যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসি দেয়া যাবে না : অ্যামনেস্টি
লিখেছেন লিখেছেন সাদা মনের মানুষ ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১২:৩৯:৩৬ দুপুর
বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্তদের ফাঁসি না দেয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন লন্ডনভিত্তিক বিশ্বখ্যাত মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। অভিযুক্তদের ফাঁসি দেয়ার জন্য শাহবাগে যে আন্দোলন চলছে তাকে আমালে না নেয়ার জন্য সংস্থাটি বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। অভিযুক্তদের ফাঁসি নিশ্চিত করার জন্য যুদ্ধাপরাধ আইনের যে সংশোধনী আনা হয়েছে তা বতিল করারও আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি।
শনিবার অ্যামনেস্টির এক বিবৃতিতে বলা হয়, যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা ও মানবাতাবিরোধী অপরাধের জন্য ১৯৯৩ সাল থেকে যত আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আদালত গঠিত হয়েছে তাতে মৃত্যুদণ্ডের কোনো বিধান রাখা হয়নি।
বিবৃতিতে বলা হয়, যুদ্ধাপরাধের ফাঁসি নিশ্চিত করার জন্য সরকার যে সংশোধনী রোববার সংসদে পাস করার উদ্যোগ নিয়েছে তা যেন বাতিল করে দেয়। সংশোধনীটি পাস হলে সরকার অভিযুক্তদের শাস্তি বৃদ্ধি অথবা ফাঁসির জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করতে পারবে।
অ্যামনেস্টির বাংলাদেশ বিষয়ক গবেষক আব্বাস ফয়েজ বলেন, ‘বাংলাদেশের চলমান চরম উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে সরকার এই সংশোধনী ব্যবহার করে অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ড চাইতে পারে বলে প্রবল ঝুঁকি রয়েছে।’
‘সরকার যেন একে প্রতিহত করে। মৃত্যুদণ্ড চরম নিষ্ঠুর ও অমানবিক শাস্তি এবং সবক্ষেত্রেই সরকার যেন এই শাস্তি রহিত করে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামায়াত নেতা কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়ার পরই তার ফাঁসির দাবিতে শাহবাগে আন্দোলন শুরু হয়। তবে বিরোধীরা এই বিচারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছে। এখন আরো যে সাতজনের বিচার চলছে তারা সবাই বিরোধী দলের নেতা।
আব্বাস ফয়েজ বলেন, বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী ভয়াবহ অপরাধের বিচারের সুযোগ তৈরি করেছে আইসিটি। ভিকটিমদের যেমন ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে তেমনি অভিযুক্তদের মানবাধিকারের প্রতিও শ্রদ্ধা দেখাতে হবে। সরকারকে ট্রাইব্যুনালের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে এবং জনগণ ও তারা যে শাস্তি চায় সেটার জন্য আদালতের ওপর চাপ প্রয়োগ করা যাবে না।
বিবৃতিতে বলা হয়, অ্যামনেস্টি জানতে পেরেছে যে যারা ট্রাইব্যুনালের সমালোচনা করছে তাদের হুমকি দেয়া হচ্ছে এবং তাদের ওপর প্রতিশোধমূলক সহিংসতা চালানো হতে পারে। সরকারকে এটা অশব্যই নিশ্চিত করতে হবে যে যারা ট্রাইব্যুনালের সমালোচনা করছে তাদের নিরাপত্তা দিতে হবে এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা তথা শুধু ট্রাইব্যুনালের সমালোচনা করার কারণে তাদের ভীতি প্রদর্শন না করা হয়। জনগণ যেন অবাধে এই বিচারের সমালোচনা করতে পারে এবং এজন্য তাদের যেন ভীতি প্রদর্শন, হয়রানি ও প্রতিহিংসার শিকার না হতে হয়।
ব্যতিক্রম ছাড়া সব ক্ষেত্রেই মৃত্য্যদণ্ডের বিধান রহিত করার আহ্বান জানিয়ে অ্যামনেস্টি বলেছে, সার্বজনীন মানবাধিকারের ঘোষণায় মৃত্যুদণ্ডকে চরম নিষ্ঠুর, অমানবিক ও অবমাননাকর শাস্তি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিষয়: বিবিধ
১০৯৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন