সুয়োরাণী ও দুয়োরাণী
লিখেছেন লিখেছেন টাংসু ফকীর ২৯ জুন, ২০২২, ০৬:১৯:১১ সকাল
সুয়োরাণী ও দুয়োরাণীর গল্প আমরা সবাই জানি। আমার মা প্রাথমিকে পড়ার সময় আমাদেরকে প্রতিদিন গল্প শুনাতেন। কত শিক্ষণীয় গল্প যে আমাদের শুনিয়েছেন তার কোন ইয়াত্তা নেই। সঠিক ভাবে গল্পটি বলতে পারব না। কিন্তু সংক্ষেপে মূল বক্তব্যটি বলছি শুনুন।
ক.
সুয়োরাণী ও দুয়োরাণী ছিলেনে এক রাজার দুই স্ত্রী। তারা একই সময়ে দুই জন শিশু জন্মদান করেন। দুয়োরাণীর শিশুটি জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই মারা যায়। রাজার অনুকম্পা পাওয়ার জন্য দুয়োরাণী সুয়োরাণীর শিশুটিকে চুরি করে। পরে দুই রাণীই শিশুটি দাবি করে। এ বলে যে এইটা আমার শিশু। ও বলে যে এইটা আমার শিশু। রাজার কাছে নালিশ জানালে, রাজা পড়েন মহা চিন্তায়। কিছুতেই এর রায় দেওয়া যাচ্ছে না। অনেক চিন্তার পর উজিরের কাছে পরামর্শ চাইলেন। উজির বললেন মহাশয় আমি এর বিচার করে দিচ্ছি। উজির বললেল শিশুটিকে আমার কাছে নিয়ে আসেন। আমি একে দুই টুকরো করে দুইজনকে দিব। যখন জল্লাদ ডাকলেন, তরবারী আনলেন আর শিশুটিকে দুই টুকরো করার নির্দেশ দিলেন তখন তার প্রকৃত মা অর্থ্যাৎ সুয়োরাণী দৌড়ে এসে বললেন হুজুর শিশুটি দুয়োরাণীর। তাকে দুই টুকরো করবেন না। আমি আমার দাবী থেকে সরে আসছি । উজির বললেন, মহারাজ আমি প্রকৃত মাকে পেয়ে গেছি। সুয়োরাণীই হচ্ছেন আসল মা। বুঝতে পারলেন কি না?
প্রকৃত মা তার সন্তানদেরকে অবশ্যই নিজের জীবন থেকে বেশি ভালবাসবেন এক কথা চিরন্তন সত্য। আর নিজের সন্তান না হলে দুই টুকরো করুন আর বিশ টুকরো করুন তাতে কিছু আসে যায় না। সিলেটের মানুষ বন্যায় মরুক আর গার্মেন্টস এর বিল্ডিং ধ্বসে মরুক কিংবা ডিপোতে আগুন লেগে মানুষ মরে ছারখার হয়ে যাক। তাতে আর দুয়োরাণীর কিছু আসে যায় না। তার সেতু উদ্বোথন করতেই হবে। এটা যদি মানুষ না বুঝে তবে মুরগী মাথা দিয়ে জবেহ করুক আর না হয় পুটকি মুরগী দিয়ে জবেহ করুক তাতে দুয়োরাণীর কিছুই হবে না।
খ.
হুমায়ূন আহমেদ যখন মারা গেলেন নিউইয়র্ক এর কুইন্সে। তখন তার লাশ নিয়ে যাবে বাংলাদেশে। কিন্তু লাশের সঙ্গে যাবে তার দ্বিতীয় স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন। কিন্তু সমস্যা হল বিমানের বিজনেস ক্লাশের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না। বিজনেস ক্লাশের টিকিট ছাড়া শাওন মহাশয় কোন অবস্থাতেই যাবেন না। শেষ পর্যন্ত যায়ই নাই। তখন জাতীসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধি ছিলেন আলগা মোমেন। তিনি অনেক চেষ্টা করে একদিন পরে টিকিট সংগ্রহ করে দেন। লাশ একদিন পরে দেশে গিয়েছে কিন্তু বিজনেস ক্লাশ তার লেগেছে, লেগেছেই। লাশের যা ইচ্ছা তাই হোক, এক দিন পরে যাক আর বিশ দিন পরে যাক তাতে কিছু যায় আসে না। বিজনেস ক্লাশ ছাড়া হবে না, হবে না। এই হচ্ছে ভালবাসা।
গ.
চুয়াত্তর সালে যখন দুর্ভিক্ষে মানুষ গণহারে মারা যাচ্ছিল। রাস্তা-ঘাটে যখন ডাষ্টবিনের খাবার নিয়ে মানুষ আর কুকুরে কাড়া-কাড়ি করছিল তখনও কিন্তু হীরের মুকুট মাথায় দিয়ে শেখ কামালে বিয়ে হয়েছিল। ব্যাংক ডাকাতি আর খুন-ধর্ষণের কোন কমতি ছিলনা। কিন্তু বাংলার জনগণ হচ্ছে অসভ্য, বর্বর, মূর্খ, অশিক্ষিত এদের কোন কিছুই মনে থাকে না। এক প্যাকেট বিড়ি দিলেই বট্টস। তা হলে আপনি করবেন কার জন্য?
( ২৬ শে জুন ২০২২ইং)
বিষয়: বিবিধ
৬৫০ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন