আল্লাহ যা বলেন সত্য বলেন

লিখেছেন লিখেছেন টাংসু ফকীর ১৬ এপ্রিল, ২০১৩, ১১:২৯:০১ রাত

সম্মানীত পাঠকবৃন্দ আপনাদেরকে আজ শুনাব মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পথ ভ্রষ্টদের কি ভাবে দুনিয়া এবং আখেরাতে শাস্তি প্রদান করেন তার গল্প।

ইহুদীরা হচ্ছে আল্লাহর অভিশাপ প্রাপ্ত৤ পবিত্র কোরআনে আল্লাহ পাক বলেন-- ‘‘আমি বনী-ইসরাইলকে কিতাবে পরিস্কার বলে দিয়েছি যে, তোমরা দুই বার ‌‌‌‌‌'ঐ ভূমিতে' ফাসাদ (দূর্নীতি ও ভয়ঙ্কর অত্যাচার) সৃষ্টি করবে এবং শক্তিমদমত্ত হয়ে অহঙ্কারী হয়ে উঠবে (এবং দুইবারই শাস্তিপ্রাপ্ত হবে)। তারা বহু নবী রসূলদের হত্যা করেছে ”৤ ইহুদীরা হযরত জাকারিয়া (আ.) কে হত্যা করেছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত তারা নিজেদের কোন স্থায়ী আবাস ভূমি পাবেনা৤

আল্লাহ রাব্বানা পবিত্র কোরআনে ইসরাইলীদেরকে অভিশপ্ত ঘোষনা করেছেন৤ আর তার বাস্তব প্রমাণ দিয়ে, বিশ্ববাসীকে সত্যের পথ দেখাচ্ছেন৤ ইসরাইলী তথা ইহুদীদের ব্যাপারে সারা বিশ্বের মানুষ জানেন তারা কি ধরণের মানুষ? তাদের ইতিহাস সবার জানা৤

‘‘আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলেন, ‘‘মুসলিমরা ইহুদীদের সাথে যুদ্ধ না করা পর্যন্ত শেষ প্রহর আসবেনা৤ মুসলিমগণ ইহুদীদেরকে হত্যা করতে থাকবে এবং এমন অবস্থা আসবে যে, ইহুদীরা একটি পাথর অথবা একটি গাছের পেছনে লুকাবে এবং পাথর বা গাছ বলবে: হে মুসলিম অথবা হে আল্লাহর বান্দা আমার আড়ালে একজন ইহুদী আছে, এস তাকে হত্যা কর, কেবল গারকাদ নামক বৃক্ষটি তা বলবে না , কেননা ওটা হচ্ছে ইহুদীদের বৃক্ষ৤” (সহীহ মুসলিম)৤

‘‘হিটলার’’ দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় বলেছিল ‘‘আমি অনেক ইহুদী মেরেছি আর কিছু রেখে দিয়েছি কারণ মানুষ যাতে করে জানতে পারে এরা কি ধরণের মানুষ!’’৤

বিচিত্র এই জাতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষের শুধু ঘৃণাই আছে ৤ তার পরও সারা বিশ্বকে নানান ষড়যন্ত্রের বেড়াজালে আটকিয়ে রেখে, বিভিন্ন জাতির মধ্যে কলহ জিইয়ে রেখে সারা বিশ্বের সম্পদ অত্যন্ত সুকৌশলে নিজেদের বগল দাবা করাই এই জাতির উদ্দেশ্য৤কিন্তু আল্লাহ পাক এই জাতিকে অভিশপ্ত ঘোষণা করেছেন এবং এই জাতিকে শাস্তি দিবেন অত্যন্ত কষ্টদায়ক ভাবে৤ তার কিছু বাস্তব প্রমাণ ইতিমধ্যেই দেয়া শুরু করেছেন৤

ক.

পঙ্গপালের আক্রমণে দিশে হারা ইসরাইলঃ

এ এক অবিশ্বাস্য ও বিরল ঘটনা। ঝাঁকে ঝাঁকে পঙ্গপাল মিসর থেকে ইসরাইলি ভূখণ্ডে আক্রমণ চালিয়েছে। সংখ্যায় এরা কোটি কোটি। পঙ্গপালের আক্রমণে পৃথিবীর অন্যতম উন্নত এই রাষ্ট্রটি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পঙ্গপালের আক্রমণে ফসলের বিপুল ক্ষতি হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে স্থল ও বিমান থেকে কীটনাশক প্রয়োগ করতে হচ্ছে।

একে বাইবেল ও কোরআনে বর্ণিত খোদার গজব হিসেবে দেখছেন ইহুদি পণ্ডিতরা। পঙ্গপালের হাত থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রার্থনা করার জন্য তারা দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছেন।

নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, তিন সপ্তাহ ধরে মিসর সীমান্ত থেকে ইসরাইলি ভূখণ্ডে ঝাঁকে ঝাঁকে পঙ্গপাল অনুপ্রবেশ করছে। এগুলোকে বাইবেলে বর্ণিত খোদার গজব হিসেবে দেখছেন ইসরাইলিরা। ফেরাউনের ওপর গজব হিসেবে পঙ্গপালের আক্রমণ হয়েছিল। কোরআনেও পঙ্গপালের আক্রমণ সম্পর্কে হুশিয়ার করে দেয়া হয়েছে।

প্রথমবারের মতো সোমবার ইসরাইল পঙ্গপালের আক্রমণ সতর্কতা জারি করে। এ সময় কায়রো থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে পঙ্গপাল ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলীয় নেগেভ মরুভূমিতে অনুপ্রবেশ শুরু করে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি বিষয়ক সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, বাতাস ও জলবায়ুর পরিবর্তিত অবস্থার কারণে পঙ্গপালের আন্তঃসীমান্ত অনুপ্রবেশ বেড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য ইসরাইল পঙ্গপালের বিরুদ্ধে রণপ্রস্তুতি নিয়েছে। শরু হয়েছে স্থল ও বিমান হামলা। পঙ্গপালের গতিবিধি সম্পর্কে জানানোর জন্য খোলা হয়েছে হটলাইন।

ইসরাইলের কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০০৫ সালের পর এই প্রথম ইসরাইলে পঙ্গপালের আক্রমণ হলো। তবে এবার যেভাবে হামলা হয়েছে ১৯৫০ এর দশকের পর এরকম হামলা আর হয়নি।

হজরত মুসার (আ.) আমলেও পঙ্গপালের আক্রমণ হয়েছিল। ইহুদিদের অবকাশ দিবসে মিসরের দাসত্ব থেকে ইসরাইলের মুক্তির কাহিনী প্রচার করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, হজরত মুসার বাণী মানতে অস্বীকার করলে ফেরাউনের ওপর ১০টি মহামারী নাজিল হয়েছিল। এর একটি ছিল পঙ্গপালের আক্রমণ। সে সময় পূর্ব দিক থেকে বাতাসের সঙ্গে এসেছিল ঝাঁকে ঝাঁকে পঙ্গপাল। তারা মিসরের শস্যক্ষেত্রে আক্রমণ করেছিল। কোরআনেও পঙ্গপালের বর্ণনা রয়েছে।

ইসরাইলি অনলাইন সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট জানিয়েছে, পঙ্গপালের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে দেশবাসীকে প্রার্থনার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন ইসরাইলের সুপরিচিত ধর্মযাজক 'এলিজার সিমচা ওয়েইস''। এক চিঠিতে তিনি কৃষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বলেছেন, তারা যেন প্রার্থনা করে ইসরাইলে যেন আর কোনো পঙ্গপালের অনুপ্রবেশ না হয়। ( দৈনিক আমার দেশ, ৮ই মার্চ, 2013ইং)

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তালা মুসা (আ.) এর অনেক ঘটনা বর্ণণা করেছেনঃ

‘‘ফিরাউন-কাওমের নেতৃস্থানীয়গণ বলল, আপনি কি মূসাকে এবং তার কাওমকে এমনই অবকাশ প্রদাণ করবেন যে, তারা যমীনে ফাসাদ সৃষ্টি করবে? আর সে আপনাকে এবং আপনার ইলাহকে বর্জন করে চলবে? (আ‘রাফ ঃ 127)

এমন কি মূসা (আ.) ও বনী ইসরাইলের রব এর অস্তিত্বও সে স্বীকার করত৤ যখন মূসা(আ.) এর দোয়ার ফলে আল্লাহ ফিরাউনের রাজ্যে তুফান, পঙ্গপাল, উকুন, ব্যাঙ ও রক্ত পাঠালেন, তখন ফিরাউন নিরুপায় হয়ে মূসা (আ.) কে অনুরোধ করে এই মর্মে যে, তিঁনি তাঁর রব সমীপে দোয়া করেন যেন এমন মহাবিপদ থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়৤ কেননা তার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে. এমন মহাসংকট থেকে উদ্ধার করার ক্ষমতা এক মাত্র মূসার রব এর -ই আছে৤

‘‘অতঃপর আমি তাদের প্রতি প্রেরণ করলাম তুফান, পঙ্গপাল, উকুন, ব্যাঙ ও রক্ত৤ এ গুলি ছিল সুস্পষ্ট মু’জিযা৤ তবুও তারা অহংকার করতে থাকল৤বস্তুত তারা ছিল বড়ই অপরাধ পরায়ণ জাতি৤ এবং যখনই তাদের উপর আসমানী বালা মুসিবত আপতিত হলো, তখন তারা বলল হে মূসা! আমাদের জন্য আপনার রবের নিকট সেই বিষয়ে দোয়া করুন, যে বিষয়ে তিনি আপনার সাথে ওয়াদা রেখেছেন৤ যদি আপনি আমাদের উপর থেকে বালা-মুসীবত দূর করে দেন তবে অবশ্যই আমরা আপনার কথানুসারে ঈমান আনব এবং বনী ইসরাইলকে মুক্ত করে আপনার সঙগে যেতে দেব৤” (আরাফ-134) ৤

খ.

শুকিয়ে যাচ্ছে গ্যালিলি সাগরের পানিঃ

গ্যালিলি সাগরে ( যার অপর নাম টাইবিরিয়াস হ্রদ, আরেক নাম কিনেরেট হ্রদ আর আরবীতে বুহায়রা আত-তাবারিয়্যাহ )৤ আজ ইতিহাসের যে কোন সময়ের তুলনায় সব চেয়ে কম পানি রয়েছে, আর সে পানিও ক্রমশই কমে আসছে, কারণ ইসরায়েলের ইউরো-ইহুদী সরকার, প্রকৃতি সেখান থেকে যে হারে পানি যোগান দিতে পারে, তার চেয়ে বেশী হারে পানি খরচ করছে৤ যখন সেখানে পানি শুকিয়ে যাবে এবং যখন পান যোগ্য পানি আর থাকবেনা, ইহুদীরা তখন আরবদের, ‘পবিত্রভূমিতে’ ইহুদী শাসনের বশীভূত করার ব্যাপারে তাদের দীর্ঘ মেয়াদী কৌশলের চুড়ান্ত পর্বে উপণীত হবে৤ এই বশীভূত হবার নিহিতার্থ হবে, সর্ব শক্তিমান আল্লাহ এর উপাসনা না করে, ভন্ড-মসীহর উপাসনা করা৤ ইসরায়েল যে লবণাক্ততা দূরীকরণ প্রকল্পসমূহ (নোনা পানি থেকে পানীয় জল তৈরী করার প্রকল্প) তৈরী করবে, সেখান থেকে(খাবার) পানি সংগ্রহ করতে গিয়ে তাদের ( আরবদের) সেই বশ্যতা প্রদর্শন করতে হবে৤ কিন্তু তারা এমনই দরিদ্র হবে যে ঐ পানি কিনে খাবার মত সঙ্গতি আরবদের থাকবেনা৤

ইহুদীরা ধ্বংসের আর কত সময় বাকী রয়েছে তা জানতে চাইলে, কেবল গ্যালিলি সাগরের পানির গভীরতা পর্যবেক্ষণ করাই তাদের জন্য যথেষ্ট৤ তাদের কৌশল মতে, যে মূহুর্তটি তাদের চূড়ান্ত বিজয় নিশ্চিত করবে ভেবে তারা অপেক্ষায় রয়েছে, ঠিক সেই মূহুর্তটিতেই আসল মসীহর প্রত্যাবর্তন ঘটবে এবং আল্লাহ ইহুদীদের পরিপূর্ণ রূপে ধ্বংস করবেন৤

চলমান সময়ের যে পর্বে ঈসা মসীহ (আ.) প্রত্যাবর্তন করবেন, সে ব্যাপারে মুসলিমদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে৤ সে সময়টা হচ্ছে গ্যালিলি সাগরের পানি যখন প্রায় বা সম্পূর্ণ শুকিয়ে যাবে৤

‘‘...ঠিক এই সময়টাতেই আল্লাহ মরিয়মের পুত্র ঈসা (আ.)কে প্রেরণ করবেন৤ দামেস্কের পূর্ব দিকে সাদা মিনারে তিনি অবতরণ করবেন৤ তাঁর পরণে দু‘টুকরো কাপড়ে তৈরী পরিচ্ছদ থাকবে যা কিনা হালকা জাফরান রঙে রঞ্জিত হবে৤ আর তিনি দু‘জন ফেরেশতার ডানায় ভর দিয়ে নামবেন৤ তিনি যখন ঝুকাবেন তখন তাঁর মাথা থেকে স্বেদবিন্দু ঝরে পড়বে, আর তিনি যখন মাথা উঠাবেন তখন তাঁর মাথা থেকে মুক্তার মত স্বেদবিন্দু ঝড়ে পড়বে৤ তাঁর দেহের গন্ধে পাওয়া প্রতিটি অবিশ্বাসী মৃত্যুবরণ করবে এবং তাঁর নিঃশ্বাস, যতদূর তাঁর দৃষ্টি পৌঁছাবে, ততদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়বে৤ তিনি তখন তার (অর্থ্যাৎ দাজ্জালের) খোঁজ করবেন, যতক্ষণ না তিনি তাকে লুদ এর সিংহদ্বারে বন্দী করবেন এবং হত্যা করবেন৤ আল্লাহ যাদের সুরক্ষা করেছেন, এমন এক জনগোষ্ঠী তখন মরিয়মের পুত্র ঈসা (আ.) এর কাছে আসবে, তিনি তাদের মুখ মুছে দিবেন এবং বেহেশতে তাদের অবস্থান সম্পর্কে অবহিত করবেন৤

এরকম একটা অবস্থায় আল্লাহ ঈসা (আ.) এর কাছে ওহী পাঠাবেন, ‘‘ আমার দাসদের মাঝ থেকে আমি এমন একটা দল তৈরী করেছি যাদের সাথে যুদ্ধ করে কেউ জয়ী হতে পারবেনা, তুমি ( তোমার সঙ্গীদের) নিরাপদে তূর পাহাড়ের উপর নিয়ে যাও’’, আর তখন আল্লাহ ‘ইয়াজুজ ও ‘মাজুজ’কে পাঠাবেন এবং তারা প্রতিটি উচু স্থান থেকে দলে দলে নেমে আসবে৤ তাদের প্রথম জন টাইবেরিয়াস হ্রদের পাশ দিয়ে অতিক্রম করার সময় সেখান থেকে পানি পান করবে আর তাদের শেষ জন যখন সেই স্থান অতিক্রম করবে, সে বলবে এখানে একদা পানি ছিল--৤’’ (সহীহ মুসলিম)৤

‘‘আন-নাউওয়াস ইবনে সাম’আন (রা.) হতে বর্ণিত, এমতঃ অবস্থায় আল্লাহ ঈসা (আ.) এর কাছে এই ওহী পাঠাবেন, আমি আমার বান্দাদের ভিতর থেকে এমন এক দল তৈরী করেছি, যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে কেউ টিকে থাকতে পারবেনা৤ তুমি এদের নিয়ে নিরাপদে তুর-এ চলে যাও৤ তখন আল্লাহ ইয়াজুজ-মাজুজকে প্রেরণ করবেন যারা প্রতিটি গিরিপথ বেয়ে নেমে আসবে৤ তাদের প্রথমজন টাইবেরিয়াস হ্রদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তা থেকে পানি পান করবে৤ আর শেষ জন যখন সেই হ্রদের পাশ দিয়ে যাবে তখন সে বলবে; এখানে একদা পানি ছিল৤ ঈসা (আ.) এবং তাঁর সাথীগণ তারপর এখানে (তুর-এ) অবরুদ্ধ হয়ে পড়বেন এবং তাঁদের অবস্থা এমন শোচনীয় হবে যে, তাঁদের কাছে একটি ষাঁড়ের মাথা একশত দিনারের চেয়ে বেশী প্রিয় হবে৤” (সহীহ মুসলিম৤)

সমগ্র ‘পবিত্রভূমির’ জন্য এখনও পর‌্যন্ত গ্যালিলি সাগরই হচ্ছে মিঠা পানির প্রধান উৎস৤ ইসরায়েলী, ফিলিস্তিনি ও জর্ডানবাসীরা তাদের পানির জন্য গ্যালিলি সাগরের উপর উল্লেখ যোগ্য ভাবে নির্ভরশীল৤ গ্যালিলি সাগর যদি কখনও শুকিয়ে যায়৤ (যেমনটি নবী করিম (সা.) ভবিষ্যৎ বাণী করেছেন৤ ইসরায়েলীরা সহজেই সমুদ্রের পানির লবণাক্ততা দূরীকরনের প্রকল্প ব্যবহার করে তাদের মিঠা পানির অভাবের সমাধান করতে পারবে৤ কিন্তু ফিলিস্তিনী ও জর্ডানবাসীদের জন্য কোন বিকল্প থাকবেনা৤ তারা এক ধরণের জিম্মী হয়ে পড়বে এবং বেঁচে থাকার জন্য ইসরায়েলীদের কাছ থেকে পানি কিনতে বাধ্য হবে৤ ইহুদীরা রিবার অর্থনৈতিক অস্র প্রয়োগ করে ইতোমধ্যেই তাদেরকে যে ভাবে দারিদ্র সীমার নিচে নিয়ে গেছে, তাতে বুঝা যায় যে তাদের ঐ ধরণের প্রকল্প থেকে পানি কেনার সামর্থ থাকবে না৤ যার ফলশ্রুতিতে পানি পাবার জন্য, তাদেরকে ইসরায়েলের কাছে রাজনৈতিক ভাবে আত্নসমর্পণ করতে হবে৤ আর তারা যদি তা না করে, সে ক্ষেত্রে তারা মৃত্যু বরণ করবে৤

গ্যালিলি সাগরের পানির গভীরতা এখন এতই নেমে গেছে যে, ইসরায়েলের তার ‘পানির চাল’ ব্যবহার করার ক্ষণটি আর খুব বেশী দূরে নেই৤

Uri Saguy হচ্ছেন ইসরায়েল রাষ্ট্রের জাতীয় পানি কোম্পানী বোর্ড, Mekorot এর চেয়ারম্যান৤ বোর্ডের এক সাম্প্রতিক সভায়(2000 সালের ডিসেম্বরের শুরুতে) তিনি মন্তব্য করেন-‘‘ দেশের পানি সম্পদ আজ বিপর‌্যয়ের দ্বারপ্রান্তে এবং সরকার এই সংকট দূর করার জন্য পর‌্যাপ্ত পদক্ষেপ নিচ্ছেনা৤ তুরস্ক থেকে পানি আমদানী করে ইসারয়েলের পানি সংকট সমাধান করার প্রস্তাবকে তিনি অবাস্তব বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন৤ কিনেরেট হ্রদের পানি এবং দেশের প্রধান ভূগর্ভস্থ রিজার্ভ The coastal and Mountain Aquifiers -এর পানি ভয়ঙ্কর মাত্রায় কমে যাওয়ার ফলশ্রুতিতে এই সংকটের সৃষ্টি হয়েছে৤ কিনেরেট হ্রদের পানির গভীরতা স্মরণকালের ইতিহাসের সর্ব নিম্ন পর‌্যায়ে রয়েছে এবং ভূগর্ভস্থ রিজার্ভের অবস্থাও একই৤ আসলে পানির গভীরতা যেখানে নেমে গেলে National Water Carrier এ ঐ হ্রদ থেকে পানি পাম্প করে যোগান দেয়া বন্ধ করতে হবে, সেই পর‌্যায়ে নামতে আর বেশী বাকী নেই৤ পাম্পগুলোকে গোড়াতেই এমন ভাবে স্থাপন করা হয়েছিল যাতে পানির গভীরতা সর্বনিম্ন পর‌্যায়ে পৌঁছালে সেগুলো আর কাজ করবেনা৤

পানির গভীরতা এখন কতটুকু? কিনেরেট কর্তৃপক্ষের এক প্রাক্তন সদস্য Yitzhak Gal ঘোষণা করেছেন যে, আমাদের গবেষণা মতে গত 150 বছরের মধ্যে এটাই হচ্ছে এই হ্রদের সর্বনিম্ন গভীরতা৤ আমরা রোমান যুগ পর‌্যন্ত প্রত্নতাত্বিক তথ্য সমূহ পরীক্ষা করে দেখেছি এবং বুঝেছি যে, সেই থেকে নিয়ে এই হ্রদের পানির গভীরতা কখনই আজকের মত অবস্থায় নামেনি৤

Saguy সতর্ক করে বলেছেন ‘‘ (সরকারের নীতি অদূর ভবিষ্যতেই যদি কোন মৌলিক পরিবর্তন না ঘটে, তবে আগামী বছরই মৌলিক চাহিদা মেটানোর জন্য পর‌্যাপ্ত পানি থাকবেনা৤ বাস্তবিকই তিনি ঘোষণা করেন- আগামী বছরই এক বিপরর‌্যয় নেমে আসবে৤ ঐ বিপর‌্যয়ের কারণে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ঘটতে পারে, কেননা ফিলিস্তিন ও জর্ডানবাসীদের পানি সরবরাহ করার ব্যাপারে ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার রয়েছে, আর সেই সরবরাহের উৎস সমূহ দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে৤ কিনেরেট হ্রদ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান Zvi Orenberg অবস্থাকে ভীতিপ্রদ বলে আখ্যায়িত করে বলেছেন, ‘‘এই শীতে যদি আশানুরূপ বৃষ্টিপাত না হয়, যার জন্য সবাই চেয়ে রয়েছে এবং প্রার্থনা করছে, তবে সবার জন্য ব্যাপারটা বিপর‌্যয়ের কারণ হবে৤’’ ইতি মধ্যেই লবণাক্ততা বেড়ে যাচ্ছে এবং শেওলা ছড়িয়ে পড়ছে৤

