২৭ এপ্রিল নারী সমাবেশে না এসে রোজা পালনের আহ্বান : ইসলামের বিরুদ্ধে গার্মেন্ট শ্রমিকদের ব্যবহারের বিপদ সম্পর্কে হুশিয়ার থাকতে হবে - হেফাজতে ইসলাম
লিখেছেন লিখেছেন জুনায়েদ ২৩ এপ্রিল, ২০১৩, ১১:২৮:১৮ রাত
ইসলামবিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ২৭ এপ্রিল আয়োজিত তথাকথিত নারী সমাবেশে গার্মেন্ট শ্রমিকদের ব্যবহারের বিপদ সম্পর্কে নারীদের হুশিয়ার থাকার আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর নেতারা। ওই সমাবেশে যোগ না দিয়ে নাস্তিক ব্লগারদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে আগামী ৫ মে হেফাজতের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি সফল করতে নফল রোজা পালনের আহ্বান জানান নেতারা।
গতকাল বিকাল পাঁচটায় লালবাগ কার্যালয়ে হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরীর এক জরুরি সভায় নেতারা এ কথা বলেন। সংগঠনের ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা নুর হোসাইন কাসেমীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় নেতারা গার্মেন্টসের নারী ও দেশের অন্য সেক্টরে কর্মরত নারীসমাজের উদ্দেশে বলেন, আপনারাও মুসলমান। আল্লাহ ও রাসুলকে আপনারাও বিশ্বাস করেন, ভালবাসেন। কারও প্ররোচনা, প্রলোভন, ভয়-ভীতিতে আপনারা আল্লাহ ও তার রাসুলের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে নিজের ঈমানকে ধ্বংস করে জাহান্নামের দিকে ধাবিত হবেন না। আপনারা নিজ নিজ কর্মস্থলে, নিজ নিজ পেশায় আত্মনিয়োগ করুন। ইসলাম আপনাদের কর্ম, পেশা ও চাকরিবিরোধী নয়। ইসলামের দুশমনরা মিথ্যা প্রাচরণা চালিয়ে আপনাদের আল্লাহ ও রাসুলের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। এরা মূলত নারীসমাজকে ভোগের সামগ্রী হিসেবে পেতে চায়। নারীদের শ্রমের মজুরি না দিয়ে তারা নারী-পুরুষের বৈষম্যের সমাজ কায়েম করেছে। নারীদের প্রাপ্ত অধিকার থেকে
বঞ্চিত রেখে জোর করে তারা আপনাদের ঢালস্বরূপ ব্যবহার করতে চাচ্ছে। ইসলাম নারীদের যে সম্মান ও ইজ্জত দিয়েছে, তা আর কেউ দিতে পারেনি। তাই হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের দাবি মেনে নিলে নারীদের ইজ্জত-সম্মান, অধিকার, তাদের কর্ম, পেশা, চাকরি, ন্যূনতম বেতনভাতা—সব কিছুই প্রতিষ্ঠিত হবে। অতএব নারীসমাজকে তাদের ঈমান রক্ষার স্বার্থে তথাকথিত এ সমাবেশে যোগদান না করার আহ্বান জানাচ্ছি।
তারা বলেন, হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবির বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণায় এবার সরকার নারীসমাজকে ব্যবহারের হীন তত্পরতার পথে অগ্রসর হয়ে ২৭ এপ্রিল এক নারী সমাবেশের ডাক দিয়েছে। গার্মেন্টস মালিকদের একটি দলবাজ অংশ কারখানা বন্ধ রেখে ইসলামের বিরুদ্ধে নিজেদের হীনস্বার্থ চরিতার্থে নারী শ্রমিকদের স্রেফ জনবল হিসেবে সরবরাহ করতে চায়। এ সমাবেশে নারীদের পাঠানোর যে ভয়াবহ রাজনৈতিক খেলায় গার্মেন্টস মালিকদের যুক্ত করার চক্রান্ত হচ্ছে, তা এ শিল্পের জন্য বিপদ ডেকে আনবে। এরা সেসব মালিক, যারা গার্মেন্টস শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার দেয় না, অথচ ইসলামবিরোধী সমাবেশে ম্যানপাওয়ার সাপ্লাইয়ারের দায়িত্ব পালনের উত্সাহ দেখায়। এমন গার্মেন্ট মালিকদের উদ্দেশে তারা বলেন, প্রথমে আপনাদের শিল্পের শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার দিন। ৮ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরির যে দাবিতে নারী শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছে, তা মেনে নিন। মনে রাখবেন, এরা আমাদের মেয়ে, আমাদের বোন। এদের সব দাবির প্রতি আমাদের সমর্থন রয়েছে। এদের শোষণ করবেন না।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরীর উপদেষ্টা মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ, ঢাকা মহানগর সদস্য সচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, মাওলানা মুজিবুর রহমান পেশওয়ারী, মাওলানা জাফরুল্লাহ খান, মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী, মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, মুফতি তৈয়্যেব, মাওলানা আবুল কালাম, মাওলানা মনজুরুল ইসলাম, মাওলানা মাহফুজুল হক, প্রচার সেলের প্রধান মাওলানা আহলুল্লাহ ওয়াছেল, মাওলানা শফিক উদ্দীন, মাওলানা আবুল কাশেম, মাওলানা যোবায়ের আহমদ, মাওলানা জসিম উদ্দীন, মাওলানা নোমান মাজহারী, মাওলানা মহিউদ্দিন ইকরাম, মাওলানা তোফাজ্জল হক আযীয, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মাওলানা শেখ মুজিবুর রহমান, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী, মাওলানা মুসা বিন ইজহার, মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, মাওলানা সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
বিষয়: বিবিধ
১৫৫৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন