ভোটের রাজনীতির জন্যে হলেও সরকার ও বিরোধী দলগুলো কি দাড়াবে নিদারুণ ক্ষতিগ্রস্থের মধ্যে পড়া ডেসটিনির ১ কোটি ভোটারের পাশে? -যুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ জিয়া

লিখেছেন লিখেছেন যুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ জিয়া ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৭:৫৭:৩০ সন্ধ্যা

সিডি নিউজ২৪ ডট কম, ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম, পিআরডি নিউজ২৪ ডট কম সহ অসংখ্য অনলাইন এবং দৈনিক পত্রিকা সমুহে আমার লেখা মন্তব্য প্রতিবেদন ঃ ডেসটিনি ট্রাজেডিঃ সরকারী ও বিরোধী উভয় জোট ১ কোটি ভোট হারাতে যাচ্ছে!! শিরোনামে একটি লেখা ছাপা হবার পর মাত্র কিছু সময়ের মধ্যে কয়েক হাজার পাঠক লেখা টি পড়েছেন এবং নানা রকম মন্তব্যে মন্তব্যায়িত করেছেন। তাদের মধ্যে, সাজিদুর রহমান চৌধুরী লিখেছেন, ৪৫ লক্ষ মানুষের নিদারুণ কষ্টের কথা লেখার জন্য ডেসটিনি ডিষ্ট্রিবিউটর ফোরাম, ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়া জেলার পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ। ডেসটিনি বাংলার অহংকার নামক ব্লগের একজন লেখক লিখেছেন, দারুণ লিখেছেন। আজ ১০ মাস পরেও যেনো সরকার ও বিরোধীদলের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। টাঙ্গাইলের মোঃ রায়হান খান লিখেছেন, ধন্যবাদ লেখক। মোঃ রুবেল লিখেছেন, আমি ডেসটিনিকে ভালোবাসি। আউলাদ হোসেন নামক পাঠক লিখেছেন, ডেসটিনি আমাদেরকে মানুষ ও মানবতার চিন্তা করতে শিখিয়েছে। জনাব রফিকুল আমিন সার এর ট্রেনিং আমাদের টিকিয়ে রেখেছে। এমডি স্যার(রফিকুল আমিন) বলেছেন, ভালো কিছু করতে চাইলেই যা রাজনীতি করতে হবে এমন কিন্তু না, ভালো কিছু করতে চাইলে নিজের অবস্থান থেকে করা যাই। আমরা সেই কাজটাই করছি। অতএব মিথ্যা প্রচারণা নিপাত যাক, ডেসটিনি মুক্তিপাক এটাই একমাত্র টার্গেট। টুগেদার উই বিউল্ড আওয়ার ড্রিম। এটা গেলো একজন ডিসট্রিবিউটর এর ব্যক্তিগত স্বাপ্নিক মন্তব্য। এবার দেখুন একজন সংবাদ কর্মী যে নিজে ডেসটিনিকে বাইরে ভিতর থেকে দেখেছে তার কথা তার ভাষায় আমার মেইলে পাঠানো কথাগুলি হুবহু তুলে ধরছি, আমার নাম এস.এইচ.এম তরিকুল ইসলাম। আমি বর্তমানে ইউনাইটেড নিউজ২৪ এর রাজশাহী প্রতিনিধি। এছাড়াও রাজশাহী থেকে প্রচারিত দৈনিক উপচার-এর চীফ রিপোর্টার আর যুক্তরাজ্য লন্ডন থেকে প্রকাশিত বিশ্বের অন্যতম অনলাইন ইউকেবিডি নিউজ-এর রাজশাহী প্রতিনিধি।

ইতিপূর্বে বাংলাদেশের বহুল প্রচারিত পত্রিকা দৈনিক আমার দেশ, কালের কন্ঠ, আমাদের সময়, আজকের প্রত্যাশাসহ অনেক কাগজে কাজ করেছি। এছাড়াও স্থানীয় দৈনিক প্রথম প্রভাত, নতুন প্রভাত, সানশাইন, আজ ও আগামীকালসহ সাপ্তাহিক কাগজ মিলে প্রায় ৩০টি পত্রিকায় কাজ করেছি। দুঃখের বিষয় হলো- ডেসটিনি সম্পর্কে আপনী যা লিখেছেন এসবসহ আরো অনেক কিছুই লেখার ইচ্ছে আমার দীর্ঘ দিনের। কিন্তু আমি নিজে সাংবাদিক হয়েও আমার মতামত আপনার মত প্রকাশ করতে পারিনি। যার একটায় কারণ, আপনার মত এ চরম সত্য কথা লিখতে গেলেই নানাভাবে বাধাগস্থ হবার পাশাপাশি নাম পেয়েছি দালালী।

আমার ১২বছর সাংবাদিকতার জীবনে ডেসটিনি একটি ব্যাতিক্রমী প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের জন্ম না হলে হয়তো এতো দ্রুত ৫০লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হতোনা। আমি নিরপেক্ষভাবে আমার মতামতে এভাবে যদি বলি, বিশ্বের দরবারে এ যাবৎ পর্যন্ত বাংলাদেশের নাম ও পরিচয় হয়েছে বা পেয়েছে ডেসটিনির সুবাদে। যে প্রতিষ্ঠানের কোন ব্যাক্তিকে এখন পর্যন্ত কারোর সাথে খারাপ ভাবে আচরণ করতে দেখা যায়নি।

আমার তো এখন এমনই মনে হয়, ডেসটিনির সদস্যদের রাগের নাড়িটা হয়তো অপারেশন করিয়ে ফেলে দিয়েছে ওই রফিকুল আমীন। আমি ওই সুদর্শন ব্যক্তিত্বের মানুষটাকে সঠিকভাবে প্রকৃত মানুষ গড়ার কারিগর হিসাবে চিহ্নিত করেছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, শুধু বাংলাদেশই নয় তাকে দায়িত্ব দেয়া হলে এই বিশাল পৃথিবীর মানুষের মনভাব পরিবর্তন করতে তার বেশী সময় লাগবেনা। আমার মতে একদিন না একদিন তিনি প্রকৃত নোবেল বিজয়ী হবেন। তিনিই পারেন এই বাংলাশের মানুষের সঠিক নেতৃত্ব দিতে।

আমি ধর্ম বিষয়ে এত অভিজ্ঞ নই। তবে এতোটুকু বলতে পারি মানুষ গড়ার কারিগর রফিকুল আমীন ও মোহাম্মদ হোসাইন শুধু মানুষের কর্মসংস্থান দিয়েই রুজির ব্যবস্থা করেন নি। তিনি রিতিমত রয়িলিটি পুণ্যের বা সোয়াবের কাজ করে যাচ্ছেন। যা কিয়ামতের পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত তাদের আমল নামায় জমা হতে থাকবে। ঠিক তাদেও কেউ যারা অনুসরণ করবে তাদের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটবে।

এদিকে, অন্যভাবে যদি বলি বাংলাদেশে যে কোন রাজনৈতিক দলের যে কোন প্রগ্রামে লাখ লাখ কোটি কোটি টাকা ব্যায় করে মানুষকে জমায়েত করার জন্য। আর রফিকুল আমীন কোথাও গেলে কমপক্ষে তার কথা শোনার জন্য ২মাস আগে থেকে ২শ’ থেকে শুরু করে হাজার হাজার টাকা দিয়ে টিকেট কাটতে হয়। তার পরেও বিভিন্ন জায়গায় ধরনা দিয়ে টিকেট সংগ্রহ করতে হয়।

আমি নিজে দেখেছি শুধু ডেসটিনির সদস্যরাই এ টিকেট ক্রয় করেনা। বিভিন্ন প্রাইভেট কোম্পানীর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রকৃত মানুষ হবার পাশাপাশি জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠান কিভাবে প্রতিষ্ঠা করা যায় বা ভবিষ্যৎ জীবন কিভাবে গড়তে হবে তা জানার জন্য এ টিকেট ক্রয় করে জ্ঞানার্জন করেন। যদি ওই ব্যাক্তির কথায় মধু না থাকতো বা কোন উপকার না পেত তাহলে কেউ এত টাকা খরচ করে আবার দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে তারা কথা শোনার জন্য অপেক্ষা করত না।

যাই হোক ভাইয়া আমি প্রত্যক্ষভাবে এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সাথে মিশেছি। এদের মত ভাল মানুষ গঠনমূলক ও পরিপাটি মানুষ আর কোথাও কোন রাজনৈতিক সামাজিকভাবে দেখিনি।

আপনার লেখা পড়ে এতো আনন্দিত হয়েছি। যা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। ঠিক বাতাসের মত যা শুধুই অনুভব করা যায়।

সত্যি কথা বলতে গোসল করতে ঢুকবো এমন সময় আপনার সংবাদটি নজরে আসল। আর ধন্যবাদ না জানিয়ে উঠতে পারলাম না। আপনার লেখার সুবাদে আমিও আমার কিছু মতামত শেয়ার করতে পেরে নিজেকে কিছুটা হালকা ও গর্বিত মনে করছি।

আপনী লিখুন তাদের সম্পর্কে আরো জানুন। দেখবেন নিজেকে বড় মনের অধিকারী ভাবতে শুরু করবেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান দেশ স্বাধীন করার জন্য যুদ্ধ করিয়েছেন। আর আমার মতে সেই জনগনের স্বাধীণ বাংলার স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য আরেকটি যুদ্ধে মাঠে নেমেছেন রফিকুল আমীন ও মোহাম্মাদ হোসাইন তথা ডেসটিনি। আমি তাদের সফলতা কামনা করে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের অবগতির জন্য জানাতে চাই ডেসটিনি বা ওই ব্যাক্তিদের সম্পর্কে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে জানুন। তারা প্রকৃতই কি অপরাধী। যদি তাই হয় তাহলে এদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোন গ্রাহক ক্লেম করেননি কেন? এতো মানুষের রুজির মাধ্যমটাকে ধ্বংস না করে তাদের সহযোগীতা করুন। অভিসপ্ত না হয়ে এই বিশাল জনগোষ্ঠির নেতৃত্ব কিভাবে দেয়া যায় এটা ভাবুন।

প্রিয় পাঠক কথাগুলো কেমন লাগল? এই সাংবাদিকের ন্যায় আমারও কিন্তু খুবই ভালো লেগেছে। এতো এতো ভালোবাসা যে ব্যক্তি ও তার প্রতিষ্ঠানের প্রতি সে ব্যক্তি অবশ্যই আগামীতে দেশের মানুষের প্রধান শান্তি ও স্বস্থির প্রতিক হবেন এটি তো কোন হিসেব ও পরিসংখ্যান না করেই বলা যায়। আমি যদি আল কোরআনের সুরা ইনশিরাহ এর ৫ ও ৬ আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, নিশ্চয় দুঃখের পরে রয়েছে সূখ, অবশ্যই নিশ্চয় দুঃখের পরে রয়েছে সূখ। রফিকুল আমীন ও তার প্রতিষ্ঠান একসময় দেশ ও দশের রয়েছে সূখ এবং মানবজীবনের সকল স্বাচ্ছন্দ ও স্বাতন্ত্র্যতা। একটি মায়াময় হেমিলিয়নের যাদুর ছটা ছড়িয়েছেন রফিকুল আমীন দেখিয়েছেন কিভাবে সুন্দরভাবে বাঁচতে হয়। সরকার একটি স্বার্থান্বেষী মহলের আগ্রাসন রুখতে হিমসিম খেয়েই হয়ত এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি আশাবাদী ভৌতিক ও কাল্পনিক অপরাধে রফিকুল আমীনকে দোষী সাবস্থ্য করে যে আগ্রাসন আনা হয়েছে তা সরকার সহজেই স্বাভাবিকভাবে দেখে, ডেসটিনির গ্রাহকদের সুআচরন বিবেচনা করে সকল সমস্যার জট খুলে দিবেন। আমার জানামতে গ্রাহকগণ সে আশাতেই বুক বেধে আছেন। তাদের দৃষ্টি সূদুরে এক বিজয়ীর আসার অপেক্ষায়।

এবারে এপর্যন্ত ঘটে যাওয়া ঘটনাবলী একনজরে ঘেটে নেয়া যাক। কিছুদিন আগে দেশের প্রথম সারির কয়েকটি টিভি চ্যানেল ও অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে ব্রেকিং নিউজ দেখেলাম ডেসটিনি গ্রুপের প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত/ক্রোক করার নির্দেশ দিয়েছে ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জহুরুল হক । কিন্তু এর কিছুক্ষন পরে অতীতের ন্যায় আবারো জানতে পেরেছিলাম যে এটাও মিডিয়ার একটি প্যানিক সৃষ্টির অপচেষ্টা । প্রকৃত খবর ছিল ডেসটিনির সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি যেন কেউ বিক্রি করতে না পারে সেজন্য আদেশ চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল । আর আদালত সেই আদেশই দিয়েছিলেন । এতদিন দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল ডেসটিনি সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। এখন আবার তারাই ডেসটিনি গ্রুপের সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি আছে বলে স্বীকার করে আদেশ চেয়ে বিশেষ জজ আদালতের সেই বিশেষ জজ জহুরুল হকের কাছে আবেদন করেছিলেন । মামলা সম্পর্কে ডেসটিনি নিয়ে কিছু আরো কিছু জানি।

১- বহুল আলোচিত কোকোর কর ফাঁকির বিচার শুরুর আদেশ উনি-ই দিয়েছিলেন যা ঐদিন ( ২৭শে নভেম্বর) কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়েছিল হাইকোর্ট । সূত্র- সময় টেলিভিশন ।

২- বহুল আলোচিত সচিবালয়ে ককটেল বিস্ফোরণ মামলার শুনানিও করেছিলেন এই বিচারক । যেই মামলায় দেশের প্রধান বিরোধী দলের শীর্ষস্থানীয় অনেক নেতাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছিল। সূত্র - বেশ কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের ।

৩- বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগের মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ । অব্যাহতির আদেশ দিয়েছিলেন ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোঃ জহুরুল হক। একই সঙ্গে এরশাদের কথিত বান্ধবী মরিয়ম মমতাজকেও এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ সময় এরশাদ বা মরিয়ম কেউই আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। সূত্র- দৈনিক যুগান্তর, সমকাল ।

৪- আলোচিত পিলখানা বিডিআর হত্যাযজ্ঞের একটি অংশের মামলাও উনি পরিচালনা করেন। উল্লেখ্য, এই মামলায় আসামী পক্ষের আইনজীবীদেরকে প্রয়োজনীয় নথিপত্র সরবরাহ না করেই বিচার শুরু করা হয়েছিল। এক্ষেত্রে আদালত লোকবল সংকটের কারণ দেখিয়েছিল ।

৫- তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যে অর্থপাচার মামলার কিছু অংশ-ও উনি পরিচালনা করেছিলেন ।

৬- দপ্তরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সাবেক এপিএস ওমর ফারুক মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন করেছিলেন । এই আবেদন নথিভুক্ত করে অবকাশকালীন আদালতে ১০ ডিসেম্বর শুনানির দিন ধার্য করেছিলেন ঢাকার জৈষ্ঠ্য বিশেষ জজ মোহাম্মদ জহুরুল হক । সূত্র- প্রথম আলো ।

৭- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেইসবুকে হত্যার হুমকির একটি মামলাও উনি শুনানি করেন । উল্লেখ্য, মামলার আসামি বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক হাফিজুর রহমান রানা এসময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

৮- জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার একাংশ উনি পরিচালনা করেন ।

৯- তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ঘুষ ও অর্থপাচারের একটি মামলারও উনি শুনানি করেন ।

১০- ডেসটিনির বিরুদ্ধেও একের পর এক ভিত্তিহীন মামলা করা হয় বিশেষ জজ জহুরুল হকের আদালতে । এবং পরিচালকদের জামিন বাতিল করে গ্রেফতারের আদেশও দেন তিনি । গত ১২ই নভেম্বর যথাযথ আইন অনুসরণ না করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা দুটি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আমলে নেয়ায় অভিযোগে ঢাকা মাহানগর দায়রা জজ মোঃ জহুরুল হক কে তলব করে হাইকোর্ট । বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. আকরম হোসেন চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন । এই ধরনের বিতর্কিত সকল মামলা পরিচালনা করেছেন বিশেষ জজ জহুরুল হক । এগুলো কি কোনো বিশেষ ইঙ্গিত বহন করে কিনা তা আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে বোধগম্য হয় না । তাই ডেসটিনির ব্যাপারে উনি যে রায়গুলো একের পর এক দিয়ে আসছেন তা নিয়ে সংশয়ের কোনোরূপ অবকাশ নেই বৈকি ! ডেসটিনি প্রসঙ্গ- বাংলাদেশ ব্যাংক ও ডেসটিনি উভয়ের দেয়া তথ্যমতে ডেসটিনি গ্রুপের সর্বমোট লেনদেন সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা । এর মধ্যে ১৪০০ কোটি টাকা ক্রেতা-পরিবেশকদের কমিশন বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে । প্রায় ৫০০ কোটি টাকা সরকারের কোষাগারে ভ্যাট, ট্যাক্স বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে । বিগত ১১ বছরে ডেসটিনি গ্রুপের হাজার হাজার কর্মচারীর বেতন, পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডারদের সম্মানী ও লভ্যাংশ, অফিসের যাবতীয় খরচ, কর্পোরেট সোস্যাল রেসপন্সিবিলিটি’র আওতায় দেশব্যাপী বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম এবং বিভিন্ন আনুষঙ্গিক খরচ বাবদ ৪০০ কোটি টাকার মত খরচ হয়েছে । এছাড়াও ডেসটিনি মাল্টিপারপাস সোসাইটি’র সম্মানিত আট লাখ শেয়ার হোল্ডারকে বিগত বছরগুলোতে লভ্যাংশ বাবদ প্রায় ৫০০ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে ।

ডেসটিনি গ্রুপের পক্ষ থেকে দেয়া তথ্যমতে ডেসটিনির প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে যা সরকারি তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে । এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সকল টাকার হিসাব পরিষ্কার পাওয়া যাচ্ছে যা ডেসটিনির সকল ডিস্ট্রিবিউটর, বিনিয়োগকারীরা অবগত আছে । ডেসটিনি তাহলে বিদেশে পাচার করল কি ?? উত্তর- অশ্বডিম্ব । সর্বপ্রথম নিউজ বের হল এই মর্মে যে, ডেসটিনি ৫০-৬০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে । এরপরে বলা হল ১৫-২০ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে । এর পরে নিউজ করা হল সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার পুরোটাই পাচার করেছে ডেসটিনি । বিদেশে পরিচালকরা আপেল বাগান, গাড়ী বাড়ী করেছেন ইত্যাদি ইত্যাদি শত শত ভিত্তিহীন অভিযোগ । এর পরে দুদক সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা অর্থপাচারের অভিযোগ এনে দুটি মামলা দায়ের করে ডেসটিনির পরিচালকদের বিরুদ্ধে । এর পর বাংলাদেশ ব্যাংক আবার তদন্ত রিপোর্ট দেয় পণ্য আমদানির ছদ্মাবরণে মাত্র ৬৩ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে ডেসটিনি (এই ৬৩ কোটি টাকার পণ্য আমদানি করা হয়েছে) । এর আগেই কোনো অভিযোগ ছাড়াই ডেসটিনি গ্রুপের সকল ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করে রাখে বাংলাদেশ ব্যাংক । এতে করে ডেসটিনিতে বেতন-ভাতা বন্ধ হয়ে যায় ডেসটিন গ্রুপে কমরত তিন হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর । ৪৫ লক্ষ ডিস্ট্রিবিউটরের পরিবারের রুটি-রুজি অনিশ্চিত হয়ে যায়। প্রায় ২ কোটি মানুষকে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে, অভিভাবকদেরকে চোখে জল নিয়ে পার করতে হয়েছে একে একে দুটি ঈদ । এভাবে একের পর এক দমনমূলক কার্যক্রম চালিয়েও ডেসটিনির ৪৫ লক্ষ ডিস্ট্রিবিউটর,বিনিয়োগকারীকে বিভ্রান্ত ও ডেসটিনির বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলতে না পেরে ডেসটিনির শীর্ষ পরিচালকদের ধর-পাকড় শুরু করে দুদক । রিমান্ডে নিয়ে জোর করে জাবানবন্দী আদায় করে । এরপর অকস্মাৎ সরকার সিদ্ধান্ত নেয় কোম্পানী আইন পরিবর্তন করে ডেসটিনিতে প্রশাসক নিয়োগ দেবার । প্রশাসক নিয়োগ দেবার উদ্দেশ্য ছিল ডেসটিনির সকল সম্পত্তি নিলামে তোলা । কোম্পানি আইন পরিবর্তনের সিদ্ধান্তে দেশের আপামর ব্যবসায়ী সমাজ আপত্তি তোলে । কিন্তু এতকিছুর পরও ডেসটিনির ৪৫ লক্ষ ডিস্ট্রিবিউটর, গ্রাহক,বিনিয়োগকারীর ডেসটিনির প্রতি ভালবাসাকে এতটুকুও কমাতে পারেনি কুচক্রী মহল । ডেসটিনির ডিস্ট্রিবিউটররা একসময় বাধ্য হয় এই ষড়যন্ত্র, অপপ্রচারের প্রতিবাদে রাজপথে আন্দোলন করতে । “ডেসটিনি ডিস্ট্রিবিউটর ফোরাম”-এর ব্যানারে সকলে একত্রিত হয়ে ডেসটিনিকে ষড়যন্ত্রের হাত থেকে রক্ষার জন্য দেশব্যাপী সমাবেশ, মানববন্ধন এমনকি অনশন পর্যন্ত পালন করে । তবে এ “ডেসটিনি ডিস্ট্রিবিউটর ফোরাম” আরো সাংঘর্ষিক হরতাল, জালাও পোড়াও আন্দোলনে যেতে পারত কিন্তু কারাগারে বসে অন্য নেতানেত্রীগণ যেখানে দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলার ব্যবস্থা করে ঠিক তেমনি একটি পর্যায়ে কোটি মানুষের ভালোবাসার নায়ক শুধু শান্তি চেয়েছেন। শুধুমাত্র শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীর অর্থ হিসেবে দেশের সকল বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও সংসদ সদস্যের কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছিল এবং এখনও হচ্ছে । কিন্তু শান্তিপূর্ণ এসব কর্মসূচীতে প্রশাসন একের পর এক প্রতিবন্ধকতা তৈরী করতে থাকে । বিভিন্ন জায়গায় তাদের উপর লাঠিচার্জ, টিয়ার শেল নিক্ষেপ থেকে শুরু করে গ্রেফতার পর্যন্ত করে ।

এক পর্যায়ে দেশের সকল মানবাধিকার সংগঠনও ডেসটিনির ৪৫ লক্ষ ডিস্ট্রিবিউটরের পাশে দাঁড়ায় । তারাও প্রশ্ন তোলে যে, ডেসটিনির ৪৫ লক্ষ ডিস্ট্রিবিউটর, গ্রাহক,বিনিয়োগকারীর যেখানে কোনো অভিযোগ নেই সেখানে অভিযোগ কাদের ? ডেসটিনির ৪৫ লক্ষ ডিস্ট্রিবিউটরের ১ জনেরও কোনো অভিযোগ নেই ডেসটিনির বিরুদ্ধে । উপরন্তু লাখ লাখ ডিস্ট্রিবিউটর ডেসটিনিকে ধ্বংস করার এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে মানববন্ধন করছে, সংবাদ সম্মেলন করছে । চিৎকার করে বলছে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ নই, পরিচালকদের বিরুদ্ধে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই, আমাদের বিনিয়োগের ব্যাপারে আমরা সচেতন, আমরা জানি আমাদের বিনিয়োগ নিরাপদ আছে, আমরা ডেসটিনিতে প্রশাসক চাইনা । আমরা রফিকুল আমীনের কাছেই নিরাপদ বোধ করি । তাহলে কাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য সরকারের এই প্রাণান্ত চেষ্টা ? সরকার বলছে, প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে সম্পত্তি বিক্রি করে ডিস্ট্রিবিউটরদের টাকা ফেরত দেয়া সম্ভব । এটাই প্রমাণ করে কোনো টাকা বিদেশে যায়নি । আর মানি-লন্ডারিং এর মামলার বিষয়টি আদালতে এখনো বিচারাধীন । কিন্তু সরকার মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে ডেসটিনির সম্ভাবনাময় প্রকল্পগুলো বন্ধ করে সম্পত্তিগুলো গ্রাস করতে চাইছে । দেশে তাহলে আইনের দরকার কি ? আদালত বন্ধ করে দেয়া হোক তাহলে । তাছাড়া, ডেসটিনির ভাল-মন্দের ব্যাপারে মতামত নিতে হবে ডেসটিনির সাথে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে । কিন্তু সরকার মুখে বলছে ডেসটিনির গ্রাহকদের স্বার্থের কথা চিন্ত করে এতসব করা হচ্ছে অথচ পরামর্শ নিচ্ছে একটি বিশেষ স্বার্থান্বেষী মহলের কাছ থেকে । যাদের ডেসটিনির সাথে কোনো সম্পর্কই নেই । বরঞ্চ ডেসটিনির ক্ষতি হলে যাদের সুবিধা হয় । অতঃপর একসময় সরকার বাধ্য হয় প্রশাসক নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে । সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই ডেসটিনি ডিস্ট্রিবিউটর ফোরাম । কিন্তু আবারো দুদক প্রচন্ড রকম হঠকারিতার পরিচয় দিয়ে আদালতে ডেসটিনির সকল সম্পত্তি বিক্রির উপর স্থগিতাদেশের আদেশ চেয়ে জ্যেষ্ঠ জজ জহুরুল হকের আদালতে আবেদন করে । এবং সাথে সাথে আদেশ !!! কোনো বিনিয়োগকারীর অভিযোগ নেই, কোনো প্রমাণ নেই সাথে সাথে আদেশ । বাংলাদেশ বলেই হয়তো এমন সম্ভব । তাছাড়া এর আগে দুদক সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ এনেছিল । ডেসটিনির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল কোনো টাকা পাচার হয়নি । এই টাকা বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হয়েছে । বিনিয়োগকারীদের টাকা প্রথমে ব্যাংক একাউন্ট-এ আসে । বিনিয়োগ করতে হলে ব্যাংক একাউন্ট থেকে টাকা তুলে বিনিয়োগ করতে হয় । কিন্তু এই স্বাভাবিক প্রক্রিয়াটিকে টাকা “সরানো” হিসেবে দেখানো হচ্ছে । যা খুবই দুঃখজনক । উচ্চ আদালতে এই হাস্যকর ও ভিত্তিহীন মামলাটি টিকবে না বুঝতে পেরে দুদক তড়িঘড়ি করে সম্পত্তি বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে যেই মামলাটি করলো এতে তো ডেসটিনি কর্তৃপক্ষের বক্তব্যই প্রমাণিত হচ্ছে । উচ্চ আদালতে আপীলের পর এই মামলাটিতেও ইনশাল্লাহ দুদকের পরাজয় অনিবার্য । আমি এখনো বিশ্বাস করি বাংলাদেশে এখনো ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করা যায় । সরকারের প্রভাবমুক্ত হয় নিরপেক্ষ রায় দিয়ে উচ্চ আদালত আবার প্রমাণ করবে বাংলাদেশে এখনো ন্যায়বিচারের পথ বন্ধ হয়ে যায়নি । পরিশেষে ডেসটিনির ৪৫ লক্ষ অধিকার বঞ্চিত মানুষের সাথে কন্ঠ মিলিয়ে বলতে চাই।

লেখক ঃ সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক, চেয়ারম্যান-বাংলাদেশ যুক্তিযোদ্ধা দল(পরিবর্তিত ন্যাশনাল লেবার পার্টি),

বিষয়: রাজনীতি

১১৮২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File