ওদের অপপ্রচার , আমাদের জবাব !
লিখেছেন লিখেছেন মোনের কোঠা ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০৫:৫৯:১১ বিকাল
ওদের অপপ্রচার , আমাদের জবাব !
বঙ্গবন্ধু এবং আওয়ামী লীগের নিকট রাজনীতি আর জনপ্রিয়তায় ধরাশায়ী হয়ে স্বাধীনতার পর থেকেই একটি স্বার্থান্যেসী মহল বঙ্গবন্ধু এবং আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে আসছে ৷ মুক্তিযুদ্ধে পরাজিতদের সাথে এই মিথ্যাচারে হাত মেলায় চীন সমর্থক বাম পন্থীরা , পরে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের ধ্বজাদারি জাসদও এতে সামিল হয় ! টাঙ্গাইল থেকে প্রকাশিত মাওলানা ভাসানীর "হক কথা" এই অপপ্রচারে মুখ্য ভুমিকা পালন করেছিল সেই সময় , তার পরেই ছিল জাসদের "গণকণ্ঠ" আর ইংরেজী "হলিডে" পত্রিকা ৷ এখানে উল্লেখযোগ্য যে হক কথা পত্রিকার সম্পাদক ছিল ইরফানুল বারি নামে টাঙ্গাইলের কুখ্যাত এক রাজাকার ! স্বাধীনতার পর পরই যুদ্ধ-বিধস্থ বাংলাদেশে সেই লাগামহীন অপপ্রচার সাধারণ মানুষদের কিছুটা হলেও বিভ্রান্ত করেছিল ! স্বাধীনতার এত বছর পরও সেই মহলটি একই স্টাইলে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে , বর্তমানে দল বদল হয়ে সেই মহলটির নেতৃত্ব দিচ্ছে বিএনপি-জামাত চক্র ! মিথ্যাচারে যদি কোনো "নোবেল পুরস্কার" থাকতো , তাহলে বিএনপি-জামাত চক্র নি:সন্দেহে তা পেয়ে যেত ! নিমনে সেই কুখ্যাত লাগামহীন অপপ্রচারের কিছু নমুনা তুলে ধরা হলো :
১ . রক্ষিবাহিনী নাকি ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের দ্বারা গঠিত ছিল, যা "হক কথাই " বেশি প্রচার করেছিল ৷ '৭৫ এর পট পরিবর্তনের পর একজন ভারতীয়কেও খুঁজে পাওয়া যায়নি রক্ষিবাহিনিতে ! উল্টো সেই দিন পুরো বাহিনিকেই বাংলাদেশ আর্মিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিলো ৷ যদি রক্ষীবাহিনীর সদস্যরা নৈতিকতার দিক থেকে এতই খারাপ হত , তা হলেতো বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর মত প্রতিষ্ঠানে তাদের অন্তভুক্ত করা হতোনা !
২ রক্ষীবাহিনীর হাতে নাকি ত্রিশ হাজার জাসদ কর্মী নিহত হয়েছিলো ! কিন্তু '৭৫ এর পট পরিবর্তনের পর একটি পরিবারও নিহতদের তালিকা চেয়ে এগিয়ে আসেনি বা বিচার চায়নি ! ( অনেকটা শাপলা চত্তরের মত মিথ্যা প্রচার) !
৩ বিএনপি আর তার মিত্ররা দাবি করে জিয়া নাকি '৭৫ এর পট পরিবর্তনের পর বহু দলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে ! ১৯৭৫ এ বঙ্গবন্ধু ১৮টি রাজনৈতিক দলের সম্মতিতে গঠন করেছিলেন যুগোপযোগী "বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ " , তাই '৭৫ পট পরিবর্তনের পর সেই ১৮টি দলের কর্মকান্ডের মাথ্যমে দেশে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক চর্চা অব্যাহত থাকার কথা ৷ অথচ সামরিক শাসক জিয়া '৭৫ এর নভেম্বরে পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসার পর দীর্ঘ ৪ বছর পর দেশে তথাকথিত বহু দলীয় গণতন্ত্রের চর্চা শুরু করে ! এই ৪ বছর জিয়া ভয় , ক্ষমতা আর টাকার লোভ দেখিয়ে বিভিন্ন দল ভেঙ্গে , "দল ছুটদের " নিয়ে সামরিক ছাওনিতে গঠন করে "বিএনপি" ! আর দলের প্রতিকটিও হাইজ্যাক করা হয় ভাসানী ন্যাপ থেকে ! ক্যান্টনমেনটে বন্দুকের নলে দল গঠন করে জিয়া তথাকথিত বহুদলীয় গণতন্ত্রের লেবাসে আসলে "এক দলীয় স্বৈরশাসন" প্রতিষ্ঠার স্বপ্নে মগ্ন ছিলেন ৷ তার অকাল জীবনাবসান না হলে মিসর-লিবিয়া-সিরিয়ার মত বাংলাদেশকেও এক দলীয় স্বৈরশাসকের যাতাকলে নিস্পেসিত হতে হতো ! তাই বিএনপি ও তার মিত্রদের বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার গলাবাজি একটা মিথ্যা প্রচারণা ছাড়া আর কিছু নয় !
৪ বিএনপির নেতৃত্তাধীন স্বাধিনতাবিরধীরা দীর্ঘদিন ধরে অপপ্রচার করে আসছিলো যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশ নাকি ভারতের করদ রাজ্যে পরিনত হয়ে যাবে আর দেশে নাকি ইসলাম ধর্ম থাকবে না , মসজিদে নাকি আযানের পরিবর্তে উলুধ্বনি হবে ! এত সব অপপ্রচারের পরও আওয়ামী লীগ দুই দুইবার ক্ষমতায় এসেছে কিন্তু তার কিছুই হয়নি ! উল্টো বিএনপি যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই ভারতের তাবেদারী করেছে , এমনকি খালেদা জিয়া ভারত সফরের সময় পানির ন্যায্য হিস্যা নিয়ে আলোচনা করতে নাকি ভুলে গিয়েছিলেন ! আসলে বিএনপি "ক্ষমতায় থাকলে ভারত তোষণ আর বিরোধী দলে থাকলে ভারত দোষন " এ বিশ্বাসী !
৫ ফারাক্কা বাঁধ নিয়েও কম অপপ্রচার হয়নি ! আওয়ামী বিরোধীরা এতদিন বলে এসেছে যে ফারাক্কার জন্য নাকি বাংলাদেশ মরুভূমি হয়ে যাবে ! কিন্তু আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি যে দেশের উত্তরাঞ্চলে মরুভূমির বদলে সবুজ বিপ্লব ঘটে গেছে ! ফারাক্কা বাধের ফলে দেশের উত্তরাঞ্চলে আবাদী জমির সীমানা বেড়ে গেছে , প্রলয়ংকরী বন্যা নিয়ন্ত্রিত হয়েছে , বাম্পার ফলন হয়েছে আর মঙ্গাও দূর হয়ে গেছে !
৬ দুর্নীতি নিয়েও কম অপপ্রচার হচ্ছে না ! খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব হিসাবে ফালু আর হারিস চৌধুরী যে ভাবে "আঙ্গুল ভুলে কলা গাছ" হয়েছে , জননেত্রী শেখ হাসিনার কোনো একান্ত সচিবের বেলায় তার কিছুই হয়নি ৷ তা ছাড়া বাংলাদেশের ধনী লোকদের তালিকা করলে দেখা যাবে যে তাদের ৭০% বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত , যাদের বেশির ভাগ দুর্নীতি করে ধনী হয়েছে ! দুর্নীতিতে বিএনপি পর পর তিনবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আর আওয়ামী লীগ সেই কালিমা থেকে বাংলাদেশকে মুক্তি দিয়ে দেশকে ৪০ নম্বরে নিয়ে এসেছিলো !
৭ বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার নাকি বস্তাভর্তি টাকার বিনিময়ে , ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় এসেছে ! বিএনপি-জামাত গত নির্বাচনে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হওয়ার পর থেকেই এই মিথ্যাচার করে আসছে ৷ মইন -ফখরুদ্দিন গ্যাং যদি বিএনপিকে ইচ্ছে করেই হারাতো , তা হলেতো খালেদা জিয়া পাচ পাচটি আসনে জিততে পারতোনা ! জে : মইন এর ভাই সহ তখনকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শুভাকাংখী ফেরদৌস কোরেশী , মান্নান ভুইয়া , বদরুদ্দোজা রা সহজেই জিতে যেত যদি সত্যি কোনো ষড়যন্ত্র হয়ে থাকতো ! নির্বাচনে "গো হারা " হয়ে "নাচতে না জানলে উঠান বাঁকা " র মতই যুক্তি দেখাচ্ছে বেহায়া বিএনপি !
আরো অনেক কিছু নিয়েই বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি-জামাত মিথ্যাচার করে আসছে , সরকার বিরোধী আন্দোলনে কোনো ইস্যু না পেয়ে গলাবাজি আর অপপ্রচারই তাদের একমাত্র অস্ত্র এখন ! কিন্তু আগামী দিনের নেতা ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রপথিক সজীব ওয়াজেদ জয়ের সময়োপযোগী হস্তক্ষেপে বিরোধীদলের লাগামহীন অপপ্রচারে ভাটা পরেছে ! বিলবোর্ড , সামাজিক মিডিয়া আর টিভি টক-শোতে বর্তমান সরকারের অভূতপূর্ব সফলতার সচিত্র প্রতিবেদনে বিএনপি-জামাত এখন দিশেহারা !
জয় বাংলা , জয় বঙ্গবন্ধু ,
বিষয়: রাজনীতি
১১৮৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন