ইরানের হামেদানে ইবনে সিনার সমাধিসৌধ ও আমি

লিখেছেন লিখেছেন দিগন্তে হাওয়া ১৬ মার্চ, ২০১৩, ০১:২০:৩৬ রাত



কিছুক্ষন আগে ফিরলাম ইরানের হামেদানে অবস্থিত মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম সেরা চিকিৎসক, গণিতজ্ঞ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং দার্শনিক "ইবনে সিনা (ابن سین)" এর সমাধিসৌধ ও তার স্মৃতি বিজড়িত কিছু জিনিস দেখে।

কিছু ব্যাক্তির অনুরোধে বিস্তারিত ''তাঁর জীবনী'' উল্ল্যেখ করার চেষ্টা করেছি।

যার মধ্যযুগীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের ভিত রচনায় অবদান অনস্বীকার্য। তার মূল অবদান ছিল চিকিৎসা শাস্ত্রে। তিনি চিকিৎসা শাস্ত্রের বিশ্বকোষ ''আল-কানুন ফিত-তীব'' রচনা করেন যা ঊনবিংশ শতাব্দী পর্যন্তও প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল প্রতিষ্ঠানসমূহ পড়ানো হয়। ।।

ইবনে সীনা বুখারার (বর্তমান উজবেকিস্তান) অন্তর্গত খার্মাতায়েন জেলার আফসানা নামক স্থানে ৯৮০ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে (মতান্তরে, আগস্ট মাস) জন্মগ্রহণ করেন। তার মাতৃভাষা ছিল ফারসি।

ইবন সিনা অনেক দেশ ভ্রমণ করেছেন। তার অভিজ্ঞতার ঝুলিও ছিল সমৃদ্ধ। সবশেষে তিনি

ইরানে গমন করেন এবং জীবনের শেষ সময়টি অতিবাহিত করেন।

ইরানে যাওয়ার পথে ইবনে সিনা তার সমসাময়ীক কবি ফেরদৌসীর জন্মস্থান বিখ্যাত তুস নগরী পরিদর্শন করেছিলেন। এখান থেকে তিনি ইরানের সুপ্রাচীন শহর হামাদানে গমন করেন। ঐশ্বর্যশালী এবং ঐতিহাসিক এই নগরীটিকে ভাল লেগে গিয়েছিল সিনার। এখানে অনেকদিন ছিলেন। হামাদানে তিনি প্রশান্তি খুঁজে পান।

এখানেই তিনি বিখ্যাত দার্শনিক গ্রন্থ কিতাব ''আল শিফা'' রচনা করেন।

এই বইটি কবি উমর খৈয়ামের খুব প্রিয় ছিল। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এটি তার সাথে ছিল বলে কথিত আছে। তিনি মনে করতেন জ্ঞানপিপাসু এবং জ্ঞান চর্চাই তার মুখ্য কাজ।

হামাদানের সুলতান অসুস্থ হলে ইবন সিনা তার চিকিৎসা করেন। এতে সম্রাট আরোগ্য লাভ করেন। এই চিকিৎসায় খুশি হয়ে সম্রাট তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদে নিয়োগ দেন। হামাদান থেকে পরবতিতে তিনি ইরানের অন্যতম নগরী ইস্পাহানের পথে পা বাড়ান।

ইবন সীনার আসার কিছুদিন পরই ইরানের ইস্পাহান নগরীতে এক ছদ্মবেশী সাধুর আবির্ভাব হয়েছিল।

ইস্পাহানের সম্রাট জানতে পারেন যে এই সাধু আসলে ইবন সিনা। তিনি তাকে নিজ দরবারে নিয়ে আসেন এবং রাজসভায় আশ্রয় দান করেন।

এখানে বসেই তিনি তার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কিতাব ''আল ইশারাৎ'' রচনা করেন।

কিছুদিন পর হামাদান এবং ইস্পাহাসের মধ্যে যুদ্ধ বেধে যায়। এসময় সম্রাট ইবন সিনাকে সাথে নেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এতে তিনি রাজী হয়ে ইস্পাহানের সৈন্যবাহিনীর নাথে হামাদানের পথে রওয়ানা করেন।



হামাদানের সাথে সিনার অনেক স্মুতি জড়িত ছিল। আর এখানে এসেই তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন।

হামাদানের যুদ্ধ শিবিরে অবস্থানকালে ইবন সিনা ১০৩৭ খ্রিস্টাব্দে (৪২৮ হিজরী) মৃত্যুবরণ করেন।



ধন্যবাদ সবাইকে ...

ইনশা আল্লাহ পরে কথা হবে অন্য বিষয় নিয়ে, আল্লাহ হাফেজ।

আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন যেন আমি ভালো মানের একজন ডাক্তার হতে পারি।

বিষয়: বিবিধ

২২৯৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File