দেশবাসীর নিকট ন্যাশনাল লেবার পার্টির চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ জিয়া’র খোলা আহবান

লিখেছেন লিখেছেন যুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ জিয়া ০৬ মার্চ, ২০১৩, ০৯:১৭:০৯ রাত

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ

প্রিয় দেশবাসী,

১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাসের সশস্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। এই স্বাধীন বাংলাদেশ ছিল আমাদের আমাদের পূর্ব পুরুষদের স্বপ্নের ও সংগ্রামের ফসল। যে স্বপ্ন নিয়ে আমরা ৭১’র ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন করি। দূঃখের বিষয় স্বাধীনতার উষালগ্ন থেকেই একটি চক্র দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলে। তারা দেশে হত্যা, লুন্ঠন, অরাজকতা, দূর্নীতির লীলাভূমি প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। আমাদের গণতন্ত্র এবং উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় অশুভ শক্তির কালো ছায়া পড়ে। ফলে আজ স্বাধীনতার ৪২ বছরেও এদেশের ৭০ ভাগ মানুষ শোষিত, অধিকার বঞ্চিত, বেকার, ছদ্মবেকার, যুবশক্তির সংখ্যা বর্তমানে প্রায় ৫ কোটি। দেশে সকল কৃষক, শ্রমিক, মেহনতী মানুষ আজ অবহেলিত। আমরা প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার(অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা) প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আপনাদের সাথে নিয়ে কাজ করতে চাই।

এক সময় এদেশ ছিল ধনধান্যে পূষ্পে ভরা সোনার বাংলাদেশ। আমাদের দেশে অফুরন্ত প্রাকৃতিক সম্পদ আছে। এসব সম্পদ আহরণ করে উহার সুষ্ঠ ব্যবহার করে এদেশ সম্মৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি। এদেশের মানুষ খুবই পরিশ্রমী। দুঃখের বিষয় কোন সরকারই এদেশের সকল মানুষের হাতে কাজ দিতে পারে নি। নির্বাচনের সময় দেশের উন্নয়নের কথা, জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তির কথা বলা হলেও নির্বাচিত হয়ে সেসব প্রতিশ্রুতির কথা বেমালুম ভুলে যায়। ন্যাশনাল লেবার পার্টি উন্নয়নের রাজনীতি, পরিবর্তনের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। অন্যান্য রাজনৈতিক দল যেখানে ব্যর্থ হয়েছে ন্যাশনাল লেবার পার্টি সেখানে শুরু করতে চায়। তাই ন্যাশনাল লেবার পার্টি সমাজের তৃণমূল থেকে নৈতিক আদর্শ ও মানবিক মূল্যবোধ বির্বজিত সমাজ কাঠামোর পরিবর্তন এবং সমাজের দূর্নীতিবাজদের নেতৃত্বের অবসান ঘটিয়ে সৎ, যোগ্য আত্মত্যাগী লোকের নেতৃত্ব, সমাজ ও রাষ্ট্রে জবাবদিহিতার ব্যবস্থা কল্যাণমুলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়।

আসুন আমরা সবাই মিলে স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তুলি। যেখানে থাকবে না অন্যায়-অবিচার, ক্ষুধা-দারিদ্রক্লিষ্ট কেউ। আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি বন্ধ করে সবাই মিলে সেই বাংলাদেশ গড়ে তুলি যেখানে দূর্নীতি থাকবে না, শোষন থাকবে না, সমাজের সর্বস্তরে ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত হবে। দলে দলে ন্যাশনাল লেবার পার্টিতে যোগ দিয়ে ১৪ দফা কর্মসূচী বাস্তবায়নে বজ্রকন্ঠে আওয়াজ তুলুন, সব হাতে কাজ চাই, ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ চাই, গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা চাই।

স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে ন্যাশনাল লেবার পার্টির ১৪ দফা কর্মসূচী

১. তৃণমূল থেকে শোষণমুক্ত, দূর্নীতিমূক্ত, ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা।

২. জনগণের মৌলিক অধিকারে (অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা) রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা প্রদান।

৩. জনগণ এদেশের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। তাই প্রতিটি যুবশক্তিকে যুগউপোযোগী ও আধুনিক কর্মকৌশলের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদেরকে জন সম্পদে রুপান্তরিত করা এবং বেকার ও ভবঘুরেদের তালিকা করে কর্মসংস্থান করা অথবা বেকারভাতা প্রদান করা।

৪. রাষ্ট্র, জাতীয় স্বার্থ ও মর্যাদা রক্ষা করে সকল দেশের সাথে বন্ধুত্ব রক্ষা করা।

৫. প্রভাবমুক্ত সামাজিক ন্যায় বিচার ভিত্তিক ইনসাফ ভিত্তিক রাষ্টীয় কাঠামো তৈরী, উপনিবেশিক শাসনামলের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা পরিবর্তন এবং দূর্নীতিমুক্ত করণ।

৬. রাজধানী ঢাকা শহরকে যানযটমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন একবিংশ শতাব্দির আধুনিক শহর হিসেবে গড়ে তুলতে রাজধানী কেন্দ্রিক প্রশাসনিক ব্যবস্থা বিকেন্দ্রিকরণ

৭. ২০০ বছরের লক্ষ্য নিয়ে সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা, প্রতিটি জেলা উপজেলার নগরায়ন ও আবাসনের মহা পরিকল্পনা তৈরী এবং পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা।

৮. উপজেলা ভিত্তিক শক্তিশালী স্বশাসিত স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা গঠন।

৯. সাংবিধানিক আদালত গঠন।

১০. অংশীদারিত্বের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা।

১১. জাতীয় ঐক্যমত্বের সরকার গঠন করা।

১২. দ্বি-পক্ষ বিশিষ্ট জাতীয় সংসদ গঠন করা।

১৩. রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা।

১৪. দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে আধুনিক কৃষিভিত্তিক পাশাপাশি শিল্প দেশ হিসেবে গড়ে তোলা। ঘরে ঘরে কুটির শিল্প গড়ে তুলতে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা আবশ্যক।

সম্মৃদ্ধ দেশ গড়তে ন্যাশনাল লেবার পার্টির সময়ের ১৪টি যৌক্তিক ডাক

১. প্রতিটি মানুষের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা এই ৫টি মৌলিক অধিকার বাস্তবায়ন এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে এগিয়ে আসুন।

২. শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় মালিক-মুজুর সাম্যবিধান প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম জোরদার করতে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শোষনমুক্ত সমৃদ্ধ আলোকিত বাংলাদেশ গড়তে প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখুন।

৩. স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্য সুসংহত করুন এবং বিভেদমুক্ত আধুনিক দেশ গড়তে এগিয়ে আসুন।

৪. কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, মাগুরা এবং রাজবাড়ীসহ এ ৬ টি জেলাকে ভৌগলিক বলয় করে কুষ্টিয়াকে বিভাগ বাস্তবায়নে এ পার্টির ব্যানারে ঐক্যবদ্ধ হন।

৫. ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ এবং নেত্রকোনাসহ এ ৬টি জেলাকে ভৌগলিক বলয় করে ময়মনসিংহকে বিভাগ বাস্তবায়নে এনএলপি’র ছায়াতলে এক হন।

৬. বরিশালকে মেট্রোপলিটন সিটি গঠণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে এনএলপি করুন।

৭. ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ফেনী, চাঁদপুর, লক্ষ্মিপুর এবং নোয়াখালিসহ এ ৬টি জেলার ভৌগলিকতা বজায় রেখে উন্নত জনপদ গড়তে কুমিল্লাকে বিভাগ ঘোষনা করার আন্দোলনে নিজেকে শরীক করুন।

৮. দেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলার সাথে আন্তঃসংযোগ রক্ষা করতে রাস্তাঘাট আধুনিক করতে এনএলপি’র দায়িত্বশীল হয়ে আন্দোলন গড়ে তুলুন এবং নিজেকে একজন দায়িত্ববান ভাবুন।

৯. শুধু রাজধানী ঢাকা নির্ভর বাংলাদেশের পরিবর্তে আন্তঃবিভাগ নির্ভর দেশ গড়তে এ পার্টির যৌক্তিক বিবেকীয় ডাকে সাড়া দিন এবং সমস্বরে বলুন ‘বিভাগীয় কর্মশক্তি ও সমৃদ্ধি বাড়ান, রাজধানী ঢাকার উপর চাপ কমান’।

১০. বাংলা ভাষার শুদ্ধতা সার্বজনীন করতে “স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল অফিস-আদালতে কেউ আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলব না” বিষয়ক পার্টির ব্যানারে প্রচার প্রচারণা অব্যহত রাখতে এনএলপি গড়–ন।

১১. দেশের বিপর্যস্থ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে শেয়ার বাজারে ক্ষতিগ্রস্থ ৩৩ লক্ষ মানুষকে রক্ষার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ এবং শেয়ার কেলেংকারিতে জড়িতদের দৃষ্ঠান্তমুলক শাস্থির দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হন।

১২. যুবকের ন্যায় আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করে এর গ্রাহকদের ন্যায্য পাওনা ফিরিয়ে দেবার দাবিতে সোচ্চার হন। এবং ডেসটিনির ৪৫ লক্ষ পরিবারের আড়াই কোটি মানুষের জীবন ও জীবিকা রক্ষার স্বার্থে কুচক্রি মহলের ঘৃন্য ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে ডেসটিনিকে রক্ষায় গণ আন্দোলন গড়ে তুলুন।

১৩. জনগণের নিত্য চাহিদার গ্যাস, পানি এবং বিদ্যুৎ সমস্যা দূর করতে সকল জেলা/উপজেলা/ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ডসহ প্রতিটি ঘরে ঘরে ন্যাশনাল লেবার পার্টি গড়তে এগিয়ে আসুন এবং বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন ঃ , http://www.nationallabourparty.com

বিষয়: রাজনীতি

১২৭৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File