শাহবাগী নাটক সরকারের শেষ রক্ষা করতে পারবে তো?

লিখেছেন লিখেছেন স্পার্টা ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৮:০৭:৩১ রাত



যুদ্ধাপরাধ নিয়ে শুরু থেকেই সরকার বেকায়দায় ছিল। গল্প নাটক সিনেমার স্ক্রীপ্ট নির্ভর একটা বিচার চলছিল অতি দ্রুত গতিতে। দেশ বিদেশের সমালোচনা উপেক্ষা করে যেত তেন ভাবে বিরুধী দলের সায়েস্থা করে পরবর্তী নির্বাচনের পথ পরিষ্কার করার একটি দূর্ভিসন্ধি মনে উকিঁ দিচ্ছিল।

বিচার কাজ শুরুর সাক্ষীগন ছিল যথারীতি চোর বাটপার।এরপর স্কাইপি কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পর পুরো বিচার কাজটাই লেজে গোবরে। আন্তর্জাতিক মহল থেকে ব্যাপক সমালোচনার স্বীকার হল এই বিচার প্রক্রিয়া। দেশের জনগনের আর বুঝার বাকি রইল না এটি একটি সাজানো নাটক মঞ্চস্থ করছে সরকার।

সারাদেশ যখন সরকারের নানা ব্যর্থতায় প্রতিবাদি হয়ে উঠেছে তখন সরকারের প্রয়োজন ছিল এমন একটা কিছু যা দিয়ে সব পাখি এক সাথে মারা যায়। যাতে সাপ ও মরে লাঠিও না ভাঙে।

সরকারের অতীত আচরণে যা দেখা গিয়েছিল তা হলো কোন প্রকার বিরুধী মতকে সহ্য না করা। বিরুধীদলের যত কর্মসূচী সরকার কঠিন হাতে দমন করেছে। জামাতের কথা বাদই দিলাম। বি এন পি , যে দল কিনা দুই বার ক্ষমতায় ছিল, তাদেরকের নিজেদের অফিস থেকে সরকার বের হতে দেয়নি। বিএনপির মহাসচিবকে কারাগারে নিক্ষেপ, জামাতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে দীর্ঘ দিন জেলে বন্দি করে, হাজার হাজার বিরুধী নেতা কর্মীকে কারাগারে বন্দী করে দেশকে একটা পুলিশি রাষ্ট্রে পরিনত করে হাসিনা সরকার।



কালোবিড়ালের কেলেঙ্কারি, শেয়ার বাজার লুটপাট, বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ড, পদ্মা সেতুর আবুল কেলেঙ্কারি, বিডিয়ার হত্যাকান্ড এসব নিয়েই জনমনে ছিল ব্যাপক অসন্তোষ।

বিরুধীদলের কোন আন্দোলন সরকার করতে দেয়নি। জেল যুলুম শুধু বিরুধী দলের জন্যই অবধারিত ছিল। অন্তরীন অবস্থায় মারা গিয়েছিল আরেক প্রতিবাদি কন্ঠ মাওলানা মুফতি ফজলুল হক আমিনি। সন্ত্রাস, গুম, খুন, ছাত্রলীগের লাগামহীম তাণ্ডবে পুরো দেশ ছিল অতিষ্ঠ। গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডে বিশ্ববাসী হতবাক হয়েছিল।সবাই খুজঁছিল মুক্তির একটা উপায়।



এ অবস্থায় সরকারের একটা বড় নাটক বা সিনেমার প্রয়োজন ছিল। আর তা হচ্ছে তরুণ প্রজন্মের জাগরণের নামে শাহবাগী নাটক। প্রথম দিকে এটা যুদ্ধাপরাধের বিচারে প্রতিবাদি সমাবেশ মনে হলেও ধীরে ধীরে তার স্বরুপ উন্মোচন হয় যখন দেখা গেল সরকার তাদের দাবীর প্রতিটি লেখার প্রতি সমর্থন জানালো। আর বিচারককে অনুরোধ করল তথাকথিত সরকারি জাগরণের কথা মাথায় রেখে রায় দেয়ার জন্য।

যে দাবিতে পত্রিকা বন্ধ করে দেয়ার কথা বলা হয়, ব্যাংক বন্ধ করে দেয়ার কথা বলা হয় জনগনের নানা অসুবিধা উপেক্ষা করে যে জাগরণ সরাসরি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেল। অবশেষে দেখা গেল বিচারের রায় কেউ মানে না।

বাদী পক্ষ রায় না মেনে প্রহসনের বিচার বন্ধ করতে বললে তাকে কোথাও দাঁড়াতে দেয়া হলো না। আর বিতর্কিত রায়কে আরো বর্ধিত করার বিষয়ে সর্বাত্নক সহযোগিতা করা হলো। এই দ্বিমুখী নীতিতেই এটা পরিস্কার যে এই শাহবাগী নাটক থেকে সরকার তার সব সুবিধা নিতে চাই। জনগনের মনোভাবকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার এ চেষ্টা কিছু ছোট খাট ছেলেপেলে না বুঝতে দেশের আপমর জনগনের বুঝতে আর বাকি নেই।

সরকারের সব ব্যর্থতাকে আড়ালে নেওয়ার জন্য তরুণ প্রজন্মকে ধোঁকা দিয়ে সরকারের এই নাটক মঞ্চায়ন।

তত্বাবধায়কের দাবী না মেনে নিজের অধিনে নির্বাচন দিয়ে আবার ক্ষমতার আশার যে দু:স্বপ্ন আওয়ামী সরকার দেখছে তা আধৌ বাস্তবায়িত হয় কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।

বিষয়: রাজনীতি

১৪৫৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File