘটনা ২৩ এপ্রিলঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক অধ্যাপক এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকি অন্যদিনের মত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য রওয়ানা হন কিন্তু পথিমধ্যে শালবাগান এলাকায় বাসার অদূরে দুর্বিত্তদের হাতে নিহত হন।
আসামির খোঁজে পুলিশঃ শিক্ষক হত্যাকাণ্ডে পুরো দেশ তোলপাড়। ভরসা পুলিশের উপরে। চাই একজন আসামি। অনেক চিন্তাভাবনা করে হাফিজের সন্ধান মিললো। ২৪ এপ্রিল পুলিশের ৫টি গাড়ি এসে তুলে নিয়ে যায় হাফিজকে। গোটা জাতি রাজশাহির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশদের বাহবা দিতে থাকে। সাথে সকল মিডিয়া জুড়ে নিউজ হয় রাবি শিক্ষক হত্যায় এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
কি চমৎকার তাইনা !!
পরিবারের আবেদনঃ গ্রেফতার হয়েছে নিজ সন্তান হাফিজের বাবা, মা কি ঠিক থাকতে পারেন। ছুটে চলেছেন এখান থেকে ওখানে, করেছেন সাংবাদিক সম্মেলন, জানিয়েছেন তাদের হাফিজ নির্দোষ, অসুস্থ যেকোন মুহুর্তে ঘটতে পারে বিপদ। কিন্তু কে শুনে কার কথা।
হাফিজুর রহমানের এক ভগ্নিপতি দাবি করেন, তাকে প্রতি সপ্তাহে রক্ত দিতে হতো। কিন্তু গ্রেফতারের পর থেকে পুলিশ ও কারা কর্তৃপক্ষ তাকে রক্ত দেয়ার কোনো প্রয়োজনই বোধ করেনি। বিনা চিকিৎসায় হাফিজের মৃত্যু হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
সুত্রঃ ইত্তেফাক, http://www.ittefaq.com.bd/wholecountry/2016/05/19/68683.html
তাঁর বড় ভাই আবদুল হালিম সাংবাদিকদের বলেন, হাফিজুর অসুস্থ ছিলেন। এ জন্য তাঁরা তাকে যে ওষুধ খাওয়াতেন, পুলিশ ধরে নিয়ে যাওয়ার পর আর সেই ওষুধ খাওয়ানো হয়নি। এ কারণেই তাঁর ভাই মারা গেছেন।
সুত্রঃ প্রথম আলো, http://bit.ly/27Db5de
রিমান্ডের আবেদনঃ ২৮ এপ্রিল আসুস্থ হাফিজকে পুলিশ ৭দিনের রিমান্ডের আবেদন করে ম্যাজিস্ট্রেট মোকসেদা আজগর হাফিজের বাবা-মার দিকে তাকিয়ে ৭দিন থেকে কমিয়ে ৪দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তারপরে রাতের আধারে ডিবি অফিসে কি হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
অসুস্থ হাফিজঃ রিমান্ডের পর থেকেই হাফিজের অবস্থার অবনতি হবার খবর আসে কিন্তু সেতো হাফিজ, নিরীহ এক ছেলে। তার জন্য কিসের মায়া। তারপরেও দয়ার সাগরে ভেসে গত ১৭ মে অসুস্থ হাফিজকে রাজশাহী মেডিক্যাল হাসপাতালের প্রিজনসেলে ভর্তি করা হয়।
শিবির করার জন্যই কি হাফিজের সাথে এই নির্মমতাঃ হাফিজ শিবিরের সদস্য প্রার্থী ছিলেন সাথে শাহমখদুম থানার শিবিরের বায়তুলমাল সম্পাদক ও ১৯ নং ওয়ার্ডের সেক্রেটারীর দায়িত্ব পালন করছিলেন। শিবির দাবি করেছে তাকে উপযুক্ত চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।
পুলিশের কথাঃ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে (পুলিশ হাফিজুরের কোনো সংশ্লিষ্টতা পায়নি)। তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রেজাউস সাদিক তখন বলেছিলেন, হাফিজুরের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে, সেগুলো তাঁরা যাচাই বাছাই করে দেখছেন।
তখন বলেছিলেন আর ??
সুত্রঃ প্রথম আলো, http://bit.ly/27Db5de
এদিকে ১৫ মে রাতে গাইবান্ধা থেকে ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। জেএমবির এই ৪ সদস্য শিক্ষক অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিকীর হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত বলে দাবি করেছেন রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. শামসুদ্দিন।
মঙ্গলবার দুপুরে আরএমপির সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কথা বলেন। তবে হাফিজের মৃত্যুর দায় কার ?
সুত্রঃ http://bit.ly/23Yf9zY
পুলিশের খাতায় আসামী সংকটঃ হাফিজের চলে যাওয়াতে রাবি শিক্ষক হত্যা মামলায় এক আসামির সংকট দেখা দিয়েছে। আরেক হাফিজ গ্রেপ্তার হয়ে পুলিশি হেফাজতে মারা যাবেনা তার গ্যারান্টি কে দিবে ?
এভাবেই প্রিয় হাফিজের চলে যাওয়া,
আর আমাদের চুপ থাকা,
অন্যদিকে নতুন এক হাফিজের সন্ধানে খোঁজে ফেরে পুলিশ ...
বিষয়: বিবিধ
১৫৫৪৪ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মহান আল্লাহ হাফিজ ভাইকে বেহেশত নসিব করুন।-আমিন
লেখককে ধন্যবাদ।
সেদিনের প্রতীক্ষায় থাকলাম।
মন থেকে ধিক্কার আর ঘৃণা জানাই কুকুর পুলিশকে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন