আমার বন্ধু মজিবর ও বাল আর পাল

লিখেছেন লিখেছেন টাংসু ফকীর ০৬ জুন, ২০১৪, ০৭:৪১:০১ সকাল

ক.

আমার বন্ধু মজিবর আছে না? আপনারা নিশ্চয়ই জানেন৤ মজিবর আমার বন্ধু বুঝতে পারছেন? না পারলে নাই৤ মজিবর আমার বন্ধু কথা শেষ৤ ঘটনা হইল গ্রামের স্কুল কিন্তু সরকারী৤ নান্দিনা বহুমুখী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়৤ চিন্তা করেন ভাই, বাংলাদেশে ২১৬টি সরকারী হাই স্কুল আছে তার মধ্যে একটি হইল এই নান্দিনা হাই স্কুল, যাহা একটি ইউনিয়নের মধ্যে অবস্থিত৤ যাহা হোক, প্রামের পোলাপান একুট বয়স বেশী হইলেই স্কুলে যায়৤ তখন মজিবর, আমরা পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ি, তাহাতে মজিবরের মোটমুটি বয়স ১১, আর মজিদের বয়স মোটামুটি ১৪ কি ১৫৤ অশিক্ষিত পরিবার , কে অত বয়সের খোজ নেয়? আর মজিদের গড়ন গাড়ন মাশাল্লাহ বিবাহ উপযুক্ত৤ একদিন কে বা কাহারা খবর প্রকাশ করিয়া দিল অথবা খবরে প্রকাশ হইল যে মজিদের বাল হইছে মানে বাল গজাইছে আর কই যাস? কিন্তু মজিবর, আমরা কেউ জানিনা , জিনিসটা কি? তাই আমাদের খুবই ইচ্ছা হইল ঐ জিনিসটা দর্শন করিবার৤ সবাই মিলে মজিদের কাছে গেল আর খুবই সলজ্জ ভঙ্গিতে মজিবর বলিল, মজিদ তর নাকি বাল হইছে, মানে গজাইছে তা আমরা ঐটা দেখতে চাই৤ মজিদ একেবারে রেগে মেগে অস্থির৤ এক চড় দিয়ে দাত বত্রিশটা ফেলে দেব বেটা তেলচোড়ার বাচ্চা, ফাজিল কোথাকার? যদিও মজিবরের দাত মাত্র ২৪টা৤

যাই হোক সোজা কথায় মজিবর মজিদের বাল দেখবে কিন্তু মজিদ তা দেখাবে না৤ সোজা আঙ্গুলে ঘি না উঠলে কি আর করা৤ স্কুল ছুটির পর বাড়ী যাওয়ার সময় , মজিবরের পরামর্শে, সবাই মিলে মজিদকে জোড় করে ধরে নাইল্যা ক্ষেতের পাশে নিয়ে হাফপ্যান্ট খুলে দেখে ইহা এক ধরনের চুল৤

ও আইচ্ছা, তাইলে এইটা এই জিনিস!

পরের দিন , মজিদ সোজা গিয়ে শামসু স্যারের কাছে বিচার দিল৤ স্যার, মজিবরেরা জোর করে ধরে আমার বাল দেখছে৤

কি কইলি ? কই মজিবর ?

আরে বাবা সে কি মাইর৤ ছোট খাটো ভাবে আধামরা৤

শামসু স্যার বলে, আইজকা তরে বালই দেহামু হালার পুত হিয়ালের বাচ্চা৤

খ.

মজিবর আর আমাদের ক্লাশ মেট ছিল বিমল পাল ৤ মানে মজিবর, আমরা , আর বিমল এক ক্লাশে পড়তাম৤ রবিউলের বিয়ার মধ্যে বিমল আর মজিবর এক সাথে খাইতে বসছে এরই মধ্যে প্লেটের মধ্যে ভাত আর তরকারী দিয়ে গেল ব্যাটা শাহিদার, তরকারী মানে মাংস৤ দুই জনে খাওয়া শুরু করল৤ বিমল মহা আনন্দে খাচ্ছে আর খাচ্ছে৤ মজিবর খাওয়ার শেষের দিকে প্রশ্ন করল বিমলকে, এই বিমল কিসের গোশ্ত খাস?

যাই ই খাই খাওয়া শেষ করি আগে, পরে বলিস৤ সেই থেকে বিমল যে গরু খাওয়া শুরু করল এখনোও আছে৤ বিমল বলে সে মুসলমান হয়ে যাবে ওর বাপের মৃত্যুর পর না হলে সম্পত্তি পাওয়া যাবেনা৤ যাই হোক, বিমল বলে বামুনও গরুর মাংস খাইত এক সময়৤ এক দিন কিছু গরীব হিন্দু লোকে মিলে একটি গরু জবেহ করলে কিছু মাংস এক বামুনে চুরি করে তার টুপির মধ্যে লুকিয়ে রাখে, পরে যখন বিষয়টা জানা জানি হয় তখন বামুনে ফতোয়া জারি করে গরু মাংস খাওয়া যাবে না৤ কারণ তার টুপির মধ্যে লুকানো মাংস যদি কেউ দেখে ফেলে, তাতে তার ইজ্জত যাবে, এই জন্য নতুন ফতোয়া জারি৤

চুরির করার টেনশনে বামুনের মাথা খারাপ৤কি করে ? কি করে? কেমনে এইটা লুকায়? বামুনের অবস্থা হইল, চাল্লিশা৤

এর মধ্যে কিছু লোক এসে বলল , ঠাকুর মশাই আমরা কার পুজো করব? বামুন বলে এখন যা পরে বলব৤ কিছুক্ষণ পর আরেক দল এসে বলল, ঠাকুর মশাই আমরা কার পুজো করব? বামুন বলে যা পরে বলব৤ এবার যখন আরেক দল আসে বামুনের রাগ ধরে যায়, বলে আমার পক্কু পুজো করবি? আর তাই এখন হিন্দুরা শিবের লিঙ্গ পুজো করে বিশেষ করে ভারতের মেয়েরা তাদের নিজের যৌনাঙ্গে শিবের লিঙ্গ ছোয়ায়৤

এই বার, কিছুক্ষণ পর আরেক দল এসে বামুনের কাছে বলল , ঠাকুর মশাই আপনাদের ত অনেক ধরণের উপাধি আছে যেমন, ব্যানার্জী, চ্যাটার্জী, ঠাকুর, চক্রবর্তী আরো কত কি? আমরা গরীব মানুষ৤ আমাদের একটা উপাধি দিয়ে দেন৤ ঠাকুর মশাই বলল আচ্ছা এখন যা পরে মনে করে, দিয়ে দেব৤

নিম্ন শ্রেণীর এই হিন্দুরা চলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হলে, মাঝখান থেকে আরেক দল এসে বলল, ঠাকুর মশাই আমরা অনেক দূর থেকে এসেছি, আমাদের একটা উপাধি দিয়ে দেন, আসা যাওয়া খুবই কঠিন ব্যাপার৤ ঠাকুরেরত এমনিতেই মেজাজ খারাপ৤গরুর মাংস এখনো লুকাতে পারেনি৤

রাগের মাথায় বলল, তোদের উপাধি হল আমার বাল৤ ও আচ্ছা!

ঠাকুর মশাই বলছে বাল, লোকেরা শুনছে পাল৤ এই তো হয়ে গেল উপাধি পাল৤ আজকে যাদের দেখেন রবীন্দ্রনাথ পাল, যতীন পাল এই হইল তাদের উপাধির ইতিহাস৤ ঠাকুর মশাই বলছে বাল, লোকেরা শুনছে পাল৤

তাইতো মজিবর বলে,

বঙ্গের বাল, হরিদাস পাল৤

বৃটিশরা যখন এদেশে আসে প্রথম বাণিজ্য করার জন্য, তখন তারা এলাকা ঘুরে ঘুরে বাণিজ্য করে, আর এদেশের লোকেদের আচার আচরণ পর্যবেক্ষণ করে৤ এক সময় তারা দেখে এদেশের হিন্দুদের মধ্যে উচ্চ বর্ণের হিন্দুরা নিম্ন বর্ণের হিন্দুদের ছায়া মাড়ালে স্নান করে বাপরে বাপ৤ আর মুসলমানদের অবস্থাত আরো কেরোসিন৤ মুসলমানরা হিন্দুদের বাড়িতে গেলে, বাড়ী গোবর দিয়ে ধুয়ে পরিস্কার করে, এত বিভাজন, এত দূরত্ব এদের মাঝে এদেরকেইত টুটির মধ্যে ঘা দিতে হবে৤ বাস শুরু হয়ে ষড়যন্ত্র৤ হিন্দুদের হাত করার ব্যবস্থা শুরু হয়ে গেল ইংরেজদের ৤ ইংরেজরা আরো দেখল যে, এদেশের মানুষ কত বোকা৤ আপনারা দেখে থাকবেন যে, জেলেরা মাছ নিয়ে যায় ছিকায় করে৤ মাছের ঝুড়ি যদি একটা হয় তবে, আরেক পাশের ঝুড়িতে মাটির চাকা ভরে কাধে করে নিয়ে যায়? আরে মহামছিবতের কথা৤ এক পাশে মাছের ঝুড়ি, অন্য পাশে মাটির চাকা দিয়ে ভারসাম্য করে, কেন? মাছ গুলি দুই ভাগ করে দুই ঝুড়িতে দিলেই হয়ে যায়৤ তাতে ওজনও কমে আর মাছ গুলিও ভাল থাকে৤ এই যখন এদেশের মানুষের বুদ্ধি তখনই ইংরেজরা এদেরকে পাছায় বাশ দেওয়ার উপযুক্ত বলে স্থির করে আর একাধারে দুইশ বছর বাশ দিয়ে এমন খাড়াই করছে যে আর আগামী দুই হাজার বছরও এদের আর মেরুদন্ড সোজা হবে কিনা আল্লাহ জানেন৤

