মুসলিম দেশে ইসলাম অবমাননা

লিখেছেন লিখেছেন জুনায়েদ ০২ মার্চ, ২০১৩, ০৮:৩০:৩৬ রাত

আমাদের দেশ বাংলাদেশ, মুসলিম জনসংখ্যার দিক দিয়ে দ্বিতিয় বৃহত্তম দেশ হিসাবে পরিচিত, এবং আলেম ওলামা, পীর বুযুর্গের দিক দিয়ে ও অনেক প্রসিদ্ব।পাকৃতির দিক দিয়ে ও অত্যান্ত ভাল, তাই এ দেশে জন্ম নিয়ে গর্বিত। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো ও সত্য য়ে, এদেশের জনসংখ্যার দিক দিয়ে ৯০% মুসলমান হওয়া সত্বেও কিছু সংখ্যক নাস্তিক মুরতাদ ইসলাম ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কে নিয়ে ভিভিন্ন ধরনের অপমানকর ও কুটুক্তিমূলক কথাবার্তা ছড়ায় ছলছে। উল্লেখ্যা কিছুদিন পুর্বে আমেরিকার এক খৃস্টান মহানবী কে নিয়ে চলচিত্র প্রকাশ করার ফলে গোটা মুসলিম দেশ সমূহে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় বয়ে যায়। যার ধারবাহিকতায় বাংলাদেশ সরকার ও নিন্দা জানিয়েছে এবং তাদের ইউটিউব ও বন্দ করে দিয়েছে । কিন্তু যখন বাংলাদেশের অব্যান্তরে এধরনের কোনো ঘঠনা ঘটে তাদের কোনো সাস্তি দেওয়া হয়না বরং যদি ধর্মপ্রান মুসলমানরা তাদের শায়েস্তা করতে যায় তখন পুলিশ এসে তাদের নিরপত্তা দিয়ে থানায় নিয়ে যায়।আর কোনো উল্যেখযোগ্য শাস্তি ও দেওয়া হয়না। বেশিদিন হয়নায় রাজশাহি বিশ্যবিদ্যালয় এর শিক্ষকনামে হায়ওয়ান মহানবীকে নিয়ে কুটুক্তি করছে, কিন্ত তার কোনো বিচার হয় নাই। যার ফলে তাদের সাহস আরো বেড়েই চলছে। অপর দিকে যখন অন্য মুসলিম দেশগুলোর প্রতি লক্ষ করি, তাদের দেশে এধরনের নাস্তিক মুরতাদ ও ইসলাম নিয়ে কুটুক্তিকারির সংখ্যা কম দেথা যায়, কারন ঐ সব দেশে এধরনের কোনো কর্ম প্রকাশ পেলে তা কঠোর হাতে ধমন করে। কারন আলেম ওলামাদের প্রতি ও ইসলামের প্রতি রয়েছে তাদের শ্রদ্বা। পক্ষান্তরে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিষয়টা একদম ব্যতিক্রম। উদাহরন স্বরুপ বলি পাকিস্তানে যখন কাদিয়ানি ফেতনা শুরু হলো তখন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম মুপ্তি মাহমুদুল হাছান (রহঃ) এর নেতৃত্বে সরকারের কাছে কাদিয়ানিদের সরকারিভাবে অমুসলিম ঘোষনার দাবী জানায়, সরকার তখর তাদের অমুসলিম হিসাবে ঘোষনা দিল। কিন্ত বাংলাদেশের কোনো সরকার কাদিয়ানিদের সরকারিভাবে আজ পর্যন্ত অমুসলিম ঘোষনাতো করে নাই বরংছ বাংলাদেশের ওলামায়ে কেরাম ও ধর্মপ্রান মুসলমানরা যখন তাদের প্রতিহত করার জন্য যায় সরকার তাদের নিরপত্তার জন্য আইনশৃংখলা বাহিনি মোতায়েন করে। প্রসঙ্গগত, বর্তমানে শাহবাগে যুদ্দাপরাদির ইস্যকে কেন্দ্র করে কিছু নাস্তিক মুরতাদ তাদের নাস্তিক্যকে ছড়ায় ছলছে।যুদ্দাপরাদির বিচার আমি ও চাই, তবে যুদ্দাপরাদির ফাসি চাই একে পুঁজি করে এদেশ থেকে সব ধরনের ধর্মিয় রাজনিতি তথা ইসলামিক রাজনিতি নিষিদ্বের যে পায়তারা তারা করছে তা কখনো কোনো ধর্মপ্রান মুসলমান মেনে নিতে পারেনা।শুধু এখানে শেষ নয়, শাহবাগের আন্দোলনের নেত্যিত্বধানকারি কতিপয় নাস্তিক মুরতাদ ব্লগার তাদের ব্লগে ইসলাম ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কে নিয়ে যেধরনের কুটুক্তি করছে যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। তাদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ব্যাক্তি হলো রাজিব, তার ব্লগে ইসলাম ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কে নিয়ে যে ধরনের কুটুক্তি পাওয়া গেছে তা একজন মুসলমান ঘরে জন্ম নেওয়া সন্তানদের থেকে তো দুরের কথা অন্য ধর্মের সন্তানদের থেকে ও কম পাওয়া যায়। কিন্তু যখন রাজিব কে বা কারা খুন করলো তখন আমাদের প্রধানমন্ত্রি তাকে দ্বিতিয় মুক্তিযুদ্দের শহিদ বলে আখ্যায়িত করলো (নাউযুবিল্লাহ)। তাকে মুক্তিযুদ্দের শহিদ বলে ইসলামের যে একটা শহিদী মর্যদা রয়েছে, তাকে কলংকিত করলো এবং মুক্তিযুদ্দে যারা শহিদ হয়েছে তাদের ও কলংকিত করলো। সে ইসলাম ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কে নিয়ে যেধরনের কুটুক্তি করছে সে মুসলমান থাকতে পারেনা, মুরতাদের হুকুমে ছলে গেছে। আর মুরতাদের সর্বোচ্ছ শাস্তি হলো হত্যা করা, সুতারং তাকে য়ে বা যারা হত্যা করেছে সে হত্যা করে কোনে অপরাধ করে নাই।যখন রাজিবের এসমস্ত নাস্তিকতা দুই একটা মিড়িয়া বিশেষ করে আমার দেশ পত্রিকা প্রকাশ করলো তখন বাংলাদেশের সব ওলামায়ে কেরাম ও ধর্মপ্রান মুসলমারা ক্ষোভে পেটে উঠলো, এবং এর প্রতিবাদ স্বরুপ প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন হাটহাজারি মাদ্রাসার মহা পরিচালক আল্লামা আহমাদ শফি সাহেব (দাঃবাঃ) দেশবাসির প্রতি এর প্রতিবাদ করার আহ্ববান জানান। তার প্রতিবাদ স্বরূপ ২২/০২/২০১৩ শুক্রবার সারাদেশে জুমার নামাজের পর বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছে। কিন্তু অত্যান্ত দুঃখের বিষয় সরকার ঐ সব নাস্তিকদের বিরুদ্দে কেনো ব্যাবস্হা না নিয়ে উল্টো ওলামায়ে কেরাম ও ধর্মপ্রান মুসলমানদের মিছিলে পুলিশ বাহিনিদের দিয়ে গুলি চালিয়ে ৫জন কে শহিদ করে ও শত শত জন কে আহত করে এবং অনেক জন কে গ্রেফতার করে। সরকারের এসব অত্যাচারের প্রতিবাদে যখন ওলামায়ে কেরাম ২৪/০২/২০১৩ রবিবার সারাদেশে হরতালের ডাক দিয়েছে, তখন শাহবাগের কথিত গণজাগরণ মঞ্চ থেকে হরতাল প্রতিহত করার ডাক দেয় আওয়ামিলিগ ও তার অঙ্গ সংগঠন গুলো।আর এর সাথে তাল মিলিয়ে স্বরাষ্টমন্ত্রি মখা ও বলেন হরতাল প্রতিহত করা হবে এবং সেদিন ও পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ৫ জন কে শহিদ করে ।আমি স্বরাষ্টমন্ত্রিকে বলতে চাই এ হরতাল কোনো রাজনিতিক হরতাল নয়, আপনি কাদের প্রতিহত করতে চাইতেছেন? মহানবীর অনুসারিদের? এদের সাথে বেয়াদবী করে টিকতে পারবেননা।

এখানে শেষ নয় শাহবাগের কথিত গণজাগরণ মঞ্চ থেকে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে ব্লগার দের নস্তিকতা প্রকাশ করার কারনে হত্যার হুমকি দেওয়া হয় এবং কিছু সাংবাদিক নামে কলংক যারা সত্য কে অসত্য করে ও বাস্তব কে অবাস্তব করে প্রকাশ করে তারা ও তাদের সাথে সুর মিলায়ে তাকে গ্রেফতারের দাবী জানায়।সর্বশেষ শাহবাগের কথিত গণজাগরণ মঞ্চ খেকে মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতারের জন্য স্বরাষ্টমন্ত্রনালয়ে আল্টিমেটাম দিয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হয়, এবং স্বরাষ্টমন্ত্রি তাকে গ্রেফতারের জন্য সব ধরনের ব্যাবস্হা নিবে বলে তাদের আশ্বাস দেন।আমি জাতির কাছে একটা প্রশ্ন করতে চাই, মাহমুদুর রহমানের অপরাধটা কি? সে ব্লগার রাজিব সহ অন্যান্য ব্লগারদের ইসলাম ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কে নিয়ে তাদের কুরুচিপুর্ণ মন্তব্যগুলো প্রকাশ করেছে, এটাই কি তার অপরাধ? যারা ইসলাম ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কে কুটুক্তিমূলক মন্তব্য লিখেছে তারা অপরাধি হয়না, তাদের গ্রেফতার ও করা করা হচ্ছেনা।আর য়ে এর প্রতিবাদ স্বরুপ প্রকাশ করেছে সেই অপরাধি? আমিতো বলবো মাহমুদুর রহমান প্রকাশ করে অপরাধি হওয়াতো দুরের কথা বরং সে তার ঈমানি দায়িত্ব পালন করছে।দুঃখের বিষয় হলো আমাদের প্রধানমন্ত্রি ও রাঙ্গামাটির জনসভায় বলেছেন প্রকাশকারি আর লিখক উভয়জন সমান অপরাধি। এক্ষেত্রে আমি মহানবীর একখানা হাদিছ উল্যেখ করতেছি, মহানবী (সঃ) এরশাদ করেন " তোমাদের মধ্যে যদি কেহ কোন খারাপ কাজ হতে দেখে, তখন সে যেন তা হাত দ্বারা প্রতিহত করে, যদি হাত দ্বারা প্রতিহত করার সমর্থ না থাকে তাহলে মুখে প্রতিবাদের মাধ্যমে তা প্রতিহত করবে,আর যদি মুখে প্রতিবাদের সমর্থ ও না থাকে তবে অন্তর দিয়ে তা ঘৃনা করবে আর অন্তর দিয়ে ঘৃনা এটা হলো ঈমানের দুর্বলতা"। ইসলাম ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কে নিয়ে কুটুক্তি করার চেয়ে জগন্য খারাপ কাজ আর কি হতে পারে? উল্যেখিত হাদিছের আলোকে সমস্ত মুসলমানদের উপর সামর্থ অনুযায়ি এর প্রতিবাধ করা ঈমনি দায়িত্ব।মাহমুদুর রহমান সে যেহেতু একজন কলামিস্ট সাংবাদিক সুতারং তার দায়িত্ব হলো এটা প্রকাশ করে প্রতিবাদ করা, সে তাই করেছে।এর জন্য তাকে বাহবা দেওয়া দরকার। কিন্তু সেটা না করে খোদ প্রধানমন্ত্রি তাকে অপরাধি সাব্যাস্ত করলেন, উল্যেখিত হাদিছ প্রধানমন্ত্রির বক্তব্যের সাথে সাংঘর্ষিক।