গ. ‘‘ডেড সি’’ এর পানিও শুকিয়ে যাচ্ছে ঃ

হারিয়ে যেতে বসেছে পৃথিবীর সর্ব নিম্ন অঞ্চল ‘ডেড সি’৤ এর এক দিকে ইসরাইল আর অন্য দিকে জর্ডান৤ মাঝ খানে ‘ নীল সাগরের’ টানে সারা বছর পৃথিবীর দূর দুরান্ত থেকে ছুটে আসে মানুষ৤ কিন্তু আর কত দিন? জেরুজালেম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ‘মোটি স্টেইনের কথায় আর এক যুগ, হয়তোবা তা-ও নয়৤ এর চেয়েও কম’৤ সানফ্রান্সিসকোতে আমেরিকান জিওফিজিক্যাল ইউনিয়নের বার্ষিক সম্মেলনে এ হুশিযারীই দেন তিনি৤ এক লাখ 20 হাজার বছর আগের কথা৤ প্রায় একই দশা হয়েছিল বৃহত্তম এ হ্রদটির৤ কিন্তু এখন যে অশনি সংকেত দেখতে পাচ্ছেন গবেষকরা, তাতে আগামী কয়েক বছর যদি খরার মুখে পড়ে পশ্চিম এশিয়ার দেশ গুলো, তাহলে হয়তো সত্যিকার অর্থেই মরে যাবে ‘ডেড-সি’৤ 2010 সালে হ্রদের নিচে গর্ত খুড়ে গভীরতম অংশে পৌঁছে গিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা৤ ঐ বছর গবেষণার ফল হাতে পেয়ে রীতিমত চমকে গিয়েছিলেন তারা৤ দ্রুতগতিতে শুকিয়ে যাচ্ছে হ্রদের পানি৤ গত বছরে পানির স্তর নেমেছে প্রায় 10 মিটার৤ একই সঙ্গে চলছে মানুষের অত্যাচার৤ আশপাশের খরা প্রবণ দেশগুলোতে সেচের পানির যোগান দিতে দিতে ফুরিয়ে যাচ্ছে হ্রদের উৎস নদীগুলোও৤‘লবণ হ্রদের’ থেকে খনিজ লবণ সংগ্রহ করছে বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংস্থা৤ তারও বিরূপ প্রভাব পড়ছে ‘ডেড-সি’তে৤ মানুষের সঙ্গে ধ্বংসের খেলায় হাত মিলিয়েছে প্রকৃতি৤ পৃথিবীর উষ্ণায়নও ‘ডেড-সি’র মৃত্যুর অন্যতম কারণ হয়ে দাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা গবেষকদের৤ পরিবেশবিদ ‘স্টেইন’ জানান কয়েক’শ হাজার বছর আগে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এলেও এবার তাকে বাচানো যাবে কি না সন্দেহ৤ তখন হ্রদরে ধারে জনবসতি ছিল খুবই কম৤ কিন্তু এখন পরিস্থিতি অন্যরকম৤ হ্রদের পানির প্রধান উৎস জর্ডান নদী৤ খাল কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নদীর পানি৤ চলছে সেচের কাজ৤ তা হলে কি করে ভাল থাকে ‘ডেড-সি’৤ এখন হ্রদকে বাচানোর একমাত্র উপায় হচ্ছে ‘পানির জোগান’ অব্যাহত রাখা৤ সেচের কাজে ‘হ্রদের’ অবাধ ব্যবহার বন্ধ করতে হবে৤তবে এর ফলে পশ্চিম এশিয়ার দেশ গুলো যে ভয়ঙ্কর পানির অভাবে পড়বে সে কথাও মনে করিয়ে দেন ‘স্টেইন’৤4

পাদটীকা ঃ ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা ‘মোসাদ’ আর ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এই দুই সংস্থা এক যোগে কাজ করছে সারা বিশ্বে নিজেদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য৤ ‘মোসাদের’ বানানো বড়ি ‘র’ বাংলাদেশের তৌহিদী জনতাকে খাওয়ানোর চেষ্টা করছে ৤ আজ ভারতের প্ররোচনাতেই বাংলাদেশ জ্বলছে৤ যত তাড়াতাড়ী বাংলাদেশের মানুষ এটা বুঝতে পারবে এবং তৌহিদী জনতাকে সাহায্য করবে তত তাড়াতাড়ী মঙ্গল৤ অন্যথায় আল্লাহ আযাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে যত নাস্তিক, মুরতাদের দল৤ আল্লাহ আমাদের রহম করুন৤ আমিন৤

তথ্য সূত্র ঃ

1. ‘‘পবিত্র কুর‘আনে জেরুজালেম’’

--ইমরান নযর হোসেন

2. David Rudge

ক. ‘‘সরকার পানি সমস্যার গুরুত্বকে এড়িয়ে যাচ্ছে’’৤ জেরুজালেম পোষ্ট , 5 ই ডিসেম্বর-2000.

খ. ‘‘পানির পাইপ বেয়ে ধেয়ে আসছে পানি সমস্যা’’ 19 শে ডিসেম্বর, 2000.

3. ফাতহুল মাজীদ

---মুহাম্মদ শরফুল ইসলাম

4. বাংলা নিউজ, 6ই জানুয়ারী,2012ইং

5. ‘দৈনিক আমার দেশ’ 8ই মার্চ, 2013ইং

বিষয়: বিবিধ

৩২০০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File