মায়ের পায়ের নিছে সন্তানের বেহেস্ত।স্বামির পায়ের নিছে স্ত্রীর বেহেস্ত নয়।

লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ২৪ মার্চ, ২০১৩, ১১:৪৭:১২ রাত

আমাদের দেশের একটা প্রচলিত কথন "স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেস্ত"। "পতিদেব" বলে একটা কথা প্রচলিত আছে। পতিদেব মানে হলোঃ পতি দেবতাতুল্য। হিন্দু সমাজে স্বামীকে পুজাও করা হয়। যাইহোক, "পতিদেব" বা "স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেস্ত" এই কথন ভারতীয় উপমহাদেশে ধর্ম এবং সমাজ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে। অবাধ্য (!!!) স্ত্রীকে বশে আনতে এই কথন/নিয়মের ব্যবহার করা হয়। শুধু অবাধ্য নয়, স্ত্রী যদি তার বিবেচনায় সঠিকও থাকে তবুও এই নিয়ম জোর করে চাপিয়ে দেয়া হয় স্ত্রীর উপর। এনিওয়ে, স্বামী নিজেই যদি জাহান্নামে যায় তাহলে তার পায়ের নিচে বেহেস্ত কেমনে থাকবে!!! একজন ভিক্ষুকের ভিক্ষা দেয়ার ক্ষমতা আছে কি-না একটু ভেবে দেখুন তো!!

গাইবান্ধার বিউটি খাতুন। তার ধারণা- স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেস্ত। এই ভ্রান্ত ধারণা ও স্বামীর চাপের কারণে বিউটি বাধ্য হন ভাড়া খাটতে। ভাড়া খাটা বলতে পতিতাবৃত্তি করেছেন বিউটি খাতুন। বিউটি বলেন, ‘আমি পতিতা নই। আমি আমার স্বামীর কথামতো কাজ করি। আমি মানুষের কাছে ভাড়া খাটি।’ তার স্বামীর নাম আবদুর রাজ্জাক প্রদীপ। তিনি তার স্ত্রীকে ১০ মিনিট থেকে ঘণ্টা, এমনকি রাতের জন্য অন্যের কাছে ভাড়া দেন। বিনিময়ে তিন বেলা ভাত আর কমিশন নেন তিনি। অভাবনীয় এ ঘটনা ঘটছে গাইবান্ধা শহরেই। ২০১০ সালের প্রথম দিকে বিয়ে করেন প্রদীপ। বিয়ের পর থেকেই স্ত্রী বিউটি (২০)-কে নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে বাস করেন তিনি। তার নিজের কোন কর্ম নেই। তাই আবদুর রাজ্জাক আয়-রোজগারের পথ খুঁজতে থাকেন। অবশেষে স্ত্রীকে ভাড়া দেয়ার মতো অমানবিক সিদ্ধান্ত নেন। স্ত্রী বিউটি রাজি ছিলেন না। কিন্তু স্বামীর কথা না শুনলে সংসার ছাড়তে হবে। তাছাড়া তার ধারণা- স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত। এই ভ্রান্ত ধারণা ও স্বামীর চাপের কারণে বিউটি বাধ্য হন ভাড়া খাটতে। স্বামী রাজ্জাক নিজেও খদ্দের ধরে আনেন তার বাড়িতে। পরে স্ত্রীর কাছে থেকে কমিশন হিসেবে শতকরা ১০ টাকা নেন। বিউটি বলেন, আমি মানুষের কাছে ভাড়া খাটি। সে সময় স্বামী আশপাশেই থাকে। মানুষ সন্তুষ্ট হয়ে হয়তো আমাকে ১০০ টাকা দেয়। পার্টি বড় হলে তার বাড়িতেই যেতে হয়। তখন রেট একটু বেশি দিতে হয়। তার কথা, এতে কোন পাপ নেই। প্রতি রাতেই এভাবে তার উপার্জন হয় ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা। আর স্বামী আবদুর রাজ্জাককে দিতে হয় ৩০ থেকে ৬০ টাকা। কমিশনের এই টাকায় চলে তার পান-সিগারেট খাওয়া। আর স্ত্রীর উপার্জন থেকে জোটে তিনবেলা খাবার আর কাপড় চোপড়। বছরখানেক আগে থেকে সে ভাড়া খাটলেও তার হাতে কোন টাকা জমা নেই। স্বামীকে না জানিয়ে পানদোকানির কাছে কিছু জমা করছেন নিজের ভবিষ্যতের জন্য। বিউটি জানান, স্বামীর এমন রুচির কারণে তার প্রতি ঘৃণা ধরে গেছে। কিন্তু কোথায় যাবে? কে তাকে আর স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে ঘরে তুলে নেবে? আবদুর রাজ্জাক জানায়, আমি বিউটিকে বিয়ে করেছি এক বছর আগে। শুনেছি আগে থেকেই বিউটি খারাপ স্বভাবের। বিউটির শাশুড়ি বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি। তাই ছেলে ও ছেলের বউকে আলাদা করে দিয়েছেন সংসার থেকে।

এ একটি ঘটনা প্রকাশ হয়ে পড়েছে।গ্রাম বাংলায় অসংখ্য নরপিছাশ রয়েছে যারা সরলপ্রান মানুষগুলোকে এভাবে ব্যাবহার করে।অশিক্ষা আর অভাবগ্রস্ততা মানুষকে জীবজন্তুর আচরনে নিমজ্জিত করে।একবার আমাদের দেশের পতিতালয়গুলোর কাহিনি পড়ে শিয়রে উঠেছিলাম।১২/১৪ বছরের মেয়েগুলোকে নিয়ে এসে এক রকম ঐষধ সেবন করায় যা নাকি পশুকে নাদুষ নুদুষ করার জন্য সেবন করানো হয়।কিছু দিনের মধ্যে ওরা সুন্দর হয়ে উঠে আর অল্পকাল পরেই ঝরে পড়ে জীবন থেকে।ইসলাম আমাদের আত্মরক্ষার জন্য যে নৈতিক হাতিয়ার দিয়েছে তা চর্চা না করার কারনে সমাজ হয়ে উঠেছে ক্ষিপ্ত।সরকারগুলোর মিডিয়া চর্চা দেখলে হাসবো না কাঁদবো ভেবে পাই না।কাজের ক্ষেত্র সম্প্রসারিত করলে এরাও জাতির সম্পদ হতে পারতো।মায়ের জাতিকে নবী সা: কিভাবে সম্মান দিয়েছেন তা জানা প্রতিটি মুসলমানের জন্য জরুরি।একদিন তাঁর দুধ মা হালিমা রা: আসলেন আর বিশ্ব নবী সা: নিজের চাদর বিছিয়ে বসতে দিলেন।আবার তিনি যখন উঠলেন নবী সা: উঠে বিদায় দিলেন।প্রতিদিন কত ঘটনা ঘটছে অথছ কারো কোন খেয়াল নেই।সরকারের পক্ষ থেকে কোন প্রতিকার নেই এই নির্যাতিতদের জন্য।

আমাদের জন গনকে সজাগ হতে হবে।যে যেখানে আছি অশিক্ষিতদের শিক্ষিত করার পরিকল্পনা নিন।আপনার আশে পাশে লিপলেট চাপিয়ে দিন।আপনার মৌখিক দাওয়াত পৌছানোর চেষ্টা করুন।ভাল ও খারাপ দিক গুলো তুলে ধরুন। কোরআন ও হাদিসের কথাগুলো পৌঁছাতে থাকুন।মায়ের পায়ের নিছে সন্তানের বেহেস্ত।স্বামির পায়ের নিছে নয়।স্বামির যে অধিকার রয়েছে স্ত্রিরও সে অধিকার তার উপর তবে স্বামির মর্যাদা একটু উপরে। একে কেন্দ্র করে স্বামী নির্যাতন করলে তাকে প্রশাসনের কাছে ধরিয়ে দিতে হবে।আমাদের অজ্গতা দূর করতে না পারলে সমাজে এর বিজ বপন হতেই থাকবে।আজকাল পার্কগুলোতে পরিবার নিয়ে যাওয়ার পরিবেশ নেই।এই ছেলে মেয়েগুলো যারা অশ্লিল আচরনে লিপ্ত তাদের কোন বাবা মা নেই।যারা অন্য পরিবারের একটি মেয়ের সর্বনাশ করছে তারা কি তার বোনকে কারো সাথে এভাবে দেখলে সহ্য করবে? মেয়েদের মা'র জাতি ভাবুন।আপনার কাম ক্রোধকে সংযত করুন রোজার মাধ্যমে।রাসূল সা: বলেছেন যাদের বিয়ের যোগ্যতা অর্জিত হয়েছে তারা বিয়ে করবে আর যারা এখনো ঐ যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি তারা রোজা রাখবে।ইসলামি আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমেই মানুষের জীবন সুন্দর হয় , সমাজ হয় কলুষমুক্ত। সমাজ হলো একে অন্যের সাহায্যে এগিয়ে আসা, এক সাথে কাজ করা, এক সাথে কিছু অর্জন করা, একে অন্যের সহমর্মি হওয়া। সবাই একযোগে কাজ না করলে কখনো সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয় না। আসুন আমরা একে অন্যকে সহযযোগিতা করে সুন্দর সমাজ প্রতিষ্ঠা করি আমাদের নৈতিক মান গড়ে তোলার চেষ্টা করি।

বিষয়: বিবিধ

৩৭৩৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File