জলন্ত কিংবদন্তী (!) হুমায়ূন আহমেদ

লিখেছেন লিখেছেন টাংসু ফকীর ২৩ জুলাই, ২০১৩, ০৩:২৮:১৫ রাত

(সম্মানীত পাঠক এই লেখাটি আমি জনাব হুমায়ূন আহমেদ বেঁচে থাকাকালীন নিউইয়র্কের ‌‌‌‌''সাপ্তাহিক বাংলাদেশ'' পত্রিকার জন্য লিখেছিলাম, তিনি আমার পাশের মহল্লায় থাকতেন)

বাংলাদেশে বর্তমানে জনপ্রিয়তার শীর্ষে উপন্যাসিক জনাব হুমায়ূন আহমেদ৤ নাটক, গল্প, সিনেমা আর গানও রচনা করছেন৤ সব জায়গায় তিনি সমান জনপ্রিয়৤ বাংলাদেশেরৈ প্রেক্ষাপটে জয়প্রিয়তার দিক থেকে তার সম কক্ষ কেউই নেই৤ বাংলা সাহিত্যে তিনি এক জলন্ত কিংবদন্তী৤ সম্মানীত পাঠক আমিও একজন সামান্য হুমায়ূন ভক্ত ছিলাম৤ লাখ কোটি পাঠকের ভিড়ে এক জন নগন্য পাঠক এবং দেখক৤ কিন্তু সমস্যাটা অন্যখানে৤ সব লেখকেরই অনূকরণীয় ব্যক্তি থাকে৤ তার লেখার উদ্দেশ্য থাকে৤ একটা স্বকীয়তা থাকে৤ জনাব হুমায়ূন আহমেদেরও আছে৤ স্বকীয়তা গুলোর একটু বিবরণ দেখলেই সম্মানীত পাঠক গণ বুঝতে পারবেন৤

ক) রবীন্দ্রপ্রীতি ঃ তিনি রবীন্দ্রনাথ দ্বারা অন্ধভাবে প্রভাবিত শুধু অন্ধভাবে বললে ভুল হবে, এর চেয়ে কঠিন কোন ভাষা আছে কি না আমার জানা নেই, সেই ভাবে প্রভাবিত৤ অসহ্যভাবে অনূকরনীয়৤ নিজে মুসলমান নামধারী হলেও তিনি প্রভাবিত হয়েছেন এক জন নিলর্জ্জ সাম্প্রদায়িক কবি দ্বারা, এখানেই তার স্বকীয়তা৤ এমন কোন নাটক নেই যেখানে তিনি রবীন্দ্রনাথের গান ব্যবহার করেননি৤ শুধু গান নয় গল্পের কলাকুশলীদের দিয়ে রবীন্দ্রনাথেকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য বিভিন্ন সংলাপ ব্যবহার করেন৤ তার অসংখ্য নাটকের নাম দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথের গল্প, কবিতা বা গানের নামে৤

কিন্তু যে বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি শিক্ষকতা করতেন সেই বিশ্ববিদ্যালয় যাতে না প্রতিষ্ঠা হতে পারে তার জন্য রবীন্দ্রনাথ কি না করেছেন? সভা, সমিতি সহ সব খানে সমাবেশ করে বেড়িয়েছেন৤ বক্তব্য-বিবৃতি দিয়েছেন৤ মুসলমানরা যাতে শিক্ষিত হতে না পারে তার জন্য তিনি সকল প্রকার চেষ্টা করেছেন৤ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যাতে প্রতিষ্ঠা লাভ না করতে পারে তার জন্য রবীন্দ্রনাথ সব ধরণের চেষ্টা তদবীর করেছেন৤ তিনি বাঙ্গালী মুসলমানদের মানুষ মনে করেন নি৤ এত কিছুর পরও নিলর্জ্জ ভাবে রবীন্দ্রনাথের পদলেহন করা কত চশম খোরের কাজ তা ন্যূনতম আত্ন-সম্মান বোধ সম্পন্ন ব্যক্তিই বুঝতে পারেন৤ আজ যদি রবীন্দ্রনাথের চেষ্টা সফল হত তা হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হত না আর জনাব হুমায়ূন আহমেদও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারতেন না৤

খ) নজরুল দিদ্বেষী ঃ এক জন লেখক যিনি নিজেকে মনে করেন পৃথিবীর এক মাত্র জনপ্রিয় লেখক৤ পাঠকের জন্য তিনি লেখেন না, তিনি নিজের জন্য লেখেন এ কথা তিনি একাধিক বার বলেছেন৤ পাঠকের ভাললাগা , মন্দলাগার তার কাছে কোন দাম নেই৤ বাংলাদেশের মানুষ হুজুগে মাতাল, সত্য-মিথ্যা, ভাল-মন্দ বুঝার জন্য যে অনূভুতি সম্পন্ন বিবেক থাকার প্রয়োজন তা ১৯৫৭ সালেই চলে গেছে৤ এর পর ব্রিটিশরা এ দেশের মানুষদের মধ্যে যে আচার-আচরণ, যে সংস্কৃতি, যে মন মানসিকতা দিয়ে গেছে তার ধারাবাহিকতাই রবীন্দ্রনাথ৤ গরগাছা মানসিকতা সৃষ্টি, নিজের ঐতিহ্য, গৌরব ভুলে অন্যের পদলেহন করা, নিজের স্বকীয়তা অন্যের কাছে বিকিয়ে দেয়ার মানসিকতা রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টি৤ ব্রিটিশদের পদলেহন কারী হিসেবেই রবীন্দ্রনাথকে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে৤ রবীন্দ্রনাথ ছিলেন বৃটিশদের আজ্ঞাবাহী কবি৤ তিনি লিখিছেন বৃটিশদের তোষামোদ করে গান, কবিতা৤ রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন ‘‘ জন -গণ-মন-অধিনায়ক , জয় হে ভাগ্য বিধাতা৤’’ বৃটিশদের আজ্ঞাবাহী হিসেবে এর চেয়ে বাস্তব সত্য আর কি হতে পারে? বৃটিশদের 'রবীন্দ্রনাথ' ভাগ্য বিধাতা মনে করতেন৤ বাঙ্গালীদের কে তিনি মানুষই মনে করতেন না৤ ‘‘ সাত কোটি বাঙ্গালীর হে মুগ্ধ জননী, রেখেছ বাঙ্গালী করে মানুষ করনি৤

আজকে স্বাধীনতার কথা বলা হয়৤ শেখ মজিব স্বাধীনতার জনক৤ জাতির জনক৤ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী ইত্যাদি ইত্যাদি৤ ঘটনা সত্য শেখ মজিব বাঙ্গালীই ছিল৤ রবীন্দ্রনাথের মতে বাঙ্গালী ত আর মানুষ নয়? শেখ হাসিনা রবীন্দ্রনাথের ১৫০ তম বার্ষিকীতে বলেছেন, শেখ মুজিব জেলে থাকা কালিন রবীন্দ্রনাথের বই পড়ে সময় কাটাতেন৤ স্বাধীনতা যুদ্ধে রবীন্দ্রনাথের গান অনুপ্রেরণা যোগাত৤ প্রিয় পাঠক একটু চিন্তা করে দেখুন, যে ব্যক্তি ভারত বর্ষের স্বাধীনতাই চাইতেন না৤ ব্রিটিশদের পা চেটে জীবন কাটিয়েছেন৤ স্বাধীনতার স্বাদ কি সেটাই বুঝতেন না তার গানই নাকি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অনুপ্রেরণা যোগাত! হায়রে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা! কত অচেতন!

জনাব হুমায়ূন আহমেদ যিনি তার নাটকে, গল্পে , কবিতায়, সিনেমায় এক মাত্র রবীন্দ্রনাথের গান ব্যবহার করেন৤ আর যে কোন চরিত্রের মুখ দিয়ে রবীন্দ্রনাথ তার প্রিয় লেখক এটা প্রচার করান৤ সে যেই হোক না কেন? ''দারুচিনি দ্বীপ'' সিনেমায় 'জরী'র সাথে যে খারাপ লোকটির বিয়ে ঠিক হয়েছিল তার ও প্রিয় রবীন্দ্র সঙ্গীত৤ কি তামাশা?

অন্য দিকে নজরুলকে নিয়ে করেন অসহ্য রকম তুচ্ছ তাচ্ছিল্য৤ জনাব হুমায়ূনআহমেদ ‘‘দারুচিনি দ্বীপ'' সিনেমায় 'আবুল হায়াত' যিনি একজন স্কুল শিক্ষক তাকে দিয়ে ডায়লগ দিলেন ‘‘ কাজী নজরুল ইসলাম সাহেব এসে দেখে যান দারিদ্র আমাকে কেমন মহান করেছে? কি তুচ্ছ তাচ্ছিল্য! ‘‘ চোখ ভেজাব আজ সমুদ্র জলে’’ নাটকেও এক স্কুল শিক্ষককে দিয়ে বলিয়েছেন, নজরুল ইসলাম সাহেব এসে দেখে যান দারিদ্র আমাকে কেমন মহান করেছে?‘‘ ''কবি'' নাটকেও গ্রামের এক মুরব্বীকে দিয়ে তাচ্ছিল্য করে বলিয়েছেন ''চল চল -- উর্দ্ধ গগণে বাজে মাদল''৤ এতে করে নজরুলকে করেছেন তিরস্কার৤