গ.

ক্লাশে একদিন পন্ডিতস্যার বাংলা ব্যাকরণ পড়াচ্ছেন প্রতিশব্দ আর সমার্থক শব্দ৤ স্যার বলছেন, একই জিনিসের বিভিন্ন নাম হয়ে থাকে৤ আর একই জিনিস জায়গা বিশেষে বিভিন্ন নাম হয়ে থাকে৤ যেমন ধর, এই যে ডিম, আমরা বলি আন্ডা, এইটা শহরে গেলে হয় ডিম, গ্রামে আন্ডা খোলা দেয় আর শহরে এইটাকে বলে ভাজে, আর পিয়াজ মরিচ ছাড়া ভাজলে হয় পোচ, পিয়াজ মরিচ দিয়ে ভাজলে হয় মামলেট, কাটলেট, স্যান্ডউইচ, স্ক্র্যাম্বল এগ আরো কত কি? আচ্ছা মজিবর তুই কি বলতে পারিস, এমন একটা জিনিস যা বিভিন্ন জায়গা বিশেষে নাম ভিন্ন হয় তবে জিনিস একটাই৤

মজিবর লাফ দিয়ে উঠল আর বলল জী স্যার, অবশ্যই বলতে পারি৤ যেমন স্যার ধরেন, চুল, এইটা যদি মাথায় থাকে তখন এইটাকে আমরা বলে থাকি চুল, আর যদি কপালের একটু নিচে থাকে তবে এইটাকে বলি ভুরু, গালে থাকলে বলি দাড়ি, ঠোটের উপরে থাকলে বলি মোচ, চোখের চুলকে বলি চোখের পাতা , বুকে থাকলে বলি বুকের রোম্বা৤ আর --

স্যার বললেন এই মজিবর থাম থাম তুই আর নিচে নামিস না৤ এই পর্যন্তই থাক৤ মজিবর আর বলতে পারল না৤ আমরা তু আর বুঝিই নাই৤ ক্লাশ শেষে বললাম মজিবর, পরে কি? মজিবর বলল, আরে গরু কোথাকার বুঝলি না, নাভির নিচেই গেলেই এই টা বাল৤ আমরা হাসতে হাসতে আধামরা৤

ঘ.

দেয়ালে দেয়ালে চিকা মারে৤ আম্লীগ আর বিএমপি৤ অনেক সময় দেয়াল দখল করে রাখে কিভাবে জানেন৤ দেয়ালে লিখে রাখে তীর চিহ্ন দিয়ে ”বলক” বাল (BAL ) ৤ আমরা দেখে শরমে মরি হায় হায় কয় কি? এইটা কি লিখে রাখছে? বাল?

এইটা যে, শেখ হাসিনার বাল সেইটা বুঝতেই তেতাল্লিশ বছর পার হয়ে গেল?

বিষয়: বিবিধ

৩১৩৮ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

240445
০১ জুলাই ২০১৪ রাত ০৩:২৫
মাটিরলাঠি লিখেছেন : আমি ভাই আপনার ফ্যান হয়ে গেলাম।
241180
০৩ জুলাই ২০১৪ সকাল ০৮:০০
টাংসু ফকীর লিখেছেন : বহুত বহুত শুকরিয়া জনাব মাটির লাঠি ভাই৤ আমার মত একজন নগন্য মানুষের ফ্যান হয়েছেন জেনে নিজেকে খুব গর্বিত মনে হচ্ছে৤ আল্লাহ আমাদের সবাইকে মাফ করুন৤ জনাব আপনি ভাল থাকুন৤

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File