শাহবাগের ইমরানকে গ্রেপ্তারে সাংবাদিকদের ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম

লিখেছেন লিখেছেন চিতকার ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৫:২৪:১১ বিকাল

আরটিএনএন: দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতারের জন্য শাহবাগের সরকার সমর্থকদের মঞ্চ থেকে আল্টিমেটাম ঘোষণাকারী রংপুর মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও গণজাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক ডা. ইমরান এইচ সরকারকে গ্রেপ্তারে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা।



শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ আল্টিমেটাম দেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) নেতৃবৃন্দ।

সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা ঘোষণা দেন, ডা. ইমরান এইচ সরকারকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা না হলে সাংবাদিকরা শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের বিরুদ্ধে অবস্থান কর্মসুচি পালন করবেন।

শনিবার ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএফইউজে ও ডিইউজের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ ঘোষণা দেয়া হয়।

শুক্রবার ইসলাম অবমাননা বিরোধী বিক্ষোভ চলাকালে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভি, জিটিভি, দিগন্ত টিভি, একুশে টিভি ও ইসলামিক টিভির প্রতিবেদকসহ সাংবাদিকদের ওপর গুলি এবং দৈনিক আমার দেশ, সংগ্রাম ও নয়া দিগন্ত অফিসে সরকারদলীয় নেতা-কর্মীদের হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেয়ার প্রতিবাদে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

সমাবেশ শেষে সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে একটি বিক্ষোভ মিছিল তোপখানা রোড প্রদক্ষিণ করে।

বিক্ষোভ সমাবেশে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহল আমিন গাজী বলেন, ‘আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শাহবাগ থেকে আল্টিমেটাম দাতাকে গ্রেফতার করতে হবে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সমাজ পাল্টা কর্মসুচি ঘোষণা করবে।’

আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের গ্রেফতার দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যারা সাংবাদিক এবং গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে আমরা তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা অবস্থান কর্মসুচি ঘোষণা করবো।’

তিনি বলেন, ‘পবিত্র ইসলাম ধর্মকে কটাক্ষ করে যারা দেশের ৮৫ ভাগ মানুষের বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। তাদের সঙ্গে আমরা একমত হতে পারি না।’

সাংবাদিক দম্পত্তি সাগর-রুনী হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি আহুত সাংবাদিক মহাসমাবেশ থেকে সাংবাদিক নির্যাতনের বিষয়ে কঠোর কর্মসুচি ঘোষণা করা হবে বলেও তিনি জানান।

সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী বলেন, ‘সরকারের ইন্ধনেই গণজাগরনের নামে দেশের বড় দুটি হাসপাতাল অবরুদ্ধ করে রেখেছে।’

মাহমুদুর রহমানের কিছু হলে ঘরে ঘরে আগুন জ্বলবে বলেও তিনি হুশিঁয়ারি দেন।

ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব শওকত মাহমুদ বলেন, ‘দেশের মানুষ শাহবাগের কথায় চলে না। কোন পত্রিকার সম্পাদক থাকবেন আর কোন সম্পাদক থাকবে না তা শাহবাগের মঞ্চ থেকে ঠিক করার অধিকার তাদের কে দিয়েছে। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কথা বলার অধিকার তারা কোথায় পেয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘গতকালের ঘটনায় আমরা দেখলাম বর্তমান তথ্যমন্ত্রী মাত্র কয়েকজন সাংবাদিকদের দেখতে গিয়েছেন। কিন্তু যে সব সাংবাদিক পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছেন তাদের তিনি দেখতে গেলেন না। এতে বুঝা যায় তাদের নির্দেশেই পুলিশ সাংবাদিকদের ওপর গুলি চালিয়েছে।’

শওকত মাহমুদ বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রীর নির্দেশই পুলিশ বিনা উষ্কানিতে সাংবাদিকদের ওপর গুলি করেছে।’

এ সময় তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রীকে জাতীয় প্রেস ক্লাবে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করতে প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান।

সমাবেশে অন্য সাংবাদিক নেতারা বলেন, ‘যারা ২০০৬সালের ২৮ অক্টোবর লগি বৈঠা নিয়ে প্রকাশ্যে দিবালোকে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল আজ তারাই আবার শাহবাগে গিয়ে গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।’

সাংবাদিকরা বলেন, ‘শাহবাগের কোনো যদু-মধুর কথায় মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করা হবে আর সাংবাদিক সমাজ তা বসে বসে দেখবে এমনটি যারা ভাবছে তারা মুলত বোকার স্বর্গে আছে।’

বিক্ষোভ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন-জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসেন, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, ঢাকা রিপোর্টর্সা ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি নুর উদ্দিন আহমেদ, প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, কবি আব্দুল হাই শিকদার প্রমুখ।

বিষয়: রাজনীতি

১৩০০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File