এ যাবৎ কালে তার কোন নাটকে 'নজরুলে'র কোন গান ব্যবহার করেননি৤ কি মহান লেখক! জাতীয় কবির প্রতি তার কত সম্মান! অথচ ''শ্রাবণ মেঘের দিনে তিনি নায়কের ( মাহফুজ আহমেদ) কাছে নায়িকার পরাজয় দেখান৤ মাঝে নায়িকা , নায়ককে ছেড়ে যায় কারণ নায়কের দাদা তাকে ভিক্ষা করে মানুষ করেছেন৤ পরে নায়িকা তার ভুল বুঝতে পারে যে, ''জন্ম হোক যথা তথা কর্ম হোক ভাল''৤ তিনি 'ম্যাক্সিম গোর্কি'র কথা বলেছেন যেখানে তার দাদি তাকে ভিক্ষা করে মানুষ করেছেন৤ কি দারুন স্ববিরোধিতা! ম্যাক্সিম গোর্কি ভিক্ষা করে মানুষ হলে সেটা মহান হয়, আর নজরুল ইসলাম দারিদ্রকে মহান বললে সেটা হয় তাচ্ছিল্য৤ অথচ নজরুল ছিলেন প্রকৃত পক্ষে স্বাধীনতা কামী৤ দারিদ্র্যের পরাধীনতা থেকে তিনি বাংলার মানুষকে মুক্তির গান শুনিয়েছেন৤

ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতাকামী মানুষদের করেছেন ঐক্যবদ্ধ৤ তিনি লিখেছেন ‘‘লাথী মার ভাঙ্গরে তালা, যত সব বন্দী শালা-------”৤ ''শিকল পরা ছল মোদের শিকল পরা ছল, এই শিকল পরেই তোদের শিকল করবরে বিকল''৤

''কবি'' নাটকেও তিনি একটি চরিত্রকে দিয়ে বলিয়েছেন ‘‘ কাজী নজরুল সাহেব এসে দেখে যান দারিদ্র আমাকে কেমন মহান করেছেন?‘‘ পক্ষীরাজ নাটকে একজন হেড মাষ্টারকে দিয়ে তোতলামী করে শ্লেষ করেছেন ‘‘ তোরা দেখে যা আমেনা মায়ের কোলে----এই বিখ্যাত ইসলামী সঙ্গীতকে৤ মোট কথা যে কবি বৃটিশদের লাথী মেরে এ দেশ থেকে বিদায় করে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখতেন তিনি তার জীবনে কোন প্রভাব বিস্তার তো দুরের থাক, তাকেই তিনি করেন উপহাস৤ আর বৃটিশদের পদলেহন কারী রবীন্দ্রনাথ হচ্ছে তার পথ প্রদর্শক৤ মনে রাখতে হবে ''দুর্জন বিদ্যান হলেও পরিতাজ্য''৤ ''সর্পের মাথায় মনি থাকিলেও সে কি বিষধর নহে?''

সাবেক সচিব মোহাম্মদ আসাফ উদ্দৌলাহ একটি প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘‘রবীন্দ্র চর্চায় কোনো অসুবিধা দেখিনা৤ তিনি বাংলা ভাষার কবি৤ তাই যেখানে বাংলা ভাষা বা গানের চর্চা আছে সেখানে রবীন্দ্রনাথ অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠবেন, সেটাই স্বাভাবিক৤ কিন্তু রাষ্ট্রীয় উদযাপনে জাতি একাত্ন হবে জাতীয় কবিকে নিয়ে৤ আমার এই মন্তব্যের স্বপক্ষে দৃষ্টান্ত দিচ্ছি৤ ইংল্যান্ডের মতো আমেরিকার ভাষাও ইংরেজী৤ তারা শেক্সপিয়ারের নাটক মঞ্চস্থ করছে, চর্চা করছে কিটস, শেলী কিংবা ইলিয়টের৤ কিন্তু এ সব নাট্যকার বা কবি রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে উদযাপিত হয় না৤ আমেরিকা তাদের স্বাধীনতা দিবসের আয়োজনে নাটক দেখায় ''আর্থার মিলারের'' ইউজিন ও নিলের, 'উইলিয়াম টেনেশি'র নাটক রবার্ট ফ্রষ্টের কবিতা, মার্ক টোয়েনের হাস্যরস৤ এর অর্থ এই নয় যে, এ সাহিত্যিকেরা শেক্সপিয়ার, কিটস কিংবা এলিয়টের চেয়ে অগ্রগণ্য৤ এর অর্থ এই যে তারা আমেরিকান৤ রবীন্দ্রনাথ বিশ্ববিখ্যাত কবি হবে পারেন, হতে পারেন প্রশংসাতীত সঙ্গীত রচয়িতা-কিন্তু তিনি আমার দেশের মানুষ নন৤ তার চর্চা করব , তার সাহিত্য কর্মকে তুলে নিব বুকে৤ কিন্তু তিনি আমার দেশের মানুষ নন৤ সুতরাং তাকে সে সম্মান দেবো যে সম্মান শেক্সপিয়ারকে দিয়ে থাকে আমেরিকানরা৤ আমেরিকার থিয়েটার গুলো মুখর থাকে তার নাট্য মঞ্চায়নে, কিন্তু রাষ্ট্রীয় আয়োজনে ৪ জুলাই নিউইয়র্কের রেডিও সিটি হলে মঞ্চস্থ হবে মিলার কিংবা টেনেশি৤ এর মধ্যে কাউকে ছোট বা বড় করার প্রশ্ন অবান্তর৤ বিষয়টি দেশ প্রেমের সাথে সংশ্লিষ্ট৤ যা আমার কাছে সে টুকুই আমার৤ ঘর আমার জীর্ণ হোক, পরিধেয় হোক শত ছিন্ন-তবু যথার্থ অর্থে তা-ই আমার৤ অন্যকে নিয়ে উৎসব করলেই সে আমার হয়ে যায় না৤ এই পার্থ্যেকের সাথে জড়িয়ে আছে আমার অহঙ্কার৤ আমাদের 'নজরুল, জসীম উদ্দিন, ফররুখ, আল-মাহমুদ, শামুসর রহমান, ওয়ালীউল্লাহ৤ জাতি হিসেবে তাদেরই তুলে ধরতে হবে আমাদের৤(লোলুপ রাজনীতির উপহারঃ সাবেক সচিব ও সম্পাদক, দৈনিক নয়াদিগন্ত ৮ই জানুয়ারী,২০১২ইং)৤

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এবনে গোলাম সামাদ বলেছেন,‘‘ স্বাধীনতার পরে ইন্দিরার চাপে শেখ মজিব রবীন্দ্রনাথের গানকে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গিত করেছেন৤ এতে স্বাধীনতার কোন ব্যঞ্জনা নেই৤ নেই কোন প্রাণের উচ্ছাস৤ এই গাণ শুনলে জাতির আরো ঘুম ধরে যায়৤

গ) মুক্তিযুদ্ধের তালিকা নিয়ে বিভেদ সৃষ্টিকারী ঃ জনাব হুমায়ূন আহমেদ সেই ব্যক্তি যিনি আবিস্কার করেছেন যে, মুক্তিযুদ্ধের যে তালিকা করা হয়েছিল তা সঠিক হয়নি৤ আবার তা নতুন করে করতে হবে৤ সেই জন্য তিনি 'বহুব্রীহি' নাটকে মুক্তিযুদ্ধের তালিকা নতুন করে করার একটি থিউরী দিয়েছেন৤ তুই রাজাকার, তুই রাজাকার এই মহান বাণী একটি টিয়া পাখীকে শিখিয়ে তার বহুব্রীহি নাটকে প্রচার করেছেন৤ এই জন্য আওয়ামী লীগ সরকার মাত্র তিনবার মুক্তিযুদ্ধের নতুন তালিকা করে আওয়ামীদের সকল ক্ষেত্রে সরকারী চাকুরী নিশ্চিত করেছেন৤

ঘ) কথায় কথায় বিবাহ বিচ্ছেদ ঃ এমন কোন নাটক নেই যেখানে তিনি বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য যে শব্দগুলো উচ্চারণ করতে হয় তা বিভিন্ন চরিত্রকে দিয়ে বলিয়ে ছাড়েন নাই৤ ''উড়ে যায় বক পক্ষী''তে অনেক জায়গায় বিভিন্ন চরিত্রকে দিয়ে এই শব্দ গুলো পান্তাভাতের মত করে ব্যবহার করেছেন৤ 'কালা কইতর' নাটকে শাওন তার স্বামীকে ছেড়ে চলে আসে৤ ''নয় নম্বর বিপদ সংকেত'' এ বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য ঐ শব্দগুলো ব্যবহার করেছেন অবলীলায়৤ এমনি ভাবে অনেক নাটকে এই অপাংক্তেয় শব্দগুলো ব্যবহার করেছেন ইচ্ছাকৃত ভাবে৤ কারণ তার কাছে এটা কোন ব্যপারই না৤

ঙ) ভারতীয় লেখক প্রীতি ঃ জনাব হুমায়ূন আহমেদ বিভিন্ন সময়ে তার বাসায় আসর বসাতেন ভারতের বিভিন্ন লেখকদের নিয়ে৤ শীর্ষেন্দু, সুনীল এদের নিয়ে বিভিন্ন সময়ে আড্ডা দিলেও বাংলাদেশের প্রথিতযশা লেখকদের নিয়ে তার কোন আগ্রহ দেখা যায়নি৤ ভারতের লেখকেদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ থাকলেও বাংলাদেশের কবি দের ব্যপারে কোন মন্তব্য নেই৤

চ) জিয়াউর রহমান বিদ্বেষী ঃ জনাব হুমায়ূন আহমেদ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যত বেশী খুশী, তত বেশী অখুশী শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে৤ নিউ ইয়র্কে ''সাপ্তাহিক বাঙ্গালী''কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন জিয়াউর রহমান ভাগ্যবান যে তার কাছে রেডিও স্টেশনের মাইক্রোফোনটা ছিল আর তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে পেরেছিলেন৤ কত বড় তাচ্ছিল্য! একজন শহীদ রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে কি রকম তামাশা?

ছ) তরুনদের উদাসীন বানানো ঃ 'হিমু' চরিত্রের মাধ্যমে তরুণ সমাজকে ধ্বংসের দারুণ পরিকল্পনা৤ লেখকদের দায়বদ্ধতা হল সমাজের যুব সমাজকে শৌর্য, বীর্যে বলীয়ান করে তোলা৤ বেগবান করে তোলা৤ বেগবান করা৤ কিন্তু জনাব হুমায়ূন আহমদ 'হিমু' চরিত্রের মাধ্যমে যুব সমাজকে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে৤ হিমু কি করে? যে উদাসীন হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়৤ যার নির্দিষ্ট কোন গন্তব্য নেই৤ নেই কোন ঠিক ঠিকানা৤ মানুষের কল্যাণের তো দুরের কথা যে নিজের ভাল মন্দেরই কোন তোয়াক্কা করে না৤ সমাজের, পরিবারের, আত্নীয়-স্বজনের কোন ভাল-মন্দের চিন্তা করেনা৤ নেই কোন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা৤ আর এভাবেই তরুণরা হচ্ছে বিপদগামী৤ কারণ তরুণ সমাজ 'হিমু' সেজে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়, আর একটু গাজা না খেলে কি আর হিমু হওয়া যায়? সাথে একটু ডাইল৤ হিরোইন হলে ভাল হয়৤

জ) জনাব হুমায়ূন আহমদের জীবনে একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তার করেছে রবীন্দ্রনাথ৤ কি দূর্ভাগ্য! তার জীবনে আল্লামা ইকবাল, জালাল উদ্দিন রুমী, শেখ সাদী কেউ প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি৤ শুধু রবীন্দ্রনাথই তার জীবনের একমাত্র আদর্শ৤ কারণ রবীন্দ্রনাথের সাথে হুমায়ুন আহমেদের অনেক মিল৤ ''মীরাদেবী''র ছিলেন রবীন্দ্রনাথের ভাবী , তার সাথে ছিল তার পরকীয়া৤ আর হুমায়ূন আহমেদের সাথে ছিল 'মেহের আফরোজ শাওনের৤ মেয়ের বান্ধবীর সাথে পরকীয়া এবং বিয়ে পৃথিবীর অন্য কোন বিখ্যাত নোবেল পুরস্কার বিজয়ী লেখকের আছে কিনা জানিনা কিন্তু হুমায়ূন আহমেদের আছে৤ রবীন্দ্রনাথের বিয়ের পরের দিন ''মীরাদেবী'' আত্নহত্যা করেছেন কিন্তু জনাব হুমায়ূন আহমেদের প্রথম এবং সাবেক স্ত্রী গুলেতেকিন এখনো বেচে আছেন৤ আছে তিন কণ্যা এবং একটি ছেলে তাদের সে স্বীকারই করে না৤ বিভিন্ন লেখায় সে পরের পক্ষের ছেলেদের কথা বললেও কিন্তু আগের পক্ষের কোন কথা নাই৤ অথচ ২২ বছরের সংসার ছিল তাদের৤ যার ব্যক্তি জীবনে এমন সুন্দর কাহিনী, তার কাছ থেকে দেশ ও জাতি কি শিখবে? পাঠকদের কি অনুপ্রেরণা যোগাবে?

ঝ) আওয়ামী দালাল ঃ বিভিন্ন সময়ে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ লিখেছেন৤ জনাব হুমায়ূন আহমেদ বঙ্গবন্ধুর দারুন ভক্ত৤ শেখ হাসিনা চুক্তি করলে তাকে অভিনন্দন জানায়৤ সরকার দেশের জন্য দারুন কাজ করে যাচ্ছে, ইত্যাদি বলে আওয়ামী লীগকে সমর্থন জানায়৤ অবশ্যই এর পুরস্কারও তিনি পেয়েছেন৤ শেখ হাসিনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এসে তাকে দেখে গেছেন, লেখালেখির জন্য কাগজ কলম দিয়ে গেছেন৤ কারণ জনাব হুমায়ূন আহমেদ বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ড নিয়ে একটি উপন্যাস লিখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন৤ আওয়ামী দালালী করার কারণে তিনি ইতিমধ্যেই একটা পুরস্কার পেয়েছেন৤ শেখ হাসিনা তাকে জাতি সংঘের উপদেস্টা নিযোগ করেছেন৤ তাতেই তিনি অবশ্যই খুশি৤ তিনি বলেছেন অন্য সরকার এই সম্মান দেখায় না৤ শেখ হাসিনা তাকে এই বিরল সম্মান দেখিয়েছে, এর জন্য হুমায়ূন আহমেদ বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে শেখ হাসিনার জন্য নোবেল পুরস্কার এর ব্যবস্থা করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে আমরা মনে করছি৤ গত ৯ই মে বুধবার, ২০১২ইং তারিখে দেশে ফেরার পথে জে এফ কে বিমান বন্দরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপ কালে বলেন ‘দেশে এখন কাল বৈশাখী ঝড় চলছে৤ ঠিক হয়ে যাবে, আমি এই নিয়ে চিন্তিত নই৤ দেখুন পাঠক ভারতীয় বাহিনী যখন ‘হাবিব'কে ন্যাংটা করে অকথ্য নির্যাতন করল তখন সৈয়দ আশরাফ বলেছিলেন রাষ্ট্র এগুলো নিয়ে চিন্তিত নয়৤ হুমায়ূন আহমেদ চিন্তিত নয় দেশে কাল বৈশাখী ঝড় নিয়ে৤ কি দারুন মিল? দেশে যেয়ে নহাশ পল্লীতে ঘুরে ঘুরে নিজের বৃক্ষ গুলো দেখেন, মাছ দেখেন আরও কত কি দেখেন, কিন্তু নিজের যে চারটি সন্তান আছে, তারা কোথায় কিভাবে আছে তার খোজ নেন না৤ বাহ কি সুন্দর লেখক৤ কি সুন্দর পিতৃত্ব? তার জন্য অপেক্ষায় থাকে ‘তহুরা আলি’ আওয়ামী লীগের এমপি, হুমায়ূনের মা, নুহাশ পল্লীর লোকজন কিন্তু শীলা, নোভা তাদের কথা কে বলবে? পিতা জীবিত থাকা অবস্থায় পিতৃ স্নেহ হতে বঞ্চিত হায় রে দুর্ভাগা সন্তান!

ঞ) ভারতের দালাল ঃ জনাব হুমায়ূন আহমেদ বাংলাদেশের লেখক আর নির্লজ্জ ভাবে ভারতের দালাল৤ জনপ্রিয়তা দিয়ে ভালমন্দ বিচার করা যায় না৤ সস্তা জয়প্রিয়তা কোন মানবতার কাজে আসেনা৤ সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি ভারতের একজন দালাল এর প্রমাণ তিনি বিভিন্ন সময়ে পত্রিকায় বিভিন্ন সাক্ষাৎকার৤ কিন্তু ঐ যে সস্তা জনপ্রিয়তা! বাংলাদেশের মানুষত আবার বিবেক সম্পন্ন৤ তারা এটাকে তেমন কোন গুরুত্ব দেয়নি৤

তিনি একবার বলেছিলেন, এই যে ভারত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় সাহায্য করল, তার জন্য কি আমরা একটা ভাস্কর্য বানিয়ে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ প্রকাশ করতে পেরেছি?

কালের কন্ঠে ১৯ শে জানুয়ারী, ২০১০ ইং এ প্রকাশিত একটি স্বাক্ষাৎকার দেখেন কত নির্লজ্জ ভারতের দালালী করেছেন৥ ''ভারত জুজু'' নামে একটি প্রবন্ধ লিখেছেন ‘‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লী গেলেন৤ কিছু চুক্তি ভারতের সঙ্গে আমাদের হয়েছে৤ রাজনীতির একটা ধারা গলা ফাটিয়ে চিৎকার শুরু করলেন, শেখ হাসিনা, বাংলাদেশকে ভারতের কাছে বিক্রি করে দিয়ে এসেছেন৤ লাভ-ক্ষতি কি হয়েছে আমি জানিনা৤ আমি একটি জিনিসই জানি বাংলাদেশ বিক্রি হবার নয়৤ শেখ হাসিনা কিংবা খালেদা কেউ এই কাজটি করতে পারবেনা৤ ভারত জুজুর ভয় দেখানোর পুরানো খেলা কেন আমরা এখনো খেলছি? ক্ষমতাধর যে রাষ্ট্রটি আমাদের পাশে, তার সাহায্য আমাদের ক্ষমতাবান হবার জন্য প্রয়োজন৤ তারা আমাদের নৌ-বন্দর ব্যবহার করবে করুক৤ বন্ধুত্বের হাত আমাদের অবশ্যই বাড়াতে হবে৤ সারাক্ষণ ভারত সব নিয়ে নিল বলে চিৎকার-চেচামেচির কিছুই নেই৤ আমরা বার্মার মত রূদ্ধ রাষ্ট্র হতে চাই না৤ বলা হয়ে থাকে একটি দেশের লেখকরা সেই দেশের আত্না৤ এটা অনেক বড় কথা, আমি নিজে তা মনে করি না৤ অনেক দুষ্ট লেখক আছেন, দেশের আত্না হবার যোগ্যতা তাদের নেই৤ দেশের সাধারণ মানুষ হিসেবে আমি পরিস্কার দেখতে পাচ্ছি; বন্ধুত্বের যে পথে আমরা এগুচ্ছি সেটাই শুদ্ধ পথ৤ প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন৤ (কালের কন্ঠ, ১৯শে জানুয়ারী, ২০১০)৤

