নারী নেতৃত্বের পাপে বাংলার মুসলমান সাঈদিকে হারাতে যাচ্ছে- আবদুল্লাহ জিয়া

লিখেছেন লিখেছেন যুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ জিয়া ০১ মার্চ, ২০১৩, ০৯:৪৩:৩৩ সকাল



নারী নেতৃত্বের পাপে বাংলার মুসলমান সাঈদিকে হারাতে যাচ্ছে- আবদুল্লাহ জিয়া

নারী নেতৃত্বের পাপে বাংলার মুসলমান সাঈদিকে হারাতে যাচ্ছে। ইসলামে নারী নেতৃত্ব হারাম। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা নারি নেতৃত্বে মুসলিমদেরকে সন্নিবেশ না করতে বিধান দিয়েছেন। এটি জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ প্রথমে দেশের মানুষকে ওয়াজের মাধ্যমে জানিয়ে দেবার পর নিজেদের বলা কথাকে বাস্তবে রুপ দেবার পরিবর্তে ততকালীন আওয়ামীলীগকে সরকার গঠণে জোটবদ্ধ হয়ে সহায়তা করেছিল।

কিছুকাল পর জামায়াতে ইসলামী আওয়ামী সর্মথন ছেড়ে বিএনপি সর্মথন গ্রহণ করে পুনরায় ৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরীক দল হিসেবে জোটবদ্ধ হয়। আর এ কারণে আওয়ামীলীগ জামায়াতে ইসলামীর বনাম শত্রুতে পরিনত হয়। বিএনপির সাথে জোটবদ্ধ রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার কারণে আওয়ামীলীগের সাথে স্থায়ী শত্রুতা ক্রয় করেছে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। আর একারণেই মহাজোট রাগে ও ক্ষোভে প্রথম স্ত্রীকে পরিত্যাগ করে তার সাথে ভালো সম্পর্ক না রেখে ২য় স্ত্রী গ্রহণ করার ন্যায় দোষ অর্জনকারী দলের বিরুদ্ধে ফুলে ফেঁপে জামায়াতে ইসলামী’র রাজনীতি বন্ধ করার অপতৎপরতা অব্যহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় একের পর এক জামায়াতে ইসলামী তাদের নেতা হারানোর প্রকৃয়ার পর্যায়ে এবারের রায়ে বাঙালী হারাচ্ছে তাদের প্রিয় ভালোবাসার ইসলামিক ব্যক্তিত্ব আল্লামা দেলওয়ার হোসাইন সাঈদীকে।

