শিক্ষক-৩

লিখেছেন লিখেছেন টাংসু ফকীর ০৫ এপ্রিল, ২০১৩, ০৭:০০:১৮ সকাল

কয়েক মাস হয়, শেষ বর্ষের পরীক্ষা দিয়ে বাসায় বসে আছি| আপাততঃ কোন কাজ নেই৤ চাকুরি-বাকুরির চেষ্টা করছি৤ কয়েক জায়গায় ইন্টারভিউ দিয়েছি৤ বিসিএস পরীক্ষার জন্য সামান্য প্রস্তুতি নেয়ার চেষ্টা করছি৤ এমন সময় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখলাম, সরিষাবাড়ী পাইলট উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের কলেজ সেকশনের জন্য বেশ কিছু শিক্ষক নিয়োগ করা হবে৤ সে মতে একদিন মোটর সাইকেল যোগে হাজির হলে, অধ্যক্ষার সাথে আলাপ করে আবেদন পত্র জমা দিলাম৤ নতুন কলেজ, বেতন কিভাবে পাব? আদৌ পাব কিনা? চাকুরী হবে কি না? কত টাকা পয়সা দিতে হবে ম্যানেজিং কমিটিকে? কে জানে? নানা চিন্তা ভাবনা করে সময় কাটাই৤ একদিন কলেজের অফিস সহকারীকে দিয়ে অধ্যক্ষা সাহেবা খবর দিলেন যে, আপাততঃ কয়েকদিন বিনা পয়সায় ক্লাশ নিয়ে দিতে, পরে বাকী সব দেখা যাবে৤ আমি একদিন কলেজে গিয়ে সব শিক্ষকদের সাথে পরিচয় হয়ে আসলাম৤ পরে একদিন গেলাম ক্লাশ নিতে৤ কয়েক দিন ক্লাশ নিলাম৤ কলেজের নিয়ম অনুযায়ী প্রতি মাসের শেষ সপ্তাহে একটি পরীক্ষা নিতে হবে, বিগত ক্লাশের উপর৤ আচ্ছা ঠিক আছে৤ মাসের শেষ সপ্তাহে পরীক্ষা শুরু হল৤ শীতের দিন৤ সকালে পরীক্ষার হলে আমি ডিউটি দিচ্ছি আর সিনিয়র শিক্ষকেরা বারান্দায় চেয়ার পেতে শীতের মিষ্টি রৌদ পোহাচ্ছে৤ আমার সাথে আমাদের সহকারী অধ্যাপিকা, নাজমা আপা কথা বলছেন, ঠিক এমন সময় স্কুল সেকশনের সবচেয়ে প্রবীণ শিক্ষক কালীপদ স্যার আস্তে আস্তে হেটে আসছেন৤ তিনি বাংলা পড়ান আর খুব ভাল গান করেন৤ পরীক্ষা কক্ষের ঠিক মাঝখানে এসে থামলেন৤ আর অবাক হয়ে বললেন কি পরীক্ষা এই সময়ে? আমি বললাম স্যার মেয়েদের মাসিক পরীক্ষা৤ স্যার বিষ্ময়ের সহিত বললেন ও আচ্ছা, মেয়েদের মাসিক তা হলে শুরু হয়ে গেছে৤

সব মেয়েরা একবার আমার দিকে তাকায় আরেকবার নাজমা আপার দিকে তাকায়৤ আর মুখ নিচু করে টিপ টিপ করে হাসে কি না কে জানে?

বিষয়: বিবিধ

১২৩৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File