প্রিয় পাঠক একটু মনোযোগ দিন তার কথায়৤ এর চেয়ে প্রকাশ্যে ভারতের দালালী আর কি হতে পারে?তার সস্তা জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগাচ্ছে ভারতের জন্য৤ তিনি বলছেন প্রধান মন্ত্রী দিল্লি গেলেন কিছু চুক্তি হয়েছে, রাজনীতির একটা ধারা গলা ফাটিয়ে চিৎকার শুরু করলেন, শেখ হাসিনা দেশ বিক্রি করে দিয়ে এসেছেন৤ রাজনীতির একটা ধারা বলতে তিনি যে 'বিএনপি'কে বুঝিয়েছেন তা কি বলার অপেক্ষা রাখে? লাভ-ক্ষতি কি হয়েছে তা আমি জানিনা৤ লাভ-ক্ষতি কি হয়েছে তা আপনি জানেনা? তাহলে দেশ বিক্রি করে নাই এ কথা আপনি জানলেন কি করে?শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানালেন কি করে? কারণ আপনিত চুক্তির ভাল-মন্দ জানেনা৤ আপনি সবই জানেন৤ ভারতের কাছে নিজের স্বত্বা অনেক আগেই বিক্রি করে দিয়েছেন৤ ভারত আমাদের নৌ-বন্দর ব্যবহার করবে করুক, নৌ-বন্দর কি আপনার বাপের? চিন্তা করুন প্রিয় পাঠক৤ নৌ-বন্দর ব্যবহারের অনুমতি সে আগেই দিয়ে দিয়েছে৤ কেন ব্যবহার করবে? কি ভাবে ব্যবহার করবে? এতে আমাদের লাভ না ক্ষতি তা দেখার সময় নেই৤ ভারত ব্যবহার করবে বলে কথা৤ ক্ষমতাবান রাষ্ট্রের সাহায্য প্রয়োজন আমাদের ক্ষমতাবান হওয়ায়৤ ভারত কি সাহায্যই আমাদের করছে৤ আহ কত বড় নিলর্জ্জ ভারতের দালাল হলে এ কথা বলতে পারে? ভারতের সাহায্য নিয়ে বাংলাদেশ হবে ক্ষমতাবান? বিগত ৪০ বৎসরে ভারত তারই প্রমাণ দিয়েছে৤ কি সুন্দর দিবা স্বপ্ন দেখে হুমায়ূন আহমেদেরা৤ ভারত তার যত প্রতিবেশী দেশ আছে তার মধ্যে সব চেয়ে বেশী ল্যাংড়া করে রেখেছে বাংলাদেশকে কারণ বাংলাদেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ মুসলমান৤ কারণ চীন বা পাকিস্তানের সাথে মাতাব্বরী খাটবেনা৤ নেপালের রাজবংশ নির্মূলে পারিবারিক কলহের চাইতে ভারতের ভূমিকাই বেশী বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা৤ কারণ নেপাল ভারতের চাইতে চীনের দিকে ঝুকেছিল আশির দশকে৤ প্রতিবেশীদের সাথে এমন সুন্দর আচরণ হচ্ছে ভারতের৤ আর বাংলাদেশের সাথে কি ধরণের ব্যবহার ভারত করে তা যদি এখনো চোখে না পড়ে, তা হলে সেই জন্মান্ধদের আর চোখে দেখানো সম্ভব নয়৤ ভারত আর কি ভাবে বাংলাদেশকে পা দিয়ে পিষবে?কত হাজার সমস্যা সৃষ্টি করে রাখছে তার কোন ইয়ত্তা আছে? ভারত যখন হাবিবকে উলঙ্গ করে পেটায় তখন হুমায়ূন আহমেদদের কলম চলেনা, যখন জ্যান্ত তিতাস নদীর( তিতাস নদী নয় ১৬ কোটি মানুষের বুকের উপর) উপর বাধ দিয়ে আওয়ামী লীগ ভারতদের ১৪৪ চাকা যুক্ত ট্রাক যাওয়ার জন্য তখন হুমায়ূন আহমদের কলম চলেনা, ফেলানীর লাশের কথা তার মনে পড়ে না, ছিটমহল বাসীর কষ্টের কথা তার মনে পড়েনা কিন্তু নৌ-বন্দরের জন্য কত দুঃখ! আহারে সোনা পাখি আমার৤ হায়রে জনপ্রিয় লেখক আমার, হায়রে দেশের আত্না! হায়রে দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা! এক বারও বলেনা খুলে দাও ফারাক্কা, ফিরিয়ে দাও আমার প্রমত্ত পদ্মা, ফিরিয়ে দাও আমার ইছামতি , শীতলক্ষ্যার নাব্যতা৤ ফিরিয়ে দাও আমার ছিট মহল৤ টিপাইমুখী বাধ দিতে পারবনা৤ আমাদের পানির সকল ন্যায্য হিস্যা৤ তিস্তার এক ফোটা পানিও কম দিতে পারবানা৤ নৌ-বন্দর ব্যবহারের উকালতি? বলেছেন বাংলাদেশ বিক্রি হওয়ার নয়৤ বিক্রি হওয়ার তো নয়ই৤ আল্লাহর ওয়াস্তে দিয়ে দিলে তো বিক্রি হওয়ারই নয়৤ তাই ত ট্রানজিট দেওয়া হচ্ছে কোন ধরণের ফি ছাড়াই৤ আরেক দালালের বাচ্চা দালাল মসিউর রহমান বলেছেন ভারতের কাছে ফি চাওয়া নাকি অসভ্যতা৤ দেশ কি তোদের বাপের ?

চ)পছন্দের মিডিয়া ঃ জনাব হুমায়ূন আহমেদে নিজে যে মিডিয়া গুলি পছন্দ করেন বা তাকে যে মিডিয়া গুলি পছন্দ করে তার মধ্যেও একটা চমৎকার মিল আছে৤ যেমন ঃ টেলিভিশন চ্যানেলের মধ্যে চ্যানেল আই, পত্রিকার মধ্যে প্রথম আলো! কি সুন্দর নির্বাচন? চ্যানেল আই ভারতের ‘র’ এর টাকায় চলে তা সবাই জানে৤ প্রথম আলোর মতিয়র রহমান যে কি পরিমাণ আওয়ামী চামচা আর ভারতের দালাল তা অত্যন্ত পরিস্কার৤ ইসলাম বিদ্বেষী হিসেবে তার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে৤ চ্যানেল আই ইসলাম বিদ্বেষী হিসেবেও যথেষ্ট সমাদৃত৤ জনাব হুমায়ূন আহমেদের প্রবন্ধ হলে প্রথম আলোতে আসবে আর নাটক হলে চ্যানেল-আই৤ সম্মানীত পাঠক চিন্তা করুন, হুমায়ূন আহমেদ- প্রথম আলো-চ্যানেল আই-আওয়ামী লীগ-যুদ্ধাপরাধীদের বিচার-ভারত কি সুন্দর ধারাবাহিক পরম্পরা? তার নাটকের কলা কুশলী আসাদুজ্জামান নূর-জামালউদ্দিন আহমেদ-রবীন্দ্রনাথ-শীর্ষেন্দু-জাহানারা ইমাম-আলী যাকের-কালের কন্ঠ, কি চমৎকার দেখা গেল?”

ছ) হুমায়ূন আজাদ , জনাব হুমায়ূন আহমেদকে বলতেন অপন্যাসিক৤ মরহুম আহমদ ছফা, হুমায়ূন আহমেদের লেখা সম্পর্কে বলতেন যে, তার লেখা হচ্ছে চানাচুরের মত, খাইতে ভাল লাগে কিন্তু পেট ভরে না৤ বেশী খাইলে পেটে অসুখ হয়৤ ৫০ পাতার বইয়ে শুধুমাত্র হু-হা করতেই চলে যায় ৪৬ পাতা৤

জনাব হুমায়ূন আহমেদ আস্তিক না নাস্তিক ছিলেন তা বুঝা মুশকিল তবে তিনি মৃত্যুর আগে যে শেষ বারের মত বাংলাদেশে গিয়েছিলেন এবং আবার আমেরিকা ফিরার পথে জেএফকে বিমান বন্দরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপ কালে মৃত্যু সম্পর্কে বলেছেন, ‘‘ আমি মনে করি মরার পরে আর কিছুই নাই , মরার পরে আমার দেহ মরে গলে পচে মিশে যাবে মাটির সাথে৤ আমি জানি আমার কথায় ধর্মপ্রাণ মুসলমান মনে আঘাত পাবে৤ কিন্তু আমার মনে হয় তাই’’। নিউইয়র্কে থাকাকালিন কোনদিন মসজিদে কেউ তাকে দেখেননি। এমনকি জুমা বারেওনা।কিন্তু অন্যান্য সকল অনুষ্ঠানে, বইমেলায় কিংবা জ্যাকসন হাইটসে তার জন্মদিন পালনে ঠিক উপস্থিত হতেন।

জনাব হুমায়ূন আহমেদকে বলি, বাবা শুনেন ভুপেন হাজারিকাও জনপ্রিয় শিল্পী ছিলেন৤ তার ‘‘মানুষ মানুষের জন্য’’ গানটি পৃথিবীর ২৬টি ভাষায় অনূদিত হয়ে আজও গীত হয় কিন্তু শেষ জীবনে ভারতের উগ্রপন্থী সাম্প্রদায়িক দল বিজেপিতে যোগ দিয়ে নির্বাচন করলে মানুষ তাকে নিলর্জ্জ ভাবে পরাজিত করে৤সেই আঘাতে ভুপেন হাজারিকা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন৤ আজ আপনি বলেন মুক্তিযুদ্ধে আপনার বাবা শহীদ হয়েছেন৤ শহীদ হয়ে থাকলে তো ভাল কথা, তিনি বেঁচে গিয়েছেন৤ আর তা না হলে বেচে থাকলে তো তার ভাগ্য আরো খারাপ হতো৤ তিনি দেখতেন যে এক ছেলে হুমায়ূন মেয়ের বান্ধবীকে নিয়ে লটর-পটর আর ভারতের দালাল৤ আরেক ছেলে জাফ্রিকবাল নাস্তিক হয়ে ইসলামের বারোটা বাজানোর জন্য সদা ব্যস্ত৤ কেউই আল্লাহর দরবারে হাত তুলে বলে না ‘‘ রাব্বীর হামহুমা কামা রাব্বা ইয়া নিছ সগীরা৤

বিষয়: বিবিধ

২৮১৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File