সরকারের উদ্যেশ্যে বলতে চাই, দেশ কি আপনারা পরিচালনা করতেছেন? নাকি শাহবাগের কথিত গণজাগরণ মঞ্চ পরিচালনা করে? যদি আপনারা পরিচালন করেন তাহলে সেখান থেকে যে দাবী তোলা হয় তা বাস্তবায়নে ব্যাস্ত হয়ে যান কেন? আপনারা কি তাদেরকে ভয় পান? যদি তাই হয় তাহলে বলবো আপনারা দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ, তাই আপনাদের পদত্যাগ করা উচিত।

সর্বশেষ আইনশৃংখ্যলা বাহিনি বিষেশ করে পুলিশ বাহিনির উদ্দেশ্যে একটা কথা বলতে চাই, আপনারা হলেন দেশের রক্ষক, মানুষের নিরাপত্তাদানকারী কিন্তু যদি আপনারা রক্ষকের পরিবর্তে বক্ষক হয়ে যান, মানুষের নিরাপত্তা দেওয়ার পরিবর্তে মানুষদের হত্যা করেন তবে দেশের মানুষ কাকে বিশ্বাস করবে।আপনারা সরকারের চাকরি করেন, তাই তার হুকুম পালন করবেন ঠিক কিন্তু যদি নিজের বিবেক বুলি দিয়ে ঈমান বিক্রি করে সরকারের গোলামি শুরু করেন, এবং গোলামি করতে পেরে নিজেদের ধন্য মনে করেন তাহেলে আপনাদের মাঝে আর প্রানির মাঝে ব্যাবধানটা বা কি রইলো।কারন পৃথিবীর সবছেয়ে বড় আদালত হলো বিবেক, সুতারং বিবেক উপেক্ষা করে কাজ করা মানেই হইলো প্রানির পরিচয় দেওয়া।দ্বিতয়ত মানুষ বিষেশ করে মুসলমান একমাত্র আল্লাহর গোলামিই করবে, সে ক্ষেত্রে যদি সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ তায়ালাকে ভুলে গিয়ে মানুষের গোলামি করে তবে সে প্রানির চেয়ে ও অধম, যাহা আল্লাহ তায়ালা কোরআনের মধ্যে ও বলেছেন।তাই আপনাদের প্রতি প্রত্যাশা আপনারা দায়িত্য পালনে ন্যায়, অন্যায় বাছবিচার করবেন।

বিষয়: বিবিধ

১২১৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File