সাঈদী বাংলার প্রতিটি পরিবারের প্রাণ পুরুষ। তার মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারের রায় ফাঁসির ঘোষনায় পুরো জাতী স্তব্ধ ও মুক হয়ে গেছে। র্ধমপ্রাণ মুসলমানের হৃদয়ে রক্ষক্ষরণ চলছে। কেউ কেউ বলছেন নারী নেতৃত্বের ঘেরাটোপে আবদ্ধ হওয়া জামায়াতে ইসলামীর সাথে নিজেকে রাজনৈতিক ভাবে জড়িত না থাকলে হয়ত এমনটি হতো না। আবার কেউ বলছেন, সাঈদীর যে যোগ্যতা এবং বাংলার মানুষ তাকে যেভাবে ভালোবাসে সে হিসেবে সাঈদী নিজেই নারী নেতৃত্বমুক্ত একটি ইসলামিক রাজনৈতিক দল গঠন করতে পারতেন এবং বাংলার মানুষ তাকে নিঃশঙ্কচিত্তে তাকে সমর্থন জানাতো। অন্যান্য ইসলামী দলকে তো মহাজোট সরকার নিষিদ্ধের প্রকৃয়ায় আনছেনা। এক্ষেত্রে বলা যায় নারী নেতৃত্বে যুক্ত থাকা রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত থাকার কারণে দেশে বিভিন্ন আলেম ওলামাও তাকে পুরোপুরি সর্মথন করেনি। তবে ইসলামের একজন মহান পাবন্দীকারী সুললিত কোরআনিক কন্ঠস্বরের অধিকারী ব্যক্তির ফাঁসির রায় ঘোষনায় সবাই ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তারা বলছেন, সাঈদির মাধ্যমে ইসলামকে পঙ্গু করার একটি নীল নকশা বাস্তবায়িতও হতে যাচ্ছে। এতে প্রমানিত হচ্ছে, ইসলাম ও ইসলামী রাজনীতি আজ পঙ্গু হতে চলেছে। কিছু চিন্তাশীল মনে করেন, জামায়াতে ইসলামী তাদের মহা মুল্যবান ৯০ শতাংশ ভোট বিএনপিকে দান করে ১ ভাগ সফলতাও গ্রহন করেনি। তারা হরতাল দিয়ে মহাজোটের কোপানলে পড়ে ও পুলিশের গুলিতে প্রাণ দিচ্ছে অথচ তাদের ৯০ভাগ ভোট ও সুবিধাভোগী বিএনপি কখনও কখনও মুখে মুখে সর্মথন জানাচ্ছে তবে মাঠে নেমে সরকার দলীয় ও পুলিশের নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছেনা। এক্ষেত্রে বিএনপি ধরি মাছ না ছুই পানি ভুমিকায় থাকছে। অথচ শতভাগ রাজনৈতিক সুবিধার ৯০ ভাগ বির্ষজন দেয়া জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ তাদের ক্ষতি উপলদ্ধি করছে না। ৯০ ভাগ সফলতা দান বলতে বোঝাতে চাচ্ছি ৩০০ সংসদীয় আসনে জামায়াতের স্থান আজ থেকে ২২ বছর আগে ভোটের মাঠে কোথাও নির্বাচিত প্রার্থীর সাথে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে, কোন আসনে ২য় স্থানে অবস্থান করেছে, কোথাও তাদের স্থান ছিল ৩য় স্থান আর খুব কম আসনে তাদের স্থান ৪র্থ ছিল। সারাদেশে ভোটের অবস্থাতে যখন এমন পাকাপোক্ত অবস্থা তখন জামায়াতে ইসলামী ৩০০ আসনের মধ্যে মাত্র ৩০ আসনে নির্বাচনে প্রার্থী দেবার মারাত্বক ক্ষতি গ্রহণ করে হাতি প্রদান করে ভেড়া গ্রহণ করার ন্যায় বোকামী করে।

১০ঃ১ ক্ষতি গ্রহণকারী জামায়াতে ইসলামী তাদের তথা সকল ইসলাম প্রিয় মানুষের প্রিয় ব্যক্তি মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর উপর নাৎসি আক্রমনের ন্যায় কঠিন বিচারের রায় ঘোষনার দিনে তাদের ১৮ দলীয় জোটের শরীক দলের ১৭ দলের মধ্যে ১ টি দলও আজকের তথা ২৮ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবারের ডাকা হরতালে সর্মথনও জানায়নি। যেখানে জামায়াতে ইসলামী তাদের প্রিয় নেতাদের হারাতে যাচ্ছে সেখানে শরীকদলের কোন অংশগ্রহন না করাতে বড় ধরনের ক্ষতিতে পড়েছে দলটি। এটি ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে মীর জাফরের যুদ্ধক্ষেত্রে হটাৎ ফ্রিজ ভুমিকায় যাবার প্রকৃয়ার ন্যায় ঘটনা ঘটেছে তা এখন রটনা হলেও জামায়াতে ইসলামী তাদের ক্ষতি উপলদ্ধি হয়ত করছে না। কেননা আমার গবেষনায় জামায়াতে ইসলামী ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এটি মোটেও বুঝতে পারে না। কারণ, জামায়াতে ইসলামী পুরো দেশের ইসলামী আন্দোলন তথা আল্লাহর আইন চাই সৎ লোকের শাসন চাই , দাড়ীপাল্লায় ভোট চায় কথাটি ২২ বছর যাবৎ বন্ধ করে রেখেছে দেশের ৩০০ ভাগের ২৭০ ভাগের অংশটিতে। এ ২৭০ টি আসনের প্রতিটি জায়গায় ২২ বছর পুর্বে যে শিশুটি জন্ম গ্রহণ করেছিল সে আজ কলেজ, ইউনিভার্সিটিতে পড়লেও সে জানে না বাংলাদেশে দাঁড়ীপাল্লা প্রতীকে প্রার্থিতা করার কোন দল আছে। যদি কোন ভাবে জানে এবং আগ্রহী হয় সে দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিবে তাহলে তার সে ভোটাধিকারের সুযোগ হতে জামায়াতে ইসলামী তাকে বঞ্চিত করেছে বিএনপির সাথে জোটবদ্ধ হয়ে আসনের প্রার্থিতা হারিয়ে। আবার একজন সাধারণ মানুষ নিজেকে ধর্মপ্রান বলে মনে করে এবং এও মনে করে ইসলামের নামের ও পক্ষের কোন দলকে ভোট দিলে হয়ত আল্লাহ তায়ালা তাকে এই একটি ভোটের বিনিময়ে তার গোনাহ মাফ করতে পারেন, তার সে সুযোগ হতেও কিন্তু জামায়াতে ইসলামী তাকে বঞ্চিত করেছে। কেননা ২৭০ আসনের মধ্যে ঐ আসনেও জামায়াতের দাঁড়ীপাল্লা প্রতিক নেই!! এভাবে দেশের প্রতিটি প্রান্তে জামায়াতে ইসলামীর এ জোটবদ্ধ হওয়ার কারণে সাধারণ মানুষদেরকে ক্ষোভী করেছে। কারণ তারা দাঁড়ীপাল্লা ছাড়া অন্য প্রতিকে ভোট না দিতে চাইলেও তাদের সে চাওয়ার প্রতি বিন্দুমাত্র কোন মুল্য দেয়নি এ রাজনৈতিক দলটি। এরই ফলশ্রুতিতে ৩০ টি আসনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও ১বার ১৭ টি আসন এবং বাকী ২ বার ৩টি করে আসন পেয়েছে। প্রিয় পাঠক, চিন্তা করুন বিশ্বের ২য় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির মানুষদের জন্য তাদের মুসলিম পথপ্রদর্শক নেতারা কি ক্ষতিটাই না করেছেন। এজন্য এদেশে জামায়াতে ইসলামীকে এখন আর সাধারণ মানুষ ইসলামী দল মনে করছে না। কতিপয় নীতিনির্ধারক তাদের আয়েশ ও বিলাশের বিনিময়ে ইসলামী রাজনীতিকে বাংলায় কলুষিত ও নারী নেতৃত্বের দোষে দোষী করছে। এটি শুধুমাত্র নারী নেতৃত্ব গ্রহন করার ফল। আল কোরআনের সুরা আস সফের স্পষ্ট আয়াত, “হে ঈমানদার গণ , তোমরা সে কথা কেন বল যা কার্যত করনা? আল্লাহ তায়ালার নিকট এটি অত্যন্ত ক্রোধ উদ্রেকজনক ব্যপার যে, তোমরা বলবে, অথচ করবে না”। এখনতো বুঝতেই পারছেন জামায়াতে ইসলামী নারী নেতৃত্ব হারাম বলে প্রচার করে সে নারী নেতৃত্বের ছায়া হতে না বেরিয়ে আসার ফলে সকল মুসলমানের ব্যক্তি হিসেবে প্রিয় মানুষ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে চিরতরের জন্য হারাতে যাচ্ছে।

লেখক ঃ রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং চেয়ারম্যান- ন্যাশনাল লেবার পার্টি,

বিষয়: রাজনীতি

১৩৪৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File